সংবাদপত্রের পাতা থেকে
৮ নভেম্বর ২০২৪ ১১:০২
॥ আহমদ আজিজ ॥
নির্বাচনে যেতে দলগুলোর তাড়া, সংস্কারে ঢিমেতাল
দৈনিক সমকালের ৬ নভেম্বরের প্রধান শিরোনাম, ‘নির্বাচনে যেতে দলগুলোর তাড়া, সংস্কারে ঢিমেতাল।’ খবরে বলা হয়, দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের জন্য উশখুশ করছেন রাজনৈতিক নেতারা। নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার চাপে আছে সরকার। যদিও সরকার থেকে বলা হচ্ছে, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে। তবে সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনের কাজে নেই কাক্সিক্ষত গতি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচন নিয়ে সরকারের ধীরে চলো নীতি এবং সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলের অমনোযোগ দু’পক্ষের মধ্যে দূরত্ব বাড়াচ্ছে। একে অপরের মধ্যে সন্দেহ ও অবিশ্বাস তৈরির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আবারও ষড়যন্ত্র করে বিএনপিকে বাদ দিয়ে কিছু করার চেষ্টা করবেন না। মাইনাস-টু ফর্মুলা আগেও কাজ করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না। নির্বাচন দিতে অন্তর্র্বর্তী সরকারের আগ্রহের বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
অন্যদিকে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম বলেছেন, সংবিধান সংস্কারে কমিশনের কাছ থেকে পাওয়া সুপারিশ বর্তমান সরকারই বাস্তবায়ন করবে। নির্বাচিত সংসদ ছাড়া সুপারিশ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি অবশ্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন।
বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার অনুযায়ী রাষ্ট্র ব্যবস্থা সংস্কারের অংশ হিসেবে নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন এবং সংবিধান সংস্কারে ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়। এর মধ্যে সংবিধান সংস্কারে গঠিত কমিশন ছাড়া বাকিগুলো এখনো পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়নি। অন্য পাঁচটিতে একজন করে ছাত্র প্রতিনিধি রাখার কথা বলা হলেও তা পূরণ হয়নি। এর বাইরে স্বাস্থ্য, শ্রমিক অধিকার, নারী অধিকার ও গণমাধ্যম সংস্কারে আরও চারটি কমিশন গঠনের লক্ষ্যে কমিশনপ্রধানদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এর সদস্য কারা হবেন, তা ঠিক হয়নি। এসব কমিশনের সুপারিশ সরকারের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য তিন মাস সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, আগামী রোববার (১০ নভেম্বর) নাগাদ এ চার কমিশনের সদস্যদের নামসহ প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। তবে সরকারের তরফ থেকে শিক্ষা ব্যবস্থাসহ আরও কয়েকটি খাত সংস্কারে কমিশন গঠনের কথা জানা গেছে।
দৈনিক ইত্তেফাকের ৬ নভেম্বরের প্রথম পাতার খবর, ‘বুড়িগঙ্গা সেচলে অসংখ্য মানুষের কঙ্কাল মিলবে’। প্রতিবেদনে বলা হয়, গুমসংক্রান্ত ঘটনা তদন্তে সরকার গঠিত কমিশনে দেড় মাসে ১ হাজার ৬০০ অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৩৮৩টি অভিযোগ যাচাই করে কমিশন জানিয়েছে, ১৭২টি অভিযোগই র্যাবের বিরুদ্ধে।
কমিশনের এ পর্যন্ত পরিদর্শন করা আটটি ‘বন্দিশালার’ মধ্যে দু-একটি বাদে সবই ইতোমধ্যে সংস্কার করা হয়েছে। ফলে অনেক আলামত হারিয়ে গেছে। যারা আলামত নষ্ট করছেন, তাদের গুমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সহযোগী হিসেবে বিবেচিত করা হবে জানিয়েছেন গুম কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী।
