সংবাদ শিরোনামঃ

বিদ্যুৎ : কোন সুখবর নেই লোডশেডিং তীব্রতর হবে ** জেনারেল মঞ্জুরকে হত্যার নেপথ্য খলনায়ক কে? ** জামায়াত নেতৃবৃন্দ যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত নন ** কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে আ’লীগ সরকারের কোরআন বিরোধী নারী নীতি ** বিশ্বকাপে বাংলাদেশের স্বপ্ন প্রলম্বিত হোক ** পাকিস্তানকে অস্থিতিশীল করার নায়ক ডেভিস ইস্যুতে পাক জনমত ও আদালতের চাপে সরকার ** ভূমিকম্প আর সুনামির পর পরমাণু আতঙ্কে জাপান ** কোরআন বিরোধী নারীনীতির অনুমোদনের পর সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড় ** আশির দশক ও কবি মতিউর রহমান মল্লিক **

ঢাকা শুক্রবার ০৪ চৈত্র ১৪১৭, ১২ রবিউস সানি ১৪৩২, ১৮ মার্চ ২০১১

।। ইসমাঈল হোসেন দিনাজী ।।
(সুরেন্দ্রনাথ রায়)
হিন্দুধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন যজ্ঞানুষ্ঠানে প্রধানত একটি মন্ত্র পাঠ করা হয়। মন্ত্রটি হচ্ছে : ‘‘ওম শামিত্মঃ শামিত্মঃ শামিত্মঃ।’’ সুবলচন্দ্র মিত্র সংকলিত ‘সরল বাঙ্গালা অভিধান’-এর ৮ম সংস্করণের ৩২০ পৃষ্ঠার ১ম কলামে ‘ওঁ’-এর অর্থ লেখা আছে ‘‘ওংকার, প্রণব, আদ্যবীজ।’’ পরবর্তী ৩২১ পৃষ্ঠার ১ম কলামে ‘ওম’-এর অর্থ লেখা আছে ‘‘প্রণব, বিষ্ণুশিবব্রহ্মাত্মক বীজমন্ত্র; স্বীকার; মঙ্গল; আরম্ভ; অপাকরণ। অব (রক্ষা করা)+ম কর্তৃ; অথবা অ (বিষ্ণু)+ উ (শিব)+ম (ব্রহ্মা), সমাহার দ্বন্দ্ব সমাসে সন্ধি করিয়া পদটি নিষ্পন্ন হইয়াছে।’’ উল্লেখ্য, এ অভিধানটির উক্ত সংস্করণটি প্রকাশিত হয় নিউ বেঙ্গল প্রেস (প্রাঃ) লি. ৬৮, কলেজ স্ট্রীট, কলিকাতা-৭৩ থেকে ১৯৮৪ ঈসায়ী সালের জুলাইয়ে।

মান্ডূক্যোপনিষদে উল্লেখিত আছে :
‘‘ওম শন্নো মিত্রঃ শং বরুণঃ শন্নো ভবত্বর্য্যমা।
শন্ন ইন্দো বৃহস্পতিঃ শন্নো বিষ্ণুরুরুক্রমঃ\
নমো ব্রহ্মণে নমসেত্ম বায়ো ত্বমের প্রত্যক্ষং
ব্রহ্মাসি। ত্বামেব প্রত্যক্ষ্যং ব্রহ্ম বদিষ্যামি্
ঋৃতং বদিষ্যামি সত্যং বদিষ্যামি
তম্মামবতু তদ্বক্তারমবতু। অবতু মারবতু
বক্তারমা\ ওম শান্তিশ শান্তিশ শামিত্মঃ\ ১\’’
মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী তার সত্যার্থ প্রকাশের প্রথম সমুল্লাসে উল্লেখিত শেস্নাকের অর্থ এবং ব্যখ্যা লিখেছেন এভাবে :
‘‘ওম, এই ওংকার শব্দ পরমেশ্বরের সর্বোত্ত নাম। কারণ ইহাতে অ, উ এবং ম এই তিন অক্ষর মিলিয়া এক ‘ওম্’ সমুদায় হইয়াছে। এই একটি নাম হইতে পরমেশ্বরের অনেক নাম সূচিত হয়। যথা-‘অ’-কার হইতে বিরাট, অগ্নি এবং বিশ্ব প্রভৃতি; ‘উ’-কার হইতে হিরণ্যগর্ভ, বায়ু এবং তৈজস প্রভৃতি; ‘ম’-কার হইতে ঈশ্বর, আদিত্য এবং প্রাজ্ঞ প্রভৃতি নাম সূচিত ও গৃহীত হয়। প্রকরণানুসারে এই সকল যে পরমেশ্বরেরই নাম তাহা বেদাদি সত্যশাস্ত্রে সুস্পষ্টরূপে ব্যাখ্যাত হইয়াছে।’’  -সত্যার্থপ্রকাশ : পৃঃ ১।
‘‘ওম খং ব্রহ্ম’’ \ ১\  যজুঃ অ. ৪. ম. ১৭\

