সংবাদ শিরোনামঃ

তুরস্কে জনতার বিজয় ** এরদোগানের নেতৃত্বে তুরস্কের জনগণ রুখে দিল সেনা অভ্যুত্থান ** সঙ্কট নিরসনে প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য ** ২০ দলীয় জোট ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র ** তুর্কী গণপ্রতিরোধে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান ** রফতানি বাণিজ্যের নতুন চ্যালেঞ্জ : রাজনৈতিক অস্থিরতা ** মানবতাবাদী বিশ্ব ও সন্ত্রাসবাদী বিশ্বের মাঝখানে মুসলমানদের দাঁড় করিয়ে দেয়া হচ্ছে ** সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে প্রয়োজন দলমত নির্বিশেষে সবার ঐক্য : নজরুল ইসলাম খান ** তুর্কী জনগণকে অভিনন্দন ** জাতীয় স্বার্থ বনাম হুকুম তামিল করার দৌড়ঝাঁপ ** এ শিক্ষা আমাদের কোথায় ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ** দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজেও হরিলুটের অভিযোগ ** দুর্ভোগের আরেক নাম পাইকগাছার কপিলমুনি শহর ** কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক সঙ্কট : সেবা কার্যক্রম ব্যাহত ** কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা ** ইসলামী সংস্কৃতির আলোকেই হোক ঈদ আনন্দ ** বাংলা ভাগের জন্য মুসলমানরা নন হিন্দুরাই দায়ী ** কবির বিশ্বাস ** সানজিদা তাহসিনা বেঁচে থাকবে সবার মাঝে ** জাতির নিকট রেখে গেলেন অনেক প্রশ্ন **

ঢাকা, শুক্রবার, ৭ শ্রাবণ ১৪২৩, ১৬ শাওয়াল ১৪৩৭, ২২ জুলাই ২০১৬

নূরুন্নাহার জ্যোৎস্না
পাপে ভরা আর ঝুট ঝামেলার এই দুনিয়া থেকে তুমি আজ আল্লাহর মেহমান হয়ে গেছো। অনেক অনেক শান্তির জায়গায় তুমি এখন বিচরণ করছো। মানুষ তোমাকে তোমার কাজের মাঝে ফিরে পাবে। মরেও যারা অমর তুমি তাদেরই একজন। চিরদিন তুমি মানুষের মাঝেই থাকবে।

যখন থেকে বুঝতে শিখেছেন তখন থেকেই তিনি ইসলামী আন্দোলনের কাজে জড়িয়ে পড়েছেন এবং কাজের শুরুটাই ছিল যে, আল্লাহর পথে কাজ করতে হলে শহীদি তামান্না নিয়েই এ পথে চলতে হবে। মৃত্যু অবধারিত কে কোথায় কে কিভাবে মারা যাবেন তা আল্লাহ নির্ধারণ করে রেখেছেন। কাজেই ইসলামী আন্দোলন করতে বাধা কোথায়। বিরোধী শক্তি ইসলামী আন্দোলন ঠেকাতে পারবে না শুধু এই পথের পথিকদের ঠেকাবে মারবে জেলে আটকাবে ফাঁসিতে ঝুলাবে। এতে তো ইসলামী আন্দোলন থেমে যাবে না বন্ধ হবে না। তার মধ্যে কোনো ভয়ভীতি ছিল না। সব বিষয় আল্লাহর উপর ছেড়ে দিতেন। কবির ভাষায় বলা যায়,

“কাঁটা হেরি ক্ষান্ত কেন কমল তুলিতে

দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় কি মহীতে।”

