সংবাদ শিরোনামঃ

বিদ্যুৎ : কোন সুখবর নেই লোডশেডিং তীব্রতর হবে ** জেনারেল মঞ্জুরকে হত্যার নেপথ্য খলনায়ক কে? ** জামায়াত নেতৃবৃন্দ যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত নন ** কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে আ’লীগ সরকারের কোরআন বিরোধী নারী নীতি ** বিশ্বকাপে বাংলাদেশের স্বপ্ন প্রলম্বিত হোক ** পাকিস্তানকে অস্থিতিশীল করার নায়ক ডেভিস ইস্যুতে পাক জনমত ও আদালতের চাপে সরকার ** ভূমিকম্প আর সুনামির পর পরমাণু আতঙ্কে জাপান ** কোরআন বিরোধী নারীনীতির অনুমোদনের পর সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড় ** আশির দশক ও কবি মতিউর রহমান মল্লিক **

ঢাকা শুক্রবার ০৪ চৈত্র ১৪১৭, ১২ রবিউস সানি ১৪৩২, ১৮ মার্চ ২০১১

।। মীর্যা সিকান্দার ।।
‘বালাগাল উলাবি কামালিহী
কাশাফাদদুজাবি জামালিহী
হাসুনাত জামিউ খিসালিহী
সাল্লু আলাইহী ওয়া আলিহী।’
মানুষ জীবন পরিচালনার জন্য যা অনুকরণ অনুসরণ করে তাই আদর্শ। ইংরেজিতে বলে গড়ফবষ ধহ বীবসঢ়ষধৎুঃযরহম ড়ৎ ঢ়বৎংড়হ. কোন মানুষের নমুনা বা উদাহরণ। যা থেকে মানুষ শিক্ষা গ্রহণ করে।
মহান আল্লাহ বলেন, আল্লাহ যখন তোমাদের মায়ের পেট থেকে ভূমিষ্ঠ করেছিলেন, তখন তোমাদের উল্লেখযোগ্য কিছুই ছিল না। আমি তোমাদের শ্রবণশক্তি দিলাম (শ্রবণ করে) দর্শনশক্তি দিলাম (দেখে), বিবেক বা চিন্তাশক্তি দিলাম (চিন্তা করে) আমার (অনুগ্রহের) শুকুর গুজারী করতে পার। নামল-৭৮।

আসলে মানুষ মায়ের পেট থেকে কোন কিছুই শিখে আসে না। বয়স বাড়ার সাথে সাথে আল্লাহর দেয়া ইন্দ্রীয় দ্বারা সে তার চারপাশের বস্ত্ত ও ব্যক্তি থেকে জ্ঞানার্জন করে জীবনপথে চলতে শুরু করে।
আল্লাহর হুকুম মেনে চলা, আল্লাহর পছন্দ সেই বৈশিষ্ট্যে নিজেকে গড়ে তোলা, আল্লাহর নিয়ামত ভোগ করে তাঁর প্রশংসা করা, আল্লাহর জমিনে জান-মাল দিয়ে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করাই হলো আল্লাহর শুকুর গুজার করা।
মানুষের অনুসরণ যদি কোন মহৎ লোকের হয় তবে তার চরিত্রে মহৎ গুণের সমাবেশ অনুসরণ করে তবে তার উন্নত চরিত্র লাভ করা বড়ই কঠিন হয়ে পড়ে।

যুগে যুগে মহান আল্লাহ মানুষকে উত্তম চরিত্র গঠনের জন্য নমুনা স্বরূপ নবী-রাসূলকে পাঠিয়েছেন। বর্তমান বিশ্বের জন্য যাকে আদর্শরূপে প্রেরণ করেছেন। তিনি হলেন সাইয়্যিদুল মুরসালিন, রহমাতাল্লিল আলামীন, শাফিয়েল মুজনাবীণ খতামুন্নাবীঈন হযরত মুহাম্মদ (সা.)।
আল্লাহ পাক বলেন, আল্লাহর রসূলের মধ্যে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ রয়েছে। (আহযাব-২১)
উত্তম আদর্শ বলতে বুঝায় যে আদর্শের মধ্যে মানবতা ও মনুষ্যত্বের পূর্ণতা রয়েছে। দুনিয়ার কল্যাণ লাভের জন্য পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনা রয়েছে এবং আখিরাতের মুক্তির রয়েছে গ্যারান্টি। আল্লাহপাক সে আদর্শ আর কারোর মধ্যে দেননি। কেবলমাত্র হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর মধ্যেই সেই আদর্শ দিয়েছেন। সে কারণে দুনিয়ার কল্যাণ ও আখিরাতের মুক্তি পেতে হলে রাসূল মুহাম্মদ (সা.) এর অনুসরণের বিকল্প নেই।

