রেজি : ডিএ ৫১৭ ॥ ৬৩ বর্ষ : ২য় সংখ্যা ॥ ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ॥ ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী ॥ ২৯ মাচ ২০২৪

 ॥ আবদুল হালীম খাঁ ॥
সাহিত্যের বিভিন্ন শাখার মধ্যে সঙ্গীত সবচেয়ে দ্রুত মানুষের মনে প্রভাব বিস্তার করে। কিছু সঙ্গীত এতটাই আবেদন সৃষ্টিকারী যে, শোনামাত্রই হৃদয়ে বিদ্ধ হয়ে যায়। স্বদেশপ্রেম, ভাষাপ্রেম, মানবপ্রেম এবং আধ্যাত্মিকপ্রেম বিষয় তা হতে পারে। ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ দেশপ্রেমমূলক একটি গান। আর ভাষাপ্রেমমূলক গান- ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি।’ এমন আরও অনেক গান রয়েছে।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি গানটি আমাদের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গৃহীত হওয়ার পর এটি বহুল প্রচারিত হয়েছে এবং জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সকল জাতীয় অনুষ্ঠানে এটি সম্মিলিতভাবে গীত হয়। এ গানটি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় রচনা করেছিলেন। কবি তার তৃতীয় নয়ন দিয়ে বাংলার প্রকৃতির অপরূপ শোভা-সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়ে হৃদয়ের সম্পূর্ণ দরদ ঢেলে দিয়ে এ গানটি রচনা করেছিলেন। কি ছায়া কি মায়া গো ... মরি হায় হায় ইত্যাদি পঙক্তিগুলোয় প্রাণের দরদ ভালোবাসা ঢেলে পড়েছে। বাংলাদেশের প্রতি অতিরিক্ত ভালোবাসা প্রকাশের জন্য কবি ‘দেশের’ আগে ‘সোনা’ বিশেষণ হিসেবে যোগ করেছেন- সোনার বাংলা। যেমন আমরা ভালো মানুষকে বলি সোনার মানুষ। আমরা কখনো কখনো অসীম রূপ, সৌন্দর্য ও সম্পদের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলি আমাদের সোনার দেশ। শুধু কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই নন আরও কতশত কবি তাদের কবিতা-গানে বাংলাকে সোনার বাংলা বলে উল্লেখ করেছেন।
আমরা আমাদের দেশ ভালোবাসি। দেশের মানুষকে ভালোবাসি। স্বদেশের প্রতি ভালোবাসা শুধু গানে প্রকাশ করি না। প্রিয় বাংলাদেশকে আরও সুন্দর করে গড়তে চাই। এদেশের মানুষের কোনো সমস্যা না থাক, কোনো দুঃখকষ্ট অভাব না থাকুক, কেউ যেন অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, এমন একটি সুন্দর কল্যাণকর দেশ গড়তে চাই। এদেশ স্বাধীন করেছি শরীরের রক্ত দিয়ে শহীদ হয়ে। আমরা দিনরাত গান গাই- আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি। আমরা এদেশকে ভালোবাসি বলে এদেশ সুন্দর করে গড়ে তোলার জন্য, মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য রাজনীতি করি, মাঠে চাষ করি, কলকারখানায় কাজ করি, ব্যবসা করি, ধর্ম প্রচার করি, পত্রিকা প্রকাশ করি, সাংবাদিকতা করি, কাব্য-সাহিত্যচর্চা করি, অন্যায়-অনাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করি। আমরা একেকজন একেক কাজ করে দেশকে ভালোবাসি।
আমি আমার দেশকে ভালোবাসি। দেশের অন্য সকলের মতো আমি গান গাই- আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি। আমার প্রাণের ভালোবাসা, দেশের প্রতি আন্তরিকতা প্রকাশ করছি যে সাপ্তাহিক সোনার বাংলার মাধ্যমে, এ সোনার বাংলা প্রকাশ করা হয়েছে এদেশকে ভালোবেসে, এদেশের মানুষকে ভালোবেসে এদেশ, এদেশের মানুষকে আরও উন্নত, আরও সুন্দর এবং সমস্যামুক্ত করে গড়ে তোলার জন্য। সকল মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
