রেজি : ডিএ ৫১৭ ॥ ৬৩ বর্ষ : ৮ম সংখ্যা ॥ ঢাকা, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ ॥ ৮ জিলকদ ১৪৪৫ হিজরী ॥ ১৭ মে ২০২৪

ডিম মুরগি মাছ আলু বেগুনসহ সবকিছুরই দাম বাড়ছে
স্টাফ রিপোর্টার : যারা ঘুষ-দুর্নীতি ও অন্যান্য অবৈধ পথে উপার্জন করে টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছেন, তাদের কথা ভিন্ন। কিন্তু যেসব নাগরিককে নির্ধারিত আয়ে সংসার চালাতে হচ্ছে এবং যারা দরিদ্র ও স্বল্পআয়ের মানুষ, তারা নিত্যপণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। খরচের তালিকা কাটছাঁট করতে করতে এখন পিঠ ঠেকেছে দেয়ালে। আয় বাড়ছে না কিন্তু ব্যয় বেড়েই চলছে। দু’সপ্তাহ আগেও এক ডজন ডিমের মূল্য ছিল ১২০ টাকা, এখন সেই ডিমের মূল্য ১৫৫ টাকা। আলু কেজি ৬০ টাকা, অথচ বছরের পর বছর আলু বিক্রি হয়েছে ১৮ থেকে ২০ টাকা কেজিদরে। কোনো কারণ ছাড়াই গত বছর এ আলুর মূল্য অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। গত এক মাস আগেও আলুর মূল্য ছিল ৩৫ টাকা কেজি, এখন তা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এ অবস্থাই চলছে সব নিত্যপণ্যের ক্ষেত্রে। দেখার যেন কেউ নেই। সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা শুধু কথা বলে যাচ্ছেন, কিন্তু পণ্যমূল্য কমছেই না।
খবর নিয়ে জানা গেছে, নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তির কোনো লক্ষণই নেই। মাছ-গোশত, ডিম, সবজি ও মসলাসহ বেশিরভাগ পণ্যের দাম চড়া। এক কেজি বেগুনের দাম এখন ১০০-১২০ টাকা। কাঁকরোল-বরবটিরও দর একই। আর সজনে ডাঁটা বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকা দরে। এমনকি সস্তা দামে পরিচিত পেঁপের কেজিও এখন ৮০ টাকা। পটোল আর ঢ্যাঁড়শ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৬০-৮০ টাকার মধ্যে। এছাড়া অন্যান্য সবজির দাম এর ওপরে। গাজর-শসা ও টমেটোও ৮০-১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি কাঁচামরিচের দাম ৪০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকায় উঠেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সব সবজির দাম চড়া। গেল সপ্তাহে প্রচণ্ড গরমে ক্ষেতে অনেক সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। যার প্রভাব পড়ছে বাজারে। এদিকে বাজারে পেঁয়াজের দাম নতুন করে বাড়তে দেখা গেছে। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৯০ টাকা, যা আগে ছিল সর্বোচ্চ ৭০ টাকা। এছাড়া আদা-রসুন ২২০ টাকার নিচে মিলছে না। অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগির দামে ততটা হেরফের না হলেও সোনালি জাতের মুরগির দাম বেশ বেড়েছে। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪১০-৪২০ টাকা, যা দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ৮০ টাকা বেড়েছে। তবে ব্রয়লার ২২০-২৩০ টাকার মধ্যে কেনা যাচ্ছে। আবার বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের দামও এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি ডজনে ২০ টাকা বেড়ে ১৪০ টাকা দরে ঠেকেছে।
এছাড়া বেড়েছে মাছের দাম। ক্রেতারা মাছ কিনতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। নদী ও হাওরের মাছ সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে গেছে অনেক আগেই। চাষের মাছও এখন বেশ চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগে এক কেজি ছোট ও মাঝারি আকারের পাঙাশের দাম ছিল ১৮০-২২০ টাকা, সেই একই পাঙাশ এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৫০ টাকায়। দাম বেড়ে তেলাপিয়া মাছের কেজি ২৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। মাঝারি ও বড় মানের তেলাপিয়া প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-২৮০ টাকায়, ঈদের আগে যা ছিল ২২০-২৫০ টাকা।
চাষের কই বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৫০ টাকার ওপরে। আর ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের চাষের রুই মাছের দাম হাঁকানো হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকা কেজি। বড়গুলো ৩৬০-৪০০ টাকা। বাজারে ইলিশের সরবরাহ তেমন নেই। ৪০০-৫০০ গ্রামের ইলিশের দাম চাওয়া হচ্ছে প্রতি কেজি ১২০০-১৪০০ টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রাম হলে ১৬০০-১৮০০ টাকা। আর কেজি সাইজের হলে দাম দুই হাজারের ওপরে। মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, এক মাস আগের চেয়ে প্রতিটি মাছে কেজিতে ৫০-১০০ টাকা বেড়েছে। এতে আমাদের বেচাকেনা কমেছে। ব্যবসা করা কঠিন হয়ে গেছে। আড়তে মাছ নাই। যা পাই চড়া দাম। ক্রেতারা নিচ্ছেন না।
এদিকে এক মাসের ব্যবধানে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি আবার বেড়েছে। সর্বশেষ গত এপ্রিল মাসে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১০ দশমিক ২২ শতাংশে উঠেছে। এর আগের মাস মার্চে এ হার ছিল ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এরও আগে গত বছরের নভেম্বর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ। অর্থাৎ চার মাস পর খাদ্য মূল্যস্ফীতি আবার ১০ শতাংশ ছাড়ালো। তবে মূল্যস্ফীতির হার শহরের চেয়ে গ্রামে বেশি। সাধারণ, খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত খাতে শহরের চেয়ে গ্রামের মানুষ বেশি চাপে আছে। একই সঙ্গে যেভাবে মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে, সেভাবে মানুষের আয় বাড়েনি। গত ১৩ মে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
সেখানে দেখা গেছে, এপ্রিল মাসে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে; গত মাসে এ খাতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এর আগে মার্চ মাসে যা ছিল ৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এদিকে গত এপ্রিল মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ হয়েছে; আগের মাস মার্চে এ হার ছিল ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ। বিবিএস প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, শহরের চেয়ে গ্রামে মূল্যস্ফীতির হার বেশি। এপ্রিলে শহরে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার ৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ অথচ গ্রামে এ হার ছিল ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। গ্রামে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতির হার ১০ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং খাদ্যবহির্ভূত খাতে ৯ দশমিক ৬০ শতাংশ।
অন্যদিকে শহরে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার ৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ। শহরে খাদ্য খাতে ১০ দশমিক ১৯ শতাংশ এবং খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতির হার হয়েছে ৯ দশমিক ০১ শতাংশ। শহরের তুলনায় গ্রামে সব খাতেই মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে। বিবিএস বলছে, যেখানে এপ্রিল মাসে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ, সেখানে মজুরি সূচক বেড়ে মাত্র ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ হয়েছে। তার মানে সংসারের খরচ মেটাতে ধারদেনা করতে হচ্ছে। কৃষিতে ৮ দশমিক ২৫, শিল্প খাতে ৭ দশমিক ৩৬ ও সেবা খাতে মজুরি সূচক ৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।