রেজি : ডিএ ৫১৭ ॥ ৬৩ বর্ষ : ৮ম সংখ্যা ॥ ঢাকা, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ ॥ ৮ জিলকদ ১৪৪৫ হিজরী ॥ ১৭ মে ২০২৪

॥ হারুন ইবনে শাহাদাত ॥
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন জনগণের এ দাবি পূরণে বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীসহ সব বিরোধীদলের সিনিয়র নেতারাও চান ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে। কিন্তু প্রশ্ন হলো- কেন এ চাওয়া পূরণ হচ্ছে না। বাধা কোথায়? এ প্রশ্নের উত্তর নেই কারো কাছে। সাপ্তাহিক সোনার বাংলার গত সংখ্যায় ‘ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক আসবে কবে?’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের পর পাঠকদের অনেকেই প্রশ্ন করেছেন- জাতির এ সংকট মোকাবিলায় জাতীয় নেতারা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দিচ্ছেন না কেন? বাধা কোথায়? একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এমন প্রতিক্রিয়া অনেক পাঠক জাতীয় নেতাদের কাছেও প্রকাশ করেছেন। রাজপথের প্রধান বিরোধীদল বিএনপি নেতারাও বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন এবং তারাও আন্দোলনের অন্যতম বড় শক্তি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ ইসলামপন্থী অন্যান্য এবং ডান-বাম সব আদর্শের রাজনৈতিক দলকে সাথে নিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের প্রশ্নে নীতিগতভাবে একমত। এ নিয়ে অনানুষ্ঠানিক কথা হয়েছে নেতাদের মধ্যে এমন দাবি করেছে একাধিক সূত্র।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিভাজন ভুলে সব রাজনৈতিক দলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। সেই বিভাজন থেকে সকলের বেরিয়ে আসা উচিত। বাংলাদেশের কল্যাণের জন্য এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সবার উচিত একসাথে কাজ করা।’
রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বর্তমানে বিএনপির প্রাণভোমরা। তাকে কেন্দ্র করেই বিএনপির সব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তিনি যখন বলছেন, তারপরও কেন সব দলের সাথে বিএনপির কার্যকর ঐক্যপ্রচেষ্টা দৃশ্যমান নয়, এর মানে তার উপলব্ধি বাস্তবায়নের ক্ষমতা তার হাতে নেই, অন্য কোনো অদৃশ্য শক্তি বিএনপি নিয়ন্ত্রণ করছে? কী সেই অদৃশ্য শক্তি, তা খুঁজে বের করতে পারলে আন্দোলন-সংগ্রামের দৃশ্যপট বদলে যাবে। জনতার সাগরে আবার জোয়ার আসবে। কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি পূরণ হবে। জনগণ ভোটাধিকার ফিরে পাবে। দেশে আবার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে।
অবশ্য মির্জা ফখরুল ইসলাম সম্প্রতি এক বক্তৃতায় বলেছেন, ‘অদৃশ্য শক্তি দেশ পরিচালনা করছে।’ জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘জনগণের সরকারই সরকার পরিচালনা করছে। অদৃশ্য শক্তি দ্বারা সরকার পরিচালনা বিএনপির চরিত্র। অদৃশ্য শক্তির মানসিক ট্রমায় ভুগছে বিএনপি।’
অদৃশ্য শক্তি দৃশ্যমান