গত মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানে গুমসংক্রান্ত কমিশন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, অভিযোগ তদন্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের ডাকতে ‘সমন জারি’ করা হচ্ছে। আমরা আপাতত সমন করেছি সাত জনকে। এরা সবাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ডিজিএফআইর সদস্য।
‘পাচারের অর্থ উদ্ধারে যুক্ত হচ্ছে অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা’- এটি দৈনিক নয়া দিগন্তের ৬ নভেম্বরের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে দেশি-বিদেশি সংস্থার তৎপরতা শুরু হয়েছে। আমদানি-রফতানির আন্ডার ইনভয়েস বা ওভার ইনভয়েস ছাড়াও শেখ হাসিনার শাসনামলে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে জনগণের আমানতের অর্থ নজিরবিহীনভাবে পাচার করা হয়েছে লাখ লাখ কোটি টাকা। বিশ্বে বিরল এসব ঘটনা সরেজমিন উদ্ঘাটন করার অভিজ্ঞতা অন্যান্য দেশে কাজে লাগাতে চাচ্ছে বিশ্বের অনেক সংস্থা।
আর এ কারণেই বাংলাদেশ ব্যাংকে আন্তর্জাতিক অনেক সংস্থা তথ্য উদ্ঘাটন থেকে শুরু করে অর্থ উদ্ধারের কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হতে তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচিতিপত্র পাঠাচ্ছে। এ বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিসের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে আসছেন শিগগিরই। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতিনিধিরাও আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশে আসছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানেরই যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় তিন শতাধিক বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে। বিতর্কিত ব্যবসায়ী গ্রুপ এস আলম রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে দখলে নেয়া ৮টি ব্যাংক থেকে প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে শুধু ইসলামী ব্যাংক থেকেই সরিয়ে নিয়েছে ১ লাখ কোটি টাকার ওপরে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগীরা দেশ থেকে ১৭ বিলিয়ন ডলার সরিয়েছে। এর মধ্যে এস আলম একাই সরিয়েছে ১০ বিলিয়ন ডলার।
সামিট গ্রুপের বিরুদ্ধে কয়েকটি দেশে বিপুল অংকের অর্থ পাচারের অভিযোগ উঠেছে। বিতর্কিত নাসা গ্রুপের যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশে অর্থ পাচারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। তেমনিভাবে বেক্সিমকো গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপের বিরুদ্ধেও অর্থ পাচারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে বিদেশি কয়েকটি বেনামি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিপুল অংকের অর্থ পাচারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে ওরিয়ন গ্রুপের বিরুদ্ধে। এসব তথ্য ইতোমধ্যে দেশি-বিদেশি সংস্থার মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়েছে। আরো অধিক তথ্য উদ্ঘাটনের কাজ চলছে।
‘অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য সতর্কবার্তা’- এটি দৈনিক আজকের পত্রিকার ৬ নভেম্বরের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্যের বাইরে অন্য কোনো স্লোগান বা জয়ধ্বনি না দিতেও সরকারি কর্মচারীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান সম্প্রতি এক আধাসরকারি পত্রে সব সচিবকে তাদের অধীন সরকারি দপ্তরের কর্মচারীদের জন্য এ বিষয়ে নির্দেশনা জারির অনুরোধ করেছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সরকারি কর্মচারীদের অধিকতর সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। সম্প্রতি মাঠপর্যায়ের কিছু অফিসের কর্মকাণ্ডের সংবাদ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হওয়ায় বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, যা অনভিপ্রেত।
