সংবাদ শিরোনামঃ

বাকশালের পদধ্বনি ** গাজায় ইসরাইলি হামলা অব্যাহত নিহতের সংখ্যা দুই শতাধিক ** গাজায় ইসরাইলি বর্বরতা : কার্যকর পদক্ষেপ নেই বিশ্বসম্প্রদায়ের ** গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সাংবাদিকদের সংগ্রাম চলবেই ** সর্বনাশা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে ** সংসদ এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষের আস্থা হারিয়ে ফেলবে ** গাজায় ইসরাইলি হামলা বন্ধে বিশ্বকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে ** ‘কূটনৈতিক শিষ্টাচার’ শেখানোর হাস্যকর চেষ্টা ** আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের দৃষ্টিতে রোজা ও স্বাস্থ্য ** কবি আল মাহমুদের জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা ** গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি নিষ্ঠুরতা ইতিহাসের সকল বর্বরতাকে হার মানিয়েছে ** ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে খানাখন্দ ঈদে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগের আশঙ্কা **

ঢাকা, শুক্রবার, ৩ শ্রাবণ ১৪২১, ১৯ রমজান ১৪৩৫, ১৮ জুলাই ২০১৪

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে আ’লীগ ও যৌথবাহিনীর গুলিতে শহীদ মাওলানা আশরাফুলের অসহায় পরিবার

সাহায্যের আবেদন
আবু সাইদ বিশ্বাস, সাতীরা কালিগঞ্জ থেকে ফিরে : “আমি আর লেখা-পড়া করব না, মাঠে কাজ করব। টাকা আয় করে সংসার চালাব। টাকা না হলে খাব কি, আমার আম্মু-দাদি-বোন কি খাবে। ছোট বোনের দুধ কিনব কি দিয়ে।” ছল ছল চাহনিতে অশ্রুসিক্ত চোখ মুছতে মুছতে এমন আকুতির কথা বললেন কালিগঞ্জে যৌথবাহিনীর গুলিতে নিহত আশরাফুল ইসলামের ছেলে সাদ বিন আশরাফ। গত শনিবার দুপুরে তার সাথে কথা বললে এসব কথা জানান তুলকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর মেধাবি ছাত্র সাদ-বিন আশরাফ। আমার লেখা পড়া না হলেও আমার ছোট বোনদের পড়া লেখা করাব। আমার আব্বুর ইচ্ছা ছিল আমাদের সকলের পড়া লেখা করানোর। সে বলল, প্রতি ঈদে আমার আব্বু আমাকে বাজারে নিয়ে নতুন জামা কাপড় কিনে দিতেন। অসুস্থ হলে ডাক্তার দেখাতেন। কোনোদিন আমাকে মারত না। প্রতি মাসে প্রাইভেট পড়ার টাকা দিতেন। রাতে পাশে নিয়ে গল্প বলতে বলতে ঘুম পাড়াতেন। এখন আমার রাতে ঘুম হয় না। রাতে ঘুমালেই পুলিশের গুলির শব্দ শুনতে পাই। খেতে ভালো লাগে না। আব্বু না থাকলে-কি আর ভালো লাগে? সে দিন রাতে আমি আমার আব্বুকে জড়িয়ে ধরে ছিলাম কিন্তু রাখতে পারিনি। এলাকার মানুষ বলেছে, একদিন আমার আব্বুর সাথে আমার দেখা হবে। দেখি কবে আমার অব্বু আসে। 

হয়ত এ জগতে তার সাথে আর কোনোদিন তার আব্বুর দেখা হবে না তবে পরকালে দেখা হবে এমন সন্তনার কথা বলেছে প্রতিবেশী।

প্রথম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত নিহত আশরাফুল ইসলামের বড় মেয়ে সাদিহা তাজনিন। পিতা নিহত হওয়ার ঘটনা সে খুব বলতে পারে না। তবে তাদের বাড়িতে অনেক লোক জন আসে এসব সে বলতে পারে। সে জানে তার আব্বু ভারতে গেছে বাড়ি আসলে লাল রং-এর জামা কিনে আনবে। আব্বু কেন আসে না। ঈদ আসছে। সবায় জামা কাপড় কিনছে। এমন আকুতির কথা সারাণ শুনতে হয় তার মাকে। বাধ্য হয়ে মা তাকে নানার বাড়িতে রেখে এসেছে। বাপকে হারিয়ে এবার প্রথম তাকে নানার বাড়িতে ঈদ করতে হবে।

