রেজি : ডিএ ৫১৭ ॥ ৬৩ বর্ষ : ৮ম সংখ্যা ॥ ঢাকা, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ ॥ ৮ জিলকদ ১৪৪৫ হিজরী ॥ ১৭ মে ২০২৪

হাজার হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ দিয়েও বিদ্যুৎ ঘাটতি

কৃষি ও শিল্পোৎপাদন ব্যাহত

লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ সারা দেশের মানুষ
॥ সাইদুর রহমান রুমী ॥
রাজধানী ঢাকাসহ দেশজুড়ে ঘণ্টায় ঘণ্টায় বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষসহ ব্যবসায়ীরা। দফায় দফায় বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি আর ক্যাপাসিটি চার্জের নামে শত শত কোটি টাকা গচ্চা দিলেও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না মানুষ। বরং ভ্যাপসা গরম আর তীব্র লোডশেডিংয়ে বেহাল অফিস-আদালত আর স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। আর জেনারেটরের জ্বালানিতে লাখ লাখ টাকা বিল গুনে লাটে উঠছে মিল-কারখানায় শিল্পোৎপাদন আর ব্যবসা-বাণিজ্য। সব মিলিয়ে চোখে সরষেফুল দেখছেন উদ্যোক্তা আর ব্যবসায়ীরা।
গ্রামগঞ্জ ছাপিয়ে তীব্র লোডশেডিং রাজধানীতেও : এতদিন গ্রামগঞ্জে তীব্র লোডশেডিং থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানী ঢাকায়ও লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ মানুষ। সূত্র মতে, বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের ঘাটতি এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। দেশে কাগজে-কলমে প্রায় ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতার কথা বলা হলেও দৈনিক ১৫ হাজার মেগাওয়াটের বেশি উৎপাদন করা যাচ্ছে না। গরমে চাহিদা সাড়ে ১৫ হাজার থেকে ১৭ হাজার মেগাওয়াটে উঠলে দেড়-দুই হাজার মেগাওয়াটের ঘাটতিতে পড়ছে দেশ। আবার সঞ্চালন লাইনের দুর্বলতার কারণেও উৎপাদিত বিদ্যুতের ভারসাম্যপূর্ণ বণ্টন সম্ভব হচ্ছে না।
 চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ না পাওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। প্রতিদিন একরকম নাজেহাল অবস্থায় দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের। লোডশেডিংয়ের কারণে তীব্র গরম আর রাতে অন্ধকারে শিক্ষার্থীদের বেহাল অবস্থা। এদিকে মিল-কলকারখানার চাকা স্থবির হয়ে থাকায় অনেকের ব্যবসা এখন বন্ধ হওয়ার উপক্রম। সরকারি তথ্য মতে, ঢাকায় লোডশেডিং হচ্ছে দিনে ৫-৬ ঘণ্টা। তবে বাস্তবে আরো অনেক বেশি। ঢাকার বাইরে বিদ্যুতের জন্য হাপিত্যেশ করতে হচ্ছে মানুষকে। কোনো কোনো জেলা শহরেই রাতভর বিদ্যুৎ থাকে না। এমনকি গ্রামে দিনে গড়ে ১২-১৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। পিডিবির একাধিক কর্মকর্তা জানান, বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে সরকারের অগ্রাধিকার থাকে রাজধানী ঢাকা। কিন্তু পরিস্থিতি এতই খারাপ যে, ঢাকায়ও লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।
এদিকে তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে কৃষিজমিতে ঠিকমতো সেচ দিতে পারছেন না কৃষক। অব্যাহত লোডশেডিংয়ে দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং শিল্পোৎপাদনে মারাত্মক ধস নেমেছে। মাত্রাতিরিক্ত বিল দেয়ার পরও ঠিকমতো বিদ্যুৎ না পাওয়ায় সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে শিল্পোদ্যোক্তা সবার মাঝে খেদোক্তি বিরাজ করছে। গাজীপুর, সাভার, ভালুকা, নারায়ণগঞ্জ, টঙ্গীসহ ঢাকার আশপাশের শিল্পপ্রধান এলাকায় বিদ্যুতের অভাবে শিল্পোৎপাদন মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে। টঙ্গী, গাজীপুর, নরসিংদী এলাকার শিল্পমালিকরা জানান, বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় কারখানাগুলোয় ডিজেলচালিত জেনারেটর দিয়ে উৎপাদন চালাতে হচ্ছে দিনের একটি বড় অংশ। আবার সব যন্ত্র জেনারেটরে চালানো যায় না। তাই উৎপাদন ঠিক রাখতে কর্মীদের দিয়ে তিন-চার ঘণ্টা ওভারটাইম করানো হচ্ছে। তাতে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে ১৫-২০ শতাংশ।
রফতানিমুখী একটি তৈরি পোশাক কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, আমাদের কারখানাগুলোয় দিনে ঘণ্টায় ঘণ্টায় বিদ্যুৎ যাচ্ছে। অবস্থা এমন যে আমরা বসে থাকি, কখন বিদ্যুৎ আসবে। সামনের দিনে বিদ্যুতের অবস্থার আরও অবনতি হলে লোকসান ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। তিনি বলেন, বর্তমানে গ্যাস-বিদ্যুতের মাত্রাতিরিক্ত বিল এবং তার সাথে ডিজেলের বিল আর শ্রমিকদের ওভারটাইমের চাপে কতদিন কারখানা চালিয়ে রাখতে পারি, তা বলতে পারছি না।
