ছড়া ও কবিতা
৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:১৩
দোয়েল পাখি
আব্দুস সাত্তার সুমন
সাদা-কালো দুইটি রং
দোয়েল পাখি ছিল!
ধীরে ধীরে বিলীন এখন
কোথায় তারা গেল?
দোয়েল পাখি দোয়েল পাখি
কথা হবে রাতে,
বনের আকাশ খুঁজে বেড়াই
খাবার নিয়ে হাতে।
নিধন হয়ে যাচ্ছে পাখি
ধরে রাখি তাতে,
ভালোবাসি পশুপাখি
রক্ষা করি যাতে।
জাতীয় পাখি দোয়েল,
ছিল মোদের জানা!
বন্দিশালায় দেখা যায়
চিড়িয়াখানা।
মেঘের বাড়ি
মাহমুদা সিদ্দিকা
আকাশটা তো মেঘের বাড়ি
সর্বলোকে জানে
শূন্যের ওপর ঘর বানিয়ে
আল্লাহ মালিক মানে॥
কালো মেঘের আনাগোনা
বর্ষাকালে থাকে
হঠাৎ হঠাৎ বৃষ্টি শেষে
রংধনু সে আঁকে।
মুষলধারে বৃষ্টি এসে
আনন্দ দেয় প্রাণে
কৃষক হাসে মিষ্টি হাসি
সজীবতার ঘ্রাণে॥
শুভ্র সাদা শাড়ি পরে
শরৎকালের মেঘ
শিখিয়ে দেয় পবিত্রতা
উদারতা ত্যাগ।
গ্রীষ্মকালে উদাস হাওয়া
আকাশ নীলের গানে
বছরজুড়ে তাসবীহ জপে
আল্লাহ তায়ালার শানে।
অফিসপাড়া
ফরিদ আহমদ ফরাজী
লেখাপড়া যেটুক আছে মোটামুটি ভালো
চাকরি নাই বাকরি নাই বেকার অধ্যায় কালো।
মন্ত্রী মামায় ডেকে বলে বেকার আছিস বেটা?
কিছু পয়সা খরচ করলে চুখে যাবে ল্যাঠা
টাকা কড়ি কোথায় পাবো! হাঁড়িতে নেই চাল
ওষুধ কেনার টাকা নেই তাই বাবা মরলো কাল।
মন্ত্রী মামায় বলছে হেসে, ভালোর জন্য বলি
টাকা থাকলে দেখা করিস, এবার তবে চলি।
তেল ছাড়া কি কুপি জ্বলে? অবুঝ কেন তুই
বেচে দে না বসতভিটা, দু’কাঠা তোর ভুঁই।
দেখবি তবে চাকরি পেলে খুলবে কপাল তোর
দক্ষিণাটা পেলেই হবে, নয়কো আমি চোর।
ভিটামাটি বিক্রি করে, লাখ দশেক হয় তাতে
আর দেরি নয় টাকাগুলো দিলো মন্ত্রীর হাতে
মাছি মারার কেরানি তুই এই চেয়ারে বস
একটা দুটা মাছি মারবি, পারবি না! কি কস?
সেদিন থেকে গাঁয়ের ভাগ্নে চাকরিজীবী তাই
আঙুল ফুলে কলাগাছ তার অভাব-টভাব নাই।
দীনের আলো
মাহফুজা খাতুন
ভয়কে মোরা জয় করিবো
ভয় কুঁড়েদের মাঝে,
পারবে না আর কেউ থামাতে
ছুটবো সকাল সাঁঝে।
বাধার পাহাড় মাড়িয়ে দিয়ে
করবো যুদ্ধজয়,
খোদার পথে জীবন দিতেও
পাবো নাকো ভয়।
মোদের প্রাণে আছে যে ভাই
শুধুই আল্লাহর ভয়,
নদীর মতো যাবো বয়ে
হবেই হবে জয়।
আলোর খবর খুঁজতে গিয়ে
আঁধার পায়ে দলেও,
দীনের আলো জ্বালবো মোরা
জীবন দিয়ে হলেও।
অপচয়
শামসুন্নাহার সুমনা
রোজ অপচয় করছো কত তা কি ভেবে দেখো?
অপচয়কারী শয়তানের ভাই এটা মনে রেখো।
রব দিয়েছেন কত নেয়ামত গোটা দুনিয়ায়,
খুশি মনে করো কি তার শুকরিয়া আদায়?