দেড় বছরের শিশু তাহমিদকে নিয়ে শহীদের স্ত্রী পাপিয়া দিশেহারা হয়ে পড়েছে। স্বামীর জন্য কেঁদে কেঁদে বুকের দুধ শুকিয়ে গেছে। এতে সন্তানের দুধ কিনতে তাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাঁর আকুতি পৃথিবীতে যে আর কাউকে বিধবা হতে না হয়। কোনো সন্তান যেন ইয়াতিম না হয়। কোনো মা যেন তার সন্তানকে না হারায়। এর যন্ত্রণা কোনোদিন বলার নয়।

নিহতের বৃদ্ধা মা আয়েশা খাতুন ছেলে আশরাফুলের কথা জানতে চাইলে শুধু কাঁদতে থাকেন। বলেন তোমরা কি আমার আশরাফুলের বন্ধুরা। বাবা তোমরা আমার কাছে এস। বলে ওরা আমার ছেলেকে কেড়ে নিয়েছে। আমার বুক খালি করে চলে গেছে। নিজের চোখে সন্তানের মৃত্যু কোনোদিন ভোলার নয়। আমার বাবারে ওরা ঘর থেকে ধরে স্কুল নিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে। আল্লাহ ওদের বিচার করবে। আমার একমাত্র পুত্র সন্তান এবং পরিবারের একমাত্র উপার্জনম ব্যক্তি তাকে পুলিশ হত্যা করলো। আল্লাহর উপর ছেড়ে দিলাম তিনিই সব দেখবেন। তিনি বড় নিঃশ্বাস তুলে বললেন, আমাদের এই ভিটে টাই সব। আমাদের কোনো কৃষি জমি নাই। খুব কষ্টে আমাদের দিন পার হতো। এর মধ্যে ও বছরে দু’ঈদে আমার বাবা আমার জন্য শাড়ি কিনে দিতো। মাদরাসা থেকে বাড়ি  এসে বলতেন মা খেয়েছ। মা তোমার কিছু লাগবে। এখন আর কেউ আমাকে মা বলে ডাকে না।

নিহত আশরাফুল ইসলাম কুশুলিয়া ইউনিয়নের ভদ্রখালি গ্রামের মৃত আদম আলী মোড়লের ছেলে। তিনি একজন মেধাবি ছাত্র ছিলেন। সাতীরা আগরদাড়ী কামিলা মাদরাসা থেকে তিনি প্রথম বিভাগে কামিল পাস করেন। পরে কালিগঞ্জের সাদপুর দাখিল মাদরাসা নিজ হাতে প্রতিষ্ঠা করে তিনি সুপারিন্টেন্ডেন্ট এর দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্রজীবনে শিবিরের সদস্য এবং বর্তমানে জামায়াতের রোকন থাকলেও তিনি প্রতিষ্ঠানে বেশি সময় দিতেন। তিনি জামায়াতের স্থানীয় ওয়ার্ড সেক্রেটারি। এর আগে তিনি কুশুলিয়া ইউনিয়ন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ছাত্রজীবনে সদরের ঝাওডাঙ্গা থানা শাখার সভাপতি পরে সদরের সভাপতি সর্বশেষ সাতীরা জেলার অফিস সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০০ সালে তিনি জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন। এছাড়া তিনি উপজেলা বিভিন্ন সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। ছাত্রজীবনে তার বহু স্মৃতির কথা বললেন এক সময়ে তার জেলা সভাপতি আল মোকারম বিল্লাহ। তিনি জানান, একজন সংগঠক হিসেবে সাতীরা জেলা তার কাছে ঋণী। তার ত্যাগ, কুরবানি বলে শেষ করা যাবে না। ছাত্রাবাসে কোনোদিন খাবার কম পড়লে আশরাফুল ইসলাম না খেয়ে সাধারণ ছাত্রদের নিজের খাবার খাওয়াতেন। সাতীরা জেলা শিবিরের জমি কেনার জন্য তার উদ্যোগ অবিস্মরণীয়।

