কমলগঞ্জে আমের মুকুলের সুঘ্রাণে মাতোয়ারা চারদিক
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:০৩
আবদুল হাই ইদ্রিছী, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার): ‘আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা/ফুল তুলিতে যাই, ফুলের মালা গলায় দিয়ে/মামার বাড়ি যাই। ঝড়ের দিনে মামার দেশে/আম কুড়াতে সুখ, পাকা জামের মধুর রসে/রঙিন করি মুখ…।’ পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের ‘মামার বাড়ি’ কবিতার পঙক্তিগুলো বাস্তব রূপ পেতে বাকি রয়েছে আর মাত্র কয়েক মাস। তবে সুখের ঘ্রাণ বইতে শুরু করেছে চারদিকে। গাছে গাছে ফুটছে আমের মুকুল। ছড়িয়ে পড়ছে এ মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ। বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে ম-ম গন্ধ। যে গন্ধ মানুষের মনকে বিমোহিত করে। পাশাপাশি মধুমাসের আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে আমের মুকুল।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় এরই মধ্যে আমের মুকুলের সুঘ্রাণে মাতোয়ারা চারদিক। বাতাসে ম-ম গন্ধ। মধু সংগ্রহ করতে ভিড় করছে মৌমাছিরা, জানান দিচ্ছে মধুমাসের আগমনী বার্তা। হরেক রকমের আমের জন্য উত্তরাঞ্চল প্রসিদ্ধ হলেও এখন সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় বাহারি আমের চাষ করা হচ্ছে।
এদিকে উপজেলার বিভিন্ন চা-বাগানে বাংলোর আশপাশে রয়েছে নানা জাতের আমগাছ। তাছাড়া বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, কিছুদিন আগের বৃষ্টির পানি পেয়ে গাছে গাছে আমের মুকুল বের হতে শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে এ বছর আমের ভালো ফলন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূল থাকায় মুকুলে ভরে গেছে বাগানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে লাগানো আমগাছগুলো।
কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগর আমের বাগান মালিক আজাদ মিয়া। তিনি জানান, ‘প্রায় দুই সপ্তাহ আগে থেকে তাদের আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। কিছু গাছ মুকুলে ছেয়ে গেছে। বেশিরভাগ গাছে মুকুল বের হচ্ছে। মুকুল আসার পর থেকেই তারা গাছের পরিচর্যা করছেন। মুকুলের বিভিন্ন রোগ-বালাইয়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ গ্রহণ করছেন।’
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার রায় জানান, ‘আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। আবহাওয়া অনুকূলে। তবু এ সময় বিভিন্ন পোকামাকড় মুকুলের ক্ষতি করে। এ পোকা দমনে বালাইনাশক স্প্রে করলে তা আক্রমণ করতে পারে না।’ খুব ভালো ফলন পাওয়ার আশা করেন তিনি।’
মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ উপপরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, এ বছর আমের আগাম মুকুল ফুটেছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে মুকুলগুলো নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নেই। আমের মুকুলের পরিচর্যায় এভোমেট্রিন ও ছত্রাকনাশক মেনকোজেভ বালাইনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আমচাষি এবং সংশ্লিষ্ট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর এবার আমের বাম্পার ফলনের আশা করছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং সময়মতো পরিচর্যা হলে চলতি মৌসুমে আমের ভালো ফলন হবে বলে ধারণ করা হচ্ছে।’