কুরবানির ইতিহাস ও তাৎপর্য
॥ মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ॥
‘কুরবানি’ ফার্সি, উর্দু ও বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত শব্দ। ‘কুরবানি’ আরবি ‘কুরব বা কুরবান’ শব্দ থেকে নির্গত। কুরব-এর আভিধানিক অর্থ নৈকট্য বা সান্নিধ্য। এজন্য একে কুরবানি বলা হয়। কেননা কুরবানির মাধ্যমে বান্দার প্রভুর নৈকট্য অর্জন করাই উদ্দেশ্য। এই অর্থে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশে বান্দার পালনকৃত যেকোনো ইবাদতকে কুরবানি বলা যায়। কিন্তু ইসলামী শরীয়তে কুরবানি বলা হয়- নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে প্রভুর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে নির্ধারিত পশু জবেহ করা। পবিত্র কুরআনে কুরবানির একাধিক সমার্থক শব্দ ব্যবহার হয়েছে। ১. নহর: নহর অর্থ গলায় ছুরি চালানো। আল্লাহ তায়ালা সূরা কাউসারে কুরবানির অর্থে নহর শব্দ উল্লেখ করেন। এজন্য কুরবানির দিনকে ইয়াওমুন নহর বলা হয়। ২. নুসুক : নুসুক অর্থ কুরবানির পশু। (আল-কামূসুল জাদীদ) কুরবানির সমার্থক অর্থে নুসুক শব্দটি সূরা আন’আমের ১৬২ নম্বর আয়াতে উল্লেখ করা হয়। ৩. মানসাক : যার অর্থ ইবাদতের পদ্ধতি ও পন্থা। (আল-কামূসুল জাদীদ) কুরআনে মানসাক শব্দটিও কুরবানির সমার্থক অর্থে ব্যবহার হয়েছে। (সূরা হজ: ৩৪)। হাদিসে কুরবানির সমার্থক শব্দ আজহা বা উজহিয়্যা’ ব্যবহার হয়েছে। এজন্য হাদিসের ভাষায় কুরবানির ঈদকে ইয়াওমুল আজহা বলা হয়।
কুরবানির ইতিহাস এক প্রাচীন ইতিহাস। হযরত আদম আ.-এর যুগ থেকেই কুরবানির বিধান প্রচলিত। প্রথম কুরবানি সংঘটিত হয় তাঁর পুত্রদ্বয় হাবিল ও কাবিলের মাধ্যমে। তখন কুরবানি কবুল হওয়া না ....বিস্তারিত
আরাফাতের দিনের গুরুত্ব ও ফজিলত
॥ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ॥
আরাফাতের দিন হলো এক মর্যাদাসম্পন্ন দিন। জিলহজ মাসের ৯ তারিখকে আরাফাতের দিন বলা হয়। এ দিনটি অন্যান্য অনেক ফজিলত সম্পন্ন দিনের চেয়ে বেশি মর্যাদার অধিকারী। ইসলাম ধর্মের পূর্ণতা লাভ, বিশ্ব মুসলিমের প্রতি আল্লাহ্র নিয়ামতের পরিপূর্ণতা প্রাপ্তির দিন। হাদিসে বলা হয়েছে, তারিক ইবনে শিহাব (রাহ.) থেকে বর্ণনা করেন যে, ইহুদিরা ওমর (রা.)-কে বলে, ‘আপনারা এমন একটি আয়াত তিলাওয়াত করে থাকেন যদি সে আয়াতটি আমাদের প্রতি অবতীর্ণ হতো, তাহলে আমরা সে দিনটিকে ঈদ হিসেবে উদযাপন করতাম।’ ওমর (রা.) এ কথা শুনে বলেন, ‘আমি অবশ্যই জানি কখন তা অবতীর্ণ হয়েছে, কোথায় তা অবতীর্ণ হয়েছে, আর অবতীর্ণ হওয়ার সময় রাসূলুল্লাহ (সা.) কোথায় ছিলেন। হ্যাঁ, সে দিনটি হলো আরাফাতের দিন, আল্লাহ্র শপথ! আমরা সে দিন আরাফাতের ময়দানে ছিলাম। আয়াতটি হলোÑ
‘আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দীন পূর্ণাঙ্গ করেছি ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করেছি এবং ইসলামকে তোমাদের জীবনবিধান হিসেবে মনোনীত করেছি।’ সূরা মায়িদা : ৩, (সহিহ বুখারি)।
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে রজব (রহ.)সহ অনেক ওলামায়ে কেরাম বলেছেন যে, এ আয়াত নাজিলের পূর্বে মুসলিমগণ ফরজ হিসেবে হজ আদায় করেননি। তাই হজ ফরজ হিসেবে আদায় করার মাধ্যমে দীনে ইসলামের পাঁচটি ভিত্তি মজবুতভাবে প্রতিষ্ঠিত হলো। (ইবনে রজব, লাতায়েফুল মাআরেফ, পৃ. ৪৮৬)।
ওমর (রা.) বর্ণিত হাদিসের ব্যাখ্যায় ইবনে আববাস (রা.) বলেন, সূরা মায়িদার ....বিস্তারিত
জায়নবাদ এবং তার সখা
॥ আলী আহমাদ মাবরুর ॥
