ঐক্য অটুট রাখতে হবে
১ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:০৬
॥ জামশেদ মেহ্দী ॥
গত ২৮ অক্টোবর সোমবার ইংরেজি ডেইলি স্টারের প্রথম পৃষ্ঠার প্রধান সংবাদের শিরোনাম, Bid to Remove President/BNP at odds with student movement/Both sides holding talks with political parties. বাংলা: প্রেসিডেন্টকে অপসারণ প্রচেষ্টা/বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে বিএনপির মতানৈক্য/উভয় পক্ষই অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করছে। এ শিরোনাম থেকেই বোঝা যায়, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে উৎখাতের দুই মাস ২০ দিনের মাথায় আওয়ামীবিরোধী শিবিরে মতানৈক্যের পদধ্বনি। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। জনগণ এবং সাপ্তাহিক সোনার বাংলার পাঠক ভাইয়েরা বিষয়টি ইতোমধ্যেই ভালোভাবে জেনে গেছেন। বিএনপি কয়েকদিন থেকেই বলে আসছে যে, প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে অপসারণ করলে বা তিনি পদত্যাগ করলে সাংবিধানিক শূন্যতার সৃষ্টি হবে। পরে এ সাংবিধানিক শূন্যতা রাজনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি করবে। বিএনপির মতে, এ রাজনৈতিক সংকটের সুযোগ নেবে সুযোগসন্ধানী স্বৈরাচার। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনায় যাবো না। কিন্তু ডেইলি স্টারের মতে, মতানৈক্য যদি প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর সরে যাওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতো, তাহলে হয়তো এ মতানৈক্য কোনো চিন্তার কারণ হতো না। কিন্তু আমরা দেখছি, শুধু প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর সরে যাওয়া নয়, এর সাথে আরো দু-তিনটি ইস্যু জড়িয়ে আছে। যেগুলো আগামী দিনে মতানৈক্যকে আরো জটিল করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়ার আগে ঐসব সম্ভাব্য ইস্যুর ওপর একটু চোখ বুলিয়ে নেওয়া দরকার। কয়েকদিন আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং তাদের পলিটিক্যাল প্ল্যাটফর্ম বলে পরিচিত জাতীয় নাগরিক কমিটির এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন থেকে ৫ দফা দাবি পেশ করা হয়।
১. মুজিববাদী সংবিধান অর্থাৎ বাহাত্তরের সংবিধানকে অনতিবিলম্বে বাতিল করে নতুন করে সংবিধান লেখা।
২. এ সপ্তাহের মধ্যে ছাত্রলীগকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে আজীবন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা।
৩. রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে এ সপ্তাহের মধ্যে পদচ্যুত করা।
৪. জুলাই বিপ্লব ও গণঅভ্যুত্থানের ‘স্পিরিটের আলোকে’ এ সপ্তাহের মধ্যে নতুন করে ‘প্রক্লেমেশান অব রিপাবলিক’ ঘোষণা করতে হবে। সেটির ভিত্তিতে এবং সকল রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালিত হবে।
৫. গত তিনটি নির্বাচন ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করতে হবে।
এ ৫টি দাবির মধ্যে ২নং দাবি অর্থাৎ ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করার দাবি সরকার ইতোমধ্যেই মেনে নিয়েছে এবং এ সম্পর্কে প্রজ্ঞাপনও জারি হয়েছে। অবশিষ্ট ৪ দাবি রাষ্ট্র সংস্কারের মৌলিক দাবি। এসব দাবি বাস্তবায়িত হলে রাষ্ট্রের চেহারাই বদলে যাবে। যারা রাজনীতির শুধু বহিরাঙ্গ দেখেন না, ভেতরেও যাওয়ার চেষ্টা করেন, তারা দেখছেন যে, এ চারটি দাবি রাজনৈতিক হলেও এগুলো আসলে আদর্শিক দাবি। সুতরাং এগুলোকে সাময়িকভাবে ধামাচাপা দিয়ে রাখলেও স্থায়ীভাবে ধামাচাপা দিয়ে রাখা যাবে না। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, প্রেসিডেন্ট চুপ্পুর সরে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে একই নৌকার যাত্রীদের মাঝে মতদ্বৈধতা ইতোমধ্যেই মাথাচাড়া দিয়েছে। শুধু ডেইলি স্টার নয়, ২৭ ও ২৮ অক্টোবরের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এবং টেলিভিশন টকশোতেও এ মতদ্বৈধতার স্থান পেয়েছে।
গত ২৭ অক্টোবরের কয়েকটি জাতীয় দৈনিকের শিরোনাম, তুলে ধরছি। ‘রাষ্ট্রপতি পদে থাকতে পারেন না: রিজওয়ানা হাসান’, যুগান্তর, ই-পেপার। ‘আ’লীগ ভোটে এলে আপত্তি নেই, তবে গণহত্যার বিচার হতে হবে’, প্রথম আলো।
বিএনপি বলছে, এখন প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিনকে সরালে বা তিনি সরে গেলে সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হবে। এর সুযোগ নেবে বৈরী পক্ষ। কিন্তু কীভাবে ঐ সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হবে এবং সেটা কতখানি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করবে, সেই বিষয়টি বিএনপি এখনো পরিষ্কার করে বলেনি। এ বিষয়টি নিয়ে বিএনপির সাথে বৈষম্যবিরোধীদের দুই দফা বৈঠক হয়েছে এবং এক দফা অনানুষ্ঠানিক কথাবার্তা হয়েছে। বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ বিএনপির অবস্থান সাংবিধানিক শূন্যতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন। কিন্তু মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরেক স্টেপ বাড়িয়ে এটিকে হঠকারী পদক্ষেপ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