এ সম্পর্কে সরস্বতী মহাশয় নিম্নোক্ত মন্তব্য করেছেন :
‘‘দেখুন বেদে এই রূপ প্রকরণসমূহে ‘ওম’ আদি পরমেশ্বরের নাম পাওয়া যায়।’’  -প্রাগুক্ত : পৃষ্ঠা-৩।
‘ওম’ আদি নাম সার্থক\ যেমন-‘ওম খম’ অবতীত্যোম, আকাশমিব ব্যাপকত্বাৎ খম, সর্বোভ্যো বৃহত্বাদ ব্রহ্ম।’ রক্ষা করেন বলিয়া ‘ওম’ আকাশের ন্যায় ব্যাপক বলিয়া ‘খম’ এবং সর্বাপেক্ষা বৃহৎ বলিয়া ‘ব্রহ্ম’ ঈশ্বরের নাম \ ১ \   -প্রাগুক্ত : পৃষ্ঠা-৫।
(ওমিত্যে) ওম যাহার নাম এবং যিনি কখনও বিনষ্ট হন না, তাহারই উপাসনা করা উচিত, অন্যের নহে \ ২ \  -প্রাগুক্ত
(ওমিত্যেত), বেদাদি শাস্ত্রসমূহ ‘ওম’কে পরমেশ্বরের প্রধান ও নিজ নাম বলা হইয়াছে। অন্য সমস্ত নাম গৌণিক \ ৩ \  -প্রাগুক্ত
(সর্ব বেদা), সকল বেদ ও সকল ধর্মানুষ্ঠান রূপ তপশ্চর্যা যাহার বিষয় বর্ণনা করে ও যাহাকে মান্য করে এবং যাহার প্রাপ্তি কামনা করিয়া ব্রহ্মাচর্য আশ্রমকে অবলম্বন করা হয় তাহার নাম ‘ওম \ ৪ \  -প্রাগুক্ত
‘ওম’ কেবলমাত্র পরমেশ্বরেরই না।  -প্রাগুক্ত : প্রঃ ৬

এছাড়াও সরস্বতী মহাশয় তৎকৃত গ্রন্থ সত্যার্থ প্রকাশের প্রথম সমুল্লাসে মহামুক্তি বা মহাশান্তির একমাত্র আশ্রয় হিসেবে ‘ওম’ মহানামের উল্লেখ করেছেন। এই ‘ওম’ ধ্বনি বা মহামুক্তির প্রকৃত অর্থ কী? এর যৎসামান্য ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের লক্ষক্ষ্য আমি খুব সংক্ষেপে আলোকপাত করতে চাই। এতে অনুগ্রহ করে কেউ ভুল বুঝবেন না। বরং গভীর মনোযোগের সঙ্গে বুঝতে এবং হৃদয়ঙ্গম করতে সচেষ্ট হবেন। আশা করি এতে চৈতন্যের প্রসার ঘটবে। উপলব্ধির ভান্ডার সমৃদ্ধ হবে। দৃষ্টি হবে আরও প্রসারিত।

