প্রকাশ্যে গোপনে অনেক কিছু চলছে
২ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:৫৫
আলহামদুলিল্লাহ! জিনিসপত্রের দাম নিয়ে আমরা খুব পেরেশান ছিলাম। আল্লাহর রহমতে বড় এ বিষয়টি অনেকটাই তেজহীন হয়ে পড়েছে। শীতকালীন শাকসবজি, রবিশস্যসহ কৃষিভিত্তিক নানাকিছুর দাম সহ্যের সীমায় চলে এসেছে- এমন কথা আমরা বলতে পারছি না, তবুও শাশ্বত সময়ে তার আপন মহিমায় আল্লাহর রহমতে বিগত দিনের মতো স্বস্তির কিছুটা আবহ সৃষ্টি করেছে। আমরা বলি, এ এক চিরন্তন আল্লাহর মহিমা ও রহমত। অন্যরা বলেন, প্রকৃতির উদার ও উজাড় করা অনন্ত ভালোবাসা। ঘরের ভেতর আমরা গুটিসুটি মেরে সময় পার করার চেষ্টা করলেও বাইরে অনন্ত ও উদার জীবন। ঘরের বাইরের যে রূপময় নান্দনিক সৃষ্টি, তা দেখে আমাদের কৃষান-কৃষানিরা আবহমানকাল থেকে কিছুটা সুখ, কিছুটা শান্তি ও কিছুটা স্বস্তি আনন্দের সাথে ভোগ করে থাকি। আহা কত বর্ণাঢ্য প্রকৃতি, শীতের মধ্যে দু’চোখ যেন হঠাৎ হঠাৎ আটকে যায়। এ সময় কুরআন যেন আমাদের দিলে ধ্বনি ও প্রতিধ্বনি তোলে। ফাইন্নামা’য়াল উসরে উছরান, ইন্নামা’য়াল উসরে উসরা, ফাইজা ফারাগতা ফানছাব, ওয়া ইলা রব্বিকা ফারগাব। কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে, অবশ্যই কষ্টের সাথে স্বস্তি আছে। অতএব যখনই অবসর পাও, জোর চেষ্টা কর এবং তোমার প্রভুর প্রতি মনোনিবেশ কর।
সূরা ইনশিরার (আরাম ও প্রশস্ত) শেষ ৪টি আয়াত (৫-৮)- এটাই এ পৃথিবীতে আমাদের জীবন। যে প্রেক্ষাপটে লিখছি, তা থেকে অনেক প্রশস্ততায় আমরা চলে গেছি। এখানে রাসূল (সা.) জীবনকে স্পর্শ করে মহান আল্লাহ, মহান লালন-পালনকর্তা যা বলেছেন, তাই যেন সকল জীবনের মহাস্বস্তি। সুতরাং ধৈর্যধারণ করতে হবে এবং আল্লাহর মহিমাকে কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করতে হবে।
এখানে এসে আমরা কৃপণ হয়ে যাই। যেখানে মহান সৃষ্টিকর্তা প্রশস্ততা দান করেছেন। সেখানে আমরা অপ্রশস্ত হয়ে পড়ি। আমাদের দিলে বা কণ্ঠে কুণ্ঠাবোধ জাগ্রত হয়। ঠিক এ সময়ে গ্রাম-বাংলার লোকজ জীবনে ওয়াজের মাহফিল শুরু হয় এবং তার পাশাপাশি এ শীতের মাঝেও সংস্কৃতি ও অসংস্কৃতি মিলে এক ধরনের আনন্দ-বিলাসও কম হয় না। এখন অবশ্য সেসব অনেক কমে গেছে। আর যদি সত্য কথা বলতে হয়, তাহলে অবশ্যই উল্লেখ করতে হয় যে, বর্তমানের ওয়াজ-মাহফিলের বিরাট বিশাল আয়োজনের মধ্যে শীতকালীন কৃষ্টি-অকৃষ্টির পরিচ্ছন্ন ও অপরিচ্ছন্ন ছায়া ওয়াজের মাহফিলে বা আয়োজনে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। সনাতন ও পুরনো যা কিছু আমাদের তথাকথিত ঐতিহ্য, তার সবকিছু এ সময়ে পরিস্ফুট হয়। এক ওয়াজের মধ্যেই সব ধরনের আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায়।