বর্তমানে আমরা বিশ্বের অনেক স্থানেই ফ্যাসিস্ট দর্শনের উত্থান দেখতে পাচ্ছি। এ ফ্যাসিস্ট দর্শনের দোহাই দিয়ে কোনো একটি ধর্ম বা গোত্র বা বর্ণকে শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হচ্ছে আর অন্য সব ধর্ম ও গোত্রের মানুষকে নির্বিচারে দমন করা হচ্ছে। তাদের ভূমি, আবাসস্থল দখল করা হচ্ছে। আবার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জাতির অভ্যন্তরে নানা ধরনের বিভক্তি-বিভাজন সৃষ্টি করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে আগ্রাসী রাজনৈতিক দর্শন হিসেবে অন্তত দুটি মতবাদের কথা পরিষ্কার করেই বলা যায়। এর একটি হলো উগ্র হিন্দু মৌলবাদ, যার বিচ্ছুরণ ঘটেছে আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে। আর অন্যটি হলো জায়নবাদÑ যার আগ্রাসন চলতি সময়ে আমরা গাজায় নিরন্তর দেখতে পাচ্ছি। যদিও জায়নবাদের ধারক-বাহকেরা শুধু গাজা বা ফিলিস্তিন নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যকেও নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে আসার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আর বিশে^র শান্তিকামী মানুষ; বিশেষ করে মুসলিম জনগোষ্ঠী এ দুটি আগ্রাসী ও ধ্বংসাত্মক দর্শনের নেতিবাচক প্রভাব চড়া মূল্য দেয়ার বিনিময়েই মোকাবিলা করে যাচ্ছে।
জায়নবাদ এমন এক ফ্যাসিস্ট মতবাদ, যার চাপে মুসলিমরা; বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের মানুষ বিগত ৮০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পিষ্ট হয়ে আসছে। জায়নবাদ মূলত ইহুদিদের একটি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন। এ আন্দোলনের মূল লক্ষ্য গোটা দুনিয়ায় ছড়িয়ে থাকা ইহুদিদের একত্রিত করে ফিলিস্তিনে একটি ইহুদি-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা এবং সেখান থেকে গোটা দুনিয়া রাজত্ব করা। থিওডোর হার্জেলকে জায়নবাদী আন্দোলনের ....বিস্তারিত
মোশাররফ হোসেন খান-এর কবিতা
নতজানু
নত হতে হতে উটের পিঠের মতো হয়ে গেছে তোমার পিঠ।
আর কত নত হবে!
পেছনে তাকাও...
দেখ তোমার পিতা ও পিতামহের পিঠে
সহস্র চাবুকের ক্ষত দগ দগ করছে।
সে তো কেবল নত না হবার কারণে।
আফসোস!
পুরুষোত্তম ঔরস থেকে তোমার মতো
কাপুরুষ জন্মগ্রহণ করেছে।
মানুষ কি শুধু অভ্যাসের দাস!
বৃক্ষ নত হয়
আবার উঠে দাঁড়ায়।
কিন্তু মানুষ—-
মানুষ একবার নত হলে আর কখনো
উঠে দাঁড়াতে পারে না...!
....বিস্তারিত
জাকির আবু জাফর-এর কবিতা
বখতে নসরের চোখ
ক্ষুধার্ত সিংহটি দানিয়েলের দৃষ্টির গন্ধ শুঁকছিল
গুহার দেয়ালে গর্জনের চিহ্ন তখনো জ্বলজ্বলে
গুহাটি এখন অলৌকিক জ্যোতির জংশন!
কেননা গুহায় অদৃশ্যের ঘ্রাণ হাতে দানিয়েল
তার মুখ জোছনা ছাড়িয়ে আরও উজ্জ্বল
চোখ দুটি অনন্তের পবিত্র শিখা
ফলে সিংহের তীব্র হিংস্রতা এখন বিগলিত
শ্রদ্ধার গোলাপ!
দানিয়েলের পায়ের কাছে সমর্পিত সিংহটি
দৃশ্যটি দুলিয়ে দিল বখতে নসরের পৃথিবী
মৃত্যুর জিহ্বা যেন নসরের দিকে লকলকে
এখনই বুঝি গলিয়ে দেবে রাজমুকুট
সীমাহীন ক্ষমতার আঙুল কী অসহায়, ভাষাহীন
যার পায়ে সিংহ লুটায় তার নিশ্বাস
নিভিয়ে দেয়া এতই সহজ!
সহসা আকাশে উড়লো নসরের চোখ, দেখলো-
উড়ন্ত মেঘের দল যেন ফেরেশতাদের ডানা
গোটা আকাশ যেন মিকাঈলের মুখ!
নীলাম্বর মৃত্যুরঙে জ্বলছে!
মাঝে মাঝে ডাকাত পড়ে মানবজাতির মহলে
ইতিহাসের ছাতার নিচে এরাই হাঙর, দানব, দৈত্য ও ঐতিহ্যের চোরাকারবারি
সভ্যতার গালে থাপ্পড় চড়ায়
পৃথিবীর সকল স্বৈরাচার!
