সংবাদ শিরোনামঃ

তুরস্কে জনতার বিজয় ** এরদোগানের নেতৃত্বে তুরস্কের জনগণ রুখে দিল সেনা অভ্যুত্থান ** সঙ্কট নিরসনে প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য ** ২০ দলীয় জোট ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র ** তুর্কী গণপ্রতিরোধে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান ** রফতানি বাণিজ্যের নতুন চ্যালেঞ্জ : রাজনৈতিক অস্থিরতা ** মানবতাবাদী বিশ্ব ও সন্ত্রাসবাদী বিশ্বের মাঝখানে মুসলমানদের দাঁড় করিয়ে দেয়া হচ্ছে ** সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে প্রয়োজন দলমত নির্বিশেষে সবার ঐক্য : নজরুল ইসলাম খান ** তুর্কী জনগণকে অভিনন্দন ** জাতীয় স্বার্থ বনাম হুকুম তামিল করার দৌড়ঝাঁপ ** এ শিক্ষা আমাদের কোথায় ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ** দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজেও হরিলুটের অভিযোগ ** দুর্ভোগের আরেক নাম পাইকগাছার কপিলমুনি শহর ** কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক সঙ্কট : সেবা কার্যক্রম ব্যাহত ** কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা ** ইসলামী সংস্কৃতির আলোকেই হোক ঈদ আনন্দ ** বাংলা ভাগের জন্য মুসলমানরা নন হিন্দুরাই দায়ী ** কবির বিশ্বাস ** সানজিদা তাহসিনা বেঁচে থাকবে সবার মাঝে ** জাতির নিকট রেখে গেলেন অনেক প্রশ্ন **

ঢাকা, শুক্রবার, ৭ শ্রাবণ ১৪২৩, ১৬ শাওয়াল ১৪৩৭, ২২ জুলাই ২০১৬

মীর্যা সিকান্দার
এই সেই রমাদান মাস, যে মাসে নাজিল করা হয়েছে কুরআন। মানবজাতিকে সঠিক পথ দেখাতে এবং হক বাতিলের পার্থক্যের সুস্পষ্টকারী দলিল হিসেবে। সূরা বাকারা : ১৮৫

এ মাসে সওম ফরজ করা হয়েছে, আল্লাহ তায়ালা আল কুরআন নাজিল করে মানবজাতিকে যে সুপথ প্রদর্শন করেছেন এবং গুমরাহী থেকে বেঁচে থাকার জন্য হিদায়াত এবং গুমরাহীর সুস্পষ্ট পার্থক্য সৃষ্টি করে দিয়েছেন, তারই শুকুর গুজারীর জন্যে। সওম ফরজ করার আরেকটি উদ্দেশ্য তাকওয়া হাসিল বা আল্লাহভীতি সৃষ্টির জন্য। কারণ যাকে বেশি ভয় করা হয় মানুষ তার কথা বেশি মেনে চলে। এটা মানুষের ফিতরাত। তাই যে যতবেশি তাকওয়া হাসিল করতে পারবে সে ততবেশি আল্লাহ তায়ালার মহান বাণী আল কুরআনের দিকনির্দেশনা মেনে চলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে। অন্য কথায় আল কুরআন ততবেশি তাকে হিদায়াত দিতে পারবে।

আল্লাহ বলেন, জালিকাল কিতাব লা রইবা ফিহ, হুদাল্লিল মুত্তাকীন। এই কিতাবে কোনো সন্দেহ নেই, এই কিতাব কেবলমাত্র আল্লাহকে যারা ভয় করে চলে তাদেরই পথ প্রদর্শন করে। (বাকারা : ২)

মহাগ্রন্থ আল কুরআন বহুদিক থেকে মর্যাদা ও মর্তবার অধিকারী। মহাগ্রন্থ আল কুরআন শুধু মানব জাতিরই নয় মহাবিশ্ব পরিচালনারও মূল পরিকল্পনা ও মুসাবিদা আল কুরআনেই তার যেসব বিশেষ গুণাবাচক পরিচয় তুলে ধরেছে তার কয়েকটি এখানে পেশ করা গেল।

