সংবাদ শিরোনামঃ

তুরস্কে জনতার বিজয় ** এরদোগানের নেতৃত্বে তুরস্কের জনগণ রুখে দিল সেনা অভ্যুত্থান ** সঙ্কট নিরসনে প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য ** ২০ দলীয় জোট ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র ** তুর্কী গণপ্রতিরোধে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান ** রফতানি বাণিজ্যের নতুন চ্যালেঞ্জ : রাজনৈতিক অস্থিরতা ** মানবতাবাদী বিশ্ব ও সন্ত্রাসবাদী বিশ্বের মাঝখানে মুসলমানদের দাঁড় করিয়ে দেয়া হচ্ছে ** সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে প্রয়োজন দলমত নির্বিশেষে সবার ঐক্য : নজরুল ইসলাম খান ** তুর্কী জনগণকে অভিনন্দন ** জাতীয় স্বার্থ বনাম হুকুম তামিল করার দৌড়ঝাঁপ ** এ শিক্ষা আমাদের কোথায় ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ** দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজেও হরিলুটের অভিযোগ ** দুর্ভোগের আরেক নাম পাইকগাছার কপিলমুনি শহর ** কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক সঙ্কট : সেবা কার্যক্রম ব্যাহত ** কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা ** ইসলামী সংস্কৃতির আলোকেই হোক ঈদ আনন্দ ** বাংলা ভাগের জন্য মুসলমানরা নন হিন্দুরাই দায়ী ** কবির বিশ্বাস ** সানজিদা তাহসিনা বেঁচে থাকবে সবার মাঝে ** জাতির নিকট রেখে গেলেন অনেক প্রশ্ন **

ঢাকা, শুক্রবার, ৭ শ্রাবণ ১৪২৩, ১৬ শাওয়াল ১৪৩৭, ২২ জুলাই ২০১৬

ধ র্ম ও দ র্শ ন

ঈদ

গাজী মুহাম্মদ শওকত আলী
‘ঈদ’ শব্দের অর্থ : প্রতি বছর বিশ্বের মুসলমানদের জন্য দু’টি ঈদ বা আনন্দের দিন আছে। তার মধ্যে একটি হলো ‘ঈদ-উল ফিত্র’ আর অপরটি হলো ‘ঈদ-উল আজহা’। প্রথমেই জেনে নেয়া যাক ঈদ শব্দের অর্থ কি? ঈদ শব্দের অর্থ, আমরা জানি ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে উৎসব। ‘ঈদ’ এটি একটি আরবী শব্দ ‘আ’ইন ইয়া দাল’ যার আভিধানিক অর্থ হচ্ছে উৎসব বা পর্ব।

ঈদ এর উৎস : এবার জেনে নেই ঈদ এই আনন্দ উৎসবের বা পর্বের উৎস কি ? আরবের জাহেলি সমাজে ইসলাম আগমনের পূর্বে বিশেষ করে মদীনাতে প্রতি বছর নির্দিষ্ট দু’টি দিনে আনন্দ উৎসব, মেলা, খেল-তামাশা, নাচ, গান, জুয়া খেলা, পাশা খেলা ও বর্শা নিক্ষেপ ইত্যাদি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হতো। প্রতি বছরের এই দিনগুলোতে মদীনার লোকেরা খেল-তামাশা নাচ গান আর আনন্দ-উৎসবে মেতে উঠতো। হজরত আনাস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) যখন মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করে এলেন, তখন তিনি দেখতে পেলেন, মদীনার লোকেরা বছরের দু’টি নির্দিষ্ট দিনে আনন্দ উৎসব ও খেলাধুলা করছে। এক পর্যায়ে রাসূল (সা.) তাদের কাছে জানতে চাইলেন, এই নির্দিষ্ট দু’টি দিন কি ও কেন?