উদ্যোক্তারা বলছেন, প্রচণ্ড গরমে শ্রমিকরা অস্থির হয়ে পড়ছেন। তাতে উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। পরিস্থিতির শিগগিরই উন্নতি না হলে ব্যবসা-বাণিজ্যে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, জুরাইন, চকবাজার, পুরান ঢাকা, মোহাম্মদপুর, বাসাবো, নন্দীপাড়াসহ নগরীর অলি-গলিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ছোট ছোট এসএমই কারখানাগুলোও লোডশেডিংয়ে বন্ধ হওয়ার উপক্রম। এগুলোর ৯৫ শতাংশ কারখানায় জেনারেটর নেই। ফলে লোডশেডিংয়ের সময় এ কারখানাগুলোর উৎপাদন বন্ধ থাকছে বলে জানান উদ্যোক্তারা।
গাজীপুর চেম্বারের সভাপতি বলেন, ‘বিদ্যুতের চলমান সংকটে ছোট কারখানাগুলো পথে বসার উপক্রম হয়েছে। শিল্পকারখানার উৎপাদন অনেক কমে গেছে। বড় কারখানাগুলো পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দিতে পারলেও ছোটরা পারছে না।’ ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে উৎপাদন কমেছে ব্যাপকভাবে আর কারখানায় নিজস্ব জেনারেটরে ডিজেল খরচ বেড়েছে কয়েকগুণ।
সার্বিক পরিস্থিতি বিষয়ে নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘বিদ্যুৎ-গ্যাস সংকটে শিল্পের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শিগগিরই পরিস্থিতির উন্নতি না হলে রফতানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। অনেক গার্মেন্ট মালিক জানাচ্ছেন প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকার বেশি ডিজেল কিনতে হচ্ছে। এতে তাদের খরচ কমপক্ষে ১০-১৫ ভাগ বেড়ে যাচ্ছে। শ্রমিকদের ওভারটাইম, নাইট করিয়ে উৎপাদনের সময় ঠিক রাখতে হচ্ছে। একদিকে গ্যাসের সংকট তো আছেই; ফের বিদ্যুতের ঝামেলায় উৎপাদনে ধস নেমেছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে বিদেশি ক্রেতা ধরে রাখা কঠিন হবে।’ রাজধানীর মুগদা এলাকার গৃহিণী আফরোজা খানম জানান, বর্তমানে প্রতি ঘণ্টায় বিদ্যুৎ যাচ্ছে, এক ঘণ্টা থাকলে বাকি এক ঘণ্টা থাকছে না। এমনকি মধ্যরাতেও আমরা ঘুমাতে পারছি না। রাত ২-৩টায়ও কয়েক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ যাচ্ছে। দিনে-রাতে কোনো সময়ই আমরা শান্তি পাচ্ছি না।
১৪ বছরে বিদ্যুতের দাম ১২১ শতাংশ বাড়লেও কমেনি লোডশেডিং
গত ১৪ বছরে ১৪ দফায় গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে অন্তত ১২১ শতাংশ। সর্বশেষ এ বছর ফেব্রুয়ারিতে দাম বাড়ানো হয়েছে আরেক দফা। এমনকি ভবিষ্যতে এখন থেকে বছরে ৪ বার বিদ্যুতের দাম বাড়বে বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এর মাঝে গত বছর গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম তিন দফায় ১৫ শতাংশও বাড়ানো হয়েছিল। এভাবে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা বলে দফায় দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়াতে বাড়াতে বর্তমানে তা মানুষের গলার কাঁটায় পর্যবসিত হয়েছে। পূর্বে গণশুনানির মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর একক ক্ষমতা ছিল বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি)। সেখানে দাম বাড়ানোর পক্ষে-বিপক্ষে নানারকম যুক্তিতর্ক হতো। ফলে ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ ছিল তুলনামূলক কম। কিন্তু গত বছর থেকে সরকার কোনো ধরনের যুক্তিতর্কের তোয়াক্কা না করে সম্পূর্ণ নির্বাহী আদেশে দাম বাড়ানোর জন্য আইন প্রণয়ন করে। এরপর গণশুনানি ছাড়াই গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এদিকে আগামী তিন বছর বিদ্যুৎ খাতে মোট ১২ দফা দাম বাড়ানোর আগাম ঘোষণাও দিয়ে রাখা হয়েছে। এর ফলে বিদ্যুতে ভর্তুকি কমিয়ে আনা হবে বলে বলা হচ্ছে।
১৫ বছরে বিদ্যুতের ক্যাপাসিটি চার্জের নামে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা গায়েব
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৫ বছরে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ভাড়াভিত্তিক (রেন্টাল- কুইক রেন্টাল) বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ এক লাখ ছয় হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, ২০০৮-০৯ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর ১৫ বছরের জন্য ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে হয়েছে এক লাখ ছয় হাজার ৭৮৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২০০৮-০৯ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত ১০ বছরে ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধের পরিমাণ ছিল ৪৩ হাজার ৩৩৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। অথচ ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত পাঁচ বছরে ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করা হয়েছে ৬৩ হাজার ৪৫২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। বিদ্যুতের চাহিদার তুলনায় উৎপাদন সক্ষমতা বাড়িয়েও লোডশেডিং কমানো যায়নি। বরং বসিয়ে রাখা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে বিদ্যুৎ না কিনলেও নিয়মিত ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে হচ্ছে। এতে বেড়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ। ফলে বার বার দাম বাড়িয়ে ভোক্তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে প্রকাশিত এক বিশেষ প্রতিবেদনে দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জকে একটি ‘লুটেরা মডেল’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল, যা নিয়ে ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। বিদ্যুৎ খাতের ক্যাপাসিটি চার্জ নিয়ে এক আলোচনায় বিশ্লেষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উৎপাদন ছাড়াই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে শত শত কোটি টাকা দেয়া হচ্ছে, যা কোনো যুক্তিতেই আসে না। তারা বলেন, বর্তমানে গড় বিদ্যুতের চাহিদা ১৭ হাজার মেগাওয়াট। আর বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৭ হাজার ১৬২ মেগাওয়াট। প্রয়োজনের চেয়ে ১০ হাজার মেগাওয়াটের বেশি উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র বসে আছে। অথচ দেশজুড়ে লোডশেডিং চলছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখার জন্যই এ অতিরিক্ত উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বেসরকারি খাতে অনেক বেশি সুবিধা নিয়ে স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু জনগণ এর সুফল পাচ্ছে না।
ভারতের আদানি এক বছরে নিয়ে গেল ১০ হাজার কোটি টাকা
শুধু ২০২৩-২৪ হিসাব বছরে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বেচে ভারতের আদানি গ্রুপের আয় ১০ হাজার কোটি টাকা। আদানি পাওয়ারের আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এতে দেখা যায়, ভারতের ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আদানি পাওয়ারের আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ৯৬০ কোটি রুপি  বা ৬৭ হাজার ২৩ কোটি টাকা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিক্রির জন্য গত বছর ৫ এপ্রিল গড্ডা কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট ও ২৬ জুন দ্বিতীয় ইউনিটটি উৎপাদন শুরু করে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চুক্তির আওতায় কেন্দ্রটি থেকে লম্বা সময় ধরে (২৫ বছর) বিদ্যুৎ বিক্রি করা হবে। অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশের নিজস্ব কেন্দ্রগুলো বসিয়ে রেখে আদানি থেকে বিদ্যুৎ কেনা হচ্ছে। কারণ আদানির সঙ্গে চুক্তির শর্তে বলা হয়েছে, গড্ডা কেন্দ্রটির সক্ষমতার একটি নির্দিষ্ট অংশের কম বিদ্যুৎ কেনা হলে বাংলাদেশকে উল্টো জরিমানা দিতে হবে। এছাড়া কেন্দ্রটির জন্য উচ্চহারে ক্যাপাসিটি চার্জও দিতে হচ্ছে। গত বছরের এপ্রিল থেকে চলতি বছর মার্চ পর্যন্ত এক বছরে আদানি বাংলাদেশ থেকে শুধু ক্যাপাসিটি চার্জই পেয়েছে প্রায় ৩৭ দশমিক ৭৫ কোটি ডলার বা চার হাজার ১৫০ কোটি টাকার বেশি।
কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম জানান, বিদ্যুতের কল্পিত উচ্চ চাহিদা দেখিয়ে কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে এবং তাদের ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হচ্ছে। ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে গিয়েই সরকার বার বার দাম বাড়াচ্ছে বিদ্যুতের আর এর দায় চাপাচ্ছে মানুষের ওপর। ২০২২-২৩ অর্থবছরে পিডিবি ২৬ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ করেছে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভাড়া পরিশোধে। তিনি বলেন, অথচ গত বছর বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৪১ শতাংশ সক্ষমতা অলস বসে ছিল। মানুষ লোডশেডিংয়ে ভুগেছে। ব্যাহত হয়েছে শিল্পকারখানার উৎপাদনও। এ প্রসঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জ্বালানিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ম. তামিম বলেন, বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে ভর্তুকি কমানোর ভালো বিকল্প হচ্ছে দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন খরচ কমিয়ে ভর্তুকি কমানো। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে এর সামাজিক প্রভাব বিচার করে দাম নির্ধারণ করতে হয়। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়লে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে। তাই এটি বছরে কয়েকবার বাড়ানো হলে বাজারে জিনিসপত্রের দাম নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এমনিতেই সাধারণ মানুষ উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে আছে। এত চাপ ভোক্তা আর বর্তমানে নিতে পারছে না। বিদ্যুৎ খাতে মূল্যবৃদ্ধি করে পুরো ভর্তুকি সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত হবে আত্মঘাতী।

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।