সংবাদ শিরোনামঃ

তুরস্কে জনতার বিজয় ** এরদোগানের নেতৃত্বে তুরস্কের জনগণ রুখে দিল সেনা অভ্যুত্থান ** সঙ্কট নিরসনে প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য ** ২০ দলীয় জোট ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র ** তুর্কী গণপ্রতিরোধে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান ** রফতানি বাণিজ্যের নতুন চ্যালেঞ্জ : রাজনৈতিক অস্থিরতা ** মানবতাবাদী বিশ্ব ও সন্ত্রাসবাদী বিশ্বের মাঝখানে মুসলমানদের দাঁড় করিয়ে দেয়া হচ্ছে ** সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে প্রয়োজন দলমত নির্বিশেষে সবার ঐক্য : নজরুল ইসলাম খান ** তুর্কী জনগণকে অভিনন্দন ** জাতীয় স্বার্থ বনাম হুকুম তামিল করার দৌড়ঝাঁপ ** এ শিক্ষা আমাদের কোথায় ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ** দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজেও হরিলুটের অভিযোগ ** দুর্ভোগের আরেক নাম পাইকগাছার কপিলমুনি শহর ** কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক সঙ্কট : সেবা কার্যক্রম ব্যাহত ** কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা ** ইসলামী সংস্কৃতির আলোকেই হোক ঈদ আনন্দ ** বাংলা ভাগের জন্য মুসলমানরা নন হিন্দুরাই দায়ী ** কবির বিশ্বাস ** সানজিদা তাহসিনা বেঁচে থাকবে সবার মাঝে ** জাতির নিকট রেখে গেলেন অনেক প্রশ্ন **

ঢাকা, শুক্রবার, ৭ শ্রাবণ ১৪২৩, ১৬ শাওয়াল ১৪৩৭, ২২ জুলাই ২০১৬

মুহাম্মদ আবদুল জব্বার
মাত্র ক’দিন আগে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ও বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম একজন সিপাহসালার মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে। শহীদ হিসেবে মহান আল্লাহর কাছে ফিরে গেলেন শহীদ মতিউর রহমান নিজামী। মহান আল্লাহর কাছে বিনীত প্রার্থনা তিনি যেন তাঁর এই প্রিয় বান্দার শাহাদাত কবুল করে শাহাদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদায় তাকে সমাসিন করেন। নেতৃত্বকে হত্যা করে কোনো আদর্শিক আন্দোলনকে যেমন স্তব্ধ করা যায় না, তেমনি শহীদ মতিউর রহমান নিজামী’র রেখে যাওয়া দ্বীনী আন্দোলনের কাজকেও স্তব্ধ করে রাখা যাবেনা। দ্বীন বিজয়ের লক্ষ্যে কাজ অব্যাহত থাকবে, বাংলাদেশের জমিন শহীদ নিজামী’র রক্তে ইসলামের জন্য উর্বর হবেই, ইনশাআল্লাহ।

এই পথের যাত্রীদের অপরাধ শুধু আল্লাহর পথে চলা। আল্লাহর পথে চলা যদি পৃথিবীর স্বার্থান্বেষী মহলের দৃষ্টিতে অপরাধ হয়, আল্লাহর পথের পথিকরা সেই অপবাদ-নিন্দা সয়ে নিতে কুণ্ঠিত নন কখনই। যদি যায় জীবন, ঝুলতে হয় ফাঁসির রশিতে তবুও তারা পিছপা নন। আল্লাহ তা'য়ালা বলেন- “তারা তাদেরকে (ঈমানদারদেরকে) শাস্তি দিয়েছিল শুধু এ কারণে যে, তারা প্রশংসিত, মহা পরাক্রান্ত আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছিল, ” (সূরা আল-বুরুজ ঃ ৮)।