* মুহসীনদের পথপ্রদর্শক ও রহমত। সূরা : লুকমান

* মুমিনদের পথের দিশা ও সুসংবাদ। সূরা : আন-নামল

* (হেনবী!) আমি এ জন্যে কুরআন নাজিল করি নাই যে,  আপনি হতভাগা হবেন। -আল কুরআন

* আপনার প্রতি এই জন্যে কুরআন নাজিল করেছি যে, আপনি মানবজাতিকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোর জগতে প্রবেশ করাবেন। সূরা : ইব্রাহীম

* আল্লাহ সুবহানু ওয়া তায়ালা কুরআনকে মানব জাতির জন্য নূর ও শিফা হিসেবে নাজিল করেছেন। আসল্ েকুরআন চর্চা মানুষের হৃদয় মনকে আলোকিত করে। ফলে সে সত্য ও সুন্দরের সন্ধান পায়। মন থেকে যেমন শিরক, বিদআত, নিফাক, ফিসক দূর হয় তেমন তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাতের স্বচ্ছ ধারণা লাভ করতে পারে। দুনিয়াবি উন্নয়ন যতই ঘটুক কুরআনের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকলে মনের আঁধার দূর হয় না, তাই দেখা যা পাশ্চাত্যের প্রগতিশীল মানুষেরা অযথা একদেশ অন্যদেশের  ওপর হাজারটন বোমা মেরে নিরপরাধ নারী-পুরুষ ও শিশুকে হত্যা করছে। তারা কালো মানুষদের ঘৃণা করে তাদের ছায়া মাড়ায় না। অথচ কালো কুকুর বিছানায় নিয়ে শুয়ে থাকতে সামান্যতম ঘৃণাবোধ করে না। আল কুরআনে তাদের হৃদয়-মগজে পৌঁছেনি বলে নিজেদের সভ্যতার ধারক বাহক মনে করেও চরম অসভ্যতার প্রমাণ দিচ্ছে তারা পুরুষে পুরুষে, নারীতে নারীতে বিয়ে করছে। জিনা করছে যা কোনো পশুও করতে ঘৃণাবোধ করে। আজ পর্যন্ত দেখা যায়নি যে পশুরা সমলিঙ্গে যৌন চাহিদা মিটায়। তারা মা-ছেলে, মেয়ে-পিতায়, ভাই-বোনেও কোনো বাদ বিচার করছে না। কুরআনের আলো যদি তাদের কাছে পৌঁছাত তাহলে তারা এত বড় জঘন্য অপরাধে লিপ্ত হতে পারতো না।

পবিত্র কুরআনের আয়াতসমূহ বিশেষ করে সূরাতুল ফাতিহা, সূরাতুল ইখলাস, সূরাতুল ফালাক ও নাস পড়ে ফুঁক দিলে দুরারোগ্য কঠিন রোগ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। আল কুরআনের আরো অনেক মর্যাদা ও মর্তবা রয়েছে।

১. আসমানের যে স্থানে কুরআন সংরক্ষিত আছে আরশে আজীমের পর সেই লাওহি মাহফুজের মর্যাদা সকল আসমানের চেয়ে বেশি।

২. যে ফেরেশতার মাধ্যমে পৃথিবীতে কুরআন নাজিল হয়েছে সমস্ত ফেরেশতাদের মধ্যে সে  ফেরেশতার মর্যাদা বেশি।

৩. যে পাহাড়ে কুরআন নাজিল হয়েছে বিশ্বের সকল পাহাড়ের মধ্যে সেই পাহাড় জাবালে নূরকে মানুষ সব থেকে মর্যাদার চোখে দেখে। পৃথিবীর সব থেকে উঁচু ও বড় পাহাড় হিমালয়কে তার সামান্যতম মর্যাদাও মানুষ দেয় না। যে ব্যক্তির ওপরে কুরআন নাজিল হয়েছে তাঁকে সৃষ্টি জগতের সকল কিছুর ওপরে মর্যাদা দেয়া হয়েছে।  তিনি হলেন হজরত মুহাম্মদ (সা.) স্বয়ং আল্লাহ সুবহানু ওয়াতায়ালা ও তাঁর ফেরেশতারা তাঁর ওপরে দরূদ পাঠান। তাঁর ওপরে একবার দরূদ পাঠ করলে দরূদ পাঠকারীর আমলনামা থেকে দশটি গুনাহ কাটা যায় আর দশটি নেকী লেখা হয়।