এমন পরিস্থিতিতে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের আওতাধীন দপ্তর ও মাঠপর্যায়ের অফিসের জন্য নির্দেশনা জারি করা যেতে পারে বলে চিঠিতে পরামর্শ দিয়েছেন জনপ্রশাসন সচিব। কোন কোন বিষয়ে নির্দেশনা জারি করা যেতে পারে, সে বিষয়ে কিছু পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।
নিজ অধিক্ষেত্রের যেকোনো অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার চূড়ান্ত আমন্ত্রণ গ্রহণের আগে আয়োজক প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার কার্যক্রম সম্পর্কে নিবিড়ভাবে তথ্য সংগ্রহ করে আমন্ত্রণ চূড়ান্ত করা; বিতর্ক এড়াতে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অন্যান্য অতিথি সম্পর্কেও তথ্য সংগ্রহ করা; কোনো বিতর্কিত ব্যক্তি অনুষ্ঠানের অতিথি তালিকায় থাকলে সেই অনুষ্ঠানে না যাওয়া; অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র, ব্যানার, লিফলেট, পতাকা ও অন্য যেকোনো ছাপানো কাগজের বর্ণনা, লোগো বা স্লোগানে আপত্তিকর, বিতর্ক সৃষ্টিকারী কোনো উপাদান রয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন জনপ্রশাসন সচিব।
মার্কিন নির্বাচন নিয়ে দৈনিক দেশ রূপান্তরের ৬ নভেম্বরের প্রথম পাতার খবর, ‘বাংলাদেশে কি আদৌ কোনো প্রভাব পড়বে’। খবরে বলা হয়, ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে এবার বাংলাদেশের মানুষের আগ্রহ অনেক বেশি। বিশেষ করে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের বিষয়ে মন্তব্য করার পর আগ্রহ বেড়েছে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্য ও ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যাদের আগ্রহ আছে তারাও নিবিড়ভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ওপর চোখ রেখেছেন।
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ট্রাম্প ও ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের পরিবারের সম্পর্কের বিষয়টি।
বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দেড় লাখ মামলা নিয়ে দৈনিক যুগান্তরের ৫ নভেম্বরের প্রথম পাতার খবর, নিষ্পত্তিতে ‘কচ্ছপ গতি’, ক্ষোভ বিএনপিতে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট শপথ নেয় অন্তর্র্বর্তী সরকার।
আগামী ৭ নভেম্বর হচ্ছে এ সরকারের তিন মাস। কিন্তু এখনো ‘কচ্ছপ গতিতে’ চলছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার অথবা নিষ্পত্তির কার্যক্রম। এতে তৃণমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত নেতাকর্মীদের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ।
‘অর্থনীতিতে কিছুটা শৃঙ্খলা, অস্বস্তি রাজনীতিতে’- এটি দৈনিক কালের কণ্ঠের ৫ নভেম্বরের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের অবসানের আজ তিন মাস পূর্ণ হচ্ছে। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ও দেশ ছাড়ার পর শুরু হয় গণতন্ত্রের পথে রাষ্ট্র সংস্কারের মাধ্যমে উদার, গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের যাত্রার প্রত্যাশা নিয়ে নতুন এক অধ্যায়।
৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের বয়সও তিন মাস পূর্ণ হওয়ার পথে। এই তিন মাস মূল্যায়নে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ভঙ্গুর সামষ্টিক অর্থনীতিতে খানিকটা শৃঙ্খলা ফিরেছে।
আর রাজনীতিবিদরা সংস্কার এবং এখনো দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্পষ্ট পদক্ষেপ না নেওয়ায় এক ধরনের অস্বস্তির কথা জানিয়েছেন।
সরকারের অর্থ বিভাগের তথ্য মতে, নবগঠিত এবং ব্যতিক্রমী এ সরকারকে কাজ শুরু করতে হয় আগের সরকারের রেখে যাওয়া ১৮ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা ঋণের বোঝা নিয়ে। এর মধ্যে পুঞ্জীভূত বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছয় হাজার ৭৯০ কোটি ডলার। এ বিপুল ঋণের আসল ও সুদ পরিশোধের চাপ এখন বর্তমান সরকারের ঘাড়ে।
দৈনিক ইত্তেফাকের ৫ নভেম্বরের প্রধান শিরোনাম, ‘মব নিয়ন্ত্রণে বলপ্রয়োগের পদ্ধতি পরিবর্তনের প্রস্তাব’। খবরে বলা হয়, রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে গঠিত কমিশনগুলোর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গত সোমবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে কমিশন প্রধানরা নিজ নিজ নেতৃত্বাধীন কমিশনের কাজের অগ্রগতি তুলে ধরেন। প্রধান উপদেষ্টা এ সময় কমিশন প্রধানদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন।
‘রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফাকে নতুন করে ব্র্যান্ডিং করবে বিএনপি’- এটি দৈনিক নয়া দিগন্তের ৫ নভেম্বরের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে ঘোষিত ৩১ দফা রূপরেখা নতুন করে ব্র্যান্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। চলতি মাসের যেকোনো দিন এটি আবার জাতির সামনে তুলে ধরা হতে পারে।
গত রাতে (৪ নভেম্বর) বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে গুলশান কার্যালয়ে এ বৈঠক হয় ।
‘চাল আমদানি শূন্য, কমেছে গমও’- এটি দৈনিক বণিক বার্তার ৫ নভেম্বরের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, দেশের প্রধান খাদ্যশস্য চাল, দ্বিতীয় গম। বিভিন্ন দেশ থেকে আগে চাল আমদানি হলেও এখন তা শূন্যের কোটায় নেমেছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে মজুদ বাড়ানোর পাশাপাশি দাম সহনীয় রাখতে শুল্ক কমিয়ে আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর পরও দেশের প্রধান খাদ্যশস্যটি আমদানিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। ডলার সংকটের কারণে ঋণপত্র (এলসি) জটিলতায় কমছে গম আমদানিও। বাজারে তাই খাদ্যপণ্য দুটির দাম ঊর্ধ্বমুখী।
খাদ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে মোট গম আমদানি হয়েছিল ৬৬ লাখ ২৮ হাজার ৫৮০ টন। এর মধ্যে সরকারি পর্যায়ে আসে ৭ লাখ ৮৪ হাজার ২৮০ টন ও বেসরকারি পর্যায়ে ৫৮ লাখ ৪৪ হাজার ৩০০ টন। চলতি অর্থবছরে গত ৩ নভেম্বর পর্যন্ত আমদানি হয়েছে কেবল ১৭ লাখ ৪৮ হাজার টনের মতো। সরকারি পর্যায়ে এ চার মাসে বিশ্ববাজার থেকে গম আনা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ১৮০ টন, আর বেসরকারি পর্যায়ে ১৫ লাখ ২ হাজার ৫০০ টন। অন্যদিকে এ সময়ে কোনো চালই আমদানি করা হয়নি।
দেশে গমের চাহিদা বছরে ৭০-৭৫ লাখ টন। এর মধ্যে স্বাভাবিক সময়ে ইউক্রেন থেকে মোট চাহিদার ৬০ শতাংশ আমদানি হলেও বর্তমানে তা কমে ৪০ শতাংশে নেমেছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