আজ দুনিয়াজুড়ে যে অশান্তি বিরাজ করছে তার একমাত্র কারণ হলো হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে অনুসরণ না করে এমন সব মানুষকে অনুসরণ করছি যারা আল্লাহর পক্ষ থেকে অনুসরণযোগ্য বলে ঘোষিত নন। তাদের না আছে তেমন চরিত্র মাধুর্য, না আছে তেমন মহৎ কোন কীর্তি। আর জ্ঞানের দিক থেকেও অত্যন্ত দৈন্যদশাগ্রস্ত। তাদের জীবনে একটি কল্যাণকর কাজ থাকলে পনেরটিই চরম অকল্যাণকর। তাদের কথা ও কাজের সংগতি খুব কমই ছিল। এমন কি পূর্বের নবী রাসূলগণকেও বর্তমানে অনুসরণ করা যাবে না। কারণ তারা এ যুগের জন্য প্রেরিত হননি এবং মুহাম্মাদ (সা.) এর মত দীনের পরিপূর্ণতা তাদের দেয়া হয়নি। তবে তাদের বিশ্বাস করা ঈমানের অঙ্গ। যে মহামানবকে বিশ্বের রহমত ও উত্তম আদর্শরূপে প্রেরণ করেছেন আমাদের মাঝে ব্যাপকভাবে তাঁর জীবন চরিত চর্চা হওয়া দরকার।

আমার ভয় হচ্ছে সারাবিশ্বের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে কিছু লিখতে গিয়ে কোথাও কোন বেআদবী করে ফেলি কিনা। আমার মত নালায়েক তাঁর মহত্ত্বের কতটুকুই বা তুলে ধরতে পারব! তাঁর শারীরিক সৌন্দর্য ও চরিত্র মাধুর্য এতই আকর্ষণীয় যে, তার সাহচার্যে কেউ এলে অতি সহজেই তার প্রতি শ্রদ্ধায় অবনত হয়ে পড়তো এবং তাঁর জীবনের নিরাপত্তা বিধানের জন্যে নিজের জীবন দিতেও প্রস্ত্তত হয়ে যেতো।
যেসব গুণের প্রতি মন, পরান, উজাড় করে দিতে মানুষ কুণ্ঠিত হয় না সেসব গুণের সমাহার তাঁর মধ্যে এত বেশি ছিলো যে, তাঁর সঙ্গী সাথীরা তাদের জীবনের বিনিময়ে  রাসূল (সা.) পবিত্র গায়ে একটা কাটার আঁচড় লাগুক তাতেও কেউ রাজি ছিলেন না। যা অন্যকোন মানুষের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যাবে না।

রসূল (সা.) উম্মে মাবুদের বাড়িতে কিছু সময় মেহমান ছিলেন। রসূল (সা.) চলে যাবার পর উম্মে মাবুদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। উম্মে মাবুদ রসূল (সা.) সম্পর্কে তার স্বামীকে যে বর্ণনা দিয়েছিলেন নিম্নে তা পেশ করা হলো।
চমকানো রঙ. উজ্জ্বল চেহারা, সুন্দর গঠন, সটান সোজাও নয় আবার ঝুঁকে পড়াও নয়, অসাধারণ সৌন্দর্যের পাশাপাশি চিত্তাকর্ষক দৈহিক গঠন। সুরমা রাঙা চোখ, লম্বা পলক, ঋজু কণ্ঠস্বর, লম্বা ঘাড়, সাদা-কালো চোখ,  সুর্মা কালো পলক, সূক্ষ্ম এবং পরস্পর সম্পৃক্ত আব্রু। গভীর কালো চুল, চুপচাপ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, কথা বলেন অত্যন্ত আকর্ষণীয় কায়দায়। দূর থেকে মনে হয় সবার চেয়ে উজ্জ্বল ও সৌন্দর্যপূর্ণ। কাছ থেকে মনে হয় সুমহান ও প্রিয়সুন্দর। কথায় অতি মিষ্টতা প্রকাশভঙ্গি সুস্পষ্ট। কথা খুব দীর্ঘও নয়, আবার সংক্ষেপ্তও নয়। কথা বলার সময় মনে হয় যেন মুক্তো ঝরছে। তাকে কোথাও সৌন্দর্যের সামান্য অভাবও মনে হয়নি। তাকে কিছু বললে তিনি অত্যন্ত মনোযোগের সাথে শোনেন। তিনি যদি কাউকে কোন আদেশ করেন সে তা পালনে বিন্দুমাত্র অপেক্ষা করে না। তাঁর সাথীগণ তাঁর প্রতি অত্যন্ত অনুগত ও শ্রদ্ধাবনত।

