সাক্ষাৎকারে আ. ন. ম. শামসুল ইসলাম

ইসলামী শ্রমনীতি চালুর মাধ্যমে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব

হারুন ইবনে শাহাদাত
২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:০৪

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও জাতীয় সংসদের সাবেক সদস্য আ. ন. ম. শামসুল ইসলামের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন হারুন ইবনে শাহাদাত

সাপ্তাহিক সোনার বাংলার সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও জাতীয় সংসদের সাবেক সদস্য আ. ন. ম. শামসুল ইসলাম বলেছেন, শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা করতে হলে মানুষের তৈরি করা নীতি নয়, বরং ইসলামী শ্রমনীতি চালুর মাধ্যমে তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব। বিশ্বের প্রতিটি বিপ্লবে শ্রমিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু শ্রমিক ভাইয়েরা সবসময় অবহেলিত-উপেক্ষিত। শ্রমজীবী মানুষকে বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন ও পরিবর্তন কখনো সম্ভব নয়। শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিতে ইসলামী শ্রমনীতির বিকল্প নেই। বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন শ্রমিকদের অধিকার বাস্তবায়নে কাজ করছে এবং কাজ করবে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ শ্রমজীবী-মেহনতি। এদেশের সরকার পরিবর্তনে শ্রমজীবীদের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। জাতীয়তাবাদ, পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র কোথাও শান্তি নেই। একমাত্র ইসলামী শ্রমনীতিতেই রয়েছে শান্তি। আমাদের শ্রমিকরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট সরকার হাসিনার পতনে ভূমিকা রেখেছেন। আগামীতে নির্বাচন হবে, কেউ ভোটাধিকার হরণ করতে পারবে না। তাই শ্রমিকের অধিকার আদায়ের জন্য যোগ্য নেতৃত্ব বাছাই করতে হবে- যারা শ্রমিকের অধিকার নিয়ে কথা বলবে। শ্রমজীবী মানুষকে বাদ দিয়ে দেশের পরিবর্তন আশা করা যায় না। এ সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন হারুন ইবনে শাহাদাত

সংক্ষিপ্ত জীবনী
জাতীয় সংসদের সাবেক সদস্য আবুল নূর মোহাম্মদ আ. ন. ম. শামসুল ইসলাম বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের বর্তমান সভাপতি। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ১৯৫৭ সালের ১ মার্চ চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলার বারদোনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মোহাম্মদ আলী মিঞা এবং মাতার নাম হাফেজা আমেনা খাতুন। মোহাম্মদ আলী মিঞা পেশায় একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। তার মাতা আমেনা খাতুন ছিলেন আল কুরআনের একজন হাফেজা।
শামসুল ইসলাম ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। ১৯৭৮ সালের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি মনোনীত হন। ১৯৮১ সালের অক্টোবর থেকে ১৯৮৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৫ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল মনোনীত হন। দুই সেশন সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব পালনের পর ১৯৮৭ সালের অক্টোবরে তিনি ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৮৬-৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ১৯৮৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।
শামসুল ইসলাম ১৯৮৯ সালে জামায়াতে ইসলামীর সাথে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হন। ১৯৯০ সালের এপ্রিল থেকে চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৩ সালে তিনি চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি মনোনীত হন। ১৯৯৭ সালে তিনি গ্রেপ্তার হন এবং দীর্ঘদিন কারাবরণ করেন। ২০০০ সালে চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের আমীর নির্বাচিত হন। তিনি একই বছরে চট্টগ্রাম মহানগর চারদলীয় জোটের যুগ্ম আহ্বায়ক নিযুক্ত হন। ২০০১ সালে চারদলীয় জোট আমলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সদস্য মনোনীত হন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘ ১৬ বছর চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের আমীরের দায়িত্ব পালন শেষ করার পর ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি শামসুল ইসলাম বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর নিযুক্ত হন। তিনি ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) সংসদীয় আসনে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে তিনি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মনোনীত হন।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) সংসদীয় আসনে তিনি প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হন; আওয়ামী লীগ অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে তার বিজয় ছিনিয়ে নেয়। শামসুল ইসলাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং বর্তমানে চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ট্রাস্টি বোর্ডের সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