আল্লাহ সুবহানু ওয়া তায়ালা সমগ্র জ্ঞানকে একশত ভাগ করে একভাগ সমতুল্য পৃথিবীতে দিয়েছেন। সেই এক ভাগ একশত ভাগ করে নিরানিব্বই ভাগ দিয়েছেন মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) বাকী একভাগ বণ্টন করেছেন পৃথিবীর সকল দার্শনিক, বৈজ্ঞানিক ও জ্ঞানী-গুণের মধ্যে। আল্লাহ হলেন রাব্বুল আলামীন আর মুহাম্মদ (সা.) হলেন রহমাতাল্লিল আলামীন।

৫. যে শহরে আগে কুরআন নাজিল হয়েছে পৃথিবীর সকল শহরের মধ্যে সেই শহরের মর্যাদা অনেক বেশি। আর সে শহরটি হলো পবিত্র মক্কা মুয়াজ্জমা। সেখানে এক ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে এক লাখ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের সওয়াব পাওয়া যায়।

৬. যে শহরে পরে কুরআন নাজিল হয়েছে সেই শহরটি মদীনা মনোয়ারা। মর্যাদার দিক থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ের। এখানে এক ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে পঞ্চাশ হাজার ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের সমান সওয়াব পাওয়া যায়।

৭. যে মাসে কুরআন নাজিল হয়েছে সেই মুবারক মাস হলো রমাদান। বছরের বারটি মাসের মধ্যে এ মাসের মর্যাদা সকলের ওপরে। এ মাসের একটি ফরজ কাজ অন্য মাসের সত্তরটি ফরজ কাজের সমান আর একটি নফল কাজ অন্য মাসের একটি ফরজ কাজের সমান।

এ মাসে কবর আজাব বন্ধ থাকে।

৮.  যে রাতে কুরআন নাজিল হয়েছে সে রাতটি হলো কদর রাত। বছরের সকল রাতের সেরা এ রাত। এ রাতে ইবাদত করলে হাজার মাস তথা ত্রিশ হাজার রাতের ইবাদতের চেয়েও বেশি পুণ্য অর্জন করা যায়। এই রাতেই মানুষের ভাগ্যের বার্ষিক বরাদ্দ লিপিবদ্ধ করা হয়।

৯. রাসূল (সা.) বলেন, তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম যিনি কুরআনের জ্ঞান অর্জন করেন এবং অপরকে শিক্ষা দেন।

১০. যে ব্যক্তি কুরআন মুখস্ত করেন তিনি হাফিজে কুরআন। আল্লাহ তায়ালা সাধারণ মানুষের চেয়ে হাফিজে কুরআনের মর্যাদাকে অনেক গুণে বাড়িয়ে দেন। আল কুরআনের হাফিজগণ জাহান্নাম যাদের জন্য ওয়াজিব হয়ে গেছে এমন চৌদ্দজন লোককে সুপারিশ করে জান্নাতে নিয়ে যেতে পারবেন। হাফিজদের পিতামাতাকে আল্লাহ সুবহানু ওয়া তায়ালা নূরের টুপি মাথায় দিয়ে হাশরের ময়দানে উঠাবেন। আছেন কোন নেতানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী অথবা প্রেসিডেন্ট যারা একজনকে সুপারিশ করে জান্নাতে নিয়ে যেতে পারবেন। আমরা আরো কি দেখতে পাই- ১৩/১৪ বছরের একজন বালক কুরআনে হাফেজ হওয়ার কারণে মন্ত্রী-এমপি, জজ-ব্যারিস্টারদের হুজুর হয়ে পড়েন। তারা ঐসব বড় বড় মানুষের নামাজে ইমামতি করে থাকেন।