খেয়াল করা দরকার, প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিনকে সরানোর বিষয়টি ছাত্ররা তুললেও তার আগে উত্থাপন করেছেন ইন্টারিম সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। এরপর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক হয়েছে। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার মুখপাত্র বলেছেন, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল যা বলেছেন সেটি সরকারেরও অবস্থান। সুতরাং ডেইলি স্টার বা আর দু-তিনটি পত্রিকা যেভাবে বলতে চাচ্ছে যে, ছাত্রদের সাথে বিএনপির টানাপড়েন চলছে, সেটি পরিস্থিতির সঠিক ব্যাখ্যা নয়। সরকার যখন অফিসিয়াল মুখপাত্রের মাধ্যমে আসিফ নজরুলকে এনডোর্স করেছে তখন নীরবে হলেও টানাপড়েনটা সরকারের সাথেই বিএনপির হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে যে, প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী আন্দোলনও চায়। তবে তারা খুব স্পষ্ট বলেছেন, ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিন সরে গেলে সেটি সকলের জন্যই ভালো হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে যে, অজ্ঞাত কারণে বিএনপির অবস্থান এ প্রশ্নে অনড়। আবার ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটিও সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর অপসারণসহ তাদের ৪ দফা দাবিতে অনড়।
ইংরেজিতে যেটিকে বলা হয় Fissure বা Crack, অর্থাৎ ফাটল, সেটি বিএনপির আরো কয়েকটি ইস্যুতে দেখা গেছে। ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারেও বিএনপির রিজার্ভেশন রয়েছে। তারা মনে করে যে, আগে ছাত্রলীগের অপরাধীদের বিচার করা দরকার ছিল। তারপর সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা যায় কিনা, সেটি নিয়ে আলোচনা করা যেত। এর আগে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্ন উঠেছিল। ছাত্র আন্দোলন আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধ করতে চায়। কিন্তু বিএনপি বলে যে, নিষিদ্ধ করার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিকভাবে কাউকে পরাজিত করা যায় না। তারও আগে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বিএনপি মহাসচিবের সাথে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি এবং ভারতের মধ্যে জমাটবাঁধা সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করেছে। বিএনপির এসব উক্তিতে জনগণের মধ্যে কিছুটা হলেও বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে জামায়াতের অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার। ভারত ও পাকিস্তানের সাথে সম্পর্কের ব্যাপারে জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ভারত আমাদের বিশাল প্রতিবেশী এবং আমাদের তিন দিককেই ঘিরে রেখেছে। আমরা ভারতের সাথেও সুসম্পর্ক চাই। তবে সেটি হতে হবে সার্বভৌম সমতা এবং মর্যাদার ভিত্তিতে। যমুনা টেলিভিশনের সাথে এক সাক্ষাৎকারে আমীরে জামায়াত বলেন, সংবিধানে পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে বলা হয়েছে, আমরা বিশে^র সকল রাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত্ব চাই। কারো সাথে শত্রুতা চাই না। জামায়াত পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে সংবিধানের এ অংশের সাথে একমত।
ছাত্রদের ৫ দফা দাবির মধ্যে ৫নং দাবি অর্থাৎ ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করতে হবে। মনে হচ্ছে এ ইস্যুতেও বিএনপির সাথে ছাত্রদের সহমত হয়নি। কারণ ২৮ অক্টোবর সোমবার উচ্চ আদালতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম আলোচ্য তিনটি নির্বাচনকে অবৈধ এবং যারা নির্বাচিত হয়ে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করেছেন সেগুলো ফেরত দেয়ার জন্য দুটি রিট জমা পড়ে। অবশ্য তা তারা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে দুটি দাবি সেটি হলো ১নং ও ৪নং দাবি। ১নং দাবিতে বলা হয়েছে , ৭২-এর সংবিধান অর্থাৎ মুজিববাদী সংবিধান বাতিল করে নতুন করে সংবিধান লিখতে হবে। এ ইস্যুটির ব্যাখ্যা করতে গিয়ে নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, ৭২-এর সংবিধানটি একপক্ষীয়। অর্থাৎ এখানে শুধুমাত্র এক ব্যক্তি তথা এক দলের আদর্শ প্রতিফলিত হয়েছে। এক ব্যক্তি হলেন শেখ মুজিব এবং এক দল হলো আওয়ামী লীগ। ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণভাবে গণধিকৃত এবং জনরোষে বিদেশে পলাতক। মজলুম সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান বলেছেন যে, বাংলাদেশের প্রশাসনিক ও বিচারিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করার জন্য শেখ হাসিনা ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এটি ছিল ভারতীয় এজেন্ডা। মিশন সফল করে তিনি ভারতে পালিয়ে গেছেন। এ সংবিধান যেহেতু মুজিববাদের প্রতিফলন, তাই সেই সংবিধান ১৭ কোটি মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। সে কারণেই নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে, যে সংবিধান ২০২৪-এর জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থান বা বিপ্লবের আকাক্সক্ষা ধারণ করবে।
এ ব্যাপারে বিএনপির বক্তব্য হলো, এ সরকার সংবিধান সংস্কার করতে পারে, কিন্তু নতুন সংবিধান লেখার ম্যান্ডেট পায়নি। তাই অবিলম্বে নির্বাচন দিয়ে নতুন যে পার্লামেন্ট গঠিত হবে, তারাই সংবিধান সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
ছাত্র-জনতার ৪নং দাবিটি অনেকের কাছেই টেকনিক্যাল এবং তাই অনেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারেননি। সাধারণ মানুষের ভাষায় বিষয়টি খুলে বললে এই দাঁড়ায়: ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগরে (মেহেরপুরের আম্রকাননে) স্বাধীনতার যে ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়, সেটি ছিল বাংলাদেশকে গণপ্রজাতন্ত্র হিসেবে প্রথম ঘোষণাপত্র (First Proclamation of Republic)। তারপর ৫৪ বছর পার হয়ে গেছে। ঐ ঘোষণাপত্রের মৌলিক অধিকার, ইনসাফ ও সাম্যের কোনো ওয়াদাই বাস্তবায়িত হয়নি। বরং অর্থনীতিতে পাচার ও লুণ্ঠন এবং রাজনীতিতে গণতন্ত্রের পরিবর্তে স্বৈরাচার জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছিল।
২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টের গণঅভ্যুত্থান বা বিপ্লব জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নতুন আকাক্সক্ষা সৃষ্টি করেছে। এজন্য নতুন সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ অভ্যুত্থান বা বিপ্লবকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। গণপ্রজাতন্ত্র হিসেবে বাংলাদেশের প্রথম ঘোষণা (Proclamation) ব্যর্থ হওয়ার কারণে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান বা বিপ্লব সংঘটিত হয়। বিপ্লবোত্তর সরকার সেই জনআকাক্সক্ষা পূরণে কাজ করে যাচ্ছে। সেজন্যই পুরো রাষ্ট্রটাকেই মেরামত বা সংস্কার করার জন্য কাজ শুরু হয়েছে। তাই এ ৩৬ জুলাইয়ের বিপ্লব বা অভ্যুত্থান আসলে গণপ্রজাতন্ত্র হিসেবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ঘোষণা বা Second Proclamation.
এ দ্বিতীয় ঘোষণা আনুষ্ঠানিকভাবে দেওয়া হয়নি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং সরকার চায় যে আওয়ামী লীগ এবং তার দোসর ১৪ দল ছাড়া অবশিষ্ট সব রাজনৈতিক দল কর্তৃক এ বিপ্লবকে দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হোক। এ স্পিরিটকে সামনে রেখেই ২৮ অক্টোবর সোমবার প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস গণভবনে গিয়ে একটি যুগোপযোগী ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গণভবনে আয়নাঘরের একটি রেপ্লিকা (প্রতিরূপ) থাকা উচিত। প্রসঙ্গত তিনি বলেন যে, গত সাড়ে ১৫ বছরে; বিশেষ করে গত জুলাই ও আগস্ট মাসে যে গণহত্যা, গুম, খুন ও নির্যাতন করা হয়েছে, তার চিহ্ন থাকা উচিত যাতে করে জনগণ শেখ হাসিনার এ গণহত্যা ও জুলুমের কাহিনী চিরদিন মনে রাখে।
৩৬ জুলাই বিপ্লবে আওয়ামী ঘরানার ১৪ দল ছাড়া সব দল অংশগ্রহণ করেছে। তাদের মধ্যে বিভাজনের কোনো আলামত নিয়ে আমরা কথা বলতে চাইনি। কিন্তু ২৮ অক্টোবর বিএনপির সিনিয়র নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেখানে বিভাজনের সুর আর ঢেকে রাখা হয়নি। একই দিন গণতন্ত্রমঞ্চ গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতির যে শিরোনাম দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণ করেছে, সেটিই বিভাজনকে সামনে আনার জন্য যথেষ্ট। শিরোনামটি হলো, “অভ্যুত্থান শক্তির মধ্যে বিভাজন, বিভক্তিতে গণতন্ত্রমঞ্চের উদ্বেগ”।
এসব লক্ষণ দেখে সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন। তার আশা করছেন, যেকোনো মূল্যে সরকার ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখতে হবে। অন্যথায় লাভবান হবে পতিত স্বৈরাচার।
Email: [email protected]