দৈনিক আজকের পত্রিকার ৫ নভেম্বরের প্রধান শিরোনাম, ‘দীপুর সাম্রাজ্যে টিপুই সব’। খবরে বলা হয়, চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনা-বিল ডাকাতিয়ায় গত ১৫ বছরে অনেক পানি গড়ালেও জেলার সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেছেন একজনই। তিনি ডা. দীপু মনি। টানা চারবারের সংসদ সদস্য, তিন দফায় মন্ত্রিত্ব ও ক্ষমতার শীর্ষ ব্যক্তির সুনজরের সুবাদে চাঁদপুরকে করে নিয়েছিলেন নিজের সাম্রাজ্য। যার দেখভাল করতেন তার বড় ভাই ডা. জে আর ওয়াদুদ টিপু। যিনি নিজেও খাসজমিতে গড়ে তোলেন ‘টিপু নগর’।
চাঁদপুরের রাজনীতি, নিয়োগ-বদলি, দরপত্র, মনোনয়ন-বাণিজ্য, অবৈধভাবে নদীর বালু উত্তোলন, প্রকল্প গ্রহণ, জমি অধিগ্রহণসহ সর্বত্র বিস্তৃত ছিল দীপু মনির নিয়ন্ত্রণ। ডা. টিপুর নেতৃত্বে একটি চক্রের সদস্যরা এ নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করতেন। এ চক্রের একজন বালুখেকো সেলিম খান গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।
৫ আগস্টের পর দীপু মনি গ্রেফতার হয়ে কারাগারে। শোনা যায়, ডা. টিপু দেশ ছেড়েছেন। বদলে গেছে চাঁদপুরের পরিস্থিতি। তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন মানুষ। বাদ নেই আওয়ামী লীগের নেতারাও।
‘দেড়শর বেশি আসনে জামায়াত প্রার্থী চূড়ান্ত’Ñ এটি দৈনিক দেশ রূপান্তরের ৫ নভেম্বরের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের প্রেক্ষাপটে প্রায় সাড়ে ১৫ বছর পর স্বাভাবিক রাজনৈতিক কার্যক্রমে ফিরেছে ধর্মভিত্তিক দল জামায়াতে ইসলামী। এই মুহূর্তে সারা দেশে দলটি ঘরোয়া কার্যক্রমে ব্যস্ত। তবে দীর্ঘদিনের ফেরারি অবস্থান থেকে হঠাৎ রাজনীতির সম্মুখভাগে আসা জামায়াত তার প্রায় ২৫ বছরের জোটসঙ্গী বিএনপিকে ‘মাইনাস’ করেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। দলটি ইতোমধ্যে দেড়শর বেশি আসনে প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে।
আগামী নির্বাচনে দুই ধরনের প্রস্তুতি রেখে এগোচ্ছে জামায়াত। সেটি হচ্ছে ৩০০ আসনে একক প্রার্থী দেওয়া এবং নির্বাচনের সময় বিরাজমান পরিস্থিতির আলোকে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই একাধিক ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে দলটি। তাদের লক্ষ্য ধর্মভিত্তিক এসব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে বেশি আসনে জয়ী হয়ে আসা। বিষয়টি অবশ্য নেতিবাচকভাবে দেখছে না বিএনপি। বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, দুই দলের রাজনৈতিক আদর্শ ভিন্ন। তাই তারা তাদের মতো রাজনীতি করবে, বিএনপি তাদের মতো।
১৫ বছরে বিচার ছাড়াই ১৯২৬ জনকে হত্যা
দৈনিক প্রথম আলোর ৪ নভেম্বরের প্রধান শিরোনাম, ‘১৫ বছরে বিচার ছাড়াই ১৯২৬ জনকে হত্যা’। প্রতিবেদনে বলা হয়, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অলিউল্লাহ মোল্লা ২০১৬ সালের ১০ জুলাই পুলিশের ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত হন। তার পরিবার বলছে, ওই দিন বিকেলে অলিউল্লাহকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়েছিল পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় কয়েকজন নেতা-কর্মী। পরদিন সকালে অলিউল্লাহর মৃত্যুর খবর পায় পরিবার।
পুলিশ তখন দাবি করেছিল, ঘটনার দিন রাত সাড়ে ৩টার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় টহলরত পুলিশ অলিউল্লাহকে থামার সংকেত দেয়। তিনি না থেমে উল্টো পুলিশের দিকে বোমা ও গুলি ছোড়েন। তখন পুলিশের পাল্টা গুলিতে তার মৃত্যু হয়। পরে পুলিশের নথিতে এ ঘটনাকে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ উল্লেখ করে অলিউল্লাহর পরিচয় লেখা হয় ‘সন্ত্রাসী’।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে এমন ‘বন্দুকযুদ্ধ’ বা ‘ক্রসফায়ারের’ নামে অন্তত ১ হাজার ৯২৬ জন বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নিহত হওয়ার এ হিসাব বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক)। তারা এ পরিসংখ্যান তৈরি করেছে সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর থেকে।