সাক্ষাৎকারের পূর্ণ বিবরণ
সোনার বাংলা : ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণবিপ্লবকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
শামসুল ইসলাম : আলহামদুলিল্লাহ। এ বিজয় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের রহমত। শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন, শোষণ আর নির্যাতনে নির্যাতিত মজলুম জনগণের প্রচেষ্টা এবং দোয়া তিনি কবুল করে আমাদের এ বিজয় দান করেছেন। আমাদের সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার, ইনসাফপূর্ণ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাজপথে নেমেছিল। তাদের এ আন্দোলন ছিল শান্তিপূর্ণ। কিন্তু ফ্যাসিস্ট হাসিনা তাদের দমন করতে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বাধ্য করে নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালাতে। ১৬ জুলাই রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের মেধাবী ছাত্রনেতা আবু সাঈদ পুলিশের সামনে বুক চেতিয়ে দাঁড়ালে হাসিনার পুলিশ বিনা উসকানিতে তার ওপর গুলি চালায়। তিনি শাহাদাতবরণ করেন। এ দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে দল-মত নির্বিশেষে ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমে আসে। রাজধানী ঢাকাসহ প্রতিটি জনপদে অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মতো ছড়িয়ে পড়ে ফ্যাসিস্টের পদত্যাগ দাবির এক দফার আন্দোলন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের প্রতিটি রাজনৈতিক দল বিগত সাড়ে ১৫ বছরের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার পাশে দাঁড়ায়। গণঅভ্যুত্থান পরিণত হয় গণবিপ্লবে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসররা জনরোষ থেকে বাঁচতে পদত্যাগ করে। হাসিনা পালিয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন, যা অনেকের কল্পনারও অতীত। অথচ তিনি দম্ভভরে বার বার বলতেন, ‘শেখ হাসিনা পালায় না।’ সেই দর্পচূর্ণ হয়েছে মহান রব আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ইশারায়। প্রায় ২ হাজার শহীদের জীবন, অসংখ্য মানুষের অন্ধত্ব ও পঙ্গুত্বের বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা স্বৈরাচারী-ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন এবং আমাদের এ বিজয় উপহার দিয়েছেন। এখন আমাদের দায়িত্ব মহান রবের শুকরিয়া আদায় এবং তাঁর নিদের্শমতো ন্যায়-ইনসাফ কায়েম করা। দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, ঘুষমুক্ত রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করতে হবে। যেখানে মালিক প্রভু নয়, হবেন শ্রমিকের ভাই। মালিক-শ্রমিকের ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে ফিরে আসবে সোনালি সুদিন। আমাদের প্রিয় জন্মভূমিকে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মিলে গড়ে তোলার মাধ্যমে এ বিপ্লবের সুফল পৌঁছে যাবে সবার ঘরে ঘরে। বিশ^ মানচিত্রে আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াব সুখী-সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে।
সোনার বাংলা : বিপ্লবের পর সবকিছু যথাযথভাবে চলছে কি?
শামসুল ইসলাম : আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, বিপ্লবের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিদায় হয়েছে। তার চিহ্নিত দোসররা আত্মগোপনে চলে গেছে। কিন্তু বর্ণচোরারা এখনো ঘাপটি মেরে আছে। চূড়ান্ত বিজয় এখনো আসেনি। চূড়ান্ত বিজয়ের জন্য রাষ্ট্র সংস্কারের আয়োজন চলছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শ্রমিক ও পেশাজীবী সংগঠন এবং আপনাদের মতো সাংবাদিক ও মিডিয়াকর্মীরা সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে যত বেশি ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করবেন; তত দ্রুত ফ্যাসিস্ট, খুনি ও তাদের দোসরদের বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা যাবে। জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হবে। কারণ রাষ্ট্র সংস্কার ছাড়া নির্বাচন সুফল বয়ে আনবে না। জনগণের প্রত্যাশা অনুসারে বিপ্লবের পর সবকিছু চলছেÑ এ কথা আমি কেন, এ সরকারও মনে করছে না। তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কাজ করতে গেলে সমস্যা আসবে। সাহসিকতার সাথে সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে। তবেই আমরা চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব, ইনশাআল্লাহ।
সোনার বাংলা : আপনার দৃষ্টিতে বিপ্লব-পরবর্তী সমস্যা ও সম্ভাবনাগুলো কী কী?