প্রকৃত অর্থে ‘ওম’ বা ‘ওঁ’ হচ্ছে ইসলামের মূলবাণী বা প্রথম কালেমা ‘‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’’-এর সংক্ষেপ্ত রূপ। ‘আলিফ ওয়াও মিম।’ আল্লাহর ‘আলিফ’ এবং (ওয়াও) মুহাম্মদ (সা.)-এর মিম=উম বা ‘ওম’ (ওঁ)। অর্থাৎ মহান আল্লাহ প্রদত্ত এবং হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রদর্শিত পথ বা জীবনাদর্শ অনুসরণের মধ্যেই মানুষের প্রকৃত মুক্তি নিহিত। ‘ইসলাম’-এর অর্থও কিন্তু ‘শান্তি।’ ইসলামের অনুসারীদের বলা হয় ‘মুসলিম’ বা আত্মসমর্পণকারী। ‘ওম’ হচ্ছে ‘উম’-এর ভারতীয় উচ্চারণ। ভারতীয়রা উ-কারকে সাধারণত ও-কার উচ্চারণ করে। যেমন-কুরআনকে বলে কোরআন, মুনাজাতকে বলে মোনাজাত, মুহাম্মদকে বলে মোহাম্মদ, দুআ’কে বলে দোআ, মুসলিমকে বলে মোসলেম, গুসলকে বলে গোসল। তাই ‘উম’ সামান্য বিকৃত হয়ে ওম বা ও-এ পরিণত হয়েছে। আর এটা খুবই স্বাভাবিক। এছাড়া উম (আলিফ+ওয়াও+ মিম)-এর মধ্যাক্ষর ‘ওয়াও’ বাদ দিলেও ‘উম’ অর্থাৎ আলিফ+মিম উচ্চারিত হতে পারে। এতে অর্থের কোনও পার্থক্য হয় না। শুধু ‘আল্লাহ’ এবং ‘মুহাম্মদ’ এই দুই ভিন্ন সত্তাকে পৃথক পৃথকভাবে বোঝানোর জন্য মাঝখানে ‘ওয়াও’ সংযোজিত হয়েছে। এতে আল্লাহ এবং ‘মুহাম্মদ’-এর মধ্যে সত্তাগত ফারাক নিশ্চিত হয়েছে বৈকি। এতে ভারতীয় পন্ডিত বা জ্ঞানীদের বিজ্ঞতার পরিচয় বিদ্যমান। কারণ আল্লাহ নিজে স্রষ্টা এবং মুহাম্মদ (সা.) তাঁর পরম সৃষ্টি। কাজেই স্রষ্টা এবং সৃষ্টির মধ্যে পার্থক্যজ্ঞান করাটাই পরম বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক। তাই ‘উম’কে যারা ‘ওম’ বা ‘ওঁ’ উচ্চারণ করেছেন, তারা আল্লাহ ও মুহাম্মদকে একাকার করে দিতে চাননি বলেই মনে হয়েছে। এতে ভারতীয় জ্ঞানীদের পান্ডিত্যের পরিচয় মেলে বটে। কিন্তু তাদের অনেকেই রয়েছেন বিভ্রান্তিতে।

‘সত্যার্থ প্রকাশ’-এর রচয়িতা এবং আর্যসমাজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা স্বীয় গ্রন্থের চতুর্দশ সমুল্লাস বা পরিচ্ছেদে আল্লাহ, হযরত মুহাম্মদ (সা.), পবিত্র কুরআন এবং মুসলমানসমাজ সম্পর্কে অসৌজন্যমূলক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য করলেও প্রাগুক্ত গ্রন্থটির ১ম সমুল্লাস বা পরিচ্ছেদে ‘ওম’ মহামন্ত্রের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করতে গিয়ে যেন নিজের অজান্তেই মহান আল্লাহ এবং তদীয় রাসূল হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শ্রেষ্ঠত্ব যেমন স্বীকার করে নিয়েছেন, তেমনি ‘ওম বা উমকে মহামুক্তির মন্ত্র তথা ‘বিষ্ণু শিবব্রহ্মাত্মক বীজমন্ত্র’ হিসেবে গণ্য করেছেন।

সরস্বতী মহাশয় ইসলামরূপ মহাবৃক্ষের গোড়া কাটেননি। কেটেছেন আগা। বলা চলে গোড়াতে তিনি পানি সিঞ্চনই করেছেন। কাজেই তার বিভ্রান্তিকর মন্তব্যে বিজ্ঞ ভারতীয়রা বিভ্রান্ত হননি। আর গোড়াতে পানি সিঞ্চনের ব্যবস্থা করে আগা কাটলে অনেক বৃক্ষ যেমন ভবিষ্যতে তরতাজা হয়, জীবন্ত হয়, তেমনি ইসলামও ভারতে শনৈঃ শনৈঃ প্রসারিত হয়েছে। আজও ভারতের হাজার হাজার মানুষ ইসলামের ছায়াতলে আশ্রিত হয়ে নিজের জীবন ধন্য করছেন। ভারতের ‘ভগবান’ বলে খ্যাত মরহুম ড. ইসলাম-উল-হক (সাবেক নাম শিবশক্তি স্বরূপজী মহারাজ ধর্মাচার্য আদ্যশক্তিপীঠ), সাংবাদিক শ্রী দুর্গাপ্রসাদ দেশমুখ (আগ্রা), তার বর্তমান নাম দাউদ খান এবং মাদ্রাজের প্রখ্যাত সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ আব্দুল্লাহ আড়িয়ার (মরহুম) প্রমুখ সরস্বতী মহাশয়ের বিভ্রান্তির শিকার না হয়ে ইসলাম কবুল করে ভারতীয়দের হতচকিত করে তুলেছেন।