যে পথ ধরে রবের দরবারে চলে গেলেন প্রিয় নেতা সে বন্ধুর পথের পথিকদের এই শপথে বলিয়ান হতে হয়-“ইন্নাস সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহইয়ায়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন।” অর্থ : “নিশ্চয়ই আমার নামাজ, আমার কুরবানী, আমার জীবন, আমার মরণ সকল কিছুই আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য” (সূরা আল আনাআম-১৬২)।

একজন নিরপরাধ মানুষকে রাষ্ট্রীয়ভাবে হত্যা করার চাইতে জঘন্য অপরাধ আর কি হতে পারে? কিছু প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া হলুদ রঙ মেখে উল্লাসে মেতে উঠেছে। তাদের বিবেক আর তথাকথিত বিবেকবানদের বিবেকের কাছে যে কেউ প্রশ্ন করতে পারে যে, যে মানুষগুলোকে (জামায়াত নেতৃবৃন্দকে) রাষ্ট্রীয়ভাবে হত্যার আয়োজন করা হচ্ছে, স্বাধীনতার চল্লিশ বছরে তাদের বিরুদ্ধে কেন কারও কোন অভিযোগ-অনুযোগ ছিলনা? হঠাৎ করে কেন মিথ্যা, বানোয়াট, বায়বীয় ও ধারণাবশত অভিযোগে এদের রাষ্ট্রীয়ভাবে হত্যা করা এত জরুরি হয়ে পড়েছে? নিশ্চয় এর উত্তর দিতে কথিত বিবেকবান ব্যক্তিরা আমতা আমতা করলেও সময়ের ব্যবধানে ইতিহাস হয়তো তাদের কাউকে ক্ষমা করবেনা। সারা বিশে^ আমরা যারা মুসলিম এবং আমরা যারা ইসলামী আন্দোলনের সাথে যুক্ত তারা এই হত্যাকাণ্ডে বিক্ষুদ্ধ, এমন রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের অপপ্রয়াসের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। সুমহান আল্লাহ নিশ্চয় সীমালঙ্ঘনকারীদের দুনিয়া ও আখেরাতে অপদস্থ করবেন, আর মজলুম ব্যক্তিদের সম্মানিত করবেন, ইনশাআল্লাহ।

এই জঘন্য ঘটনাকে দিব্যি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ছাড়া আর কি বলা চলে? মিথ্যা সাক্ষ্য ও খোঁড়া যুক্তি দিয়ে যারা একটি আদর্শ মুছে দিতে চায় তারা সত্যিই চরম নির্বোধ। যারা “সঙ্গে থাকলে সঙ্গি, দূরে থাকলে জঙ্গি” এমন উপাধি দিতে সামন্যতম কার্পণ্যবোধ করেনা তারা যে কতবড় নির্লজ্জ তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। তাদের মুখোশ জাতির সামনে উম্মোচিত, দেশের সচেতন মানুষ সুযোগ পেলেই এর কঠোর জবাব দেবে। এদের প্রতি মানুষের কোনো শ্রদ্ধা, ভালবাসা ও আস্থা অবশিষ্ট নেই। এরা গায়ের জোরে, অন্যায়ভাবে অস্ত্রবাজী করে ও প্রশাসনকে অপব্যবহার করে ক্ষমতার মসনদে টিকে আছে। এদের অবস্থা ঘুণেধরা তকতকে কাঠের ফ্রেমের  মতো, যে কোনো সময় তারা ক্ষমতার মসনদ থেকে খসে পড়তে পারে, যা সময়ের ব্যাপার মাত্র। জোর করে অনেক কিছু করা যায়, কিন্তু বেশী দিন ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না, যা ইতিহাসে বারবার প্রমাণিত।

আল্লাহ দেখতে চান তাঁর বান্দারা তাঁর পথে অবিচল কিনা, তাঁর কাজে অবিরত কিনা! শাহাদাৎ আল্লাহর বান্দার জন্য এক অপার নেয়ামত। আল্লাহ যদি তাঁর পথের পথিককে পছন্দ করে শাহাদাতের মর্যাদা প্রদান করতে চান তাহলে তার চেয়ে সৌভাগ্যবান আর কে হতে পারে? যুগে যুগে নানা মিথ্যা অভিযোগে অসংখ্য নবী-রাসুল ও তাদের অনুসারীদের হত্যা করা হয়েছে, আজকের ঘটনা এ আর নতুন কি?