কমল তুলতে গেলে কাঁটার আঘাত সইতেই হবে যদি পৃথিবীতে সুখী হতে কেউ চায় সেখানেও কষ্টকে বরণ করে নিতে হবে। সৎভাবে জীবন-যাপন করা কঠিন, কিন্তু বেহেশত পাওয়ার আশা করলে বাতিলের সাথে সৎ বা ঈমানদার যারা তাদের সংঘাত হবেই। একজন সৎ মানুষ একজন ভালো মুসলমান। ভালো মুসলমান মানে একজন ঈমানদার ব্যক্তি। মুসলিম মানেই সৃষ্টির সেবায় নিয়োজিত একজন শান্তিকামী বান্দা। সে নিজে শান্তিতে থাকতে চায় এবং সকলকে শান্তিতে রাখতে চায়। পড়াশোনার প্রতি তার এত ঝোঁক ছিল যে, যখন টেবিলে বসতেন পিছন থেকে তাকে কোনো প্রয়োজনীয় কথা বললে খেয়ালই করতেন না। অনেকক্ষণ পরে যখন তার কাছ থেকে চলে আসতাম তখন আচমকা বলতেন কিছু বললে তুমি। বাচ্চারা চেঁচামেচি করলেও উনি কোনো সমস্যা মনে করতেন না। উনার কাজ উনি চালিয়ে যেতেন। বিশ্রামের মাঝে পিএসকে বলে যেতেন তার লিখার বিষয় অনর্গল বলে যেতেন, পিএস কোনো সময় অন্য মনষ্ক হলে তিনি বলে উঠতেন তুমি আবার আমাকে পড়ে শোনাও ভুল করেছো তুমি। পিএস বলতো এত খেয়াল তার। উনি চোখ বন্ধ করেও বুঝতে পারতেন আমি অন্যমনষ্ক। পড়াশোনা করা লিখা এই রাজ্যেই থাকতে তিনি পছন্দ করতেন। সোজা কথা জ্ঞানের রাজ্যে বিচরণ করাটা তার আনন্দের বিষয় ছিল। তার কোনো কোনো সহকর্মী বলেন, লাখ টাকা দিয়েও তার মতো লিখা আমরা আর পাবো না। সংগঠনের নেতা কর্মীদের নাম তিনি এক নাগাড়ে বলে যেতে পারতেন। কোন জেলায় কোন সভাপতি, সেক্রেটারি কোন আমীর সেগুলো অনর্গল বলে যেতেন। তাইতো শেরপুরের সাবেক (মৃত যুব প্রতিমন্ত্রী খন্দকার আব্দুল হামিদ সাহেব বলেছিলেন, আমি মারা যাওয়ার পর শেরপুরে (ব্রহ্মপুত্রের ওপারে) কামারুজ্জামান ছাড়া আর কোনো কৃতী সন্তান জন্ম নেবে না। গেল ‘ইউপি’ নির্বাচনে শেরপুরের একটি এলাকায় বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের লোকজন কামারুজ্জামান সাহেবকে নিয়ে ঝগড়ায় মেতে উঠেছে। একজন এক পর্যায়ে বলে উঠলো যে, সারা বাংলাদেশে আর একটা ‘মা’ পাওয়া যাবে না যে, আর একটা কামারুজ্জামান জন্ম দেবে। অনেক হিন্দু পরিবার কামারুজ্জামান সাহেবকে দেবতাতুল্য মনে করে। তারা বলে উনি মারা যাননি, উনি শহীদ, উনি অমর। আর কি চাই আমরা। এই হিন্দু পরিবারগুলো শহীদের কি বুঝে? আমি অবাক থেকে অবাক হয়ে যাই। তুমি মানুষের মাঝেই বেঁচে থাকবে। ‘হে অমর’ যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন কাঁটার আঘাত সইলেও মনে হয়েছে তার কিছুই হয়নি। এখানেই তার কৃতিত্ব। আমাদেরকে সব সময় বলতেন তোমরা কোনো ব্যাপারে অস্থির হয়ো না, আল্লাহর উপর ভরসা করো, তিনিই সকল সমস্যার সমাধান করে দেবেন। জ্ঞানীরা বলেন, মানুষ কু ও সু-প্রবৃত্তি দিয়ে গঠিত। কুপ্রবৃত্তি দূর করে সু-এর বোধন করতে হয়। জ্ঞানী ব্যক্তিদের থেকেই মানুষ জ্ঞান আহরণ করে। আমাদের প্রিয় মানুষটিও তাই করেছেন। কু বা পশুত্ব ধ্বংসের প্রধান উপায় ধর্ম সাধনা বা ইবাদত। ধর্ম শিক্ষা সকল শিক্ষার উপরে। জীবনকে অর্থবহ করে তুলতে হলে জীবনে যেমন ধর্মশিক্ষার প্রয়োজন, তেমনি কর্মশিক্ষারও প্রয়োজন।