বিভিন্ন বেদ ও পুরাণের বহুস্থানে মহান আল্লাহকে স্বীকার করা হয়েছে। এমনকি আল্লাহর ‘জাত’ নামা ‘অলস্ন’ পর্যন্ত উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে আল্লাহর রসূল হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নাম ভারতীয় ধর্মগ্রন্থাদিতে মর্যাদার সঙ্গে উল্লেখিত হয়েছে। যেমন :
অলস্ন জ্যেষ্ঠং শ্রেষ্ঠং পরমং পূর্ণং ব্রহ্মানং আল্লাম \ ২ \
অল্লোরসূল মহামদরকং বরস্য অলস্ন অলস্নম \ ৩ \
আদল্লা বুকমেককম\ অল্লাবুক বিখাতকম \ ৪ \
অলস্ন যজ্ঞেন হুতা হুত্বা\ অলস্ন সূর্য চন্দ্র সর্বনক্ষত্রাঃ \ ৫ \
অল্লা ঋষীণাং সর্বদিব্যাং ইন্দ্রায় পূর্বং মায়া পরমমন্ডরিক্ষা: \ ৬ \
অলস্নঃ পৃথিব্যা অন্তরিক্ষং বিশ্বরূপম \ ৭ \
ইলস্নাঁ কবর ইলস্নাঁ কবর ইলস্নাঁ ইলস্নল্লেতি ইলস্নলস্নাঃ \ ৮ \
ওম অলস্নইলস্নল্লা অনাদিস্বরূপায় অর্থববনা ইয়ামা হুং হ্রীং
জনানপশূনসিদ্ধান জলচরান, অদৃষ্ট; কুরু কুরু ফট \ ৯ \
অসুর সংহারিনী হুং হ্রীং অলস্নরসূল মহমদর
কবরস্য অলস্ন অল্লাম ইলস্নল্লেতি ইলস্নাঃ \ ১০ \
-অল্লোপনিষদ

এর ভাবার্থ হচ্ছে-আল্লাহ সবার বড়। তিনি মহান। সম্পূর্ণ। তাঁর সঙ্গে কারও তুলনা হয় না। রসূল মুহাম্মদ আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত। আল্লাহর কোনও খুঁত নেই। তিনি নির্দোষ। তিনিই একমাত্র উপাস্য। সূর্যচন্দ্র তারকারাজি তাঁর নিয়ন্ত্রাধীন। তিনিই কেবল আরাধনার যোগ্য। তিনি সর্বজ্ঞাত। ভূত-ভবিষ্যৎ সবই তিনি অবগত। পৃথিবী ও অন্তরীক্ষসহ সর্বত্র তাঁর অধিষ্ঠান। কবরসমূহে আল্লাহর নাম ব্যতীত অন্যকিছু প্রতিধ্বনিত হয় না। ‘ওম’ হচ্ছে মহামুক্তি ও সাধনার মাধ্যম। জলে-স্থলে যা কিছু বিদ্যমান সবই তাঁর অধীন। তিনি মানুষের ভাগ্যনিয়ন্তা। মুহাম্মদ (সা.) সর্বজয়ী। দুশনও তাঁর বন্ধুতে পরিণত। কবরস্থদের আল্লাহ কৃপা ব্যতীত মুক্তি নেই।
আল্লাহ সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে : ‘‘ইন্নাল্লাহা আ’লা কুল্লি শাইয়ীন কাদীর’ অর্থাৎ সবকিছুর ওপরে আল্লাহর কর্তৃত্ব।
এতস্নিন্নন্তরে মেস্নচ্ছ আচার্যেন সমন্বিত:।
মহাম্মদ ইতিখ্যাতঃ শিষ্যশাখা সমন্বিত।
নৃপশ্বৈব মহাদেবং মরুস্থলে নিবাসিনম।
-ভবিষ্যপুরাণ : ৩ খন্ড : ৩য় অঃ
তিনি মেস্নচ্ছদের আচার্য বা ধর্মগুরুরূপে আবির্ভূত। মহাম্মদ (সা.) শিষ্য সহচরসমূদয় সহকারে থাকবেন। মহাপ্রভুর এ বান্দার আবাস হবে মরুস্থল বা আরবদেশ। তিনি মুহাম্মদ, আহমদ, মধুজিহর, ‘নরাশংস’ প্রভৃতি নামে মর্যাদা সহকারে উল্লেখিত হয়েছেন বেদপুরাণাদির বহু স্থানে।