১১. যে কাপড়ে কুরআন জড়িয়ে রাখা হয় সেই কাপড় খণ্ডের সমমর্যাদার কোনো কাপড় পৃথিবীতে নেই। এক খণ্ড কাপড়ের মূল্য যদি এক কোটি টাকাও হয়, স্বর্ণখচিত হয়। কোটি টাকা মূল্যের স্বর্ণখচিত কাপড় খণ্ডের গায়ে কারো পা লাগলে তার অন্তরে সামান্য অনুশোচনাও জাগ্রত হয় না। আর কুরআন জড়ানো কাপড়ের  টুকরার দাম যদি এক টাকাও হয় অসাবধানতাবশত  কারো পা লাগলে সে বিচলিত হয়ে পড়ে। নিজেকে অত্যন্ত অপরাধী মনে করে এবং তাওবা করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়।

১২. যে কাষ্ঠ খণ্ডের (রেহেল) ওপরে কুরআন রাখা হয় তার সমমর্যাদার কোনো কাষ্ঠখণ্ড পৃথিবীতে নেই। কাপড়খণ্ডের মতো ঐ কাষ্ঠখণ্ডে কারো পা লাগলে সে ব্যথিত হয় এবং অনুশোচনা করে থাকে।

১৩. রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যার অন্তরে কুরআনের জ্ঞান নেই সেটা একটি শূন্য প্রাসাদ। (সে ব্যক্তি অন্যান্য জ্ঞানে যতই সমৃদ্ধ হোক না কেন!)

১৪. রাসূল (সা.) বলেছেন, “কুরআনের একটি হরফ তিলাওয়াত করলে দশটি নেকী লাভ করা যায়। আর অর্থ বুঝে যদি কুরআন তিলাওয়াত করা যায় তবে প্রত্যেক হরফে বা অক্ষরে ত্রিশ নেকী অর্জন করা যায়।

১৫. একমাত্র আল কুরআন ছাড়া পৃথিবীতে আর কোনো ধর্মগ্রন্থ নেই যার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মুখস্ত করা এবং মুখস্ত রাখা সম্ভব হয়েছে।

১৬. পৃথিবীতে একমাত্র কুরআন ছাড়া আর কোনো ধর্মগ্রন্থ আবিষ্কৃত নেই। পনরশ’ বছরেও কুরআনের একটি জের, জবর, পেশ এমনকি একটি নুকতা পর্যন্ত পরিবর্তন হয়নি। কুরআন বিকৃতি করা নিয়ে একটি ঘটনা আছে। একব্যক্তি বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ ছেপে বিক্রি করতেন। একদিন তার খেয়াল হলো ধর্মগ্রন্থ কোনটি সঠিক তা যাচাই করতে হবে। তিনি চার পাঁচটি ভাষা জানতেন। তিনি প্রত্যেক ধর্মগ্রন্থ থেকে কিছু কথা বাদ দিয়ে নিজের কিছু কথা ঢুকিয়ে দিলেন। সব রকমের ধর্মগ্রন্থই বিক্রি হলো। কিন্তু একমাত্র কুরআন ছাড়া আর কোনো ধর্মগ্রন্থের ব্যাপারে কোনো অভিযোগ এল না। কুরআন বিক্রির দু’তিন দিন পরেই বিভিন্ন দিক থেকে অভিযোগ আসতে থাকলো। এর পরে উক্ত ব্যবসায়ী আল কুরআনের অনুসারী হয়ে গেলেন।

১৭. হাশরের মাঠে কুরআনকেও সুপারিশ করার সুযোগ দেয়া হবে। যারা কুরআনকে  মহব্বত করেন, কুরআনকে জানা ও বুঝার চেষ্টা করেন, আল কুরআনের সমাজ গড়ার আন্দোলনে শরিক হয়ে জান-মাল দিয়ে কাজ করেন, আল কুরআনের সুপারিশ কেবল ঐ সকল সৌভাগ্যবানদের নসিবেই জুটবে।

