ভোটাধিকার হারানোর শঙ্কায় ভারতের মুসলমানরা


৩০ অক্টোবর ২০২৫ ১৩:৪৫

ভারতের নির্বাচন কমিশন গত ২৭ অক্টোবর সোমবার বিকেলে ঘোষণা করেছে যে, ১ নভেম্বর থেকে দেশের ১২টি রাজ্যে ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ভোটার তালিকায় ‘নিবিড় সংশোধন’ চালানো হবে। পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাডু, কেরালা, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশসহ ১২টি রাজ্যের তালিকায় আসামের নাম নেই। যদিও পশ্চিমবঙ্গ ও তামিলনাডুর সঙ্গেই আসামেও মাস ছয়েকের মধ্যে বিধানসভার নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগেই এ নিবিড় সংশোধন বা স্পেশাল ইনটেন্সিভ রিভিশন- এসআইআর প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় নথি না দেখাতে পারলে বহু মানুষের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিরোধীদলগুলো। কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতারা দাবি করে আসছেন যে, পশ্চিমবঙ্গের মতো কিছু রাজ্যে বহু কথিত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ভোটার তালিকায় নাম তুলে ফেলেছেন। ‘নিবিড় সংশোধন’ হলেই বাদ পড়বে ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ ও ‘রোহিঙ্গারা’। তবে এ প্রক্রিয়ায় ভারতের মুসলমানদের একাংশের নামও বাদ দিয়ে দেওয়া হবে না তো- প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। মুসলমানদের মধ্যেও ভোটাধিকার হারানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে জানাচ্ছেন মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন এমন সামাজিক কর্মকর্তারা। বিহারে আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে একইভাবে ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধন চালিয়ে প্রায় ৪৭ লাখ মানুষের নাম বাদ দিয়েছে কমিশন। এদের মধ্যে একটা বড় অংশই বিবাহিত নারী এবং পরিযায়ী শ্রমিক বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত ২৭ অক্টোবর সোমবার বিকেলে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের তিন সদস্য এক সংবাদ সম্মেলনে এসআইআর বা ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধনের বিস্তারিত ঘোষণা করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার ওই সংবাদ সম্মেলনে জানান, ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে মঙ্গলবার থেকেই এসআইআরের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে, তবে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম বিলি করা হবে ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কুমারের কথায়, ‘নিবিড় সংশোধনের উদ্দেশ্য হলো যাতে একজনও বৈধ ভোটার তালিকা থেকে বাদ না পড়েন, আর একজনও অবৈধ ভোটারের নাম যাতে তালিকায় না থাকে, সেটি নিশ্চিত করা।’ ভোটারদের বাড়ি গিয়ে যে ফর্ম দেওয়া হবে, তার কিছুটা অংশ আগে থেকেই ছাপা হয়ে থাকবে, তবে বাকি অংশটা ভর্তি করতে হবে ভোটারদেরই। এ পর্যায়েই একজন ভোটারকে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করতে হবে- তার নিজের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় আছে কী না, তা দেখে ‘লিঙ্ক’ করতে হবে নিজের নাম। যদি আগের তালিকায় তার নাম না থাকে, তাহলে তাদের পরবর্তীকালে নোটিশ পাঠাবেন নির্বাচন কর্মকর্তারা। তখন জন্মের নথি বা অভিভাবকে নথির মতো ১২টি নথি দেখে কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। এর বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে। অনলাইনেও এই প্রক্রিয়ায় নিজের নাম আগের তালিকার সঙ্গে ‘লিঙ্ক’ করা যাবে বলে জানিয়েছেন মি. কুমার। বিবিসি।