কামারুজ্জামান সাহেবের লিখা ‘নতুন শতাব্দীতে নতুন বিপ্লবের পদধ্বনি’ বইটির একটি অংশে তিনি লিখেছেন (পৃঃ ৪৩) “আল্লাহ তায়ালা অনেক মানুষকে নেতৃত্বের অসাধারণ গুণাবলী দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। তবে সব মানুষকে একই ধরনের যোগ্যতা দিয়ে সৃষ্টি করেন না। পারিপার্শ্বিক পরিবেশের উপর নেতৃত্ব গড়ে উঠা নির্ভর করে আবার পরিস্থিতিগত কারণেও নেতৃত্বের আবির্ভাব ঘটতে পারে। তবে আল্লাহ প্রদত্ত গুণাবলীর সমাবেশ যাদের মধ্যে লক্ষ্য করা যায় তাদেরকে সামনে এগিয়ে দেয়া উচিত। তারা যদি অনুশীলনকারী বা ইসলাম চর্চাকারী মুসলমান হন তাহলে সমাজে খেদমত করার সুযোগ তাদের জন্য সৃষ্টি করে দেয়া অপরিহার্য কর্তব্য। তাদেরকে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী দায়িত্বে নির্বাচিত বা নিয়োজিত করা উচিত যাতে তাদের বিশেষ যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা ইসলামের জন্য সম্পদে পরিণত হয়। সমাজ ও জাতির কল্যাণের জন্য বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্ন লোকদের মেধা ও নেতৃত্বের গুণাবলীর বিকাশ ঘটানো উচিত। ইসলাম অনুসরণ করেন না এমন লোকদের মধ্যে নেতৃত্বের  সম্ভাবনাময় গুণাবলী দেখতে পেলে আমাদের উচিত তাদের সাথে সংলাপ ও যোগাযোগের মাধ্যমে তাদেরকে এগিয়ে আনতে উদ্যোগ নেয়া। আর যদি অমুসলিম কারো মধ্যে নেতৃত্বের অসাধারণ গুণাবলী লক্ষ্য করা যায় তাহলে তার সামনে ইসলামের সৌন্দর্য ও দাওয়াত তুলে ধরা আমাদের দায়িত্ব। মহানবী (সা.) বলেন, মানব সমাজ হচ্ছে খনির মতো। কামারুজ্জামান সাহেব সব ধর্মের লোকদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে কথা বলতেন।”

একদিনের একটি ঘটনা ঢাকার একটি বাসায় à¦˜à¦Ÿà§‡à¦›à§‡Ñ à¦¯à¦¾ এখনো আমার মনে স্মরণীয় হয়ে আছে। à¦¤à¦¾à¦¹à¦²à§‹Ñ à¦ªà¦¾à§œà¦¾à¦° একটি ছেলে ১৫/২০ বছর বয়স হবে। সে এসে বলছে যে (কুরআন অধ্যয়ন সহায়িকা তার লিখা একটি বই) এই বইতে আপনি কি সব সত্যি কথা লিখেছেন। তখন তিনি ছেলেটিকে পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে সোফাতে বসালেন আর বলছিলেন যে, তুমি কি বইটি পড়েছ। সে বলে যে না, তো তুমি কিভাবে বুঝলে যে বইয়ের সব কথা সত্যি বা মিথ্যে, তখন ছেলেটি বলে যে, পাড়ার কয়েকজন মাস্তান আমাকে বলে কামারুজ্জামান সাহেবকে গিয়ে তুমি কি এই কথাটা বলতে পারবে। তাই আমি এসেছি। তারপর উনি ছেলেটিকে একটি বই দিয়ে বললেন, তুমি বইটি পড়বে এবং আবার আমার কাছে এসো। এরপর থেকে ছেলেটি উনার ভক্ত হয়ে যায়। এমনকি একদিন সেলুনে যখন দেখা হয়েছে সে অন্যদের সরিয়ে দিয়ে তাকে বসার আসন করে দিয়েছে। এমনকি রাস্তায় আমাকে একদিন সে দেখে আমি আমার ছোট ছেলেকে কোলে নিয়ে রিকশা খুঁজছি সে দেখামাত্রই দৌড়ে রিকশাওয়ালাকে বলছে, এই আন্টিকে নিয়ে যাও। এই যে তার ব্যবহার আমরা কেন পেলাম। শুধু কামারুজ্জামান সাহেবের ভালো ব্যবহার ও আচরণের কারণেই। তিনি (কামারুজ্জামান) কখনো উত্তেজিত হয়ে কথা বলতেন না। বাচ্চাদের কখনো কোনো কঠিন কথা বলতে পারতেন না। প্রতিদিন বাসা থেকে অফিস পর্যন্ত কত মানুষের সাথে তার কথা বলতে হয়েছে। কখনো কারো সাথে শক্তভাবে কথা বলেছেন শোনা যায়নি। তার বাসায় কত ডিপ্লোম্যাটরা এসেছেন, তার মধুর কথা বলা আর সুন্দর আচরণে তারা মুগ্ধ হয়েছেন। অনেক ডিপ্লোম্যাটদের বাসায় আমরা পরিবারের সবাই গিয়েছি। আমেরিকান এক ডিপ্লোম্যাটের বাসায় গিয়ে দেখলাম টেবিলে কুরআন শরিফ ইংরেজিতে তরজমা। আমি বললাম তুমি কি জামায়াতে ইসলামী করো। আমি তো ইংরেজি ভালো বলতে পারি না তাই আমার প্রিয় মানুষটি তাকে (ডিপ্লোম্যাট) বুঝিয়ে দিলেন আমার ‘বউ’ তোমাকে বলছে যে, তুমি জামায়াতে ইসলামী করো। সে হাসতে হাসতে বলছিল যে, আমাকে রুকন বানালে আমি জামায়াতে ইসলামী করবো।