সরকার স্বীকার করুক না নাই করুক, রাজনীতি পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, দেশের রাজনীতিতে অদৃশ্য শক্তি আর অদৃশ্য নেই, দৃশ্যমান। তাই সরকার ও বিরোধীদলের নেতারা স্বীকার না করলেও জনগণ বিশ^াস করে বিশে^র পরাশক্তি আমেরিকা, রাশিয়া, চীন এবং প্রতিবেশী আগ্রাসী শক্তি ভারতের এদেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ দৃশ্যমান। এসব শক্তির অদৃশ্য সুতার টানে বাঁধা পড়েছে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা। তাই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা বুঝে বিএনপি এক পা অগ্রসর হলে জুজুর ভয়ে দুই পা পেছায় বলে তারা মনে করেন। এছাড়া বিরোধীদলগুলো ক্ষমতার বদল, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা, কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তি ইত্যাদি রাজনৈতিক ইস্যু কর্মসূচিকে বার বার হাইলাইটস করছে, কিন্তু তৃতীয় বিশে^র দেশগুলোর রাজনীতির মাঠে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে প্রয়োজন জনগণের সমস্যাগুলো বেশি বেশি তুলে ধরা। এদেশের রাজনীতির ইতিহাস পর্যালোচনা করলেও দেখায় দ্রব্য এবং বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন সেবার মূল্যবৃদ্ধি, বেকার সমস্যা, কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য ইত্যাদি ইস্যু হাইলাইটস করলে জনগণ জীবনবাজি রাখতে ভয় পায় না। বিগত দেড় দশকের আওয়ামী লীগের একতরফা কর্তৃত্ববাদী শাসনে এমন হাজারো বড় বড় ইস্যু সামনে এলেও ‘তারা রাজনীতি করছে’, ‘তারা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলছে,’ আওয়ামী লীগের এমন হুমকিতে বার বার পিছু হটেছে। কিন্তু দেশের ষাটের দশকের গণআন্দোলন মুক্তি-সংগ্রামে পরিণত হয়েছিল উল্লেখিত ইস্যুগুলো দক্ষতার সাথে তৎকালীন নেতৃত্ব সামনে এনেছিলেন বলেই। এমনই ‘দশ টাকা কেজি চাল’ আওয়াজ তুলে এবং ঢাকায় বিদ্যুৎ সমস্যার আন্দোলনের সময় তৎকালীন সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিনকে তাড়া করার মতো ঘটনার জন্ম দিয়ে আওয়ামী লীগ আজ ক্ষমতায়।
বিরোধীদলগুলো জনগণের ইস্যুগুলো নিয়ে তেমন জোরালো আওয়াজ তুললে, তাদের পাশে দাঁড়ালে অবশ্যই সক্রিয় কর্মী-সমর্থকরা ছাড়া অন্যরা মাঠে আসবে। এই তো সেদিন শাহবাগে চাকরিপ্রার্থীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হলো। ৫শ’ জনকে আসামী করে মামলা হয়েছে। স্পট থেকে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। অথচ প্রতিবেশী দেশের পাঁচ লাখ লোক এদেশে চাকরি করছে। একাধিক সংবাদমাধ্যম অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে জানানোর পরও বিরোধীদলের কোনো বক্তব্য নেই। আওয়ামী লীগ বিরোধীদলে থাকতে এমন ইস্যুতে কেন্দ্রীয় নেতারা চলে যেতেন সংগ্রামী জনতার সাথে সংহতি জানাতে। তারা সরকারে গেলে সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। প্রতিবেশী দেশের পশ্চিমবঙ্গে সিঙ্গুর কৃষক আন্দোলনের সাথে সংহতি জানতে মমতা ব্যানার্জি তাদের সমাবেশে বক্তব্য দিয়েছেন। তখন তিনি বিরোধীদলীয় নেত্রী ছিলেন। বর্তমানে তিনি মুখ্যমন্ত্রী।
কিন্তু শাহবাগের চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের মতো এমন ইস্যুতে বর্তমান বিরোধীদলগুলোর সংহতি দূরের কথা, কোনো বিবৃতিও এ প্রতিবেদকের চোখে পড়েনি। তারা আছেন রুটিন কর্মসূচি নিয়ে। রুটিন কর্মসূচিকে সরকার কেয়ার করছে না। বিরোধীদলের আন্দোলন-সংগ্রাম ও শক্তিকে বিবেচনায় নিচ্ছে না বলেই সরকার পদত্যাগের দাবি মানা দূরের কথা, সংলাপেও ডাকছে না। তাই ঐক্যবদ্ধ তীব্র আন্দোলন ছাড়া কেয়ারটেকার সরকারের দাবি আদায় হবে এমন আশা সুদূরপরাহত বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। যত জনসমর্থনই থাকুক, শুধু জনসমর্থন স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে কোনো কাজে আসে না, মাঠের তীব্র আন্দোলন ছাড়া। জাতীয় নির্বাচনের পর উপজেলা নির্বাচন চলছে। বিরোধীদলের আহ্বানে সাড়া দিয়ে জনগণ ভোটবর্জন করছে। স্বল্প ভোটারের উপস্থিতির মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল যষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচন। নির্বাচনে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। ভোটের এ হার গত ৫টি উপজেলা নির্বাচনের মধ্যে সর্বনিম্ন।