....বিস্তারিত
আবুল খায়ের নাঈমুদ্দীন-এর দুটি কবিতা
আর কত ধৈর্য
আর কত ধৈর্য ধরতে বলো
দেয়ালটা পিঠে ঠেকে গেছে
মাথার চুল পেকে গেছে
দেহের চামড়া কুঁচকে গেছে।
আমরা কি আলোর মুখ দেখব না?
আমরা কি ছাদের নিচে থেকে থেকে
সাদা চামড়ার পিশাচ হতে চাই?
আমাদের রক্ত কি ওমর আলী হায়দারের নয়
খালেদ বিন ওয়ালিদের উত্তরসূরি কারা
আমরা কি দাবি করি না মুসলিম?
আর কত সময়ের অপেক্ষা।
এসো নিজের রক্তকে প্রশ্ন করি কেন তুমি লাল?
যদি না প্রতিবাদ করো
যদি নতুন কিছু করতে পারো
যদি তোমার রক্তে গর্জন না থাকে
মাথা নুয়ে থাকবে চিরকাল।
বকরি ঈদ
হিসাব কষে সংসার চালায় বউ
বাজারের ফর্দ তার প্রয়োজনে হয়।
অন্যদের প্রয়োজনে বাজারের তালিকা সহসা নাকচ।
বেচারাকেই দিতে হবে সব টাকা
যদিও গৃহিণী চাকরি করেন,
মাসের মাইনা পুরাটা শেষ হলে বলবে
এই মাসের বাকি দিনগুলো আলু ভর্তা চলবে।
ঈদের বোনাসসহ পুরাটাই তার জমা
বকরি ঈদের খরচটা বেশি হয়।
স্বামী বেচারা বললো,
চাকরি তো তুমিও করো এবার অর্ধেক তুমি দিও।
জ্বললো চুলাবিহীন আগুন;
লাগবে না কুরবানি।
টাকা যদি আমাকেই দিতে হয়
তোমার বাড়িতে দেবো কেন?
স্বামী বেচারা ফ্যাল ফ্যাল করে
কাচের জানালা দিয়ে বাইরের নীল
আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকলো।
....বিস্তারিত
আসাদুজ্জামান আসাদ-এর কবিতা
চাঁদের জোসনা
চাঁদের জোসনায় তুলেছি দু’হাত
বল না, আঁচল গুছিয়ে নিতে
নিঃশব্দের গভীরে হারিয়ে যেতে
চাঁদের জোসনায় বলিনি, না বলা কথা
শুনিনি ঝর্ণার কলতান
ছুটেছে সাগর পানে, মহামিলনে
জানি না পাথরের কান্না, যে কান্না সহসা থামিয়ে দিও না।
পর্যটকের চোখে খুঁজেছি শেকড়
জানতে চাই শিল্পের শ্রেষ্ঠ কারিগর
জানতে চাই, জন্মের মৌন আয়োজন
কেড়ে নিও না চাঁদের আলো, চোখের মুগ্ধতা
কেড়ে নিও না সময়, খুঁজব জীবন
হৃদয়ে মেলে ধরি, চাঁদের জোসনা।
....বিস্তারিত
আলম শামস-এর একগুচ্ছ
কাব্যকণা
মনের কথা
চোখের মাঝে চোখ দেখা যায়
এমন চোখই চাই,
মুখ দেখলে মনের কথা
শুনতে আমি পাই।
অনুভব
তপ্ত দুপুর রপ্ত করে
চলছি আমি একা
চাঁদের দেশে মেঘের দেশে
হয়নি আজও দেখা।
সবুজ গিরি শ্যামল আঁচল
ঘুরছি আমি রোজ
মাটির কোলে পাখির বোলে
পাইনি কোথাও খোঁজ।
সোনার পরশ নরম আদর
চাচ্ছি আমি আজ
তাই বুঝি ওই উঠছে রবি
বাধা শুধু লাজ।
জীবন তরী
তুমি ছাড়া পৃথিবীতে আর
নেই কোনো সুন্দর,
জীবন তরী নোঙর করার
নেই কোনো বন্দর।
দীর্ঘ অনুতাপ
নিঝুম রাতে জোনাক আলোর
পেয়েছি উত্তাপ
আমার মনে তোমার ধ্যান
দীর্ঘ অনুতাপ।
সকাল সাঁঝে তোমার বিহন
বাজে করুণ সুর,
তোমার আমার মধুর মিলন
অনেক অনেক দূর।
যমুনার তীর
আমার বক্ষে আছে কক্ষ
কক্ষে আছো তুমি
স্বপ্নজুড়ে শীতলতা
গভীর প্রেমভূমি।
মুক্ত পাখি মুক্ত আকাশ
সবুজ সুখের নীড়
তোমার চোখে ভাসে যেন
ঐ যমুনার তীর।
....বিস্তারিত
শাহীন আরা আনওয়ারী-এর কবিতা
বিদ্রোহী কবি সম্রাট
কী নিখুঁত বাস্তবতা।
ওগো গুণী কবি
তুমি জানো সব।
সমাজের কুসংস্কার
কষ্ট দুঃখ ব্যাকুলতা।
নিজের লেখাতেই
ছিলে মশগুল।
তুলে এনেছো
সমাজের যত ভুল।
মন মানসিকতা তোমার
অনেক সাহসী নির্ভুল জয়জয়কার।
মানুষ করতে চেয়েছো
কোলে পিঠে আগলেছো
পিছিয়ে থাকা
এই মানুষগুলোকে।
অযথা ভুল বুঝে
কষ্ট সমালোচনার ঝড়ে
তোমার জীবনে কষ্ট এনেছে ডেকে।
তবুও তুমি অসাধারণ কবি
গান কবিতার উজ্জ্বল রবি।
কাঁটা বিছানো পথেই চলেছ
সত্যি উচ্চারণে জঞ্জাল ভেঙেছ।
তুমি বিদ্রোহী তুমি প্রেমিক।
তীব্র যন্ত্রণার মাঝেও
তোমার লেখনী ছিল সঠিক।
তোমার তুলনা
তুমি নিজেই।
সাহিত্যের আকাশ
আটলান্টিক অথৈ।
খালি পকেট