হযরত আলী বলেন যে, রসূল (সা.) স্বাভাবিক লম্বা ছিলেন। তাঁর চুল কুঁকড়ানোও ছিল না আবার সোজাও ছিল না।  তার কপোল মাংশল ছিল না আবার শুকনোও ছিল না। গায়ের রঙ ছিল গোলাপ ও গৌরবর্ণের সংমিশ্রিত রূপ। চোখ সুর্মারাঙা লালচে ঘনপলস্নব বিশিষ্ট। বুকের ওপর নাভি থেকে হালকা লোমের রেখা, দেহের অন্য অংশে লোমশূন্য।
হাত ও পা মাংশল, চলার সময় স্পন্দিত ভঙ্গিতে পা তুলতেন। তাঁর হাঁটা দেখে মনে হতো তিনি যেন ওপর থেকে নীচে নামছেন। কোনদিকে লক্ষ্য করলে পুরো মনোযোগের সাথেই লক্ষ্য করতেন। তাঁর উভয় কাঁধের মাঝখানে মহরে নব্যুয়ত জ্বল জ্বল করতো। তিনি ছিলেন সর্বশেষ নবী। তিনি ছিলেন সর্বাধিক জ্ঞানশীল, সর্বাধিক সাহসী, সর্বাধিক সত্যবাদী, সর্বাধিক অঙ্গীকার পালনকারী, সর্বাধিক কোমলপ্রাণ ও দয়ালু, সর্বাধিক  আভিজাত্যসম্পন্ন। হঠাৎ করে তাঁকে কেউ দেখলে ভয়ে বিহবল হয়ে পড়তো। পরিচিত কেউ দেখলে ভালোবাসায় ব্যাকুল হয়ে পড়তো। তাঁর গুণবৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্য বর্ণনাকারীকে বলতে হতো যে, তাঁর আগে এবং পরে তাঁর মত অন্য কাউকে দেখিনি।

হযরত জাবের ইবনে সামরা (রা.) বর্ণনা করেন যে, নবী করিম (সা.) পেশী ছিলো চওড়া, চোখ ছিলো লালচে, পায়ের গোড়ালী ছিল সরু ধরনের।
হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, নবী (সা.) এর হাতের তালু ছিলো প্রশস্ত, রঙ ছিল চমকদার, একেবারে  সাদাও নয় একেবারে গমের রঙও নয়।
হযরত আবু তোফায়েল বলেন, তিনি ছিলেন গৌরবর্ণের, তাঁর চেহারা ছিল অতি মোলায়েম, উচ্চতা ছিলো মাঝারী ধরনের।

হযরত বারা (রা.) বলেন, নবী (সা.) ছিলেন মাঝারী ধরনের উচ্চতা সম্পন্ন, উভয় কাঁধের মাঝে দূরত্ব ছিল। মাথার চুল ছিল উভয় কানের লতি পর্যন্ত। আমি তাঁকে লাল পোশাক পরিহিত অবস্থায় দেখেছি। কখনো কোন জিনিসকে তাঁর থেকে সৌন্দর্যসম্পন্ন দেখিনি। তিনি প্রথমে আহলে কিতাবদের মত চুল আঁচড়াতেন সিঁথি করতেন না। পরে সিঁথি করতেন। হযরত বারা ইবনে আযেরকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো যে, নবী (সা.) এর চেহারা কি তলোয়ারের মতো ছিলো? তিনি বললেন না। বরং চাঁদের মতো ছিলো। আরেক বর্ণনায় আছে, তাঁর চেহারা ছিলো গোলাকার।
রবি বিনতে মোয়াওয়েয (রা.) বলেন, তোমরা যদি রসূল (সা.)কে দেখতে তোমাদের মনে হতো যেন উদিত সূর্যকে দেখছ।

