গুম হওয়া অনেকে এখনো ফেরেননি : হাসিনার শাসনামলে বিনাবিচারে হত্যার মহোৎসব
৮ নভেম্বর ২০২৪ ২১:৩২
স্টাফ রিপোর্টার : রাতের অন্ধকারে বাসা থেকে তুলে নিয়ে গুম ও খুন করে ফেলা হয়েছে অসংখ্য নাগরিককে। মায়ের কোল থেকে শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যে আর ফিরে আসেনি। ঢাকার কাউন্সিলর চৌধুরী আলম, বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলী ও জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমপুত্র আমান আযমীকে গুম করার বিষয়টি সব জানা। কিন্তু না জানা আরও এমন অনেক গুমের ঘটনা রয়েছে, যা গণমাধ্যম পর্যন্ত পৌঁছায়নি। ফলে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা গুমের যে তথ্য উপস্থাপন করছে, তা প্রকৃত ঘটনা থেকে অনেক কম। শেখ হাসিনার শাসনামলে ১৫ বছরে এমন ‘বন্দুকযুদ্ধ’ বা ‘ক্রসফায়ারের’ নামে অন্তত ১ হাজার ৯২৬ জন বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নিহত হওয়ার এ হিসাব বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক)। তারা এ পরিসংখ্যান তৈরি করেছে সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর থেকে। পত্রিকায় আসেনি এমন তথ্য কত হতে পারে, তা অন্দাজ করা সহজ নয়।
২০১৬ সালের একটি ঘটনা বর্ণনা করা যেতে পারে যে গুমের পর কতটা নির্মমভাবে একজন শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়েছে। মর্মান্তিক হত্যার শিকার ওই শিক্ষার্থীর নাম সোহান। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের ঈশ্বরা গ্রামের মহাসিন আলীর ছেলে ও স্থানীয় শহীদ নূর আলী কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র সোহান। ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল বিকেল ৫টার দিকে ঈশ্বররা জামতলায় তার মায়ের জন্য অপেক্ষা করছিল সোহান। এ সময় নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে চারজন লোক বাইকে করে জোরপূর্বক তাকে তুলে নিয়ে যায় বলে তার পরিবারের অভিযোগ। নিখোঁজের ১০ দিন পর চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার বুলকিয়া চন্দতলা মাঠে সোহানের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। ৩০০ গ্রামবাসী গিয়েছিল এমপি আনোয়ারুলের কাছে। সোহানকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেছিল তারা। বলেছিল, তারা সামনে আ’লীগ করবে। কিন্তু এমপি বললো আ’লীগ করার লোকের নাকি অভাব নেই। এরপর ২০ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে কালীগঞ্জ থেকে প্রায় ৫০ কি.মি. দূরে চুয়াডাঙ্গায় সোহানের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভুলাটিয়ার মাঠে ডান হাত ভাঙা, বাম চোখ উপড়ানো মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায় শহীদ মহিউদ্দীন সোহানের। কান্নায় ভেঙে পড়ে সোহানের গ্রামবাসী। তারা তাদের শ্রেষ্ঠ একটি সন্তানকে হারিয়ে ফেললো। শহীদ সোহানের মা সে সময় আর্তনাদ করে বলেছিলেন, ‘মারবেই যখন আমার বাবুটারে। চোখ দুইটা তুইল্যা নিলো ক্যান বাবুর??’