শামসুল ইসলাম : আপনার ওপরের প্রশ্নের উত্তরে এ প্রসঙ্গে বেশকিছু কথা উল্লেখ করেছি। বিপ্লবের পর প্রথম যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল, তা হলোÑ আমাদের পুলিশ বাহিনী একেবারেই ভেঙে পড়েছিল। ফ্যাসিস্ট হাসিনা তাদের রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছেন। ছাত্র-জনতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন। গুম-খুনসহ এমন কোনো অপরাধ নেই, যা তাদের দিয়ে করাননি। শুধু অবকাঠামো নয়, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নৈতিক মনোবল পর্যন্ত ভেঙে পড়েছিল। বিপ্লবোত্তর পরিবেশে ছাত্র-জনতা সাহসিকতার সাথে সেই সংকট মোকাবিলা করছে। সবার ঐক্যবদ্ধ সহযোগিতায় পুলিশের মনোবল ফিরে এসেছে। তারা আইনশৃঙ্খলার কাজে আত্মনিয়োগ করেছেন। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নিয়ে মাঠে আছে। সবচেয়ে বড়কথা, ফ্যাসিস্টবিরোধী শক্তির ঐক্যে ফাটল ধরাতে ষড়যন্ত্রকারীরা এখন পর্যন্ত সফল হয়নি। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি ও গোষ্ঠী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকলেও জনগণ সজাগ আছে। আমরা আশাবাদী, আমাদের অযুত সম্ভাবনার এদেশে উন্নতি ও অগ্রগ্রতির প্রধান বাধা দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও স্বৈরতন্ত্র- এ সত্য এদেশের জনগণের সামনে আজ উন্মোচিত হয়েছে। সৎ-যোগ নেতৃত্বের অধীনে জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে সম্ভাবনার অপার দুয়ার খুলবেই।
সোনার বাংলা : বিপ্লব সফল করতে আমাদের করণীয় কী?
শামসুল ইসলাম : আল্লাহর ওপর ভরসা, দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থান এবং সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকা। হাজার হাজার শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা যা অর্জন করেছি, লোভ-লালসা ও সামান্য অর্থের বিনিময়ে যেন তা বিকিয়ে না দিই। সামনের নির্বাচনে অর্থ-বিত্তের লোভ-লালসা এবং ভয় ও বাধামুক্তভাবে সৎ-যোগ্য নেতৃত্ব বেছে নিতে হবে। যারা আল্লাহর দেয়া বিধানের আলোকে বৈষম্য ও শোষণমুক্ত ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠার যোগ্যতা রাখেন, তাদের বেছে নিতে হবে।
সোনার বাংলা : ফ্যাসিবাদমুক্ত উন্মুক্ত পরিবেশে দাওয়াতি কাজের যে সুযোগ আপনারা পেয়েছেন, এ সুযোগ কীভাবে কাজে লাগাচ্ছেন?
শামসুল ইসলাম : দাওয়াতি কাজের জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী অনুষঙ্গ হলো- যিনি দাওয়াত দেবেন, তার চরিত্র। তাই আমাদের চরিত্রের প্রভাব বাড়াতে হবে। সবার আগে পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে নিজেকে গড়তে হবে। এ কাজে সফল হলে জেলখানাও হয়ে যায় দাওয়াতের উন্মুক্ত পরিবেশ। বিগত ১৭ বছর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা তা প্রমাণ করেছেন। আমাদের শীর্ষনেতাদের আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার বিনা অপরাধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মেটাতে হত্যা করেছে। বর্তমান আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান এবং আমার মতো অসংখ্য নেতাকর্মীকে বিনা অপরাধে দিনের পর দিন জেল-জুলুম ও রিমান্ডের নামে নির্যাতন করেছে। সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম এখনো জেলে আছেন। আমাদের চরিত্র হননের জন্য ভিত্তিহীন অভিযোগের স্ক্রিপ্ট লিখিয়ে আদালতে জমা দিয়েছে। পত্রিকা-টেলিভিশনে প্রচার করে মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে জনমতকে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু আল্লাহর রহমতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। জনগণ ঠিক সত্যটা বুঝতে পেরেছে বলেই আজ নির্যাতনকারী ফ্যাসিস্টরা পালিয়েছে। আল্লাহর মজলুম বান্দাদের ডাকে দলে দলে মানুষ সাড়া দিচ্ছে। ফ্যাসিস্টমুক্ত পরিবেশে জনগণ সাহস ফিরে পেয়েছে। তাদের এ সাহসকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। তাদের দ্বারে দ্বারে আমাদের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে।
সোনার বাংলা : সংস্কার এবং নির্বাচন প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য দেখা যাচ্ছে। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন?