হত্যা করে দ্বীনী আন্দোলনের পথে আমাদের পথচলাকে রুদ্ধ করে দেয়া, এই আদর্শকে হত্যা করাই ওদের মূল টার্গেট। কিন্তু ওরা জানেনা আমাদের পথচলা চিরকল্যাণের তরে, সত্যের তরে, যে পথ হেরার আলোয় উদ্ভাসিত। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সত্যকে যুগে যুগে দাবিয়ে রাখতে চেয়েছিল মিথ্যাশ্রয়ীরা, কিন্তু তাদের সেই স্বপ্ন কখনো পুরণ হয়নি, অনন্তকাল ধরে তা পুরণ হবেও না, ইন’শা’আল্লাহ।

ইসলামী আন্দোলনের বিরুদ্ধে কেন এই হীন নীল নকশা?

২০০৮ সালের আগেও বাংলাদেশের ইসলাম প্রিয় জনতা ও ইসলামী আন্দোলন নিয়ে তেমন বড় কোনো চক্রান্ত দৃশ্যমান না হলেও ২০০৯ থেকে ষড়যন্ত্রের নীল নকশা ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হতে থাকে। ২০০১ সালে চার দলীয় জোট ক্ষমতায় আসার পর জামায়াত সহ অন্যান্য ইসলামী সংগঠনগুলো ইসলামের প্রচার-প্রসারকে বেগবান করেছিলেন। ইসলামী তাহজীব-তমুদ্দুন ও ইসলামী শিক্ষার বিভিন্ন দিক ও বিভাগের প্রভূত সম্প্রসারণ হচ্ছিল। এতে দেশ ও দেশের বাইরের ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী নামের মানবতার শত্রুরা নড়ে চড়ে উঠে। ইসলামী জাগরণকে স্তব্ধ করে দেয়ার প্রয়াসে নতুন ফন্দি ফিকির করতে শুরু করে। প্রথমে জামায়াতের নেতৃবৃন্দকে রাজাকার এরপর যুদ্ধপরাধী তারপর মানবতাবিরোধীর তকমা লাগিয়ে ট্রাইব্যুনাল গঠন করে একে একে হত্যার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠে। যে ট্রাইব্যুনালের বিচারিক স্বচ্ছতা, আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে দেশে-বিদেশে অসংখ্য প্রশ্ন উঠেছে। বিচারের নামে নির্মম-নৃশংস হত্যা উৎসবের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে বাংলাদেশে আগামী দিনে কল্যাণমূলক ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করে দেয়া। এর ধারাবাহিকতায় জামায়াতের জাতীয় নেতৃবৃন্দদের হত্যা করে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মনোবল ভাঙ্গার হীন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে! তাই জাতীয় নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি সর্বপর্যায়ের নেতা কর্মীদের আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে নির্বিচারে হত্যা, মিছিল-সমাবেশে গুলি করে হত্যা ও মিথ্যা মামলায় গণগ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে নির্মমতার সীমা ছাড়িয়ে গেছে, যা সভ্য পৃথিবীতে বিরল। কয়েক লাখ মিথ্যা মামলায় হাজার হাজার বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা কারা প্রকোষ্টে মানবেতর জীবন যাপন করছে। প্রতিনিয়ত আইন লংঘন করে শ্যোন এরেষ্ট করা হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আদালতের নির্দেশ অমান্য করে নির্বিচারে বিচার বর্হিভূত হত্যাকাণ্ড সংঘটনের এমন অহরহ অভিযোগ দেশী-বিদেশী মানবাধিকার সংস্থার। কিন্তু কে শুনে কার কথা?