গণতন্ত্রের প্রতি সামান্যতম শ্রদ্ধাবোধ থাকলে সরকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বিরোধীদলের দাবি মেনে নিত। কিন্তু কথায় আছে, ‘ন্যাংটার আবার লজ্জা কী?’ যারা যেকোনো মূল্যে ক্ষমতায় থাকতে চায়, তাদের কাছে জনগণের ভোট বর্জন কোনো বিষয় না। গান্ধীবাদী রুটিন আন্দোলনে তাদের টনক নড়ে না। তাই গণতান্ত্রিক আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর করতে হবে। আন্দোলনের সব টুলস ও কৌশল নিয়ে ভাবতে হবে। কারণ তাছাড়া কোনো দৃশ্যমান অদৃশ্য শক্তিই এগিয়ে আসবে না গণতন্ত্রের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে দিতে। পরাশক্তিগুলোর ডাবল স্ট্যান্ডার্ড নীতি দৃশ্যমানÑ তারা এক সাথে, ‘সাপের গালে এবং ব্যাঙের গালে চুমো দেয়’। তাই তাদের প্রতি অন্ধ আস্থা রেখে জনসমর্থন ও সাংগঠনিক শক্তিতে এগিয়ে থাকা কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে দূরত্ব সৃষ্টি করার অর্থ কর্তৃত্ববাদী সরকারের শাসন দীর্ঘায়িত করা বলে স্বীকার করেছেন বিরোধীদলের একাধিক নেতা। তাহলে পরবর্তী কর্মকৌশল কী?
 কোনো বিকল্প পথ নেই
বিরোধীদলের প্রতি ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ মন্তব্য করেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র বাংলাদেশ সফরের দিকে তাকিয়ে দেখে লাভ নেই। তারা মনে করেন, তিনি আসছেন সরকারের জন্য ইতিবাচক বার্তা নিয়ে। বিরোধীদলের পক্ষ থেকে এর জবাবে বিএনপি এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একাধিক নেতাও বলেছেন, তারা কোনো দেশের দিকে তাকিয়ে রাজনীতি করেন না, দেশের জনগণের জন্য রাজনীতি করেন, তাদের সমর্থন ও শক্তি নিয়েই তারা মাঠে আছেন। জনগণ তাদের সাথে আছে। কূটনীতি বিশেষজ্ঞ মহল অবশ্য বলছেন, সরকার ও বিরোধীদল তাদের মতো করে বিষয়টির ব্যাখ্যা করলেও সঙ্গত কারণেই লু’র সফরে গণতন্ত্র, নাগরিক অধিকারসহ সামগ্রিক মানবাধিকারের বিষয়গুলো আলোচনায় আসবে। কারণ উল্লেখিত বিষয়গুলো যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম প্রধান উপাদান। সরকারের এক কর্মকর্তা বলেন, বিষয়গুলো আলোচনা থেকে হারিয়ে গেছে বা যাবে- এমন ভাবার কোনো সুযোগ নেই। তবে বিষয়গুলো নিয়ে কূটনৈতিক চাপ পরামর্শের পর্যায়েই হয় তো থাকবে। ক্ষমতাসীন সরকারের সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক রাখাও তাদের কূটনৈতিক শিষ্টাচার।
বিরোধীদলের কর্মকৌশল তাদের মতো করেই নির্ধারণ করতে হবে। দেশের রাজনৈতিক অবস্থা, সরকারের বিরুদ্ধে কতটুকু শক্তি প্রয়োগের সক্ষমতা ও সাংগঠনিক মজবুতি আছে। শরিকদের অবস্থা সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে তারা নতুন করে মাঠে নামার কথা ভাবছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বিরোধীদলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করার, কীভাবে এগোনো যায়, তা নিয়ে কথা হবে। এছাড়া দলের মধ্যেও অঙ্গ সংগঠন ও পেশাজীবীদের সঙ্গে বসা শুরু করেছি। অর্থাৎ দল গুছিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সামনে অর্থনৈতিক বিপর্যয় আসছে। সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি, কথাবার্তা বলছি। এটাকে আমরা সামনে আনব।’ তবে তিনি পরিষ্কার করেননি কার কার সাথে কথা বলেছেন। শুধুমাত্র নিজের দল ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের সাথে নাকি সাবেক ২০ দলীয় জোট, বর্তমান ১২ দলীয় শরিক অথবা ডান-বাম সব দলের নেতাদের সাথে। অবশ্য এ প্রসঙ্গে ১২ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ লিবারেল পার্টির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘সব বিরোধীদলকে এক কর্মসূচিতে একসঙ্গে মাঠে নামানো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এতে বিএনপির আগ্রহ আছে। আমরাও যুগপৎ আন্দোলনের বাইরে থাকা দলগুলোকে; বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীকে সম্পৃক্ত করার বিষয়ে বলেছি।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, আমরা গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও কেয়ারকেটার সরকার প্রতিষ্ঠার পক্ষের সব বিরোধীদলের সাথে এক ইস্যুতে আন্দোলন করছি। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ২০২৩ সাল জুড়েই আমরা তীব্র শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলন গড়ে তুলেছিলাম। আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে জনগণ ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের ভোট বর্জন করেছে।’ তিনি মনে করেন, জনগণের দাবি আদায়ে ডান-বাম ছোট-বড় সব দলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কেয়ারটেকার সরকারের দাবি আদায় এবং জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প পথ নেই।
রাজনীতি পর্যবেক্ষকদের কণ্ঠেও বিরোধীদলের নেতাদের প্রতিধ্বনিই ধ্বনিত হচ্ছে। সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, দেশে রাজনীতি বলতে কিছু নেই। আছে শাসকদল। তারা বলে, হয় তুমি আমাদের সাথে আসো, না হলে তুমি আমাদের শত্রু। ২০১৪ সালের পর থেকে দেশে তার ভাষায় কোনো মাল্টি পার্টি সিস্টেম বা বহুদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা নেই। এভাবে কোনো দেশের ডেমোক্র্যাটিক প্রসেস চলে না।’ বিশ্লেষকরা মনে করেন, শক্তিশালী বিরোধীদল গণতন্ত্রের অপরিহার্য শর্ত। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আইভর জেনিংসের মতে, ‘If there is no opposition, there is no democracy.’ অর্থাৎ যেখানে বিরোধীদল নেই, সেখানে গণতন্ত্র নেই।
জনগণের অধিকার আদায়ে জাতীয় সংসদ থেকে রাজপথ সর্বত্র থাকবে বিরোধীদলের উচ্চকণ্ঠ। কিন্তু স্বৈরাচারী শাসকরা সংসদ বিরোধীদলমুক্ত রাখতে যুগে যুগে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে, এখনো তা অব্যাহত আছে। এমন অবস্থায় বিরোধীদলের হাত গুটিয়ে বসে থাকার উপায় নেই। বরং মুষ্টিবদ্ধ হাতে রাজপথে নামতে হবে। একজন রাজনীতি বিশ্লেষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন না থাকলেই এ মতবাদ বা তার অনুসারীরা বিলুপ্ত হয়ে যাবে না। এ কথা প্রধানমন্ত্রীও জানেন। তাই যারা জামায়াতে ইসলামীর মতো শক্তিকে মাইনাস করে রাজনৈতিক ঐক্য এবং ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কথা বলছেন কিংবা ভাবছেন, তারা আসলে আওয়ামী লীগের কর্তৃত্ববাদী শাসনের পক্ষের লোক। জনগণের সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।