হযরত জাবের ইবনে সামুরা (রা.) বলেন, এক চাঁদনী রাতে আমি রসূল (সা.)কে দেখেছিলাম, সেই সময়ে তাঁর পরিধানে ছিল লাল পোশাক। আমি একবার নবী (সা.)এর দিকে একবার চাঁদের দিকে তাকাচ্ছিলাম। শেষে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম যে, আমার নবী (সা.) চাঁদের থেকেও অধিক সুন্দর।
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবী করীম (সা.) এর চেয়ে অধিক সুন্দর কোন মানুষকে আমি দেখিনি। মনে হতো সূর্য যেন তার চেহারায় জ্বল জ্বল করছে। আমি তার চেয়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন কাউকে দেখিনি। তিনি হাঁটতে শুরু করলে যমিন যেন তাঁর পায়ে সঙ্কুচিত হয়ে পড়তো। তাঁর সঙ্গে হাঁটতে গেলে ক্লান্ত হয়ে পড়তাম। কিন্তু তিনি থাকতেন নির্বিকার।

একবার তিনি হযরত আয়েশা (রা.) এর কাছে অবস্থান করছিলেন। ঘামে চেহারা ঘর্মাক্ত হয়ে ওঠার পর তাঁর চেহারা উজ্জ্বল ও সুন্দর দেখাচ্ছিল। এ অবস্থা দেখে হযরত আয়েশা (রা.) আবু যোবায়ের হাজলির এই কবিতা আবৃত্তি করলেন।
‘‘তাঁর চেহারায় তাকিয়ে দেখতে পেলাম,
চমকানো মেঘ যেন চমকায় অবিরাম।’’
হযরত আবু বকর তাকে দেখলে পাঠ করতেন
‘‘ভালর পথে আহবান করেন
পূর্ণ করেন অঙ্গীকার
চতুর্দশীর চাঁদ, লুকোচুরি
খেলে যেন অন্ধকার।’’

হযরত উমর (রা.) আবৃত্তি করতেন মানুষ যদি না হতেন এই আল্লাহর প্রিয়জন চতুর্দশীর রাত তিনি করতেন রওশন।
রাগলে তাঁর চেহারা লাল হয়ে যেত, মনে হতো যেন কপালে আঙ্গুরের দানা নিংড়ে দেয়া হয়েছে। হযরত যাবের ইবনে সামুরা (রা.) বলেন, রসূল (সা.) এর চোখ দেখে সব সময়ই মনে হতো যেন সুরমা লাগানো অথচ সুরমা লাগানো ছিল না।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রা.) বলেন, নবী (সা.) এর সামনের দুটি দাঁতের মধ্যে কিঞ্চিৎ ফাঁক ছিল। তিনি হাসলে উভয় দাঁতের মধ্য থেকে আলোক আভা বিচ্ছুরিত হতো। তাঁর গ্রীবা ছিল রৌপ্য নির্মিত পাত্রের মতো পরিচ্ছন্ন, চোখের পলক ছিল দীর্ঘ। দাড়ি ছিল ঘন, ললাট ছিল প্রশস্ত, ভ্রম্ন ছিল পৃথক, নাসিকা ছিল উন্নত, নাভি থেকে বুক পর্যন্ত হালকা লোমের রেখা। বাহুতে ছিল লোম। পেট ও বুক ছিল সমান্তরাল, বুক প্রশস্ত হাতের তালু প্রশস্ত। পথ চলার সময় কিছুটা ঝুঁকে চলতেন। মধ্যম গতিতে চলতেন।

হযরত আনাস (রা.) বলেন, নবী (সা.) এর হাতের তালু রেশমের চেয়েও বেশি নরম ছিল। এমন কোন মেশক আম্বর শুকিনি যা রসুল (সা.)-এর দেহের সুবাসের থেকে বেশি সুবাসিত।
হযরত আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, আমি রসূলে করীম (সা.) এর হাত আমার চেহারার ওপর রেখেছিলাম। অনুভব করলাম যে, সে হাত বরফের চেয়ে ঠান্ডা এবং মেশকের চেয়ে বেশি খুশবুদার।
এত স্বল্প পরিসরে রসূলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্র বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করা মোটেই সম্ভব নয়। এতদসত্ত্বেও যৎকিঞ্চিত উল্লেখ করে প্রবন্ধ শেষ করতে চাই।