তবে সেকালে যেখানে মেলা হতো, সেখানেই পালাগান, জারিগান, সারিগান, পুতুলনাচ, সার্কাস সবকিছুর সংযোজন ঘটত। তবে এখনকার মতো দুটি বিষয়ের মধ্যে তেমনভাবে সামঞ্জস্য নেই। এখন মেলা ছাড়াও যেখানে ওয়াজ-মাহফিল, সেখানেই অন্তত দুতিনদিন যাবত ছোট ছোট মেলা বসে যায়। অর্থনৈতিক লেনদেন কিছুটা হলেও বাড়ে। কিষান-কিষানিরা কিছু বেচা-কেনাও করতে পারে। শরৎ, হেমন্ত ও শীতের যে দৃশ্যপট, গ্রাম-বাংলায় সে ব্যঞ্জনা ও বর্ণাঢ্য, তা সৃষ্টি হয় অন্য মৌসুমে। এত দুঃখ ও কষ্টের মধ্যেও আনন্দের অভিসারকে আমরা ভুলে যাই না। কিছুটা হলেও এ সময়ে আমরা মহান মালিককে স্মরণ করি। কোনো এক কবি যেন বলেছিলেন,
‘সমুদ্রে পেতেছি ঘর
কি-বা ভয়, কি-বা ডর।’
এ এক অপূর্ব আকুণ্ঠতা। অচিন্তনীয় সাহস, যা চিরকাল আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। তরিতরকারির দাম কমেছে, ক’দিন পরে আবারও বেড়ে যাবে। সেই আশঙ্কায় বাংলাদেশিরা চুপসে যায় না। জীবনকে উদযাপিত করে প্রকৃতির মতো। অন্য দেশে শীতকালে গাছের পাতা সম্পূর্ণ ঝরে যায়। ন্যাড়া হয়ে যায়। পৃথিবীতে কেমন যেন শূন্যতা ও ভয় সৃষ্টি হয়। কিন্তু আমাদের দেশে প্রকৃতি একেবারে ন্যাড়া হয়ে যায় না। শীতের শেষ দিকে একসাথে বড় গাছগাছালির পত্রপল্লব ঝরে যায়। কিন্তু কৃষিতে আমাদের জমিনে এবং জমিনের আশপাশে পত্রপল্লব ও গুল্মলতায় নতুন করে যেন জীবন আসে, যৌবন আসে। জীবন হয়ে ওঠে জীবন্ত, সুরভিত। সকাল থেকে রাত অবদি হয়ে ওঠে তরঙ্গময়, কর্মময়, বিজয়ময়। কৃষকের শ্রমে, কর্মে, উৎসাহ-উদ্দীপনায় জীবনের অর্থ তাই মহিমাময় হয়ে ওঠে।
কিন্তু হঠাৎ করে এ বছর আমাদের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে নানা ধরনের গুজব ও আতঙ্ক। প্রতিবেশীরা শুধু গুজব ছড়াচ্ছে না; আমাদের জীবনকে ধ্বংস করতে আষ্ঠেপৃষ্টে যেন লেগে পড়েছে। এমন মিথ্যার বেসাতি কেউ কখনো শুনেনি বা দেখেনি। নিজের নাক কেটে ওরা আদা-জল খেয়ে নানারকম উৎপাত করছে। আমাদের মানুষের জন্য ওদের সকল দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে বাংলাদেশিরা শপিং করতে আর সেদিকে পা বাড়াতে পারছে না। দুরারোগ্য রোগীরা চিকিৎসা গ্রহণের জন্য বর্ডার ক্রস করতে পারছে না। এতে আমাদের যত ক্ষতি হয়েছে, তার চেয়ে বহুগুণ ক্ষতি হয়েছে এবং হচ্ছে তাদের। কিন্তু মূর্খরা সবসময় একরকম অন্ধ জীবনযাপন করে। এখানেও যেসব দিন দিন বিস্তৃত হচ্ছে। এটা হলো অর্থনৈতিক দিক। সাথে সাথে কিছুটা মানবিক দিকও।
বাংলাদেশ সরকার সৎ প্রতিবেশীসুলভ আচরণ করলেও, বন্ধু রাষ্ট্র পূর্বের মতোই কুণ্ঠিত ও বিদ্বেষ প্রয়োগ করে চলেছে। আমাদের ভালো ব্যবহারকে ওরা দুর্বলতা বলে চিহ্নিত করছে। ড. ইউনূস সরকার এ অসম পরিস্থিতির মধ্যেও পরিমিত ধৈর্যধারণ করছে এবং পৃথিবীর মধ্যে প্রতিবেশীর নবতর প্রতীক উজ্জ্বল করে চলেছে। এ মুহূর্তে একটা দল ছাড়া অন্য সকল দল ও মতের মানুষ প্রতিবেশীর সাথে