তারা জবাবে বললেন, ইসলাম আগমনের পূর্বে আমরা বংশানুক্রমে প্রতিবছর এই নির্দিষ্ট দু’টি দিনে খেল-তামাশা ও আনন্দ উপভোগ করতাম।

তাদের কথা শোনার পর রাসূল (সা.) বললেন, আল্লাহ তায়ালা এই দু’টি দিনের পরিবর্তে উৎকৃষ্টতর দু‘টি দিন নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তার মধ্যে একটি হলো শাওয়াল মাসের প্রথম তারিখ ‘ঈদ-উল-ফিত্র’ আর অপরটি হলো জিলহজ মাসের দশ তারিখ তথা ইয়াওমুল আরাফাহ বা হজের পরের দিন ‘ঈদ-উল-আজহা’। আজকে আমরা আলোচনা করবো ‘ঈদ-উল-ফিত্র’ সম্পর্কে।

প্রচলিত ঈদ-উল ফিতর : রহমত, মাগফিরাত ও নাজােেতর মাস মাহে রমাদান। কুরআন নাজিলের মাস মাহে রমাদান। লাইলাতুল কদরের মাস মাহে রমাদান। এই মাসে ২৯ বা ৩০ দিন সিয়াম পালন শেষে শাওয়াল মাসের প্রথম দিন‘ঈদ-উল ফিত্র’। এই দিনে বিশ্বের সকল মুসলমান ঈদ-উল ফিত্র উৎযাপন করে থাকি। ঈদের দিনে ধনী-গরিব সকল শ্রেণী-পেশার মুসলমান পরিষ্কার পরিছন্ন ও সাধ্যমতো নতুন পোশাক পরে গায়ে আতরের সুবাশ মেখে ঈদগাহে এক কাতারে দাঁড়িয়ে ঈদের সালাত আদায় করি। এটা বাস্তবেই একটি আনন্দের ও মহাখুশির ব্যাপার। সৃষ্টির আদিকাল থেকে শুরু করে সকল নবী রাসূলগণের আমলেই সিয়ামের বিধানপ্রচলিত ছিল এমনকি রাসূল মুহাম্মদ (সা.) এর প্রথশ জীবনে মাসে তিনদিন সিয়াম পালন করা হতো। তবে সে সময়ের সিয়াম ফরজ ছিল না আর ঈদেরও প্রচলন ছিল না।

রাসূল (সা.) মক্কা থেকে মদীনায় হিজরতের দ্বিতীয় বর্ষে বদর যুদ্ধের আগে সূরা আল বাকারার ১৮৩ নম্বর আয়াত নাজিলের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে সিয়াম ফরজ করা হয়। রমাদান মাসে সিয়ামসহ প্রতিটা ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাহ সহ নফল তথা তারাবিহ, কুরআন তিলওয়াত ও দান খয়রাত ইত্যাদি আমলের মাধ্যমে মুসলমানগণ আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে রহমত, মাগফিরাত, নাজাত লাভ করার সৌভাগ্য অর্জন করে। মুসলমানগণ আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের সে সুযোগ পেয়ে জীবনের সফলতা লাভ করতে পেরে;  ক্ষুধা ও পিপাসাকে জয় করা আর যৌন চাহিদাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরে, মিথ্যা বলা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে সক্ষম হয়। এই সকল কারণে সত্যিকার অর্থে আনন্দ প্রকাশের উদ্দেশ্যেই মুসলমানদের জন্য বিশ্বমানবতার মুক্তির দূত রাসূল মুহাম্মদ (সা.) দ্বিতীয় হিজরীর প্রথম শাওয়াল থেকে এই ঈদ-উল ফিত্র এর প্রচলন শুরু করেন।