অভাব অভিযোগ
সহ্য করেছ
কী অসীম দুর্ভোগে
সারাটি জীবন কাটিয়েছ।
তবুও তুমি হারাওনি মনোবল।
তুমি দিশারী তুমি কাণ্ডারি
তুমি নক্ষত্রের চেয়েও
দামি উজ্জ্বল।
....বিস্তারিত
আবু হাসান তাহের-এর কবিতা
সাফা মারওয়া
আজ থমকে দাঁডিয়েছে পৃথিবী
বন্ধ হয়ে গেছে সব।
সাফা থেকে মারওয়া, মারওয়া থেকে সাফা
মা হাজেরার ক্ষুধা-তৃষ্ণায় অবিরাম ছুটে চলা
বাঁচার জন্য চাই একটু খানি পানি
সেই থেকে ছুটে চলা সকল উম্মত।
আজ থমকে দাঁড়িয়েছে পৃথিবী
অবরুদ্ধ রয়েছি নিজ ঘর।
অথচ আমার আমার বলে কত চিৎকার
এই ঘর এই সংসার কিছু কি আমার
গরিবের হক মেরে জগৎ সংসার
উঁচু উঁচু ঘর আর দামি দামি বাড়ি
সব কিছু ফেলে আজ লাশ সারি সারি।
তবু নাকি চোখ খুলে, বুঝে নাকি মন
ক্ষমতার দম্ভে ভরা অন্ধ সজন।
বন্ধ দেয়ালে বাস রাসূল সা. স্বজন।
কত ভাই হয়ে গেল অবিরাম খুন
কত যে হারিয়েছি হয়েছি যে গুম।
রক্তের লহুতে হয়ে গেছে বান
চেয়েছিল তারা শুধু স্রষ্টার সম্মান।
বাতায়ন খুলে দেখ হয়ে গেছে ভোর
জান্নাত জাহান্নাম নয়তো দূর।
....বিস্তারিত
ঈদের নামায
॥ মাওলানা মুফতি মো. ওমর ফারুক ॥
ঈদ আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ খুশি বা আনন্দ। ঈদ বলতে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা বা কুরবানির ঈদকে বোঝায়। প্রতি বছর মুসলিম উম্মাহ দুটি ঈদ উদযাপন করে। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর শাওয়াল মাসের প্রথম দিন, যা ঈদুল ফিতর নামে পরিচিত। আর একটি জিলহজ মাসের দশ তারিখ, যা ঈদুল আজহা বা কুরবানির ঈদ হিসেবে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর নিকট পালিত হয়। যার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। ঈদ মুসলমানদের আনন্দের দিন, পুরস্কারপ্রাপ্তির দিন দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর ফল বা রেজাল্ট প্রকাশের দিন। কিন্তু রেজাল্ট কাদের জন্য, যারা পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ভালোভাবে পরীক্ষা দিয়েছে, তারাই কেবল ফলের প্রত্যাশা করতে পারে। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, এদেশে মাহে রমজানের এক মাসের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেও অনেক মুসলমান প্রথম সারির পুরস্কার নেয়ার লোভে সবার আগের কাতারে বসেন। বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। তারা যতই সেজেগুজে বসবে। কোনো লাভ নেই। তারা সেদিন মাঠ থেকে অপদস্থ হয়ে, তিরস্কৃত হয়ে বাড়ি ফিরবে। যদিও তা বাহ্যিক দৃষ্টিতে দেখা যায় না।
প্রাত্যহিক জীবনেও দেখা যায়, কেউ হাসে, কেউ কাঁদে, কেউবা জীবনের সকল রঙ্গখেলার সমাপ্তি ঘটিয়ে হাসপাতালের বিছানায় অথবা জেল-হাজতের ভেতরেই জীবন নামের ইতি টানেন। কবর নামক বাহনে চড়ে পরপারে রওনা করেন। খুশি বা আনন্দ দুনিয়ায় সবার জন্য সবসময় নয়। কালের আবর্তনে জীবনের খেলাঘরে যারা ভালো করে, তারাই কেবল সফল। তদ্রƒপ ....বিস্তারিত
কুরবানি ঈদের পূর্বপ্রস্তুতি
সোনার বাংলা ডেস্ক : বছর ঘুরে আবারও চলে এসেছে পবিত্র ঈদুল আজহা। পবিত্র এই দিনটি কেটে যায় নানারকম ব্যস্ততায়। অতিথি আপ্যায়ন করা থেকে শুরু করে নানারকম রান্না করা, কুরবানির মাংস কাটাকাটি, এরপর ভাগ-বাঁটোয়ারা করার কাজ যথেষ্ট সময়ের ব্যাপার। তাই কিছু কাজ এখন থেকে গুছিয়ে রাখলে ঈদের দিন বাড়তি ঝামেলা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। আসুন, জেনে নেই কী কী প্রস্তুতি আপনি এখন থেকেই নেয়া শুরু করবেন-