সমাজের ছোট বড় সকল স্তরের মানুষের সাথে তার সুসম্পর্ক ছিল। আসলে একজন মহৎ এবং উদার মনের মানুষ ছিলেন তিনি যার বর্ণনা লিখে শেষ করা যাবে না। পরিবার থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে যার চিন্তাভাবনার ব্যাপকতা তার সম্পর্কে আমার বলার কোনো সাধ্য নেই, আমার সামান্য বুদ্ধিতে যতটুকু বুঝার ক্ষমতা আছে ঠিক সেইটুকুই চেষ্টা করছি মাত্র। যে মহৎ, যে বড়, তাকে প্রশংসার লোভ না করেই বড় হতে হয়। জাতির জন্য এ রকম মহৎ মানুষের প্রয়োজন। কিন্তু মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ইচ্ছায় তাকে চলে যেতে হলো আল্লাহর পরম সান্নিধ্যে। তাকে  কেউ সম্মান দেখালো কি না? তা নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা ছিল না, আল্লাহ তাকে শহীদের উন্নত মর্যাদা দান করেছেন এর চেয়ে আর বড় পাওনা কি হতে পারে? পিতা হিসেবে তিনি সন্তানদের জন্য যে অবারিত স্নেহধারা বইয়ে দিয়েছেন তা অসাধারণ। জ্যেষ্ঠ পুত্র বিদেশে কিছুতেই পড়তে যাবে না, তিনি অনেক বুঝিয়ে বাধ্য করলেই বিদায়কালে বাবার কাঁধে পুত্র মাথা রেখে কান্না করেছে। বাবা বাসায় ফিরে বলছিলেন, দু’চোখের জলে পুত্র আমার শার্ট ভিজিয়ে দিয়েছে। পরিবারের সকলেই আমরা অনেক রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতাম খাওয়ার টেবিলে। যখন বাসায় ফিরতেন তখন সবার কথা খেতে বসে মনোযোগ দিয়ে শুনতেন। জ্যেষ্ঠপুত্র বিদেশে চলে যাওয়ার পর পুত্রের কথা ভাবতেন কিভাবে তার একটি বিষয় আমি লিখছি, à¦¤à¦¾à¦¹à¦²à§‹Ñ à¦–à¦¾à¦¬à¦¾à¦° টেবিলে চেয়ারগুলোর মধ্যে একটা চেয়ার নির্দিষ্ট ছিল যেটাতে একমাত্র জ্যেষ্ঠ পুত্রই শুধু বসত। একরাতে আমার ‘চাচি’ সেই চেয়ারে বসে খাচ্ছিলেন তো হাসতে হাসতে তিনি বলছেন যে আমার বড় ছেলের চেয়ারে আপনি বসেছেন। আমার আজকে খুব ভালো লাগছে যে, একজন মুরুব্বী বসেছেন এই চেয়ারটিতে। প্রায় সময়ই এই চেয়ারের বিষয় নিয়ে কথা বলতেন। আজ আর এই কথার কেউ নেই। কনিষ্ঠ কন্যা আতিয়া বলতেন, ভালো করে পড়াশোনা কর শেষ সাক্ষাতেও এই কথাটিই বলেছেন। বাবার করুণ বিদায়টা মেয়েটির মেনে নিতে খুবই কষ্ট হয়েছে। সে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে ঘরের কোনো কোণায় লুকিয়ে কান্না করতো আমাদের পরিবারের সকল সদস্যই প্রথমে ভয় পেয়েছিলাম যে মেয়েটা কোথায় গেল অনেক দিন তাকে নিয়ে আমরা খুবই ভয়ে ছিলাম। বাবার বিষয়ে মুখে কিছু সে বলতে পারতো না। আমাদের চতুর্থ ছেলেটা বাবার সকল বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখতো বেশি। যেমন, যখন অফিসে বা সফরে যাবেন তখন তার টুথপেস্ট থেকে শুরু করে ফাইলপত্র কলম এমনকি জুতা, মোজা পর্যন্ত গুছিয়ে দিত। আবার যখন বাসায় ফিরতেন তখন তার বিছানা ঠিক করে দেয়া টাওয়েল লুঙ্গি দেয়া বাথরুম ঠিক আছে কি না তা পর্যবেক্ষণ করা তার  নিত্যনৈমিত্তিক কাজ ছিল। কখন কোন চ্যানেলে কোন খবর কোন জেলায় কোন ঘটনা ঘটলো তা বাবাকে জানানো তার একটা দায়িত্বই হয়ে গিয়েছিল। বাবার চলে যাওয়াটা এই ছেলে কিভাবে মেনে নেবে এটা একটা ভয় ছিল আমাদের। মনে হয় আল্লাহ আমাদেরকে কঠিন অবস্থায়ও হেফাজত করেন। অনেক শুকরিয়া আল্লাহর দরবারে। যারা বিদেশে ছিল তাদের সবাই দেখা করতে পারেনি, তারমধ্যে ওয়াসির কথা বারবার বলেছে। ওয়ালি, ‘সাফি’ দেখা করেছে।