১৮. রাসূল (সা.) বলেন, কুরআনের একটি আয়াত তিলাওয়াত করলে উঁচু কুজবিশিষ্ট একটি লাল উটনী লাভের মতো কল্যাণ লাভ হয়। (উঁচু কুজবিশিষ্ট একটি উটনীর দাম অনেক বেশি।)

১৯. প্রথম মানুষ আদমকে (আ.) আল্লাহ সুবহানু ওয়া তায়ালা আল কুরআনের ভাষায়ই সকল বিষয়ে জ্ঞান দান করেন।

২০. আল কুরআনের ভাষা কবরের ভাষা, হাশরের ভাষা, জান্নাতীদের ভাষা।

২১. যে সকল সাহাবী (রা.) অহী লেখক ছিলেন অন্যান্য সাহাবীদের মধ্যে তারা বেশি মর্যাদার অধিকারী ছিলেন।

২২. একমাত্র আল কুরআন হিফাজতের দায়িত্ব আল্লাহ তায়ালা নিজে নিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, কুরআন আমি নাজিল করেছি এর হিফাজতের দায়িত্বও আমার। এ পর্যন্ত কুরআনকে মুছে ফেলার বহু ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে কুরআনের দুশমনরা। কিন্তু স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নিজে কুরআনের হিফাজতের  দায়িত্ব নেয়ায়। কেউ একটা জের, জবর ও পেশের পরিবর্তন করতে পারেনি, কুরআন নিয়ে এখনো ষড়যন্ত্র চলছে আগামীতেও চলবে। কিন্তু আল্লাহর সাথে পাল্লা দিয়ে একটা নুকতা পর্যন্ত পরিবর্তন করার সাধ্য কারো হবে না।

২৩. আল কুরআন যত ভাষায় অনুবাদ হয়েছে তার শতভাগের এক ভাগও অন্য কোনো ধর্মগ্রন্থ অনুবাদ হয়নি।

২৪. আল কুরআন চর্চা করে পৃথিবীতে যত মানুষ ইসলাম গ্রহণ করেছে তার কোটি ভাগের একভাগও অন্য ধর্মগ্রন্থের অনুসারী হয়নি।

২৫. যেখানে কুরআন তিলাওয়াত হয় সেখানে আল্লাহর তরফ থেক সাকিনা অর্থাৎ শান্তি নাজিল হয়।

২৬. যেখানে কুরআনের আলোচনা হয় সেখানে রহমতের ফেরেশতারা উক্ত আলোচনা মাহফিলের চারিদিক ঘিরে দাঁড়িয়ে যায় এবং দু’আ করতে থাকে।

২৭. যে ব্যক্তি আল কুরআনকে আঁকড়ে ধরেছে সামাজিক মর্যাদা তার যাই হোক আল্লাহ তায়ালা তাকে অনেক উচ্চ মর্যাদায় আসীন করেন। হজরত বিলাল (রা.) ছিলেন নিরক্ষর কুৎসিত চেহারার হাবসী গোলাম। আল কুরআনের পথকে আঁকড়ে ধরায় তিনি হলেন সাইয়্যিদিনা বিলাল (রা.)। পক্ষান্তরে আবু জাহেল, আবু লাহাব সমাজের উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন অত্যন্ত প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। কুরআনের বিরোধিতা করার কারণে চরম বেইজ্জতি হয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছে। হজরত বিলালের (রা.) নাম দুনিয়ার মানুষ অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে উচ্চারণ করে,  আর আবু জাহল ও আবু লাহাবের নাম উচ্চারণ করে অত্যন্ত ঘৃণাভরে। কেউ কারো সন্তানের নাম আবু জাহেল ও আবু লাহাব রাখে না। বরং বিলাল নাম রাখতে মানুষ উৎসাহ বোধ করে। আবু জাহেল ও আবু লাহাবের বাড়িঘরের ওপর সৌদী সরকার হাজীদের প্রশাব পায়খানার জায়গা বানিয়ে দিয়েছেন।