হেলা-খেলা যতই করো হচ্ছে লেখা সব,
রোজ হাশরে সব কিছুরই চাইবে হিসাব রব।
করো না তাই আর অপচয় রবকে করো ভয়,
করলে তাওবা প্রভু ক্ষমা করবে তো নিশ্চয়।
মৃতব্যয়ী হবে তুমি আজই পণটা করো,
সঠিক পথে দীনের মতে জীবনটাকে গড়ো।
খোকাবাবু
খন্দকার জাহাঙ্গীর হুসাইন
মনে হয় বড় তিনি কথা বলেন পাক্কা
তার গাড়ি ছুটে চলে, সেথা তিন চাক্কা।
মাঝে-মাঝে ছড়া পড়ে, ধরা পড়ে পড়তে
সারা দিন খেটে-খুটে পারে ঘুড়ি গড়তে।
মনে হয় বড় তিনি সাধারণ শিশু না
তার কাছে গাছে ওঠা একেবারে কিছু না।
ছুটে চলে সারা বাড়ি সাঁতরায় পুকুরে
সাথে নেয় প্রতিবেশী আনোয়ার, টুকুরে।
এইভাবে খোকাবাবু হয়ে ওঠেন পাকনা
আমি বলি, খোকাবাবু আরো পেকে যাক না।
মুনতাহা
মুহাম্মদ ইব্রাহিম বাহারী
ফুটফুটে সোনামুখ
দেখলে ভরে বুক
নিষ্পাপ পরী,
চাদের হাসি আঁকা
জোসনার রংমাখা
রূপের সরি।
ঝলমলে মুখখানা
চোখ দুটো টানাটানা
সে তো মুনতাহা,
ওরে হে পাষাণী খুনি
বল না একটু শুনি
কত নিষ্ঠুর, আহা!
এই পতাকা
মো. শাহাজাহান হোসেন
এই পতাকা বুকের ভেতর
স্বপ্ন জাগায় রোজ
সামনে যাওয়ার উদ্দীপনা
নিত্য করি খোঁজ।
আলো আশা ভালোবাসায়
প্রস্ফুটিত মন
এই পতাকায় শক্তি সাহস
বাড়ায় সারাক্ষণ।
এই পতাকায় স্মৃতির সাগর
দারুণ মনোবল
বিশ্ব মাঝে এই পতাকা
আজও সমুজ্জ্বল।
তুমি ছাড়া নেই উপায়
আবুল খায়ের বুলবুল
প্রতিদিন পাপ করে
গুনাহ মাফ চাই
রহমান বলে তুমি
মাফ করো তাই॥
যে পাপ করেছি আমি
জীবন ভরে
মিজানে মাপ দিলে
যাবো আমি হেরে
তোমার রহম ছাড়া প্রভু
কোনো পথ নাই॥
যে ভুল করেছি আমি
রাত্রি নিশি দিন
ক্ষমার অযোগ্য জানি
তবু তুমি রাব্বুল আলামিন॥
তোমার পথে না চলে
হয়েছি পথহারা
বেদনার রৌদ্রখরায়
আমি সাহারা
তোমার রহম ছাড়া প্রভু
কোনো পথ নাই॥
হেমন্তীকার দানে
আসাদুজ্জামান খান মুকুল
কাননে ফুটেছে দেব কাঞ্চন
হেমন্তীকার দানে,
মধু মক্ষীকা ছুটেছে সেথায়
নিগূঢ় প্রেমের তানে।
অবলোকে তাহা শিউলি কামিনী
ধরেছে কেশর মেলি,
দিগন্ত মাঠে ছড়িয়েছে ধানে
সোনালি রঙের চেলি।
দূর্বার শিরে ঝিকিমিকি করে
শিশিরে মাখিয়ে আলো,
হিমেল বায়ের ছোঁয়াতে অঙ্গে
লাগিয়েছে বেশ ভালো !
কিষান-কৃষানি ব্যস্ত সকলে
ধানের মাড়াই কাজে,
নতুন ধানের সুগন্ধ পেয়ে
সুখের বাঁশরী বাজে।
পিঠা পায়েসের উৎসব কত
চলেছে সবার ঘরে,
হেমন্তী শোভা লাগে মনোলোভা
হেরিয়া নয়ন ভরে!