শহীদ নিজামীরা চির অম্লান অক্ষয়

আমীরে জামায়াত শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী একটি সংগ্রাম এবং সমাজ বিপ্লবের মূর্ত প্রতীক। তিনি সবসময় আধিপত্যবাদ ও সাম্্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে জাতিকে জাগ্রত করার জন্য অগ্রসৈনিকের ভূমিকা পালন করে গেছেন। শহীদ মতিউর রহমান নিজামী আজীবন দেশ, জাতি ও ইসলামের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের প্রতিটি গণআন্দোলনে শহীদ মাওলানা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। ১৯৮২-৯০ সাল পর্যন্ত তদানীন্তন স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে গণআন্দোলনে মাওলানা নিজামীর ভূমিকা স্মরণীয়। তাঁর সাহসী ও আপোষহীন ভূমিকা ও নেতৃত্বের কারণেই স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড গণপ্রতিরোধ গড়ে ওঠে এবং ১৯৯০ সালে জাতি স্বৈরশাসন থেকে মুক্তি লাভ করে। ১৯৯১ সালে জামায়াতের ফর্মুলা অনুযায়ী নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের এই ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে কেয়ারটেকার সরকারের বিধান সংবিধানে অন্তর্ভূক্ত করার জন্য জামায়াতে ইসলামীর সংসদীয় দলের নেতা হিসেবে সংসদে মাওলানা নিজামী বিল উত্থাপন করেন। পরবর্তীতে সংসদের ভিতরে ও বাইরে জামায়াতে ইসলামীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে কেয়ারটেকার সরকারের বিধান সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে মাওলানা নিজামীর সংগ্রামী ভূমিকা জাতির মধ্যে নতুন প্রাণের সঞ্চার করে। তাঁর নিরলস প্রচেষ্টায় দেশের ইসলামী ও জাতীয়তাবাদী শক্তিসমূহ আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়। আওয়ামী লীগ কর্তৃক ইসলাম ও মুসলমানদের ঈমান-আক্বিদা ধ্বংস, মাদরাসা শিক্ষা বন্ধের চক্রান্ত, কুখ্যাত জননিরাপত্তা আইনের ছদ্মাবরণে বিরোধী দল দমন, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও দেশের অখণ্ডতা বিরোধী পার্বত্য চুক্তি, গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির নামে প্রহসন, সর্বোপরি দেশ-জাতিকে ধ্বংসের বহুমুখী অপতৎপরতার বিরুদ্ধে মাওলানা নিজামীর ভূমিকা ছিল কালজয়ী, স্মরণীয় ও বরণীয়। ১/১১ জরুরি সরকারের সময়েও তিনি জোরালো ভূমিকা পালন করেন। তিনিই রাজনীতিবিদদের মধ্যে প্রথম যিনি জরুরি সরকারের জনবিরোধী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কথা বলেন।

শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী একটি নাম ও একটি ইতিহাস। তিনি শুধু বাংলাদেশের সম্পদ নন বরং মুসলিম উম্মাহ তথা বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম সিপাহসালারও বটে। শহীদ নিজামী একাধারে জননন্দিত নেতা, দক্ষ পার্লামেন্টারিয়ান, সৎ-দক্ষ মন্ত্রী ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী চিন্তাবিদ, বরেণ্য আলেমে দ্বীন, পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক এবং ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা। সর্বোপরি তিনি বিশ্বখ্যাত মুসলিম স্কলার। বিশ্বের শীর্ষ ৫০০ ইসলামীক স্কলারের মধ্যে তার অবস্থান ছিল ৪৩তম। তিনি একজন সুসাহিত্যিক। তার প্রজ্ঞাময়, পাণ্ডিত্যপূর্ণ ও সুচিন্তিত লেখনি নতুন প্রজন্মকে ঐশী জ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দিকনির্দেশনা দিয়েছে। মূলত সরকার প্রতিহিংসা চরিতার্থ করে জামায়াতকে নেতৃত্ব শূন্য ও দেশকে পরাশ্রয়ী করদরাজ্য বানানোর গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মিথ্যা অভিযোগ, সাজানো ও বানোয়াট সাক্ষী, ফরমায়েসী বাদী ও দলীয় প্রসিকিউশনের মাধ্যমে একজন বরেণ্য ও বর্ষীয়ান আলেমে দ্বীনকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করে এবং সে ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় একজন বয়োবৃদ্ধ জাতীয় নেতাকে হত্যা করে।