এভাবে মানুষ মারার প্রতিটি ঘটনার পর সরকারের তরফ থেকে প্রায় একই রকম গল্প বলা হয়। এসব যে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সেটা শেখ হাসিনা সরকার ও তার প্রশাসন আগাগোড়াই অস্বীকার করে গেছে। তবে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ২০১৫ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সাত বছরের ক্রসফায়ারের তথ্য সংরক্ষণ করেছে। এ সংক্রান্ত তথ্যাদি প্রথম আলোর হাতে এসেছে সম্প্রতি। এতে দেখা যায়, এই সাত বছরেই ‘ক্রসফায়ার’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন ১ হাজার ২৯৩ জন। দেশের এমন কোনো জেলা নেই যেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটেনি।
এসবির হিসাবে সাত বছরে ক্রসফায়ারে নিহতের যে সংখ্যা বলা হয়েছে, আসকের হিসাবে সেই সংখ্যা আরও ১২০ জন বেশি।
প্রতিটি ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে ক্রসফায়ারের সাজানো বর্ণনা উল্লেখ করে মামলা দেওয়া হয়, তাতে নিহত ব্যক্তির সহযোগী হিসেবে আরও অনেককে আসামি করা হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীর পরিবারগুলো মামলা করার সাহস পেত না। কেউ কেউ আদালতে মামলা করার চেষ্টা করতে গিয়ে হয়রানি ও হুমকি-ধমকির শিকার হয়েছেন।
‘আমলাতন্ত্রের পেশাগত কাঠামো ভেঙে ফেলা হয়েছিল, অনেকের ছিল রাজনৈতিক অভিলাষ’Ñ এটি দৈনিক ইত্তেফাকের ৪ নভেম্বরের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, বিগত সরকারের আমলে প্রকল্প অনুমোদনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব ছিল। রাজনীতির কাছে জিম্মি ছিল আমলাতন্ত্র। অনেক ক্ষেত্রে উন্নয়ন প্রশাসনের কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের ত্রিমুখী সংযোগের কারণে দুর্নীতি হয়েছে। তবে আমলাদের মধ্যে কেউ কেউ সাহস নিয়ে দাঁড়িয়েছেন। এজন্য সেই আমলাদের পেশাগত ক্ষতি হয়েছে।
গত ৩ নভেম্বর আগারগাঁওস্থ পরিকল্পনা কমিশনের একনেক সম্মেলনকক্ষে অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র জানতে গঠিত জাতীয় শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। গত ৩ নভেম্বর সরকারের ৮৫ জন উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করেছে শ্বেতপত্র কমিটি। বৈঠকে ৩২ জন সচিব ও সিনিয়র সচিব উপস্থিত ছিলেন। সেই বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন তিনি।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, জ্যেষ্ঠ আমলারা দীর্ঘক্ষণ আলোচনায় অংশ নিয়েছেন, এটা অভূতপূর্ব। বেসরকারি খাতের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে তারা বিভিন্ন প্রকল্পের ব্যবচ্ছেদ করেছেন, এটাকে পরিবর্তনের ইঙ্গিত বলে মনে করেন তিনি। উন্নয়ন বয়ানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উন্নয়ন পরিস্থিতিটা পুরোটাই প্রশাসনের কাছে জিম্মি ছিল। বৈঠকে বক্তারা জানিয়েছেন, তারা পুরোটাই পরিস্থিতির শিকার ছিলেন। কেউ কেউ হেনস্তার শিকার হয়েছেন।