বাংলাদেশ ভারত ও পাকিস্তানের মুসলমানগণ রমাদানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদরের চাইতেও অনেক বেশি গুরুত্বের সাথে শাবান মাসের মধ্যবর্তী সময়ে লাইলাতুশ শাবান বা ‘শবে বরাত’ নামেও একটি উৎসব পালন করে থাকে। অথচ আল্লাহ তায়ালা আল কুরআনে লাইলাতুল কদর সম্পর্কে সূরা ‘আল কদর’ নামে একটি সূরা নাজিল করেছেন। যদিও খোদ ইসলামের সূতিকাগার সৌদি আরবসহ মুসলিম বিশ্বের আর কোথাও লাইলাতুল বরাত বা ‘শবে বারাত’ পালন করতে দেখা যায় না। তবে হ্যাঁ সহীহ বুখারী ও মুসলিম শরীফের বিভিন্ন সূত্রের বিশ্বস্ত রেওয়ায়েত থেকে জানা যায়, রাসূল (স) ‘শাবান’ মাসের আগে অর্থাৎ ‘রজব’ মাসের ২৬ তারিখে মিরাজ করে ছিলেন। অতএব, রজব মাস আসলেই রাসূল (সা.) দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ আমাকে রজব ও শাবানের রবকত দান করো আর রমাদান পর্যন্ত আমাকে পৌঁছে দাও। অর্থাৎ রমাদানের রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতও আমাকে দান করো’ যার উল্লেখ আছে সহীহ আল বুখারী মুসলিম ও তিরমিজি শরীফে। মুসলমানগণ সারা বছর চাঁদ না দেখলেও রমাদানের চাঁদ দেখার চেষ্টা করে তবে হ্যাঁ রমাদান মাস শেষে শাওয়ালের চাঁদ দেখতে মোটেও ভুল করে না। তখন কার আগে কে চাঁদ দেখবে তার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। কারণ শাওয়ালের চাঁদ ঈদের বার্তা বহন করে, খুশি আর আনন্দ বিলিয়ে দেয়।

বিশ্বের দেশে দেশে মুসলমানগণ রমাদান মাস আসলেই রমাদানের প্রস্তুতির সাথে সাথে ঈদের জন্যও প্রস্তুতি নিতে দেখা যায়। অনেকেই আবার রমাদানের সিয়াম পালনের চাইতেও ঈদের প্রস্তুতিতে অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকে। রমাদানের ফজিলত রহমত, মাগফিরাত আর নাজাত পেল কি পেল না তার চাইতে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়া হয় ঈদে নতুন পোশাক হলো কি হলো না তার ওপর। অনেকেই আবার ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য আত্মীয় স্বজন ও বন্ধুদেরকেও ঈদে নতুন পোশাক উপহার দিতে দেখা যায়।

ঈদ ও ঈদের সালাতের সামাজিক গুরুত্ব : রমাদানের সিয়াম শেষে শাওয়ালের প্রথম তারিখে আমরা ঈদ-উল ফিত্র পালন করি। রাসূল (সা.) নির্দেশ করেছেন, ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে প্রত্যেকেই যেন তার ওপর নির্ধারিক সাদাকাতুল ফিত্র আদায় করে দেয়। কারণ যারা সাদাকাতুল ফিতরের হকদার তারাও যেন ঈদ আনন্দ উপভোগ করার জন্য নতুন জামা-কাপড় সহ প্রয়োজনীয় ঈদসামগ্রী কেনা কাটা করতে পারে। তাছাড়াও রাসূল (সা.) বলেছেন, যারা রমাদানের সিয়াম পালন করলো না তারা যেন আমার ঈদগাহে না আসে।

বিশ্বের সর্বত্র মুসলিম সমাজে ঈদ একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক উৎসব বা আনন্দ অনুষ্ঠান। বছর ঘুরে প্রতিবারই ঈদ আনন্দের বার্তা নিয়ে আর্বিভূত হয়। ঈদ মুসলিম সমাজের জড়তা ও সামাজিক ব্যবধান কমায় ও ঐক্য গড়ে তোলে। সাধারণত ঈদের সালাত ঈদগা বা খোলা মাঠে আদায় করা হয়। ঈদের জামায়াতে সামিল হয় একাধিক গ্রামের সব বয়সের মুসলমানরা। এ যেন মুসলমানের আনন্দের এক মহা মিলন মেলা। এতে পরস্পরের সাথে পরিচয় সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পুরানো সম্পর্কের মধ্যে গড়ে ওঠে আত্মীয়তার সম্পর্ক। ভাগ করে নেয় পারস্পরিক সুখ-দুঃখ আর দৃঢ় হয় সামাজিক বন্ধন। প্রকৃত পক্ষে ঈদ ও ঈদের জামায়াত পারস্পরিক পরিচয়ের মাধ্যমে সামাজিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করে ও সামাজিক অনাচার দূর করে। ঈদের দিনের বিশেষ কাজ হচ্ছে ঈদের জামায়াতে শরীক হওয়া, সাদাকাতুল ফিত্র পরিশোধ করা, কবর জিয়ারত করা, আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধরদের সাথে সাক্ষাত করা ইত্যাদি।