স্বামী হিসেবে সে চমৎকার কর্তব্য পরায়ণ, কোনো কাজের দরকার হলে এত নরম সুরে কথা বলতেন সেটা আমি কেন, যে কোনো মানুষই অবাক হতেন। তার সাধারণ চলাফেরা, শ্রুতিমধুর কথাবার্তা শোনার জন্য আমি অপেক্ষা করতাম কিন্তু সময় কোথায় তার যে অনেক কাজ পড়ে আছে। জাতির সেবা করতে করতে জীবনই চলে গেল। যে জাতি জ্ঞানী লোকের কদর বোঝে না সে দেশে তো জ্ঞানী লোক জন্ম নেবে না। একথা জ্ঞানী লোকরাই বলে গেছেন। আমার ৩৭ বছরের বিবাহিত জীবনে যে সুখ পেয়েছি যে আদর, ভালোবাসা পেয়েছি তা ১০০ বছর বা আরো অনেক বেশি বছরের চেয়েও বেশি পেয়েছি বললে ভুল হবে না। অনন্ত জীবনে যেন আল্লাহ আমাদের একসাথে থাকার সুযোগ দেন। তিনি মাঝেমাঝে বলতেন বিশেষ করে নির্জন কারাবাসে থেকে চিঠি লিখেছেন, তোমাদের আমি সময় দিতে পারিনি আমার প্রতি কষ্ট নিও না। কিন্তু আমার স্নেহ ভালোবাসার কোনো কমতি কখনোই ছিল না তোমাদের জন্য। জালিম সরকার আমাকে জুলুম করে তোমাদের থেকে আমার আত্মীয়-স্বজন থেকে আমার সংগঠনের ভাইদের থেকে আলাদা করে রেখেছে। উনি বিশ্বমানবের কল্যাণ সাধন করতে না পারলেও দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য তো কষ্ট করেছেন আল্লাহ কবুল করে নিন কাজ।  পাঠকদের জন্য তার লিখা কিছু কিছু উল্লেখযোগ্য à¦¬à¦‡Ñ à¦…à¦§à§à¦¯à¦¾à¦ªà¦• গোলাম আযমের সংগ্রামী জীবন, ইসলামী নেতৃত্ব, নতুন শতাব্দীতে নতুন বিপ্লবের পদধ্বনি. Islam and Democracy. আধুনিক বিশ্বের চ্যালেঞ্জ ও ইসলাম। স্থিতিশীল গণতন্ত্র এবং সমানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন, বদিউজ্জামান সাঈদ নুরসী এবং তুরস্ক, বিশ্ব পরিস্থিতি ও ইসলামী আন্দোলন।

সম্পাদিত বই : আধুনিক বিশ্বে ইসলাম, আধুনিক বিশ্বে ইসলামী জাগরণ ও মাওলানা মওদূদীর চিন্তাধারার প্রভাব। দীর্ঘ প্রায় পাঁচটি বছর কারাগারে বসে উনি যে লিখালিখি করেছেন তা যদি আমরা হাতে পেতাম তবে তা বই আকারে প্রকাশ করা যেতো। তিনি তার লিখার মাঝেই বেঁচে থাকবেন, জালিমরা যা করুক না কেন “অস্ত্রের চাইতে কলমের ধার বেশি।” সাহসী ও চরিত্রবান মানুষেরা অন্যের কাছে সব সময় অশুভ প্রতিপন্ন হয়। বলেছেন, হেরম্যানহেস।

লেখিকা : শহীদ মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের সহধর্মিণী

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।