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান বলেন, ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প নেওয়ার আগেই জমি ক্রয় করে বেশি দামে প্রকল্পের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। তারা জেনে যেত, এখানে জমি কিনলে তিন গুণ দামে বিক্রি করা যাবে, এভাবে সরকারের টাকা লুটপাট করা হয়েছে। প্রকল্পের জন্য যেসব যন্ত্রপাতি ক্রয় করার কথা বলা হয়েছে, সেগুলো আনার জন্য যে ই-টেন্ডার প্রক্রিয়াব্যবস্থা করা হয়েছে।
‘আ’লীগ সমর্থক সাড়ে ৩ হাজার কনস্টেবল নিয়োগ পেতে যাচ্ছে’Ñ এটি দৈনিক ‘নয়া দিগন্তে’ ৪ নভেম্বরের প্রধান শিরোনাম। প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারের শেষ সময়ে দলীয় পরিচয়ে চাকরিতে নিয়োগপ্রাপ্ত তিন হাজার ৫৭৪ জন টিআরসি চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পেতে যাচ্ছে। গত জুন মাসে দলীয় বিবেচনায় চূড়ান্ত হওয়া এসব টিআরসি (ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল) বর্তমানে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার নোয়াখালী, টাঙ্গাইল, রংপুর, খুলনা, পিএসটিএস রাঙ্গামাটি ও পুলিশ একাডেমি সারদায় চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রশিক্ষণরত রয়েছে।
গত মার্চ ও এপ্রিল মাসে সারা দেশে ৬৪ জেলায় চারটি পর্বে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের দলীয় ক্যাডার হিসেবে মৌখিক পরীক্ষার আগের দিন তাদের বাছাই করা হয়। এর বাইরে অন্য প্রার্থীদের নানা কৌশলে বাদ দেয়ার মাধ্যমে তাদের বাছাই করা হয়েছিল। তৎকালীন আইজিপি এবং রিক্রুটমেন্ট ও ক্যারিয়ার প্ল্যানিং শাখা থেকে অত্যন্ত চতুরতার সাথে তাদের বাছাইপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। এ প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত কর্মকর্তারা বর্তমান বৈষম্যবিরোধী সরকারের সময়ে বিভিন্ন পদে বহাল তবিয়তে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
সর্বশেষ নিয়োগ পাওয়া সাব-ইন্সপেক্টরদের নিয়োগপ্রক্রিয়া নিয়ে পুলিশ সদর দফতরে অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে তদন্তকার্যক্রম সম্পন্ন করা হলেও রহস্যজনক কারণে সর্বশেষ নিয়োগ পাওয়া টিআরসি ব্যাচসহ গত ১৬ বছরের নিয়োগপ্রাপ্ত আনুমানিক ৮০ হাজার কনস্টেবল নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দফতরের বর্তমান কর্মকর্তারা কোনো ধরনের উচ্চবাচ্য করছেন না।
‘কৃষিপণ্য পরিবহনে রেলওয়ের উদ্যোগগুলো সফল হয়নি’- এটি বণিক বার্তার ৪ নভেম্বরের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, কৃষিপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে পরিবহন ব্যয় কমাতে একটি বিশেষ ট্রেন চালু করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ‘কৃষিপণ্য স্পেশাল’ নামের এ ট্রেনটিতে সংযুক্ত করা হয় সাতটি লাগেজ ভ্যান, যার মধ্যে একটি ছিল রেফ্রিজারেটেড। ঢাকা-খুলনা রুটে গত ২২ অক্টোবর প্রথম ট্রেনটি পরিচালনা করা হয়। সেই ট্রিপে পণ্য পরিবহন করা হয় ১ হাজার ৮৬০ কেজি। এতে রেলের আয় হয় ২ হাজার ৩২০ টাকা।
২৪ অক্টোবর একই ট্রেন পরিচালনা করা হয় পঞ্চগড়-ঢাকা রুটে। ৭৬০ কেজি কৃষিপণ্য পরিবহন করে এ ট্রিপে রেলওয়ে পায় ১ হাজার ২৯৬ টাকা। রহনপুর-ঢাকা রুটে ২৬ অক্টোবর পরিচালনা করা ট্রেনটিতে বুকিং হয় মাত্র ২৬০ কেজি কৃষিপণ্য। আয় আসে ৪৮২ টাকা। ‘কৃষিপণ্য স্পেশাল’ সর্বশেষ ২৯ অক্টোবর ঢাকা-খুলনা রুটে দ্বিতীয়বার চলে। ১ হাজার ২২৫ কেজি কৃষিপণ্য পরিবহন করে রেলওয়ে পায় মাত্র ১ হাজার ৯১০ টাকা।