সাপ্তাহিক সোনার বাংলা প্রকাশের চমৎকার একটি ইতিহাস রয়েছে। কীভাবে কখন কে এই সোনার বাংলা প্রকাশ করেন, সে বিষয়টি উল্লেখ করার মতো। সোনার বাংলা প্রকাশনা এবং প্রাথমিক অবস্থা সম্পর্কে সেন্টার ফর ন্যাশনাল কালচার (সিএনসি)-এর নির্বাহী পরিচালক বিশিষ্ট লেখক, সংগঠক, সম্পাদক, কবি মাহবুবুল হক লিখেছেন, ১৯৮০ সালে দেশকে প্রকৃত সোনার বাংলায় পরিণত করার জন্য পত্রিকাটির তৃতীয় মুদ্দত শুরু হয়। ষাটের দশকে সোনার বাংলার প্রথম মুদ্দতের সময় এর পৃষ্ঠপোষক ছিলেন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রকাশক ছিলেন মহীউদ্দীন আহমদ। দ্বিতীয় মুদ্দতে, অর্থাৎ বাংলাদেশের স্বাধীনতার অব্যবহিত পর ১৯৭২ সালে পৃষ্ঠপোষক ছিলেন মহীউদ্দীন আহমদ, প্রকাশক ছিলেন তারই বড় ভাতিজা বেলায়েত হোসেন এবং পত্রিকাটি সম্পাদনাসহ সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন মাহবুবুল হক।
তৃতীয় মুদ্দতে, অর্থাৎ ১৯৮০ সালে পৃষ্ঠপোষক ছিলেন সোনার বাংলা পাবলিকেশন লিমিটেড। এই লিমিটেড কোম্পানির পক্ষে প্রকাশক ছিলেন মহীউদ্দীন আহমদ। সম্পাদনাসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন মরহুম মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। এ কোম্পানির অংশীদার-পরিচালক ছিলেন মহীউদ্দীন আহমদ, মাহবুবুল হক ও ফজলে আজিমসহ আরো অনেকে। ...
আমাদের দেশে একটি পত্রিকার ৬২ বছর আয়ুষ্কাল কম কিছু নয়, বরং অনেক গৌরবের এবং অনেক বড়ত্বের। সবচেয়ে বড় কথা, প্রথম ও দ্বিতীয় মুদ্দতে একটানা প্রকাশনার ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে কিছু বিড়ম্বনা ঘটলেও বা পত্রিকা প্রকাশনা মাঝে মাঝে কিছু ব্যাহত হলেও তৃতীয় মুদ্দতের এ ৪২ বছরে সোনার বাংলা আপন অস্তিত্ব, স্বাতন্ত্র্য ও বৈশিষ্ট নিয়ে ক্রমাগতভাবে প্রকাশিত হয়েছে এবং আনন্দের কথা হলো দিন দিন এর পাঠক সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও প্রকাশনার ক্ষেত্রে এ পত্রিকাটি সাহসী অভিযাত্রা কোনোভাবেই অনুকূল ছিল না।...
দুঃসহ এ দুর্বহকালে সোনার বাংলা সত্যের পথে চলার যে অঙ্গীকার করেছিল, এ ধরনের অঙ্গীকার আমরা ইতোপূর্বে অনেক দেখেছি এবং অনেক শুনেছি, কিন্তু বাস্তবে সেই অঙ্গীকার এদেশে খুব একটা রাখা যায়নি। এর কারণ অনেক।... সোনার বাংলা তার ঘোষণা অনুসারে সেই সত্যের পথে চলে আসছে।’
আমাদের দেশের রাষ্ট্রীয়, সামাজিক জীবনে অনেক সমস্যা রয়েছে। খাদ্য সমস্যা, বেকার সমস্যা, বন্যা সমস্যা, বাসস্থান সমস্যা এবং বর্তমানে শিক্ষাব্যবস্থাটাও একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষা দ্বারা এখন আর সুনাগরিক, কর্মী ও সচ্চরিত্রের নাগরিক হওয়ার উপায় থাকছে না। নানারকম সমস্যায় ডুবে দেশের মানুষ হাবুডুবু খাচ্ছে। এসব সমস্যা মূলত অজ্ঞ ও অসচ্চরিত্রের শাসক ও কর্মকর্তাদের দ্বারা তৈরি হচ্ছে।