সহজ-সরল-স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখতে চাইলেও উপর্যুক্ত দলটি তাদের নিজেদের স্বার্থে আচরণ ও চেহারা পাল্টে দিয়েছে। তারা তথাকথিত ইন্ডিয়ার বিরোধিতায় লোকদেখানো কৌশল অবলম্বন করছে। তাদের আমলে তারা সবসময় আর্টিফিসিয়াল রাজনীতি করেছে। একমাত্র জিয়াউর রহমান ছাড়া তাদের অন্য নেতারা প্রতিবেশীদের সাথে সবসময় রহস্যময় ব্যবহার ও আচরণ বিন্যাসিত করেছে। একদিকে তাদের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে (তবে উভয় দলই সেক্যুলার আদর্শ বহন করে চলছে)। তলে তলে নানা ছাড় দিচ্ছে। যেখানে দেশবাসী নির্বাচনের পূর্বে আওয়ামী সরকারের বিচার মোটামুটি শেষ করে নির্বাচনে যেতে চায়, সেখানে স্বঘোষিত এখনকার সেরা দল বন্ধু-প্রতিদ্বন্দ্বীকে নিয়ে ঐকমত্যের নির্বাচন করতে চায়। দেশবাসী যেখানে পূর্বতন সরকারের বিচার ও সংস্কার চায়, সেখানে তারা নামমাত্র লোকদেখানো সংস্কার চায়। তারা লোকদেখানো কিছু মানুষের বিচার চায় মাত্র। দলের বিচার চায় না। অথচ তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী-বন্ধু অন্য সর্বোচ্চ দল নেতাদের নামমাত্র বিচারের মাধ্যমে শুধু ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে, তা নয়। সে দলেরও তথাকথিত বিচার করে দলকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য অবৈধ প্রয়াস পায়। তারা বলছে, এখন নির্বাচনই একমাত্র ‘টপ প্রয়োরিটি’। নির্বাচন হলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। নির্বাচনে যারা বিজয় লাভ করবেন, তারাই সংস্কার করবে, অন্য কারো সংস্কার করার অধিকার নেই। তারা অবিশ্বাস্য বিপ্লবকে আন্দোলন বলে অভিহিত করেছে এবং এমন মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে আমরাই তো সর্বক্ষণ আন্দোলন করছি। আমাদের তীব্র আন্দোলনের কারণেই তো ওরা পরাজিত হয়েছে। আমরা বিজয় লাভ করেছি। দেশ ও রাষ্ট্রের সব ক্ষমতাই এখন আমাদের হাতে থাকা উচিত। তারা ছাত্র-জনতাকে উল্টা প্রশ্ন করছে, ‘তোমরা কারা’। তোমাদের তো আমরা চিনি না, জানি না, অর্থাৎ ‘আবাবিল’ পাখিদের তারা চ্যালেঞ্জ করে বসেছে। ছাত্ররা জবাব দিয়েছে, আমরা তারা, যারা স্বৈরাচারের জন্য রক্ত দিয়েছি। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করেছি। সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে একসাথে কথা বলার শক্তি দিয়েছি। যেমন: আরবের শিশু-কিশোররা আবরাহার আক্রমণের সময় আকাশের দিকে তাকিয়ে বলেছিল, ‘ইয়া আল্লাহ! এরা কারা’? মনে হয় ভুল বললাম, শিশু-কিশোররা তো সহজ-সরল-স্বাভাবিক থাকে, যেমন ছিলেন কৌতূহলী ইব্রাহিম (আ.)। কিন্তু এ রাজনৈতিক গোষ্ঠী হঠাৎ করে তথাকথিত বন্ধু-প্রতিদ্বন্দ্বী ও কুটিল প্রতিবেশীর ইঙ্গিতে নমরূদের মতো ব্যবহার শুরু করে দিয়েছে। এই তো,