# রান্না করার একটি বড় উপাদান হলো মসলা বাঁটা। এই কাজ বেশ ঝামেলারও বটে। তাই ঈদের আগেই রান্নায় যে মসলাগুলো ব্যবহার করবেন, তা পাটায় বেঁটে কিংবা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে ফ্রিজে রেখে দিন। এতে করে ঈদের দিন রান্না করার সময় আপনার অর্ধেক কাজের ঝামেলা কমে যাবে।
# এখন থেকেই ফ্রিজ পরিষ্কার করে গুছিয়ে রাখুন। প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া অপ্রয়োজনীয় জিনিস সরিয়ে ফেলুন।
# রান্নাঘর আগে থেকেই পরিষ্কার করে গুছিয়ে রাখুন। রান্নার প্রয়োজনীয় সামগ্রী গুছিয়ে একসাথে রাখুন। যেন ঈদের দিন ব্যস্ততায় রান্নার সময় জিনিসপত্র খুঁজতে সময় না ব্যয় হয়।
# ঈদের বাজারের জন্য এখন থেকেই প্রয়োজনীয় জিনিস সামগ্রীর একটা লিস্ট করে ফেলুন। লিস্ট অনুযায়ী বাজার করে আগে থেকে গুছিয়ে রাখুন।
# বাড়িতে অতিথি এলে তাদের যেসব থালা বাসনে খাবার পরিবেশন করবেন, তা আগে থেকেই পরিষ্কার করে রাখুন।
# বাসার আনাচে-কানাচের ধুলাবালি ঝেড়ে পরিষ্কার করে নিন। এছাড়া ঘরের জিনিসপত্র যেমন খাবার টেবিল, ....বিস্তারিত
আনুগত্য ও ত্যাগের মহিমায় হযরত ইব্রাহীম (আ.) ও তার পরিবার
॥ এডভোকেট সাবিকুন্নাহার মুন্নী ॥
হযরত ইব্রাহীম (আ.) স্বপ্নে দেখেছিলেন যে- তিনি তার ছেলেকে কুরবানি দিচ্ছেন। এটাকে তিনি আল্লাহর নির্দেশ মনে করেন এবং ছেলেকে কুরবানি করতে নিয়ে যান। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় ছেলের বদলে একটি পশু কুরবানি হয়ে যায়। এ ঘটনা আল কুরআনে বর্ণিত হয়েছে এভাবে, “অতঃপর সে যখন তার পিতার সাথে চলাফেরা করার মতো বয়সে উপনীত হয়, তখন ইব্রাহীম বলল, বৎস! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, তোমাকে আমি কুরবানি করছি, এখন তোমার অভিমত কী? সে বলেছিল, হে আমার পিতা! আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন তাই করুন। আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন। যখন তারা উভয়ে আনুগত্য প্রকাশ করল এবং ইব্রাহীম তার পুত্রকে কাত করে শায়িত করল, তখন আমি তাকে ডেকে বললাম, ‘হে ইব্রাহীম, তুমি তো স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করেছো।’ এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদের পুরস্কৃত করে থাকি। নিশ্চয় এটা সুস্পষ্ট পরীক্ষা। অতঃপর আমি তাকে মুক্ত করলাম এক মহান কুরবানির বদলে।” (সূরা সাফফাত : ১০২-১০৭)
এভাবে ঈদুল আজহার দিনটি আল্লাহর প্রিয় বান্দা ইব্রাহীম (আ.)-এর পরিবারের তাকওয়া ও আনুগত্যের এক উজ্জ্বল স্মারক হয়ে আছে মানব ইতিহাসে। ঈমানের পথযাত্রায় স্বামীর সাথে স্ত্রী-সন্তান সকলেই হয়েছিলেন সেদিন শ্রেষ্ঠ সহযাত্রী। আজ ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ পৃথিবীতে ভোগবাদিতার গ্যাড়াকলে পড়ে পরিবারিক ব্যবস্থায় যে ভাঙনের সুর, তা থেকে মুসলিম সমাজগুলোও দূরে থাকতে ....বিস্তারিত
কুরবানি ঈদের রান্না
আর কদিন পরই কুরবানির ঈদ। এ ঈদ উপলক্ষে বাংলাদেশের মহিলারা পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের জন্য বিশেষ আগ্রহে রান্না করে থাকে। তবে কুরবানির ঈদ বলেই এ উৎসবের রান্নায় গোশতের রেসিপি অনেক বেশি থাকে। বিশেষ করে গরুর গোশতের রেসিপি ও খাসির গোশতের রেসিপি। সে কারণে আসন্ন ঈদে বাংলাদেশের মুসলিম মহিলাদের জন্য আকর্ষণীয় কিছু গোশতের রেসিপি তৈরি করে পাঠিয়েছেন রোখসানা আক্তার ছন্দা।
কাচ্চি বিরিয়ানি
