সোনার বাংলা ডেস্ক : ২৩ জুন রোববার পলাশী ট্র্যাজেডি দিবস। উপমহাদেশের মানুষের জন্য ২৩ জুন ট্র্যাজেডির দিন। ২৬৭ বছর আগে ১৭৫৭ সালের এ দিনে পলাশীর আমবাগানে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে এক যুদ্ধে বাংলা, বিহার ও ঊড়িষ্যার নবাব সিরাজ-উদ-দৌল্লার পরাজয় ঘটে। অস্তমিত হয় বাংলার স্বাধীনতার সূর্য। মীর জাফর আলী খান গংদের বিশ্বাসঘাতকতায় পলাশীর যুদ্ধে পরাজয়ের পর নবাব সিরাজ-উদ-দৌল্লার বেদনাদায়ক মৃত্যু হলেও উপমহাদেশের মানুষ এখনো দিনটিতে তাকে স্মরণ করে।
ইতিহাসবিদরা লিখেছেন, নবাবের সেনাবাহিনীর তুলনায় ইংরেজদের সেনা সংখ্যা ছিল অনেক কম। মীর জাফর বিশ্বাসঘাতকতা না করলে নবাবের বিজয় ছিল সুনিশ্চিত। নবাব সিরাজের সঙ্গে সেদিন যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন, পরবর্তীতে তাদের কারোই স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন দিবসটি নানাভাবে পালন করে থাকে।
ইতিহাসে দেখা যায়, ১৭১৯ সালে মুর্শিদকুলী খাঁ বাংলার সুবেদার নিযুক্ত হন। তার মৃত্যুর পর ওই বছরই বাংলা-বিহার-ঊড়িষ্যার সিংহাসনে বসেন সুজাউদ্দিন খাঁ। অতঃপর আলীবর্দী খাঁ ক্ষমতায় বসেন। ১৭৫৬ সালের ১০ এপ্রিল ২২ বছর বয়সে সিরাজ-উদ-দৌলা বাংলা-বিহার-ঊড়িষ্যার সিংহাসনে আসীন হন। তরুণ নবাবের সাথে ইংরেজদের বিভিন্ন কারণে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এছাড়া ক্ষমতার দাবিদার ছিলেন নবাবের খালা ঘষেটি বেগম ও সেনাপতি মীর জাফর। তারাই ইংরেজদের সাথে নীলনকশা করে নবাবের পতন ঘটান। নবাব সিরাজের স্ত্রী-কন্যাকে ঢাকার জিঞ্জিরা কারাগারে দীর্ঘদিন রাখা হয়েছিল।
ইংরেজ সেনাপতি লর্ড ক্লাইভ প্রথম ষড়যন্ত্রের জাল বুনেন রাজদরবারের অভিজাত সদস্য উমিচাঁদকে ‘এজেন্ট’ নিযুক্ত করে। নেপথ্য নায়ক মীর জাফর তা আঁচ করতে পেরে নবাব তাকে প্রধান সেনাপতির পদ থেকে অপসারণের উদ্যোগ নেন। কূটচালে পারদর্শী মীর জাফর পবিত্র কুরআন শরীফ ছুঁয়ে শপথ করায় নবাবের মন গলে যায় এবং মীর জাফরকে প্রধান সেনাপতি পদে পুনর্বহাল করেন।
ইতিহাসবিদরা লিখেছেন, ইংরেজদের পূর্ণিয়ার শওকত জঙ্গকে সাহায্য করা, মীর জাফরের সিংহাসন লাভের বাসনা ও ইংরেজদের পুতুল নবাব বানানোর পরিকল্পনা, ঘষেটি বেগমের সাথে ইংরেজদের যোগাযোগ, ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ সংস্কার, কৃষ্ণ বল্লভকে কোর্ট উইলিয়ামে আশ্রয় দেয়া ইত্যাদির জন্যই ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন ভাগীরথী নদীর তীরে পলাশীর আমবাগানে সকাল সাড়ে ১০টায় ইংরেজ ও নবাবের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। মীর মদন ও মোহন লালের বীরত্ব সত্ত্বেও জগৎশেঠ, রায়দুর্লভ, উর্মিচাঁদ, ইয়ার লতিফ প্রমুখ কুচক্রী প্রাসাদ ষড়যন্ত্রকারীদের বিশ্বাসঘাতকতায় নবাবের পরাজয় ঘটে। সেই সাথে বাংলার স্বাধীনতার লাল সূর্য পৌঁনে দু’শ বছরের জন্য অস্তমিত হয়।
মীর জাফরের মোনাফেকিতে ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজয়ের কারণে উপমহাদেশের মানুষের কাছে ‘মীরজাফর’ বিশ্বাসঘাতক-মোনাফেক হিসেবে চিহ্নিত হয়। অবশ্য ইংরেজরা দেশ শাসনের নামে ১৯০ বছর জুলুম নির্যাতনের পর উপমহাদেশের মানুষের আন্দোলনের মুখেই ১৯৪৭ সালের মাঝামাঝি সময় পাকিস্তান ও ভারত দুটি দেশ সৃষ্টির মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করে চলে যায়।
এ পাতার অন্যান্য খবর
- রেল করিডোর পাচ্ছে ভারত
- শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদি শীর্ষ বৈঠক দিল্লিতে
- বন্যাদুর্গতদের সাহায্যে এগিয়ে আসুন : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান
- দাওয়াই পাচ্ছে না সরকার
- বিএনপিতে কেন নন্দলাল বিতর্ক
- বড় বন্যার আশঙ্কা
- আওয়ামী লীগে অস্বস্তি-দ্বন্দ্ব
- অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার
- সাংবাদিক, সংবাদপত্র ও মিডিয়ার ওপর জুলুম-নিপীড়ন বন্ধ করুন : মিয়া গোলাম পরওয়ার
- জামায়াতে ইসলামীর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এদেশে কুরআনের সমাজ বিনির্মাণ : রফিকুল ইসলাম খান