দেশের তিনটি রুটে চারদিন কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন পরিচালনা করে বাংলাদেশ রেলওয়ে সব মিলিয়ে পেয়েছে মাত্র ৬ হাজার ৮ টাকা। বিপরীতে ট্রেন পরিচালনা করতে গিয়ে সংস্থাটিকে গুনতে হয়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকা। প্রত্যাশিত কৃষিপণ্য না পেয়ে এবং ব্যবসায়ীদের অনাগ্রহের কারণে এরই মধ্যে পঞ্চগড়-ঢাকা ও রহনপুর-ঢাকা রুটে বিশেষ এ ট্রেনটির চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
লোকসানের কারণে খুলনা-ঢাকা রুটেও ট্রেনটি বন্ধ করে দেয়ার জন্য রেল ভবনে সুপারিশ করেছে পশ্চিমাঞ্চল রেলের বাণিজ্যিক কার্যালয়।
নিউ এজের ৪ নভেম্বরের প্রধান শিরোনাম ‘Adani threatens to stop power supply’ অর্থাৎ ‘বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের হুমকি আদানির’।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘৭ নভেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধের না করলে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণ স্থগিত করার কথা বলেছে আদানি। নতুন এই সময়সীমা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আদানি তার সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশ যদি পর্যাপ্ত জ্বালানি আমদানি করে এবং দেশের অবশিষ্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাকে কাজে লাগায় তাহলেও চালিয়ে নিতে পারবে।
আদানি-ঝাড়খণ্ড পাওয়ার লিমিটেডের ১৪৯৬ মেগাওয়াট কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বর্তমানে প্রায় ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। কারণ ৩১ অক্টোবর বকেয়া প্রদানের মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ায় বকেয়া পরিশোধের জন্য পূর্ববর্তী সময়সীমার পরে উৎপাদন অর্ধেক করে দিয়েছে।
এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, যে নতুন সময়সীমার মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাবে। যদিও বাংলাদেশ ৮৫০ মিলিয়ন ডলারের বকেয়া বিল পরিশোধের বিষয়ে তার অবস্থান স্পষ্ট করা হয়নি ওই প্রতিবেদনে।
‘১২০০০ কোটির দায় নিয়ে ঠেলাঠেলি’- এটি দৈনিক দেশ রূপান্তারের ৪ নভেম্বরের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে প্রতি বছর গ্যাসের যে বিপুল পরিমাণ অপচয় হচ্ছে, তা ‘সিস্টেম লস’ বা কারিগরি ক্ষতি হিসেবে দেখানো হলেও এর বেশিরভাগই বিতরণ কোম্পানিগুলোর অবৈধ সংযোগের কারণে চুরি হওয়া গ্যাস বলে অভিযোগ রয়েছে। তিন দশকের মধ্যে এ প্রথম পেট্রোবাংলা তথাকথিত সিস্টেম লসের একটা অংশ চাপিয়ে দিয়েছে গ্যাস সঞ্চালনের একমাত্র রাষ্ট্রীয় সংস্থা গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডের (জিটিসিএল) ওপর।
কিন্তু জিটিসিএল এ চুরির দায় নিতে নারাজ। আবার বিতরণ কোম্পানিগুলোও পুরো দায় নিতে চাচ্ছে না। এ নিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চলছে ঠেলাঠেলি।
সিস্টেম লস মূলত এক ধরনের ক্ষতি, যা পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহের সময় লিকেজ, চুরি, অবৈধ সংযোগ, কারিগরি লোকসান ইত্যাদি কারণে হয়ে থাকে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রাহকের কাছে গ্যাস বিক্রি না করায় খুবই সামান্য পরিমাণে কারিগরি ক্ষতি ছাড়া বড় ধরনের সিস্টেম লসের সুযোগ নেই জিটিসিএলের। গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোর অবৈধ সংযোগের মাধ্যমে যে বিপুল পরিমাণ গ্যাস চুরি হচ্ছে, তা সমন্বয় করতেই জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ এবং বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) অনুমোদন ছাড়াই অযৌক্তিকভাবে এ লোকসান চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।