উপকরণ: খাসির গোশত ২ কেজি, বাসমতি চাল ১ কেজি, ঘি দেড় কাপ, আলু ভাজা আধা কেজি, পেয়াজ (বেরেস্তার জন্য) ২৫০গ্রাম, আদা বাঁটা ২ টেবিল চামচ, রসুন বাঁটা ২চা চামচ, দারুচিনি গুঁড়া আধা চা চামচ, এলাচ গুঁড়া ৬টি, লবঙ্গ গুঁড়া ৪টি, জায়ফল গুঁড়া ১টি, জয়ত্রি গুঁড়া ১ চিমটি, জিরা গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, শুকনো মরিচ গুঁড়া ৬টি, টকদই সোয়া কাপ, আলু বোখারা ৫টি, লবণ পরিমাণমতো।
প্রণালী : গোশত ধুয়ে লবণ দিয়ে মেখে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। পেঁয়াজ ঘিয়ে ভেজে তুলে ঠাণ্ডা করে মোটা গুঁড়ো করে রাখুন। আদা-রসুনের রস, পেয়াজ, গুঁড়ো মসলা মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে যে পাত্রে বিরিয়ানি রান্না করবেন সে পাত্রে রাখুন। এখন গোশতের সঙ্গে দই ভালোভাবে মেশান। আলু একটু ভেজে নিন। এবার আলু ও ঘি মাংসের ওপর ছড়িয়ে দিন। চাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। একটি পাত্রে ৩ কাপ পানি ও লবণ দিয়ে ফুটিয়ে পানিতে চাল সিদ্ধ করুন। চাল আধা সিদ্ধ ....বিস্তারিত
সংসার
আসমা খাতুন : দিন শেষে একজন নারী চায় ভরসা করার মতো দুটি হাত। মাথা রাখার মতো একটা কাঁধ। সে বন্ধু হয়ে থাকুক সারা জীবন। দিক না ভুল হলে বকা। করুক না একটু-আধটু শাসন। মন খারাপের সময় আলতো করে চোখের পানি মুছে দিলেই হলো। থাকুক না মানুষটা অভিভাবক হয়ে পাশে। লাখ টাকার গহনা চায় না, ভালোবেসে ফুটপাত থেকে দু’পয়সার গহনাই নারীর সুখ।
একজন নারী কখনোই পুরুষের সৌন্দর্যে বিমোহিত হয় না। পুরুষ মানুষের সৌন্দর্যে নারী আটকায় না। নারী আটকায় পুরুষের দায়িত্বে। তার প্রতি শ্রদ্ধায়। তার প্রতি মায়ায় এবং সম্মান ও ভালোবাসায়। যে ভালোবাস ভরসা দেয়। দেয় নির্ভরতার প্রতিশ্রুতি। যে মানুষটা কখনো তাকে ঠকাবে না। বিপদে-আপদে ছাদ হয়ে সব ঝড় একা সামলে নেবে। সব ঝড় একা সামলাতে না পারুক পাশে তো থাকবে। ছেড়ে তো যাবে না। এমনই সাহসী, এইন্ পরিশ্রমী এবং আত্মবিশ^াসী পুরুষকে চায় একজন নারী। সিক্সপ্যাক, বডিবিল্ডার, হ্যান্ডসাম পুরুষের চেয়ে দায়িত্ববান পুরুষ অনেক উত্তম।
কাশফিয়া জানে, তার স্বামীর গহনা কিনে দেয়ার পয়সা নেই, তাতে কী? মাঝেমধ্যে ফুটপাতের ফুচকা তো খাওয়াতে পারবে। এখানেই তো নারীর তৃপ্তি। তৃপ্ততা নিয়েই তো সুখীময় জীবন। এ জীবন কে না চাই।
এজন্যই ইসলামে আর্থিক অধিকারের চেয়েও ব্যবহারিক ও অন্যান্য অধিকার বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কোনো স্বামী তার স্ত্রীকে সকল আর্থিক সুবিধা দিয়ে, তার সাথে খারাপ ....বিস্তারিত
হজ মহাসম্মেলন
॥ মুহাম্মদ আল্-হেলাল ॥
মহান আল্লাহ বিশ্বজগতের সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা, লালনকর্তা ও পালনকর্তা। তিনি সমুদয় বস্তুর মালিক ও সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। দৃশ্য ও অদৃশ্যজগতের সবকিছুই তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন।
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন, ‘তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই; তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যকে জানেন, তিনি পরম দয়ালু, অসীম দাতা। তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। তিনিই একমাত্র মালিক, পবিত্র, শান্তি ও নিরাপত্তাদাতা, অধিপতি, আশ্রয়দাতা, পরাক্রান্ত, প্রতাপান্বিত, মহাশক্তিধর, মহাত্মশীল। তারা যাকে অংশীদার করে, আল্লাহ তায়ালা তা থেকে পবিত্র। তিনিই আল্লাহ, সুজনকর্তা, উদ্ভাবক, রূপদাতা, উত্তম নামগুলো তারই। নভোমণ্ডলে ও ভূমণ্ডলে যা কিছু আছে, সবই তার পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।’ (সূরা হাশর : ২২-২৪)।