শহীদ মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা, বানোয়াট ও কল্পনাপ্রসূত। পাবনার একজন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারসহ ৩ জন বিশিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ট্রাইব্যুনালে বলেছেন, মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সাথে তাঁর দূরতম সম্পর্ক নেই। মূলত বিভিন্ন প্রকার প্রলোভন ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে সাক্ষীদেরকে মিথ্যা ও শেখানো সাক্ষী দিতে বাধ্য করা হয়েছে। পাবনার যে দু’টি এলাকার ঘটনার সাথে তাকে জড়িয়ে সরকার মিথ্যা ও সাজানো সাক্ষীর ভিত্তিতে এক বরেণ্য আলেম ও বর্ষীয়ান জাতীয় নেতাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং কল্পনাবিলাস বৈ কিছু নয়। মূলত ১৯৮৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী হিসেবে এলাকায় নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনার সময় সর্বপ্রথম তিনি ঐ এলাকায় গিয়েছিলেন। এর আগে তিনি কোন দিন ঐ এলাকায় যাননি। অথচ তাকে ১৯৭১ সালের ঘটনায় জড়িয়ে গুরুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। ধূলাউড়ি এলাকার যে অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে, সে অভিযোগের স্বপক্ষে একজন সাক্ষী বলেছেন, সেখানে তিনশত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আরেকজন বলেছেন ২৭ জনকে হত্যা করা হয়েছে এবং অপর আরেকজন বলেছেন ১৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে। সাক্ষীদের এ পরস্পর বিরোধী অসঙ্গতিপূর্ণ বক্তব্য থেকে প্রতীয়মান হয় যে, আমীরে জামায়াতের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ সাজানো ও ভিত্তিহীন। রাষ্ট্রপক্ষ এই বর্ষীয়ান জাতীয় নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগের স্বপক্ষে কোনো ডকুমেন্ট আদালতে উপস্থাপন করতে পারেনি। সাজানো সাক্ষী ও ফরমায়েসী বাদীর মাধ্যমে মাওলানা নিজামীর মতো একজন বরেণ্য জাতীয় নেতাকে প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করে কাপুরুষোচিতভাবে হত্যার মাধ্যমে দেশের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করা হয়েছে। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে এবং হত্যা করে অতীতে কোনো আদর্শকে নির্মূল করা যায়নি, আর শহীদ নিজামীর রেখে যাওয়া আন্দোলনকেও কখনো নির্মূল করা যাবে না, ইনশাআল্লাহ।

ইসলামের অনুসারীদের শাহাদাতের রক্ত যে ময়দানে ঝরে সেই ময়দান ইসলামের জন্য উর্বর হয়, ইসলামপন্থীরা নতুন শক্তিতে বলিয়ান হয়, ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র ভেস্তে যায়। সত্যের বিজয় ঘনীভূত হয়। বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের হত্যা করে যারা দেশ থেকে ইসলামী তাহজীব-তমুদ্দুন ও ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে চায় তাদের স্বপ্ন কখনো পূরণ হবেনা, ইনশাআল্লাহ। শহীদের রক্ত কখনো বৃথা যেতে পারেনা। মাওলানা নিজামী ও ইসলামী আন্দোলনের নেতা কর্মীদের হত্যা করে যারা ইসলামের অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে, তাদের জেনে রাখা উচিত শহীদ নিজামীরা চির অম্লান অক্ষয়।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।