২৮. অতি সম্প্রতি যারা কুরআনের সাথে বেআদবী করেছে, আল্লাহ তাদের কেমন নাকাল করে ছেড়েছেন তা বিশ্ববাসী অবগত আছে, সালমান রুশদী আল কুরআনকে স্যাটানিক ভার্সেস (নাউজুবিল্লাহ) শয়তানের ভাষণ বলে একটি বই লেখে। এতে ইহুদিরা কোটি কোটি ডলার তাকে উপহার দিয়েছে। কিন্তু আল্লাহর কাছ থেকে পেয়েছে দুনিয়া জুড়া লানত।

ফলে, পৃথিবীর কোথাও নিরাপদে বসবাস করার মতো সামান্য জায়গাও তার জন্যে নেই। মৃত্যুর ভয়ে ২৪ ঘণ্টাই তাকে অত্যন্ত ভয়-বিহ্বল হয়ে থাকতে হচ্ছে। এখন এক দেশে, কয়েক ঘণ্টা পর অন্যদেশে, এক রাত এ দেশে তার পরের রাত অন্যদেশে। এভাবে তার জীবন কাটছে। তসলীমা নাসরিন কুরআনের সাথে বেআদবী করায়, তার অবস্থাও অত্যন্ত নাজুক। বিশ্বের কোথাও তার জন্য কোনো জায়গা নেই, যেখানে সে শান্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারে।

২৯. অনেকেরই মনে থাকার কথা, বছর পনর আগে তুরস্কের এক জেনারেল ফাইভ স্টার হোটেলে মদ খেয়ে কুরআনের সেই আয়াত যে আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, নিশ্চয়ই এ জিকির (কুরআন) আমি নাজিল করেছি এর হিফাজত আমিই করব। আল হিজর : ৯ এ আয়তকে অবমাননা করে অতি দম্ভভরে বলেছিল, কোথায় আল্লাহ? এখন কুরআনকে হিফাজত করে না।” এর কয়েক মুহূর্ত পরেই সমুদ্র থেকে সাইক্লোন উঠে এসে ফাইভ স্টার হোটেলের গোটা বিল্ডিংকে মিসমার করে দিয়েছিল। এমন ভয়াবহ দৃষ্টান্ত সামনে থাকতেও মহাপবিত্র আল কুরআনকে অবমাননার প্রতিযোগিতা চলছে পৃথিবী জুড়ে।

না জানি কখন আল্লাহর গজব নাজিল হয়ে যায় পৃথিবীতে। আর আল্লাহর গজব যদি নাজিল হয়েই যায় তা প্রতিরোধ করার শক্তি কারো নেই।

সত্যই কুরআন নাজিল করা হয়েছে মানবজাতির দুনিয়ার কল্যাণ ও আখিরাতের মুক্তির গ্যারান্টি হিসেবে। আল কুরআনের পথে চলে পৃথিবীর সব থেকে বর্বর ও উচ্ছৃঙ্খল জাতি অতি অল্প সময়ে সুসভ্যও সুশৃঙ্খল হয়ে উঠল। যারা মানবতাকে পায়ে পিষে শেষ করে দিয়েছিল আল কুরআনের পবিত্র পরশে তারাই বিশ্বের মানবতা ও মনুষত্বকে পুনরুজ্জীবিত করে তুললেন। তারা আল কুরআনের আলোকে যে আদর্শ সমাজ গঠন করেছিলেন তা ছিল পরিপূর্ণ কল্যাণ ও শান্তিতে ভরপুর। সেখানে না ছিল কোনো অভাব-অভিযাগ না ছিল কোনো প্রবঞ্চনা, না ছিল কেউ কোনো অধিকার থেকে বঞ্চিত। এমন আদর্শময় সমাজ আর কোনো জাতি গড়ে তুলতে পারেনি। আর কোনোদিন কোনো জাতি পারবেও না। তাই আসুন আমরা সবাই মিলে দুনিয়ার কল্যাণ ও আখিরাতের মুক্তির লক্ষ্যে আল কুরআনের সমাজ গড়ে পৃথিবীকে শান্তিময় করে তুলি।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।