প্রজ্ঞাময় আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে আরো বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট ইসলামই হচ্ছে একমাত্র মনোনীত দীন (আনুগত্যের বিধান বা জীবন ব্যবস্থা)।’ (সূরা আলে ইমরান : ১৯)।
ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো জীবনবিধান আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য নই। তাই তিনি বলেন, ‘কেউ ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো দীন গ্রহণ করতে চাইলে তা কখনো কবুল করা হবে না।’ (সূরা আলে ইমরান : ৮৫)।
আমাদের সমাজে ইসলামের সুবিধাজনক অংশ ....বিস্তারিত
বিদায় হজের ভাষণ
॥ আব্দুল ওয়াদুদ সরদার ॥
আরাফাতের এ দিনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা. তাঁর সাহাবীদের সামনে রেখে বিদায হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। তিনি সাহাবা আজমাইন ও তার অনুসারীদের সামনে রেখে যে নসিহত পেশ করেছিলেন, সেটিকে আজ বিদায় হজের ভাষণ বলা হয়। এ ভাষণটি মুসলিম উম্মাহর জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ এবং সেটি হচ্ছে আজকে আমাদের জীবনের পাথেয়।
তিনি এ ভাষণ শেষ করে সাহাবাদের কাছ থেকে তার তাঁর দায়িত্বের স্বীকৃতি চাইলে উপস্থিত সকলেই সমস্বরে বলেছিলেন, হ্যাঁ, আপনি আপনার সব দায়িত্ব আমাদের যথাযথভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন। তখন তিনি শাহাদাত আঙুল উঁচু করে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালাকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, হে আল্লাহ! আপনি সাক্ষী থাকুন আমি আমার রিসালতের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছি এবং আমার অনুসারীদের তা বুঝিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছি। তখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আল কুরআনে এ আয়াত নাজিল করেন, ‘আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দীন পূর্ণাঙ্গ করেছি ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করেছি এবং ইসলামকে জীবনবিধান হিসেবে মনোনীত করে দিয়েছি।’ (সূরা মায়েদা : ৩)।
মহানবী সা.-এর বিদায় হজের এ ভাষণটি ছিল ১০ম হিজরী অর্থাৎ ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দ আরাফাতের ময়দানে রাসূল মুহাম্মদ সা. কর্তৃক প্রদত্ত খুতবা বা ভাষণ। হজের দ্বিতীয় দিনে আরাফাতের মাঠে অবস্থানকালে জাবাল-এ-রাহমাত ....বিস্তারিত
নূহা রাহির মিশুবিষয়ক সুসমাচার
॥ অধ্যাপক শামসুজ্জামান মতীন ॥
হঠাৎ এলো একদিন,
মিউ-মিউ, ম্যাও-ম্যাও সুর তুলে
বাউন্ডারি ঘেরা গেট পেরিয়ে
কে শুনেছে, কে শুনেছে? সবার আগে
নূহা শুনেছে-বিতর্কের
মীমাংসা অবশেষে। দুজনই শুনেছে।
যেন দুজনের প্রস্তুতি ছিল দুজনেরই।
গেটের ভেতরে, লনে দুজনেই খেলছিল আনমনে বিড়ালছানাটির মাথায় হাত বুলিয়ে। আদরে আদরে বিড়ালটা চোখ মুছে, ছানাও সোহাগে ম্যাও-ম্যাও করতে থাকলো যেন কতকালের আদরমাখা সে চারটে হাত।