হযরত মুহাম্মদ (সা.) বেদ পুরাণাদিতে কীভাবে ব্যাখ্যাত হয়েছেন তার ওপর গবেষণা চালিয়েছেন সারস্বত বেদান্তু প্রকাশ সংঘের পরিচালক এবং ধর্মশাস্ত্রচার্য ড. বেদপ্রকাশ উপাধ্যায়। তিনি প্রয়াগ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপকও। আলোচ্য বিষযে তার তিনটি গবেষণামূলক গ্রন্থ বেরিয়েছে। সেগুলো হলো : নরাশংস আওর অন্তিম ঋষি, কল্কি অবতার আওর মুহাম্মদ সাহেব এবং বেদ ও পুরাণ কি দৃষ্টি মে ধর্মীয় একতা কি জ্যোতি। একই বিষয়ে এ অধমেরও ‘বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে আল্লাহ ও মুহাম্মদ (সা.)’ এবং ‘কল্কি অবতার ও হযরত মুহাম্মদ (সা.)’ শীর্ষক দু’টি গ্রন্থ বের হয়েছিল প্রায় তিন দশক আগে। ড. বেদপ্রকাশ উপাধ্যায় ও আমার লেখা উল্লেখিত গ্রন্থসমূহে আলোচ্য বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। বলাবাহুল্য, এসব গ্রন্থ সম্পর্কে হিন্দুসমাজের প্রাজ্ঞপন্ডিতবর্গ কোনওরূপ মন্তব্য করা থেকে যেন সন্তর্পণেই বিরত থেকেছেন। এতে আমাদের মনে হয়েছে আলোচ্য বিষয়ে তাদের কিছু বলার নেই অথবা তারা আমাদের যুক্তিসমূহ ও ব্যাখ্যাদি অখন্ডনীয় ভেবে স্বীকার করে নিয়েছেন। অন্যথায় এ ব্যাপারে তাদের মধ্যে কোনও উত্তাপ-উদ্বেগ পরিলক্ষেত হবে না কেন?

আমার মনে হয়েছে, ‘‘ওম শামিত্মঃ শামিত্মঃ শামিত্মঃ।’’ এই মহাবাণী বা বীজমন্ত্রটি পুরোহিতদের অধিকাংশই না বুঝে পাঠ করেন। যারা এটি শোনেন তাদের অনেকের তো বোঝার প্রশ্নই ওঠে না। বিশেষত আমি নিজে ‘ওম’ বা ‘ওঁ’-এর অর্থ কী তা অনেক ঠাকুর-পুরোহিতকে জিজ্ঞাসা করে সঠিক জবাব পাইনি। অথবা প্রকৃত অর্থ জানালে ‘আসল রহস্য’ প্রকাশ পেয়ে যাবে, এ জন্য তারা তা চেপে গিয়েছেন। ‘ওম’ বা মহামুক্তির বীজমন্ত্রের প্রকৃত অর্থ ‘আল্লাহ ও মুহাম্মদ’ এবং সমগ্র মানবজাতির মুক্তির মহাসনদ কালেমা তাইয়্যেবা তথা ইসলামী জীবনাদর্শ বোঝালে দয়ানন্দ সরস্বতী কিংবা মহর্ষি বেদানন্দদের জন্য কেবল দুঃখজনকই নয়, মহাবিপত্তিকরও। তাই তারা ‘সত্যার্থ প্রকাশ’ কিংবা ‘ওঁজয়িষ্ণু হিন্দু’ প্রভৃতি গ্রন্থ লিখে শাশ্বত সত্য ধামাচাপা দিয়ে রাখতে চেয়েছেন। ভারতীয়দের বিভ্রান্ত করতে সচেষ্ট হয়েছেন। তবে আনন্দের কথা যে, বিভ্রান্ত পুরোহিত-ঠাকুরদের কথায় বা লেখায় কেউ কেউ বিভ্রান্ত হলেও সকল ভারতীয় বিভান্তির গড্ডকিাপ্রবাহে গা ভাসাননি। তাই তারা সত্যের সন্ধানে যাত্রা রেখেছেন অব্যাহত। এরই সুফল আমরা দেখেছি ড. শিবশক্তি স্বরূপজী ও ড. বেদপ্রকাশ উপাধ্যায়ের চিন্তা-চেতনা এবং অনুসন্ধানী গবেষণাকর্মে। কিন্তু যারা বুঝেও বোঝে না এই দুর্ভাগাদের বোঝাবে কে? যারা জেগে জেগে ঘুমায় তাদের জাগাবে কে?
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক ও নওমুসলিম

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।