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অলিউল্লাহ মোল্লা ২০১৬ সালের ১০ জুলাই পুলিশের ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত হন। তার পরিবার বলছে, ওই দিন বিকেলে অলিউল্লাহকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়েছিল পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় কয়েকজন নেতাকর্মী। পরদিন সকালে অলিউল্লাহর মৃত্যুর খবর পায় পরিবার। পুলিশ তখন দাবি করেছিল, ঘটনার দিন রাত সাড়ে তিনটার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় টহলরত পুলিশ অলিউল্লাহকে থামার সংকেত দেয়। তিনি না থেমে উল্টো পুলিশের দিকে বোমা ও গুলি ছোড়েন। তখন পুলিশের পাল্টা গুলিতে তার মৃত্যু হয়। পরে পুলিশের নথিতে এ ঘটনাকে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ উল্লেখ করে অলিউল্লাহর পরিচয় লেখা হয় ‘সন্ত্রাসী’।
পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সাত বছরের ক্রসফায়ারের তথ্য সংরক্ষণ করেছে। এ সংক্রান্ত তথ্যাদি হাতিয়ে জানা গেছে। এতে দেখা যায়, এ সাত বছরেই ‘ক্রসফায়ার’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৪১৩ জন। দেশের এমন কোনো জেলা নেই, যেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটেনি। এর মধ্যে অনেক রাজনৈতিক নেতা-কর্মীও রয়েছেন। এসবির হিসাবে সাত বছরে ক্রসফায়ারে নিহতের যে সংখ্যা বলা হয়েছে, আসকের হিসাবে সেই সংখ্যা ১২০ জন বেশি। প্রতিটি ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে ক্রসফায়ারের সাজানো বর্ণনা উল্লেখ করে মামলা দেওয়া হয়, তাতে নিহত ব্যক্তির সহযোগী হিসেবে আরও অনেককে আসামি করা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীর পরিবারগুলো মামলা করার সাহস পেত না। কেউ কেউ আদালতে মামলা করার চেষ্টা করতে গিয়ে হয়রানি ও হুমকি ধমকির শিকার হয়েছেন।
স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম ক্রসফায়ারের শিকার হয়েছেন সিরাজ শিকদার। ১৯৭৫ সালের জানুয়ারিতে ওই ঘটনা ঘটে। ‘ক্রসফায়ারের’ মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করার প্রবণতা শুরু হয় মূলত ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর। এসব ঘটনায় জড়িত কর্মকর্তাদের কেউ কেউ অর্থের বিনিময়ে বা অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়েও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। যার একটা বড় নজির ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনা। র্যাব-১১-এর তৎকালীন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদসহ ১১ জন র্যাব সদস্য স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুর হোসেনের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে এসব খুনে জড়ান। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ক্রসফায়ারের ঘটনাগুলো নিয়ে এসবির তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, নিহতদের নামের পাশে পরিচয়ের ঘর রয়েছে। তাতে নিহত ব্যক্তিদের ২৩ ধরনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা–কর্মীও রয়েছেন। তবে বেশিরভাগ নামের পাশে ‘সন্ত্রাসী’, ‘দুষ্কৃতকারী’, ‘বন্দুকধারী’ বা ‘অস্ত্রধারী’, ‘মাদক কারবারি’, ‘জলদস্যু’, ‘বনদস্যু’, ‘ডাকাত’, ‘ছিনকাইকারী’, ‘মামলার আসামি’, ‘চরমপন্থী’ ইত্যাদি পরিচয় দেওয়া হয়েছে। অনেক রাজনৈতিক কর্মীকেও এসব পরিচয়ে ক্রসফায়ারে মারা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
একটি ঘটনা সারা দেশে আলোড়ন তৈরি করেছিল ২০১৮ সালে। ওই বছরের ২৬ মে রাতে কক্সবাজারের টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়কে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে র্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত হন টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর একরামুল হক। তিনি টেকনাফ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। কিন্তু ক্রসফায়ারে নিহত ব্যক্তিদের নিয়ে এসবির করা তালিকায় তার পরিচয় লেখা হয় ‘মাদক ব্যবসায়ী’। হত্যা করতে নেওয়ার সময় একরাম তার মেয়েকে ফোন করেছিলেন। সেই কল কাটার আগেই একরামকে গাড়ি থেকে নামিয়ে ক্রসফায়ারের নামে গুলি করে হত্যা করা হয়। পুরো সময়টায় ফোন কল চালু ছিল। পরে সেই কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে একরাম ও তার মেয়ের শেষ কথা, কান্না, গাড়ি থেকে নামানোর শব্দ, তারপর গুলির শব্দ মানুষকে নাড়া দিয়েছিল। এ ঘটনাকে ‘ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা’ বলে উল্লেখ করেন একরামের স্ত্রী আয়েশা বেগম। তিনি গত ৩১ অক্টোবর গণমাধ্যমকে বলেন, একরামকে হাত বেঁধে গুলি করে হত্যার পর র্যাব বলে বন্দুকযুদ্ধে সে মারা গেছে। ক্ষমতাসীন দলের কর্মী হওয়ার পরও তাকে রাজনৈতিক শত্রুতা থেকে মারা হতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি। আয়েশা আরও বলেন, ‘ক্রসফায়ারের ঘটনায় আমাদের কোনো মামলা; এমনকি জিডিও করতে দেওয়া হয়নি। উল্টো হয়রানি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের দুই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী আমাকে এ বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতেও নিষেধ করেছিলেন।’