‘বসবাসের’ কক্ষগুলো থেকে বেরিয়ে এলেন দাদা, দাদু, আব্বা, আম্মা এবং আটজন নাতি-নাতনির কাফেলা সবাই দীনি এলেম পালনকারী। ‘বসবাসের’ সার্বিক পরিবেশটাই এমন। দাদাÑ প্রিয়নবীর প্রাসঙ্গিক হাদিস শোনালেন। দরদী নবী (সা.)-এর চাদরে ঘুমচ্ছিল এক বিড়াল। ওর ঘুমের ব্যাঘাত না হয়, সেজন্য তিনি (সা.) চাদরের ওই অংশটি কেটে চাদর তুলে নিলেন। নবী (সা.) একদিন ঘনিষ্ঠ সাহাবীদের নসিহত করছেন। এমন সময় গুরুত্বপূর্ণ একজন সম্মানিত সাহাবীর কোলে চাদরে মুড়িয়ে রাখা বিড়াল ম্যাও করে উঠলো। সাহাবী বিব্রতবোধ করতে থাকলেন, হুজুর (সা.) হেসে বললেন, আজ থেকে তোমার নাম হলো আবু হুরায়রা (বিড়ালের পিতা)।
গাঢ় গভীর কর্তৃত্ববাদী এ সংসারের কর্ত্রী দাদু বলেন, এ রকম হাদিস আরো আছে, এখন তো বিড়ালছানা হয়ে গেল নবীজির (সা.) দীক্ষায় আবু হুরায়রা। ....বিস্তারিত
ঈদ ভাবনায় আঁকা জীবন
॥ আবদুল হালীম খাঁ ॥
ঈদের বার্তা শুনলেই আমি সাঁতার না জানা বালকের মতো অথৈ পানিতে ডুবে হাবুডুবু খেতে থাকি। চিন্তায় আমার চেহারা মলিন হয়ে যায়। গলা শুকিয়ে যায়। ভাত-পানি খেতে বার বার গলায় ঠেকে যায়। মনে মনে বলি, হে আল্লাহ! আমাকে বিপদ থেকে হেফাজত করো। পরিবারের বউ-ছেলেমেয়েরা কেউ যেন আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা না করে। সবার মনে শান্তি বহাল রাখ।
চারদিকে ঈদের রব উঠেছে। কে কীভাবে ঈদ উদযাপন করবে, সেই পরিকল্পনা করছে। কেউ কেউ ঈদের মার্কেটিং শুরু করেছে। আমি যেন ঘূর্ণিঝড়ের দশ নম্বর বিপৎসংকেত শুনছি। আমার নড়বড়ে ঘর। জোড়াতালির বেড়া। দুর্বল খুঁটি। আল্লাহ আল্লাহ...।
আমার পরিবার বড় নয়। দুই ছেলে আবির আর জাবির। ছোট মেয়ে খুশি। স্ত্রী লাইলী আর আমি। লাইলীকে খুশি রাখার জন্য চেষ্টা করছি সেই বিয়ের পর থেকে। বিশেষ করে ঈদের কেনাকাটা, খাওয়া-দাওয়া সব লাইলীর ইচ্ছেমতো করেছি। লাইলী যদি আটশ’ টাকার শাড়ি চেয়েছে, আমি এক হাজার টাকার শাড়ি কিনে দিয়েছি। পাড়ার মহিলারা যে দামে যত সুন্দর জুতা কিনেছে, আমি লাইলীকে তার চেয়ে সুন্দর ও দামি জুতা কিনে দিয়েছি। লাইলী বলেছে, তুমি আমাকে এত ভালোবাসো কেন? প্রতিবেশী মহিলারা আমাকে হিংসা করে বলে, আহ! কত আদরের বউ গো। স্বামীকে বশ করে আঁচলে বেঁধে ফেলেছে...।
লাইলীর মুখে পাড়ার ....বিস্তারিত
কুরবানির শিক্ষা
॥ এম. মুহাম্মদ আব্দুল গাফ্্ফার ॥
আরবী ‘কারীব’ শব্দ থেকে কুরবানি শব্দের উৎপত্তি। কারীব অর্থ নিকটবর্তী। কুরবানির আভিধানিক অর্থ হলো আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার নিকটবর্তী হওয়ার প্রচেষ্টা আর এর পরিভাষাগত অর্থ হলো মহান রাব্বুল আলামিনের আদেশ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন।
মুসলিম জাতির পিতা নবী ও রাসূল হযরত ইব্রাহীম (আ.) তাঁর জীবনের অনেকগুলো ঘটনার মাধ্যমে এ ত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। এসব ত্যাগ ও কুরবানির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন বলেই তিনি মুসলিম জাতির পিতার মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করতে পেরেছিলেন। পবিত্র কুরআনুল কারীমে ইব্রাহীম (আ.) সম্পর্কে এভাবে বর্ণনা এসেছে, ‘তাঁর (ইব্রাহীমের) রব যখন তাঁকে বললেন অবনত ও অনুগত হও, তখনি সে বলল, আমি বিশ্বপালকের অনুগত হলাম।’ (সূরা বাকারা: ১৩১)। জাতির পিতার এ ঘটনার দ্বারা এ কথা অতি পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠেছে যে, একমাত্র রাব্বুল আলামিনের উদ্দেশে সবকিছু ত্যাগ করার মাধ্যমেই তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন সম্ভব।
আল্লাহর আনুগত্য ও তাঁর দাসত্ব করা ছাড়া অন্য কোনো পন্থায় তার খেলাফতের দায়িত্ব পালন বা প্রিয় বান্দা হওয়া কোনোক্রমেই সম্ভব নয়। এ প্রসঙ্গে হযরত ইব্রাহীম (আ.)-এর জীবনেরই ....বিস্তারিত