শামসুল ইসলাম : মতপার্থক্য গণতান্ত্রিক রাজনীতির সৌন্দর্য। রাজনীতিতে মতপার্থক্য আছে বলেই তো বহু দল। তবে কেউ সংস্কার ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিপক্ষে নয়। কারণ জনমতের বাইরে গিয়ে জনগণের জন্য রাজনীতি করা যায় না। সবাই চাচ্ছে দ্রুত সংস্কার ও দৃশ্যমান বিচারের পর নির্বাচন। আমরাও যৌক্তিক সময়ে সংস্কার ও বিচার শেষ করে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জাানচ্ছি।
সোনার বাংলা : ভারত হাসিনার পতন ও জনগণের বিজয়কে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না। বিশেষ করে ৫ আগস্ট থেকে তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে বাংলাদেশে ইসলামী উগ্রপন্থিদের উত্থান হয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে টার্গেট করেছে। এ ষড়যন্ত্র মোকাবিলার উপায় কী?

শামসুল ইসলাম : আসল কথা শুরুর আগে একটি কথা বলে রাখি, ভারতের সাধারণ জনগণ এবং প্রতিবেশী দেশ হিসেবে তাদের সাথে আমাদের কোনো শত্রুতা নেই। বরং আমরা মনে করি, আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। আরেকটা কথা আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, প্রতিবেশী বদলানো যায় না। তাই আমরা একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ হিসেবে ভারতসহ প্রত্যেকটি প্রতিবেশী দেশের সাথে সমমর্যাদার ভিত্তিতে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে বিশ্বাসী। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, শেখ হাসিনার নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে ভারত আমাদের ওপর প্রভুত্ব ফলিয়েছে। দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, প্রতিরক্ষা, শিল্প-বাণিজ্য থেকে নিয়ে সর্বক্ষেত্রে নগ্ন হস্তক্ষেপ করেছে। তাদের আচরণে আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বই বিপন্ন হয়ে পড়েছিল। হাসিনার দুঃশাসন আর ভারতীয় আধিপত্যবাদ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে ছাত্র-জনতার ৩৬ জুলাই বিপ্লবকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে আখ্যা দিয়েছেন দেশের জনগণ এবং বিদেশের মিত্ররা। বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই ভারতের বর্তমান আধিপত্যবাদী শক্তির জন্য মেনে নেয়া কষ্টকর। তাই তারা আমাদের এ গণবিপ্লবকে কলঙ্কিত করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উগ্রপন্থির ট্যাগ লাগানোর ষড়যন্ত্র করছে। তবে আশার কথা, আধুনিক প্রযুক্তির কারণে অবাধ তথ্যপ্রবাহের এ যুগে তারা বার বার ব্যর্থ হচ্ছে। মিথ্যা তথ্য ও অপপ্রচারে ভারত বিশে^ প্রথম স্থান লাভ করেছে। আপনি একজন সচেতন সাংবাদিক হিসেবে অবশ্যই অবগত আছেন, ‘মিথ্যা তথ্য ছড়ানোয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। সামাজিকমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর ক্ষেত্রে ভারত শীর্ষে রয়েছে। গত জানুয়ারিতে প্রকাশিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যবেক্ষণকারী ‘স্টাটিস্টা’র গবেষণা প্রতিবেদনে এ সত্য প্রকাশিত হয়েছে। ‘স্টাটিস্টা’ ছাড়াও প্রযুক্তি জায়ান্ট মাইক্রোসফটের এক জরিপেও দেখা গেছে, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ভুয়া তথ্য ছড়ানোয় শীর্ষস্থানে রয়েছে ভারত। সাম্প্রতিক এ সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিভিন্ন অপপ্রচার ও ভুয়া তথ্যে সয়লাব হয়ে গেছে ভারতের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সংবাদমাধ্যমগুলোও।

সোনার বাংলা : প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, পতিত সরকার লুটের বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ ব্যয় করছে দেশকে অস্থিতিশীল করতে। সম্প্রতি এর প্রমাণও পাওয়া যাচ্ছে। এ সংকট মোকাবিলায় আপনার পরামর্শ কী?
