রেজি : ডিএ ৫১৭ ॥ ৬৩ বর্ষ : ১৩তম সংখ্যা ॥ ঢাকা, শুক্রবার, ৭ আষাঢ় ১৪৩১ ॥ ১৪ জিলহজ ১৪৪৫ হিজরী ॥ ২১ জুন ২০২৪

কূটনৈতিক সংবাদদাতা : বাংলাদেশ ও ভারতে নতুন সরকার গঠনের পর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি ২২ জুন শনিবার দিল্লিতে শীর্ষ বৈঠকে বসছেন। দুই নিকট প্রতিবেশীর সম্পর্ক তারা ভবিষ্যতে কোথায় নিয়ে যেতে চান, তার দিকনির্দেশনা থাকবে বৈঠকে। এ বৈঠকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, যোগাযোগ বা সংযুক্তি ও জ্বালানির বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় সফরে ২১ জুন শুক্রবার দিল্লি যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ভারত সফরে যাচ্ছেন।
শনিবার ২২ জুন দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আনুষ্ঠানিক বৈঠকের পাশাপাশি একান্তে বৈঠক হবে। দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর অন্তত ১৪টি চুক্তি ও এমওইউ সই হবে। সব মিলিয়ে ১০টির বেশি চুক্তি ও এমওইউ সই হতে পারে। এর মধ্যে অন্তত চারটির মেয়াদ শেষে নবায়ন হওয়ার কথা। এসব চুক্তি ও এমওইউ জ্বালানি, সংযুক্তি, অর্থনীতিসহ সহযোগিতার নানা ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এবারের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি অভিন্ন নদী তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি, সীমান্ত হত্যা পুরোপুরি বন্ধের মতো বিষয়গুলো আলোচনায় তুলবে বাংলাদেশ।
বেশ কয়েক বছর আগে তিস্তায় বৃহদায়তন উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশকে একটি প্রস্তুাব দিয়েছিল চীন। এ নিয়ে দুই দেশই আগ্রহী ছিল। কিন্তু ভারতের ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ ওই প্রকল্পের ব্যাপারে কিছুটা নীরবতা পালন করছে। গত মে মাসে ঢাকা সফরে আসা ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রার সঙ্গে আলোচনার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ভারত তিস্তার প্রকল্পে অর্থায়নে আগ্রহী।
দিল্লির একটি কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, এবার দিল্লির শীর্ষ বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে তিস্তার ব্যাপারে নতুন একটি প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে।
দক্ষিণ এশিয়ার দুই নিকট প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাণিজ্য এখন ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়লেও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য অনেকটাই ঝুঁকে আছে ভারতের দিকে। ভারতের বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের প্রবেশাধিকার দেওয়া হলেও শুল্ক ও অশুল্ক বাধা-প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে। এবারের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সেপা (সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি) আলোচনা শুরুর ঘোষণা দেওয়ার কথা রয়েছে। সেপা সই হলে দুই দেশের বাণিজ্যে ভারসাম্য আসার পথ সুগম হতে পারে।
ভারত ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশকে ঋণচুক্তির আওতায় অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়ে আসছে। প্রায় সাড়ে সাতশ’ কোটি ডলারের ঋণচুক্তির বাস্তবায়ন খুব ধীর হচ্ছে। চুক্তি বাস্তবায়নে গতি আনতে গত কয়েক বছর ধরে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে। ঋণচুক্তির প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে নতুন একটি রূপরেখা চুক্তি নিয়ে দুই দেশের কর্মকর্তারা বেশ কিছুদিন ধরে কাজ করছেন। তবে এবার ওই চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা কম। শীর্ষ বৈঠক শেষে প্রচারিত যৌথ ঘোষণায় নতুন ওই রূপরেখা চুক্তির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।
সড়ক, রেল, নৌসহ নানা মাত্রায় দুই দেশের মধ্যে সংযুক্তির (কানেকটিভিটি) বিষয়গুলো ২০১০ সাল থেকে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। পরে জ্বালানিও এসেছে সংযুক্তিতে। ইতোমধ্যে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশ জলবিদ্যুৎ আমদানি করছে নেপাল থেকে। এবারের আলোচনায় জ্বালানিসহ সংযুক্তির বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে। যৌথ ঘোষণায় এ বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
হাসিনা-মোদি শীর্ষ বৈঠকে এবার যে প্রকল্পগুলোর বিষয়ে ঘোষণা আসার কথা, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু। বাংলাদেশের খাগড়াছড়ির রামগড়ের সঙ্গে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাবরুমের মধ্যে এ সেতু যোগাযোগ স্থাপন করবে।
দিল্লির সফরসূচি
গত ১৯ জুন বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রচারিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সফরের প্রথম দিন শুক্রবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
পরদিন শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র সালাম গ্রহণ ও গার্ড অব অনার পরিদর্শন করবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজঘাটে অবস্থিত মহাত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করবেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকে যোগ দিতে হায়দরাবাদ হাউসে যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজ আয়োজনের কথা রয়েছে। বিকেলে ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখরের সঙ্গে তার দপ্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখা করবেন।
উপরাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবার ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে যাবেন। এ সময় ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হবে।
দুদিনের সফর শেষে শনিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশে দিল্লির পালাম বিমানবন্দর ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।