এসব সমস্যা সমাধানের জন্য শত শত পত্রপত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে এবং একেকটি পত্রপত্রিকা ও সরকার একেক রকম পথ ও উপায় দেখাচ্ছে। কিন্তু কোনো পথে ও মতে সমস্যার সমাধান হচ্ছে না, বরং সমস্যা জট পাকিয়ে পড়েছে দেশের সকল মানুষের কাঁধে।
সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের সকল সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ ও উপায় দেখাচ্ছে সাপ্তাহিক সোনার বাংলা। আমাদের সোনার বাংলা শুধু গান ভাষায় সোনার বাংলা নয়, প্রকৃতপক্ষে আমাদের দেশ সোনায় সোনায় ভরা। কিন্তু এসব সোনা-সম্পদ ব্যবহারের উপযোগী কর্মী নেই। নেতৃত্ব দেয়ার মতো পরিচালনা করার মতো যোগ্য মানুষ নেই, তেমন মানুষ তৈরি করার ব্যবস্থা নেই।
জাহেলি যুগে মরু আরব দেশে কোনো সম্পদই ছিল না আর মানুষ ছিল অজ্ঞ-মূর্খ, বিচ্ছিন্ন ও ঝগগাটে। সেই অজ্ঞ-মূর্খ নিঃস্ব ও শত সমস্যা ও অনাচারে লিপ্ত মানুষগুলো মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে নবী মুহাম্মদ (সা.) কোন জীবনবিধানে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে এমন মজবুত জাতি গড়ে তুলেছিরেন যারা হয়েছিলেন সুসভ্য উন্নত চরিত্রের মানুষ। তারা হয়েছিলেন বিশে^র সকল মানুষের আদর্শ শিক্ষক, শাসক, ন্যায়বিচারক, শান্তি ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠাকারী। তখন তাদের মধ্যে আর থাকলো না খাদ্যের অভাব, বস্ত্রের সমস্যা, বাসস্থানের সমস্যা। হযরত ওমর (রা.) খেলাফতকালে জনসাধারণের আর্থিক অবস্থা এতটা উন্নত হয়েছিল যে, যাকাতের টাকা গ্রহণ করার মতো অভাবী লোক খুঁজে পাওয়া যেত না। কোন জীবনবিধানের মাধ্যমে দেশ ও মানুষের এমন জাদুকরী পবির্তন সাধিত হয়েছিল? সাপ্তাহিক সোনার বাংলা সেই জীবনবিধানের কথা বলে এবং সেই উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এদেশের ৯ শতাংশ তাওহীদি জনতা সেই জীবনবিধানের বাস্তব রূপ দেখার অধীর প্রতীক্ষায় রয়েছে। সাপ্তাহিক সোনার বাংলা তাদের প্রাণের কথা বলে এজন্য পত্রিকাটি সবার প্রিয়। দেশের শহর-বন্দর থেকে গ্রাম-গঞ্জে পাড়ায় পাড়ায় নারী-পুরুষ ছাত্রছাত্রী সকল শ্রেণি মানুষের ঘরে ঘরে হাতে হাতে দেখা যায় সোনার বাংলা পত্রিকা।
সোনার বাংলা সমাজের সকল শ্রেণি মানুষের কথা বলে। আমি এজন্য সোনার বাংলা ভালোবাসি। আমি গান গাইÑ আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি। মানব তৈরি কোনো বিধানের বা বিশেষ কোনো লোকের মতাদর্শে জীবনের সমস্যা সমাধান বা কল্যাণ নেই।
দেশে একেকবার একেক মতাদর্শের শাসক এসে জনগণকে একেক দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এতে জনসাধারণ অশান্তির দোলায় দুলছে, ঢেউয়ের ওপর ভাসছে আর ডুবছে। কখনো সুখ-শান্তি পাচ্ছে না, সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। আমাদের দেশে প্রচুর সম্পদ রয়েছে। প্রচুর কর্মীর হাত রয়েছে। কিন্তু তা সঠিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না।
সোনার বাংলা এদেশে ইসলামী জীবনবিধান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সকল সমস্যামুক্ত একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গড়তে চায়। এজন্য এর প্রত্যেক সংখ্যায় ইসলামী রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজনীতির ওপর প্রবন্ধ, নিবন্ধ ও আলোচনা ছাপা হয়। দেশের কোথায় কোন স্তরে কী সমস্যা, তার সমাধানের উপায় কী, জনগণের চাহিদা কী ইত্যাদি বিষয় মূল্যবান প্রবন্ধ ও নিবন্ধ ছাপা হয়।