 à¦¨à¦¿à¦¹à¦¤à§‡à¦° স্ত্রী পাপিয়া জানান, ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের পর সরকার হন্যে হয়ে মানুষ খুন করে। ৬ মে দিবাগত রাতে স্বামী আশরাফ এবং দুই পূত্র এবং এক মেয়েকে নিয়ে তার বিছানায় ঘুমিয়ে ছিলেন। ঠিক রাত ১২টায় ১০/১২ জন লোক এসে বাড়ির চারধার ঘিরে ফেলে। তাদের কারো পরনে লুঙ্গি আবার কারো পরনে প্যান্ট ছিল। তারা সকলে ছিল গেঞ্জি পরা। তারা বাড়ির পিছনের জানালা দিয়ে ঘরের ভিতরে লাইট মারতে থাকে। পিছন হতে বলা হয় তোর স্বামী কোথায় তাকে বের করে দে। আমরা তাকে বহুদিন ধরে খুজছি। কয়েকজন পোশাকধারী পুলিশ ঠিক একই সময় বাড়ির সামনের দরজা ধাক্কাতে থাকে। এরপর দরজা খুলে দিলে তারা তার স্বামীকে বলে তোর নামকি, তোর বাপের নামকি। সবকিছু সোনার পর তারা তাকে বলে চল আমাদের সাথে। এরপর তাদের বাড়ির নিকটস্থ মসজিদের পাশে রেখে তারা গাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে যায় কালিগঞ্জের দিকে। আশরাফুলের বাড়ি হতে মাত্র দুই কি.মি. দুরে ঠেকরা স্কুল মাঠের পাশের একটি শিশু গাছে তাকে পিঠ মোড়া করে বেধে পিছন থেকে গুলি করে। পুলিশের বুলেট তার পিঠ দিয়ে ঢুকে বুক দিয়ে বের হয়ে যায়। সেখানেই মারা যায় আশরাফুল। এরপর তাকে নারায়ণপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। যে সময় আশরাফকে গুলি করা হয় সে সময় আরো দু’বার তারা ফাকা গুলি করে আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য।

‘ছাপোষা মানুষ। তিনটি বাচ্চা। ঘরে পঙ্গু মা। ওদের মুখে খাবার তুলে দিতেই তো সময় শেষ। রাজনীতি করার সময় কোথায়?’ তার পরেও পুলিশ নিয়মিত বাড়িতে এসে হয়রানি করত। এ কারণে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে নয় মাস ওপারে গিয়ে পালিয়ে ছিলেন। সেখান থেকে ডেকে এনে হত্যা করা হয় আশরাফকে। কথাগুলো বলেছেন সাতীরার কালিগঞ্জে পুলিশের গুলিতে নিহত মাওলানা আশরাফুল ইসলামের শ্বশুর আব্দুল আজিজ ঢালি। তিনি বলেছেন, মাদরাসার এমপিও করে দেয়ার কথা বলে ডেকে আনা হয় আশরাফকে। আমি ওকে আসতে নিষেধ করেছিলাম। ও বলেছে, আওয়ামী লীগের লোকজন আসতে বলেছে। মাদরাসাটি এমপিও করে দেবে। কোনো সমস্যা নেই। এর আগে সাড়ে চার বিঘা সম্পত্তি বন্ধক দিয়ে ওই নেতাদের হাতে টাকা তুলে দিয়েছিল মাদরাসাটি এমপিওভুক্ত করে দেয়ার জন্য। আশরাফের স্ত্রী পাপিয়া বলেন, তার ঘুমন্ত স্বামীকে ঘর থেকে ধরে নিয়ে এখন পুলিশ বলছে বন্দুকযুদ্ধে সে নিহত হয়েছে। পাপিয়া জানান, তিন সন্তান এবং পঙ্গু শাশুড়িকে নিয়ে এখন বড়ই অসহায় তিনি। বাচ্চাদের মুখে দু’মুঠো খাবার তুলে দিতে এখন তিনি বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।