শামসুল ইসলাম : এটি নতুন ঘটনা নয়। বিশে^ প্রথমও নয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই পতিত স্বৈরাচার লুটপাটের অর্থ ব্যবহার করে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে, ফিরে আসার চেষ্টা করে। তাই আমরা দেখি ইতালি ও জার্মানির মতো উদার গণতান্ত্রিক দেশেও ফ্যাসিস্ট মুসোলিনি এবং হিটলারের রাজনৈতিক দল আইন করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমেরিকায়ও নাৎসি ও ফ্যাসিস্টদের বরদাশত করা হয় না। উল্লেখিত বিষয়গুলো মনে রেখে অন্তর্বর্তী সরকার, ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দল ও সাধারণ জনগণকে সচেতন থাকতে হবে। যেভাবে গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে বিতাড়িত করেছে। একইভাবে আওয়ামী লীগের ফিরে আসার ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় আপস করা যাবে না। দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারলে কোনো ষড়যন্ত্রই সফল হবে না।
সোনার বাংলা : নতুন রাজনৈতিক দল ও শক্তির উত্থান সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?
শামসুল ইসলাম : ওয়েলকাম। রাজনৈতিক দল গঠন করার গণতান্ত্রিক অধিকার সবারই আছে। তবে অবশ্যই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বিশ্বাস ও নীতি-নৈতিকতা, গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার অঙ্গীকারের কথা মনে রেখে তাদের পথ চলতে হবে।
সোনার বাংলা : চট্টগ্রামের উন্নয়ন নিয়ে আপনার বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে কি? বিশেষ করে ভারত থেকে চট্টগ্রাম নিয়ে যে হুমকি দেয়া হচ্ছে?
শামসুল ইসলাম : চট্টগ্রাম আমাদের বাণিজ্যিক রাজধানী। দেশের গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রবন্দর এখানে অবস্থিত। তাই ভারত যত হুমকিই দিক না কেন, বীর চট্টলার জনগণকে সাথে নিয়ে তা প্রতিহত করার ক্ষমতা আমাদের আছে। আপনারা জানেন, এ চট্টগ্রাম থেকেই দেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা এসেছিল। সেই তরঙ্গ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ার পরই দেশের সর্বস্তরের জনগণ অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। তাই চট্টগ্রামের বীর জনতা স্বাধীনতা অর্জন করতে যেমন জানে, তেমনি রক্ষা করতেও জানে। চট্টগ্রামের উন্নয়নে বিশেষ পরিকল্পনা আছে সমুদ্রকে ঘিরে। আপনি জানেন, বাংলাদেশের সুপারপাওয়ার হওয়ার সম্ভাবনা শুধু গালগল্প নয়। উনিশ শতকের শেষ দিকে মার্কিন নৌকৌশলবিদ আলফ্রেড থায়ার মাহান ‘দি ইন্টারেস্ট অব আমেরিকা ইন সি পাওয়ার’ (১৮৯৭) শিরোনামে একটি গ্রন্থ লেখেন। এতে তিনি লেখেন, সমুদ্র-বাণিজ্য বা নৌশক্তি যেভাবেই হোক, সমুদ্র যার নিয়ন্ত্রণে থাকবে, তার পক্ষে পৃথিবী নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বর্তমানে বিশ্ব বাণিজ্যের ৯০ শতাংশই হয় সমুদ্রপথে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দ্য ডিপ্লোম্যাটের মতে, বঙ্গোপসাগরে খনিজসম্পদের সঠিক আহরণ ও ব্যবহার বাংলাদেশকে আগামী দিনের এনার্জি সুপারপাওয়ারে পরিণত করবে। আবার আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দ্য স্ট্র্যাটেজিস্টের মতে, বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ জনসংখ্যা রয়েছে এ অঞ্চলে। ভারতের প্রভাব থেকে বের হয়ে শির উঁচু করে দাঁড়ানোর মতো সাহসী নেতৃত্ব বাংলাদেশকে সুপারপাওয়ারের মর্যাদায় উন্নীত করবে, এতে সন্দেহ নেই। এজন্যই সৎ ও সাহসী নেতৃত্বকে ভারতের এত ভয়। সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব তৈরির সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে নব্য বিভীষণ তালাশ করছে এবং ডাবল গেম খেলার ছক আঁকছে। কিন্তু আমরা বিশ^াস করি, দেশের জনগণকে সাথে নিয়ে আল্লাহর রহমতে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমরা দেশকে এগিয়ে নিতে পারব, ইনশাআল্লাহ।
সোনার বাংলা : আগামী জাতীয় নির্বাচনে কি বিএনপি ও সমমনা দলের সাথে জোটবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করবে জামায়াত?
শামসুল ইসলাম : একজন বিজ্ঞ সাংবাদিক হিসেবে অবশ্যই আপনি জামায়াতে ইসলামীর সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবগত। এককভাবে এ ব্যাপারে কথা বলা আমার পক্ষে সমীচীন নয়। আমাদের সম্মানিত আমীরে জামায়াত মজলিসে শূরার সাথে পরামর্শ করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তারপর তিনিই তা ঘোষণা করবেন। এর আগে এ প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে নেই।
সোনার বাংলা : আপনি শ্রমিক আন্দোলনের সাথে জড়িত। দেশের শ্রমিকদের অবস্থা এবং তাদের অধিকার রক্ষায় করণীয় সম্পর্কে আপনার পরামর্শ কী?
শামসুল ইসলাম : শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা করতে হলে মানুষের তৈরি করা নীতি নয়, বরং ইসলামী শ্রমনীতি চালুর মাধ্যমে তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব। বিশ্বের প্রতিটি বিপ্লবে শ্রমিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু শ্রমিক ভাইয়েরা সবসময় অবহেলিত-উপেক্ষিত। শ্রমজীবী মানুষকে বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন ও পরিবর্তন কখনো সম্ভব নয়। শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিতে ইসলামী শ্রমনীতির বিকল্প নেই। বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন শ্রমিকদের অধিকার বাস্তবায়নে কাজ করছে এবং কাজ করবে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ শ্রমজীবী-মেহনতি। এদেশের সরকার পরিবর্তনে শ্রমজীবীদের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। জাতীয়তাবাদ, পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র কোথাও শান্তি নেই। একমাত্র ইসলামী শ্রমনীতিতেই রয়েছে শান্তি। আমাদের শ্রমিকরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট সরকার হাসিনার পতনে ভূমিকা রেখেছেন। আগামীতে নির্বাচন হবে, কেউ ভোটাধিকার হরণ করতে পারবে না। তাই শ্রমিকের অধিকার আদায়ের জন্য যোগ্য নেতৃত্ব বাছাই করতে হবেÑ যারা শ্রমিকের অধিকার নিয়ে কথা বলবে। শ্রমজীবী মানুষকে বাদ দিয়ে দেশের পরিবর্তন আশা করা যায় না।
সোনার বাংলা : দেশবাসীর উদ্দেশে আপনার বক্তব্য কী?
শামসুল ইসলাম : আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ মুসলমান। তারা নিষ্ঠার সাথে ইসলামের মৌলিক ইবাদত নামাজ, রোজা, হজ পালন করেন। জাকাত আদায় করেন। হালাল-হারাম মেনে চলেন। তাদের উদ্দেশে আমার বক্তব্যÑ আপনারা পবিত্র কুরআন-হাদিস পড়–ন। আল্লাহর রাসূল সা.-এর জীবনী পড়–ন। সেখানে দেখবেন, ইসলামের পরিপূর্ণ অনুশীলন ইসলামী আন্দোলন করা ছাড়া সম্ভব নয়। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আপনাদের কাছে সেই দাওয়াতই দিচ্ছে। অন্য ধর্মের ভাইয়ের প্রতি আমাদের অনুরোধ- ইসলাম ধর্মবিশ্বাস কারো ওপর জোর করে চাপিয়ে দেয়া সমর্থন করে না। অন্য ধর্মের মানুষ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে যারা বসবাস করেন, তাদের জিম্মাদার আমরা। তাদের ধর্মীয় অধিকারসহ সব আইনসঙ্গত অধিকার রক্ষা করা আমাদের ধর্মীয় দায়িত্ব। দেশটা আমাদের সবার। আসুন জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মিলে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করি।
সোনার বাংলা : আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।
শামসুল ইসলাম : সোনার বাংলা পরিবারের সবাইকে ধন্যবাদ।

interview ANM Shamsul Islam with Harun ibn Shahaday