মোহাম্মদপুরে এনসিপির সমাবেশ

আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি


২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:২৯

স্টাফ রিপোর্টার : একটি গণহত্যাকারী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের সব রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং তাদের বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। পাশাপাশি এ দলকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হলে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতা তা রুখে দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দেয় তারা।
গত ২১ এপ্রিল সোমবার বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হলের শহীদ পার্ক মসজিদ চত্বরে এক বিক্ষোভ সমাবেশে দলটির নেতারা এসব কথা বলেন। এনসিপির বৃহত্তর মোহাম্মদপুর জোনের উদ্যোগে ‘আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ, সংস্কার এবং গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি’তে এ সমাবেশ হয়। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহীদ পার্ক মসজিদ চত্বর থেকে শিয়া মসজিদ হয়ে আদাবর থানার সামনে গিয়ে শেষ হয়।
এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব আকরাম হুসাইন বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে মোহাম্মদপুরে ২০-৩০ জন শহীদ হয়েছেন। এখন পর্যন্ত তাদের গেজেট যেমন প্রকাশ করা হয়নি, তেমনি খুনিদের গ্রেফতার করা হয়নিÑ এটা খুবই দুঃখজনক।
প্রশাসনের আড়ালে এখনো আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের পাঁয়তারা হচ্ছে অভিযোগ করে এ নেতা বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক, যা এ অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে প্রত্যক্ষ গাদ্দারি। একটি গণহত্যাকারী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের সব রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আওয়ামী লীগের বিচার করতে নতুন কোনো আইন দরকার নেই। যে মামলা হয়েছে, সেই মামলায় গ্রেফতার করা যায়।
সংস্কারের বিকল্প নেই উল্লেখ করে আকরাম হুসাইন বলেন, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমেই কেবল অভ্যুত্থান-পরবর্তী নতুন বাংলাদেশের আকাক্সক্ষা বাস্তবায়ন সম্ভব। এর অন্যথা হলে আবারও বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের অতল গহ্বরে হারিয়ে যাবে।
এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) ইমরান ইমন বলেন, আওয়ামী লীগের দোসর, প্রেতাত্মারা এখনো বিভিন্ন জায়গায় রাজপথে নামার সাহস করছে। এনসিপি ও দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের কোনো ধরনের আস্ফালন বরদাশত করবে না। যারা আমাদের ভাইদের খুন করেছে, গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, নির্যাতন-নিপীড়নের রাজনীতি করেছে, সেই আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে কোনো প্রকার রাজনীতি করার নৈতিক অধিকার রাখে না।
এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত বলেন, যারা বলেন আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন হলে গণতান্ত্রিক নির্বাচন হবে না, তাদের বলে দিতে চাই, জুলাইয়ে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তারা আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে রাজপথে নেমেছেন। আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বে না। আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের সঙ্গে কোনো আপস নয়।
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ঠাঁই হবে না উল্লেখ করে এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশির বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করে পুনর্বাসনের চেষ্টার দুরভিসন্ধি করা হলে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো হবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে পরপর তিনটি নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য মীর হাবীব আল মানজুর। তিনি বলেন, যারা আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতির সাথি ছিল, সবাইর বিচার করতে হবে। দলের আরেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ উদ্দিন মাহাদী বলেন, গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে শেখ হাসিনাকে দিল্লি থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠক এম এম শোয়াইব বলেন, আওয়ামী লীগের ভালো লীগ বা মন্দ লীগ বলে কিছু নেই। তাদের একটাই পরিচয় গণহত্যাকারী লীগ। অবিলম্বে তাদের সব সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং দল হিসেবে তাদের বিচার ও নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানান তিনি।
সমাবেশে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নেতা মুসফিক উস সালেহীন, আলাউদ্দিন মোহাম্মদ, মুশফিকুর রহমান জোহান, রফিকুল ইসলাম এবং এনসিপি মোহাম্মদপুর জোনের নেতারা।