ঋতুবতী নারী ও শিশুদেরকেও ঈদগাহে যাওয়ার তাগিদ : সহীহ আল বুখারীর হাদিসে হজরত  আতিয়্যাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) এর পক্ষ থেকে আমাদেরকে সাবালেগা পর্দানশীল মহিলাদেরকে ঈদগাহে নিয়ে যাওয়ার জন্য আদেশ করা হতো। হজরত হাফসা (রা.) হতে সহীহ আল বুখারীর অপর এক হাদিসে বলা হয়েছে যে, ঈদগাহে ঋতুবতী নারীদেরকে আলাদা করে রাখা হতো। ঋতুবতী নারী ও শিশুদেরকে ঈদগাহে নেয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে তারাও যেন ঈদের সালাতের পর ঈমাম সাহেবের খুতবাহ শুনতে পারে। কারণ খুতবাহতে অনেক উপদেশ আদেশ নিষেধ ও দোয়া থাকে।

ঈদের রাতের ফজিলত : তাবরানী শরীফে উল্লেখ আছে যে, রাসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈদ-উল ফিত্র ও ঈদ-উল আজহার রাতে অর্থাৎ শাওয়াল মাসের প্রথম রাত আর জিলহজ মাসের দশম রাত জাগরিত থেকে আল্লাহর এবাদত-বন্দেগীতে মশগুল থাকবে, যেদিন  অন্যান্য সকল আত্মা মরিবে, সেদিন তার আত্মা মরবে না। অর্থাৎ কিয়ামতের দিন আতঙ্কে অন্যান্য লোকের আত্মা ভয়ে ভীত হয়ে মৃতপ্রায় হয়ে যাবে কিন্তু দুই ঈদের রাতে জাগরণকারীর আত্মা তখন ঠিকই ভয়ে ভীত হবে না।

ঈদ-উল ফিত্র এর দিনের সুন্নাহসমূহ : (১) খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠা, (২) জামায়াতের সাথে ফজরের সালাত আদায় করা, (৩) মিসওয়াক করা, (৪) ফজরের পর ঈদের সালাতের জন্য গোসল করা, (৫) সাধ্যমতো নতুন বা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন সাজ পোশাকের ব্যবস্থা করা, (৬) সকাল সকাল ঈদগাহে যাওয়া, (৭) ঈদগাহে যাওয়ার আগে মিষ্টি জাতীয় কিছু খাওয়া, সহীহ আল বুখারীর ৯০৫ নম্বর হাদিসে হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) হতে বর্ণিত আছে, রাসূল (সা.) ঈদ-উল ফিত্র এর দিন কিছু খেজুর না খেয়ে বাসা থেকে বের হতেন না এমনকি তিনি বেজোড় সংখ্যক খেজুর খেতেন বলেও উল্লেখ আছে, (৮) ঈদগাহে যাওয়ার আগে সাদ্কাতুল ফিত্র পরিশোধ করে দেয়া, (৯) একপথ দিয়ে পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া অন্যপথ দিয়ে আসা, (১০) ধীর গতিতে পথ চলা ও তাকবির (আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াআল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হাম্দ) বলা, (১১) ঈদগাহে ঈদের সালাত আদায় করা। আবু দাউদ শরীফে উল্লেখ আছে যে, রাসূল (সা.) সব সময় ঈদের সালাত ঈদগাহে আদায় করতেন। যদিও মসজিদে নববীতে সালাত আদায়ে ৫০ হাজারগুণ বেশি ফজিলত তবু তিনি ঈদের সালাত ঈদগাহেই আদায় করতেন। তবে তাঁর জীবনে একবার মাত্র বৃষ্টির কারণে মসজিদে নববীতে ঈদের সালাত আদায় করেছেন। (১২) ঈদের সালাত শেষে ঈমাম সাহেবের দেয়া খুতবাহ শোনা। সহীহ আল বুখারীর ৯১১ নম্বর হাদিসে হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল (সা.) আবু বকর, ওমর ও ওসমান (রা) এর সঙ্গে ঈদের সালাতে উপস্থিত ছিলাম্ তাঁরা সবাই খুতবাহর আগে সালাত আদায় করতেন। হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকেও একই রকম হাদিস বর্ণিত আছে।