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০১৮ সালের বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা অতীতের সব ঘটনাকে ছাড়িয়ে যায়। এটি ছিল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বছর। এ বছরের ৩০ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচন হয়। তার আগে ৪ মে থেকে ‘চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে’ স্লোগান নিয়ে বিশেষ অভিযান শুরু হয়। যদিও এ অভিযানের পরও দেশে মাদকের কারবার কমেনি, বরং বেড়েছিল বলে পরবর্তী সময়ে খবর বের হয়েছিল। এসবির তথ্যানুযায়ী, ২০১৮ সালে ৩০০টি ক্রসফায়ারের ঘটনায় ৩৫৮ জন নিহত হয়। এর মধ্যে ২০২টি ঘটনায় জড়িত ছিল পুলিশ, ৯৬টিতে ছিল র্যাব, পুলিশের সঙ্গে অন্যান্য বাহিনীর যৌথ অভিযান ছিল একটি এবং বিজিবি ও র্যাবের যৌথ অভিযান ছিল একটি। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২২৭ জনকে মাদক কারবারি আখ্যা দেওয়া হয়। বাকিদের মধ্যে ৪৬ জনের পরিচয় লেখা হয়েছে ডাকাত বা ছিনতাইকারী। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে সর্বোচ্চ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ২০১৮ সালে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঘটনা ঘটে ২০১৯ সালে; ওই বছর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্রসফায়ারের ২৪১টি ঘটনায় ৩০৭ জন নিহত হন। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের টানা দেড় দশকের শাসনামলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে-পরে ক্রসফায়ার বেড়ে যায়। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বছর ১২৮ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কথিত ক্রসফায়ারে নিহত হন, যা আগের পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চসংখ্যক মৃত্যু। এর আগে নবম জাতীয় নির্বাচনের পর ২০০৯ সালে ক্রসফায়ারে নিহত হন ১২৫ জন। মাঝের বছরগুলোয় ২০১০ সালে ৯৩ জন, ২০১১ সালে ৬২ জন, ২০১২ সালে ৫৮ জন ও ২০১৩ সালে ৪২ জন নিহত হন। রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, ক্রসফায়ার ছিল আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিপক্ষকে দমন ও ভয়ের সংস্কৃতি তৈরির অন্যতম হাতিয়ার। এজন্য নির্বাচনের আগে-পরে এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটেছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের হাতে ‘জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানের নিমিত্তে’ গঠিত তদন্ত কমিশন গত মাসে কাজ শুরু করেছে। এ লক্ষ্যে কমিশন বৈঠকও করেছে। কমিশনের পাঁচ সদস্যের সকলের উপস্থিতিতে প্রথম বৈঠকে তদন্তের প্রক্রিয়া কীভাবে শুরু হতে পারে সে বিষয়ে কিছু প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। রাজধানীর গুলশানে কমিশনের জন্য একটি অস্থায়ী কার্যালয়ও তৈরি করা হয়েছে। কমিশনের সদস্যরা সেখানে দাপ্তরিক কার্যক্রম চালাবেন। প্রথম বৈঠকে নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে। এর আগে গত ২৭ আগস্ট অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে কমিশন গঠন করে সরকার। কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন- হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকারকর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস ও মানবাধিকারকর্মী সাজ্জাদ হোসেন। এ কমিশনকে তদন্ত শেষ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে ৪৫ কার্যদিবস সময় দেওয়া হয়েছে। কমিশনের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল দেওয়ার প্রক্রিয়াও চলছে। সরকারি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বিশেষ শাখা, গোয়েন্দা শাখা, আনসার ব্যাটালিয়ন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা বাহিনী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), কোস্টগার্ডসহ দেশের আইন প্রয়োগ ও বলবৎকারী কোনো সংস্থার কোনো সদস্য কর্তৃক জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানের নিমিত্তে এ তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে।