হাসপাতালে ভর্তি ৩২ সহস্রাধিক
চলতি বছর প্রাণহানি দেড় শতাধিক
স্টাফ রিপোর্টার : ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণহীন। দিন দিন আক্রান্ত ও প্রাণহানি বাড়ছে। বিশেষ করে রাজধানীর হাসপাতালগুলোয় ডেঙ্গু রোগীতে ভরপুর। সরকারের কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় রোগী বাড়ছে। অভিযোগ রয়েছে, রাজধানীর অনেক এলাকায়ই মশক নিধনে ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে না। সিটি করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা বসে বসে তামাশা দেখছেন বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। গত ১ অক্টোবর মঙ্গলবার রাতে এ রিপোর্ট লেখার দিনে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১১৪৪ রোগী। তাদের নিয়ে এ বছর হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৮২ জনে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ১ অক্টোরব মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। এতে এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৬৬ জনের মৃত্যু হলো। গত একদিনে ভর্তি রোগীদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৪৬১ জন।
এছাড়া ঢাকা বিভাগে ২৩২ জন, ময়মনসিংহে ৩৫ জন, চট্টগ্রামে ১৪৪ জন, খুলনায় ৮১ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৩ জন, রংপুর বিভাগে ৪৭ জন এবং বরিশাল বিভাগে ৯৯ জন এবং সিলেট বিভাগে ১২ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছে ৩৪৯৫ রোগী। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছে ১৭৫৯ রোগী। ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৭৩৬। এ বছর ভর্তি রোগীদের মধ্যে ১৮ হাজার ১১৩ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায়। ঢাকার দুই মহানগর এলাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৩ হাজার ৯৪৯ জন।
এ বছর সেপ্টেম্বর মাসে বছরের আগের ৮ মাসের চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে। ওই মাসে ১৯২৪১ রোগী ভর্তির পাশাপাশি মৃত্যু হয়েছে ৮৩ জনের। এর আগে জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ১ হাজার ৫৫ জন, যাদের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয় ৩৩৯ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। মার্চ মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১১ জন; যাদের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এপ্রিল মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫০৪ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। মে মাসে ৬৪৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। জুন মাসে ৭৯৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের।
জুলাই মাসে ২৬৬৯ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়, তাদের মধ্যে ১২ জনের মৃত্যু হয়। আগস্টে ৬৫২১ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল, যাদের মধ্যে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, তারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য রাখে ২০০০ সাল থেকে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে এ রোগ নিয়ে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৭০৫ জনের মৃত্যুও হয় ওই বছর।
এদিকে চলতি মৌসুমে ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক ঢাকা দক্ষিণ এবং উত্তর সিটি কর্পোরেশনের জন্য বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে ছয় সদস্যবিশিষ্ট দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুই সিটি কর্পোরেশনে প্রশাসকগণকে আহ্বায়ক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে গঠিত কমিটিতে তিনজন বিশেষজ্ঞকে সদস্য করা হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে বিশেষজ্ঞ সদস্য হিসেবে কাজ করবেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিনের (নিপসম) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ গোলাম ছারোয়ার, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্টোমোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রাশেদুল ইসলাম এবং কীটতত্ত্ববিদ মো. রেজাউল করিম। অপর কমিটিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে কাজ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. শেফালি বেগম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্টোমোলোজিস্ট ড. তানজিন আক্তার এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফিরোজ জামান।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর দুপুরে সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ সম্মেলনকক্ষে দেশব্যাপী ডেঙ্গু ও মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধকল্পে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত সভায় এ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামানের সভাপতিত্বে ওই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা এ. এফ. হাসান আরিফ।
এ পাতার অন্যান্য খবর
- সংস্কারের মাধ্যমে পরিবর্তনই প্রত্যাশা
- অনিয়ম-দুর্নীতিতে বিশৃঙ্খল ঢাকার যানজট পরিস্থিতি
- ফ্যাসিস্ট আ’লীগকে রাজনীতির মাঠে চায় না জনগণ
- প্রশাসনের পরতে পরতে পতিত ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মাদের পদধ্বনি
- পাকিস্তানে লালগালিচা সংবর্ধনা জাকির নায়েককে
- বাংলাদেশের ইতিহাসের স্মরণীয় নাম আব্বাস আলী খান
- রাঙামাটিতে সন্ত্রাসীদের হামলায় আহতদের জামায়াতের আর্থিক সহায়তা বিতরণ
- আশুলিয়ায় শ্রমিক হতাহতে জামায়াতের উদ্বেগ
- বেসামাল নিত্যপণ্যের বাজার