সোনার বাংলা শুধুমাত্র খবরের কাগজ নয়, এটি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এতে দেশের শুধু সমস্যার কথা থাকে না, সমস্যা সমাধানের কথা থাকে। সোনার বাংলা পাঠ করে একজন সাধারণ পাঠক দেশ-বিদেশের সকল বিষয় যেমন জানতে পারে, তেমনি চিন্তার নতুন নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে থাকে। বলা হয়, শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। কিন্তু আমাদের শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ডকে ভেঙে ফেলছে। জাতি এখন আর মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারছে না। শিক্ষাসহ সকল বিষয়ই বিজাতির ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। তালা-চাবি, কাঠ-পেন্সিল, সুঁই-সুতা, পেঁয়াজ-রসুনও বিদেশ থেকে আনতে হয়। আমরা আমাদের স্বকীয় সত্তা ও মর্যাদা ভুলে গেছি। আমরা মুসলমান, আমাদের আকিদা, ঈমান, বিশ্বাস চিন্তা-চেতনা হারিয়ে বিজাতীয় সংস্কৃতির মধ্যে লীন হয়ে গেছি প্রায়। বিশ্বকবি আল্লামা ইকবাল মুসলমানদের এ অধঃপতন দেখে ব্যথিত কণ্ঠে বলেছেন-
‘চাল-চলনে হিন্দু তুমি বেশ-ভূষাতে খ্রিস্টান,
মুসলমান এই যাবে, দেখে ইয়াহুদ করে লজ্জাজ্ঞান।’
মুসলমানদের এ অধঃপতনের কথা সোনার বাংলা বলে দেয় এবং মুসলমানের পোশাক-পরিচ্ছদ, আচার-ব্যবহার, লেনদেন কেমন হওয়া উচিত, তা সোনার বাংলা বলে দেয়। যারা অভিশপ্ত ও বিভ্রান্ত মুসলমানরা বর্তমানে তাদের অনুসরণ ও অনুকরণ করে উন্নতি ও সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করছে। মুসলমানদের জাতীয় চেতনা জাগ্রত করে নানা দলে-উপদলে বিচ্ছিন্ন জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার সাধনা চালিয়ে যাচ্ছে।
মুসলমান পৃথিবীতে এমন এক জাতি, যাদের ঈমান, আকিদা, বিশ্বাস এবং সাহিত্য-সংস্কৃতিতে রয়েছে স্বকীয়তা এবং মহৎ আদর্শ। পৃথিবীতে মুসলমানরাই সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি। তাদের তো অন্য জাতিকে অনুসরণ করতে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরাই সর্বোত্তম জাতি, তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে মানুষের কল্যাণের জন্য। (তোমাদের দায়িত্ব হলো) তোমরা সৎ কাজের নির্দেশ দাও, অসৎকাজ থেকে (মানুষকে) বিরত রাখ এবং আল্লাহর প্রতি দৃঢ় ঈমান পোষণ কর।’ (সূরা আলে ইমরান : ১১০)।
আল্লাহ আরও বলেন, ‘ওহে ঈমানওয়ালা লোকেরা! তোমরা ইহুদি ও খ্রিস্টানদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু।’ (মায়িদা : ৫১)।
মহান আল্লাহর এ বাণী মুসলমানরা ভুলে গেছে। সোনার বাংলা আল্লাহ তায়ালার এ বাণী মুসলমানদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। এ বিষয়গুলো দেশের অন্য কোনো পত্রিকায় পাওয়া যায় না। তাই দেশের সাধারণ মানুষ সোনার বাংলাকে তাদের মুখপাত্র হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং ভালোবাসে।