ঈদের সালাত কখন ও কি ভাবে আদায় করবো : সহীহ আল বুখারীতে বর্ণিত, আবদুল্লাহ ইবনে বুস্র (রা.) বলেছেন, আমরা চাশতের সালাতের সময় (অর্থাৎ সূর্যোদয়ের পর লাল কেটে যাওয়ার পর) ঈদের সালাত আদায় করতাম। ঈগাহে বা খোলা ময়দানে আজান ও ইকামত ব্যতীত খুতবাহর পূর্বে ঈদের সালাত আদায় করতে হবে। ঈদের সালাত আদায়ের পদ্ধতি : (১) তাকবিরে তাহরিমা (কানের গোড়া পর্যন্ত হাত তুলে, ছয় তাকবিরের সাথে এই ঈমামের পেছনে দুই রাকাত ঈদ-উল ফিত্র এর সালাত আদায় করছি) আল্লাহু আকবার বলে বুকের ওপর হাত বেঁধে সানা পড়তে হবে, (২) সানা পড়া শেষে আবারো তিন বার আল্লাহু আকবার বলে কানের গোড়া পর্যন্ত হাত উঠাতে হবে, প্রতিবার আল্লাহু আকবার বলার মাঝে তিনবার সুবাহানআল্লাহ বলার মতো সময় থাকতে হবে। (৩) এবার আবারো হাত বুকে বেঁধে তাআউয, তাসমিয়া, সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা মিলাতে হবে, (৪) তারপর রুকু সিজদাহ শেষ করে যথারীতি দ্বিতীয় রাকাআত শুরু করতে হবে, (৫) দ্বিতীয় রাকাআতে সূরা ফাতিহার পর অন্য সূরা মিলাতে হবে এবার রুকুতে যাওয়ার আগে আবারো পূর্বের নিয়মে তিন তাকবির বলে হাত ঝুলিয়ে দিতে হবে অতঃপর, আবারো তাকবির বলে রুকু সিজদাহ শেষে তাশাহুদ ও দরুদ পাঠ করে ডানে ও বামে সালাম ফিরিয়ে ঈদ-উল ফিত্র এর সালাত শেষ করতে হবে। সালাতের শেষে ঈমাম সাহেব খুতবাহ দেবেন। খুতবাহতে অনেক উপদেশ ও দোয়া থাকে।

সর্বজনবিদিত একটি হাদিস দিয়ে শেষ করতে চাই, রমাদানের কোন এক জুমায় রাসূল (সা.) খুতবাহ দেয়ার সময় মিম্বরের প্রথম ধাপে পা রেখে বললেন, আমিন; দ্বিতীয় ধাপে পা রেখে আবারও বললেন, আমিন; অতপর: তৃতীয় ধাপে পা রেখেও বললেন আমিন।

তারপর রাসূল (সা.) মুসল্লিদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেন, এইমাত্র হজরত জিবরাইল আমিন এসে দোয়া করছিলেন, (১) যে ব্যক্তি রমাদান মাস পেল অথচ তার জীবনের গুনাহ মাফ করাতে পারলো না সে ব্যক্তির জন্য ধ্বংস, আমি বললাম, আমিন। তারপর দোয়া করলেন, (২) যে ব্যক্তি বৃদ্ধ পিতা-মাতা পেয়েও জান্নাতের ব্যবস্থা করতে পারলো না, সে ব্যক্তির জন্যও ধ্বংস, আমি বললাম, আমিন। অতপর জিবরাইল আমিন দোয়া করলেন, (৩) যে ব্যক্তি মুহাম্মদ (সা.) এর নাম শুনল, কিন্তু তাঁর সানে দুরুদ পাঠ করলো না, সে ব্যক্তির জন্যও ধ্বংস, আমি বললাম, আমিন। অতএব, আসুন ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে সিয়ামের হাকিকত বুঝে ফজিলত আদায়ের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে পরিশুদ্ধ করার চেষ্টা করি। তবেই স্বার্থক হবে আমাদের জীবনে ঈদ আনন্দ। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে যথাযথ আমল করার তৌফিক দিন, আমিন। 

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।