রসূলুল্লাহ (সা.) অত্যন্ত বিশুদ্ধ আরবীতে কথা বলতেন। অসংকোচ, অনাড়ষ্ট, দ্ব্যর্থবোধক ও অর্থপূর্ণ কথা। তিনি দুর্লভ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ছিলেন। আরবের সকল ভাষায় তিনি পারদর্শী ছিলেন। তাঁর সহিষ্ণুতা, ধৈর্য, দয়া, ক্ষমাশীলতা, দানশীলতা পরিমাপ করা ছিল অসম্ভব। হযরত জাকের (রা.) বলেন, কখনোই এমন হয়নি যে, তাঁর কাছে কেউ কিছু চেয়েছেন আর তিনি তা দিতে অসম্মতি প্রদান করেছেন।
তিনি ছিলেন আরব জাহানের সর্বশ্রেষ্ঠ বীর। হযরত আলী (রা.) বলেন, যে সময় যুদ্ধের বিভীষিকা দেখা দিতো আমরা রসুল (সা.)-এর ছত্রছায়ায় আশ্রয় নিতাম। তাঁর চেয়ে বেশি দৃঢ়-তার সাথে অন্য কেউ শত্রুর মোকাবিলা করতে  সক্ষম হতো না।

নবী করিম (সা.) সর্বাধিক লজ্জাশীল ছিলেন। তিনি সাধারণত নিচু দৃষ্টিতে তাকাতেন।
তিনি ছিলেন সকল মানুষের চেয়ে ন্যায়পরায়ণ, পাক, পবিত্র, সত্যবাদী ও বিশিষ্ট আমানতদার। নব্যুয়ত প্রাপ্তির আগে আরবের সকলেই তাঁকে আল আমীন ও আসসাদেক বলে ডাকত। বিচার ফয়সালার জন্য আপামর  জনসাধারণ সবাই তাঁর কাছে, আসত। তিনি ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক।
তিনি নিজ হাতে গৃহের কাজকর্ম করতেন। বিবিদের কাজে সাহায্য করতেন।

সহৃদয়তা ও আন্তরিকতার সাথে তিনি মানুষের সাথে মিশতেন, তিনি ধনীদের চেয়ে গরীবদের সাথে বেশি মিশতেন।
বিনয় ও নম্রতা  ছিল তাঁর চরিত্রের ভূষণ। তিনি কখনো অপ্রয়োজনীয় বা অশালীন কথা বলতেন না।
তিনি মন্দের বদলায় মন্দ করতেন না। তিনি খাদেমদের প্রতি কখনো বিরক্তি প্রকাশ করনেনি। বরং অনেক সময় খাদেমদের খেদমতে লেগে যেতেন।
তাঁর মুখে সব সময় মৃদু হাসি লেগেই থাকত।
তিনি আল্লাহর কোন নিয়ামতকে অবজ্ঞা করতেন না।
কেউ সত্য ও ন্যায়ের পরিপন্থী কিছু করলে তিনি বিরক্ত হতেন এবং সংশোধন না করা পর্যন্ত নিবৃত হতেন না।

তিনি কারো সমালোচনা করতেন না। তাঁর কথা ও কাজ দিয়ে কখনো কাউকে খাটো করতেন না। কারো অতি মাত্রায় প্রশংসাও করতেন না।
তিনি ব্যক্তিগত কারণে কারো থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করতেন না।
তিনি পোশাকে পরিচ্ছদে, চলনে, বলনে সর্বত্রই ছিলেন অত্যন্ত মার্জিত।
তিনি অত্যন্ত নিবিষ্ট মনে আল্লাহর ইবাদত করতেন। তাঁর ইবাদত ছিল ভারসাম্যপূর্ণ। মোটকথা আল কুরআনের বাস্তবরূপ ছিলেন মহানবী (সা.)।
তিনি আল্লাহপাকের প্রেরিত উত্তম আদর্শই বটে।
আসুন আমরা দুনিয়ার কল্যাণ ও আখিরাতে মুক্তির জন্য মহান নবী (সা.) কে পূর্ণভাবে অণুসরণ করি।
‘সাল্লাল্লাহু আলা মুহাম্মাদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সাল্লাম।
লেখক : শিক্ষাবিদ, কলাম লেখক।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।