কাব্য সাহিত্য ও সংস্কৃতি জাতীয় জীবনে গভীর প্রভাব বিস্তার করে। আমাদের দেশ স্বাধীন হলেও আজো কাব্য-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে সেই বিজাতীয় কালো ছায়া বিস্তার করে আছে। ইংরেজ শিক্ষাবিদ ম্যাকল ১৮৩৫ সালে যে শিক্ষানীতি চালু করেছিলেন, আজো তার প্রভাব সম্পূর্ণ মুছে যায়নি। সোনার বাংলা এ দেশের তাওহীদি জনতার মানসপটে ইসলামী সাহিত্য সংস্কৃতির সঞ্জীবনী সুধারস ঢেলে অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত করে তোলার সাধনা চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য সোনার বাংলা আদর্শ মানের নতুন লেখক তৈরির জন্য এর বড় একটা অংশ বরাদ্দ করেছে। নতুন লেখক-লেখিকাদের উৎসাহ দেয়া হয়েছে। সোনার বাংলা সাহিত্য বিভাগে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার ছাত্রছাত্রী নিয়মিত লিখে আসছেন। তারা লিখছেন কবিতা, ছড়া, গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস, গান, নাটক এবং গঠনমূলক সব ধরনের রচনা। এ বিভাগে লিখে লিখে ইতোমধ্যে একঝাঁক তরুণ উৎসাহী সাহিত্যকর্মী সৃষ্টি হয়েছে। তারা এতদিনে সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছেন। এর ফলে বাংলা সাহিত্য ক্ষেত্রে একটি আদর্শ সাহিত্যধারা সৃষ্টি হয়েছে। এ ধারা এতটাই প্রবল হয়ে উঠেছে যে, দেশের প্রবীণ কবি-সাহিত্যিক যারা সারা জীবন ‘শিল্পের জন্য শিল্প’। বিশ্বাসে কাব্য-সাহিত্যচর্চা করে তৃপ্তি লাভ করে আসছিলেন তাদের জীবন ও সাহিত্য সম্পর্কে ভুল ভেঙেছে। তারা বুঝতে পেরেছেন, কাব্য-সাহিত্য খেলার বিষয় নয়। জীবন ও সমাজ মানুষের জন্য এক মহৎ আদর্শ প্রচার-প্রসারের জন্য আর সে আদর্শ হলো ইসলাম। জীবনের সকল ধরনের কাজই আমলনামায় লেখা হয়, তাতে কাব্য-সাহিত্য বাদ পড়ে না।
আগে যারা সমাজতন্ত্রী ছিলেন, তারা তাদের পূর্বের উৎসাহ-উদ্দীপনা হারিয়ে ফেলেছেন এবং বর্তমানে আদর্শ ধারায় অনেকে ফিরে এসেছেন এবং যারা এখনো ফিরে আসেননি, তার ফিরে আসার চেষ্টা করছেন।
সাপ্তাহিক সোনার বাংলার কেন্দ্রভূমি থেকে কাব্য-সাহিত্য ও সংস্কৃতির যে আদর্শ অমীয় ধারার কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও শিল্পীকর্মী সৃষ্টি হয়েছে, তারা এখন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পত্রপত্রিকা প্রকাশ করছেন। আলোচনা সভা, সেমিনার করে তরুণদের উৎসাহ দিয়ে সংগঠিত করছেন, চার দিকে জাগরণের সাড়া পড়ে গেছে। আদর্শ কাব্য-সাহিত্য, সঙ্গীত ও সংস্কৃতির সৃষ্টিসুখের উল্লাসে সারা দেশে বান ডেকেছে। আমাদের সমাজ জীবনে এনেছে নতুন প্রাণ, নতুন জীবন এবং চিন্তাকে ছড়িয়ে দিয়েছে অসীম দিগন্তের দিকে।
আমাদের সমাজের নবীন-প্রবীণ মনমানসে চিন্তা ও কর্মের এ যে কল্যাণকর পরিবর্তন সাধন, এটা সাপ্তাহিক সোনার বাংলার অবদান- বিরাট মহৎ অবদান। এ বিষয়টি অবশ্যই আমাদের জাতীয় জীবনে গৌরবের এক ইতহিাস। এজন্য আমি গান গাই- আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।
অনেকে বড় বড় কথা বলেন। কিন্তু নিজের স্বার্থ ত্যাগ করতে রাজি হন না। আল্লামা জালাল উদ্দীন রুমী বলেছেন-
মোমবাতি হওয়া সহজ কাজ নয়,
আলো দেওয়ার আগে নিজেকেই পুড়তে হয়।



এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।