কালিগঞ্জের কুশলিয়া ইউনিয়নের ঠৈকরা রহিমপুরের মৃত আদম আলী মোড়লের ছেলে মাওলানা আশরাফুল ইসলাম (৪০)। কালিগঞ্জের সাদপুর দাখিল মাদরাসার সুপারিন্টেন্ডেন্ট ছিলেন তিনি। তিন সন্তানের জনক আশরাফুল। আশরাফুলের স্ত্রী পাপিয়া জানান, ঘটনার রাতে আশরাফুল বাড়িতে ঘুমন্ত ছিলেন। ৬ মে রাত সাড়ে ১১টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বাড়িটি ঘিরে ফেলে। এ সময় খাটের ওপর তিন সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন আশরাফুল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দরজা খুলতে বললে পাপিয়া জানতে চান, কেন। এ সময় তারা খাটের পাশের জানালা খুলে ফেলে। তারা জানতে চায়, কে ঘুমিয়ে আছেন। তখন পাপিয়া তার বাচ্চার কথা বললে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানতে চায় আরো কে আছে। এরই মধ্যে চার-পাঁচজন দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকে। আশরাফুল তখন বাথরুমে আশ্রয় নেন। তারা তখন বাথরুমের দরজা ভেঙে বের করে আনে আশরাফুলকে। পাপিয়া জানান, যারা ঘরে ঢুকেছে তারাও নিজেদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যই পরিচয় দিয়েছে। আশরাফুল তখন খালি গায়ে ছিলেন। তাকে একটি পাঞ্জাবি পরিয়ে ঘর থেকে বের করা হয়। আশরাফুলের ছেলে সাদ বিন আশরাফ বলেন, তাদের সামনে দিয়ে তার বাবাকে ধরে নিয়ে গেছে।

আশরাফের শ্বশুর আব্দুল আজিজ বলেন, আশরাফুলকে ধরে নেয়ার ১০-১৫ মিনিট পরেই তিনটি গুলির শব্দ শোনা যায়। এ সময় আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে দেখেন ভদ্রখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিঁড়ির ওপর পড়ে আছে আশরাফুলের লাশ। তার বুকে গুলির চিহ্ন। আব্দুল আজিজ জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে তারা দু’টি গুলির খোসা দেখতে পান। আর সিঁড়ির ওপর রক্তের দাগ। ওই স্কুলের পাশের বাড়ির এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘পুলিশ তাদেরকে গভীর রাতে ঘুম থেকে তুলে স্কুলের কাছে যেতে বলে। সেখানে যাওয়ার পর দেখতে পান আশরাফুলের লাশ সিঁড়ির ওপর পড়ে আছে। তিনি বলেন, আশরাফুলকে অনেক দিন দেখেননি। কাউকে জিজ্ঞেস করলে বলত সে এলাকায় নেই। হঠাৎ তার লাশ দেখে চিনতে পারিনি।’ ওই ব্যক্তি জানান, এ সময় পুলিশ তাদেরকে সাী হতে বলে। পুলিশ সেখানে প্রচার করে, পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে। এতে ওই ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক ব্যক্তি বলেন, সেখানে দুই দারোয়ান ও নাইটগার্ডকে পুলিশ বাধ্য করে সাী বানাতে। জোর করে তাদের কাছ থেকে স্বার নিয়ে গেছে। ঘটনাস্থলের আশপাশের অনেকেই বলেছেন সেই রাতের নৃশংসতার কথা। কিন্তু কেউ নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি। তারা বলেছেন, ঘটনাস্থলে তারা সবাই দু’টি গুলির খোসা দেখেছেন। আশরাফুলকে যখন বাড়ি থেকে ধরে নেয়া হয় তখন অনেকেই দেখেছেন। কিন্তু কিছুণ পরেই তাকে গুলি করে হত্যার পর প্রচার করা হয় বন্দুকযুদ্ধে তিনি নিহত হয়েছেন।

আশরাফুলের স্ত্রী পাপিয়া বলেন, রাতে বাড়ির এবং আশপাশের অন্যরা শুনলেও নিহত হওয়ার বিষয়টি তাকে জানানো হয় পরদিন সকালে।

আব্দুল আজিজ বলেন, তার জামাতাকে বাড়িতে ডেকে আনা হয়েছে। আশরাফকে ভারতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এর আগেও তাকে অনেক ঝামেলা করেছে। ‘সে জামায়াতের কোনো নেতা ছিল না। তবে সমর্থন করত। ভারতে সে নয় মাস ছিল। সাদপুর দাখিল মাদরাসা এমপিওভুক্ত করে দেয়ার কথা বলে তাকে বাড়িতে আনা হয়। ৬ মে সে সাতীরা আসে। দিনভর তাকে নিয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় কিছু নেতা কালিগঞ্জ শহরে ঘোরাঘুরি করে। আশরাফ দোষী হলে ওই সময় তাকে গ্রেফতার করা হলো না কেন? আজিজ বলেন, আশরাফ বাড়িতে শুনে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কেন সে এসেছে। তখন সে বলেছে, মাদরাসাটি এমপিওভুক্ত করে দেয়ার কথা বলে তাকে আনা হয়েছে। তিনি আশরাফকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু আশরাফ বলেছে, তার কিছু হবে না। আজিজ বলেন, ‘আমি জানতাম না ও যে ক্রসফায়ারের লিস্টে আছে। আমিও বুঝেছিলাম ওর তো বেশি কিছু হওয়ার কথা নয়। ও তো এখন আর সরাসরি রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত নয়।’

আব্দুল আজিজ বলেন, বাবার মাত্র সাড়ে চার বিঘা সম্পত্তি পেয়েছিল আশরাফ। তা বন্ধক রেখে কিছু লোকজনকে সেই টাকা দিয়েছে মাদরাসাটি এমপিওভুক্ত করে দিতে। তারাই আশরাফকে ডেকে আনতে পারে।

পাপিয়া বলেন, শাশুড়ি পঙ্গু। তাকে একা কিভাবে ও-বাড়িতে ফেলে আসব? তাই সঙ্গেই রাখছেন পাপিয়া। বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে ছিলেন আশরাফ। তিনি নিহত হওয়ার পরে বৃদ্ধা মাকে দেখার এখন কেউ নেই। বড় ছেলে সাদ খুবই অসুস্থ। জ্বরে ভুগছে। কিন্তু তাকে গ্রাম্য ডাক্তার দেখাবেন সেই টাকাও নেই পাপিয়ার। পাপিয়া বলেন, তিনটি সন্তান কিভাবে মানুষ করবেন এই চিন্তাই এখন তাকে কুরে খাচ্ছে। সম্পদ বলতে ভিটেবাড়ি ছাড়া আর কিছুই নেই।

সাদপুর দাখিল মাদরাসায় গিয়ে জানা যায়, আশরাফুল বেশ কয়েক বছর ধরে মাদরাসাটি এমপিও করতে দৌড়াদৌড়ি করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মাদরাসার এক শিক বলেন, আশরাফুলকে এভাবে হত্যার পরে অনেকেই শঙ্কার মধ্যে আছেন। এমন একজন ভালো মানুষকে এভাবে বাড়ি থেকে ধরে এনে হত্যা করা হবে তা কল্পনাও করা যায় না। মাদরাসাসংলগ্ন মসজিদের এক মুসল্লি বলেন, ‘এর একদিন বিচার হবে। আল্লাহই বিচার করবেন।’

 à¦®à¦¾à¦“লানা আশরাফুল নিজ হাতে গড়া মাদরাসা থেকে একটি টাকাও গ্রহণ করেনি। তাইতো বাড়িঘরও করতে পারেনি। বর্তমানে তার বাড়িটির চাল পলিথিন পেপার দিয়ে ঢাকা। জোরে বৃষ্টি আসলে ঘরে পানি পড়ে। বাড়ির কর্তাহারা পরিবারটি কিভাবে আগামি দিনগুলো অতিবাহিত করবে তা নিয়ে সংশয়ের মধ্যে রয়েছে বিধাব স্ত্রী-ইয়াতিম সন্তান ও পুত্র হারা মা জননি। এ অবস্থায় পরিবারটি সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে। পরিবারটিকে সাহায্য পাঠানোর ঠিকানাঃ পাপিয়া ও আয়শা খাতুন,ইসলামী ব্যাংক কালিগঞ্জ শাখা, সঞ্চয়ী হিসাব নং- ২৭০২৮, বিকাশ-০১৭১৮-৪০৫২৮২ (নিহতের স্ত্রী) /০১৮৫৬ ৬৪৫৩৫২ /০১৭১২ ৩৩৩২৯৯।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।