সেদিন তাদের একজন বড় নেতা দেশের সর্বোচ্চ ইসলামী দলের ছাত্রনেতাদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘এরা রাজাকার, স্বাধীনতাবিরোধী, কারা পায়ের রগ কাটে জনগণ জানে না, এরা ’৭১-এ বিরোধিতা করেছেন, এরা ইসলাম নিয়ে রাজনীতি করে- ইসলাম মানে কি বার বার মুনাফেকি করা।
যাক এসব তো নতুন কথা। সামান্য পুরনো কথায় আসি। ২০০৯ সালে আওয়ামী সরকার যে এলো, কারা তাদের এনেছে? আমরা রাজনৈতিক বিশ্লেষক নই। ইতিহাসবিদও নই। আমরা সাধারণ মানুষ। আমরা আমাদের নিজের চোখে দেখেছি। নিজের কানে যা শুনেছি, তাতে আমাদের দিব্বি মনে আছে- একানব্বই থেকে ছিয়ানব্বই পর্যন্ত যারা সরকারে আসীন ছিলেন, তারাই এরশাদ সাহেবের রোপণ করা দুর্নীতির গাছগুলো থেকে র্যানডম ফল খেয়েছেন। সাথে সাথে পূর্বতন সরকারের অনুসরণে দেশময় নতুন নতুন চারা রোপণ করেছেন। এ দেশে দুর্নীতির প্রথম চারা রোপণ করেছে আওয়ামী ও বাকশালী সরকার। দুর্নীতির কারণে ঐ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৭৪ সালে দুর্ভিক্ষ সংঘটিত হয়। সেই দুর্ভিক্ষের কথা বর্তমান প্রজন্ম জানে না। হয়তো শোনেওনি। কারণ ইতিহাস প্রচণ্ডভাবে বিকৃত করা হয়েছে। সেই দুর্ভিক্ষের কারণে কত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, সে হিসাব রাজনৈতিক দলের কাছেও নেই। এমনকি সরকারের পরিসংখ্যান বিভাগেও নেই। সেই দুর্ভিক্ষ নিয়ে সারা পৃথিবীতে আলোচনা-গবেষণা হলেও বাংলাদেশে সে কাজটি যথাযথভাবে কেউ করেনি। দুর্ভিক্ষের শুরুটা হয়েছিল ৫০ পয়সার চাল ১ টাকা, ১.৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১০ টাকায় যখন লাফিয়ে উঠল। মরিচের সের লাফাতে লাফাতে যখন ১৮০ টাকায় উঠল। লবণের সেরও সমানতালে ১০০ টাকার ওপর উঠল এবং আবাল-বৃদ্ধি-বণিতা যখন রাস্তায় রাস্তায় অনাহারে মৃত্যুবরণ করতে লাগলো, তখন সংবাদপত্রের অফিসে অফিসে এখনো সে আমলের মর্মান্তিক দুর্ভিক্ষের ছবিগুলো আছে। শাড়ির অভাবে একটি মেয়ে মাছ ধরার জাল পরে লজ্জা নিবারণের ব্যর্থ প্রয়াস চালিয়েছিল। সেই বেদানাদায়ক দৃশ্যের ছবি এখনো সংবাদপত্রে আছে।
সেসব ছবি পুনরায় এখন প্রকাশ করা উচিত। সংবাদপত্রে ফিরে দেখা নতুন কলাম সংযোজন করা উচিত। বিখ্যাত নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেন তার গবেষণায় লিখেছেন, বাংলাদেশের ’৭৪-এর দুর্ভিক্ষ ছিল মানবরচিত। অর্থাৎ দুর্ভিক্ষের পূর্বে যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরী কিসিঞ্জার বলেছিলেন, বাংলাদেশ হলো ‘তলাবিহীন একটি ঝুড়ি’। সে ঝুড়িতে যা রাখা হবে, তা থাকবে না, তা সরে যাবে। এরই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালে ঘটে যায় এক রক্তাক্ত বিপ্লব। সেই বিপ্লবকেও এ দেশবাসী ধরে রাখতে পারেনি। বিপ্লবের ফলে যারা এলো, তারা বহু সাধ্য সাধন করে ইন্ডিয়া থেকে হাসিনা রানিকে নিয়ে এলো। এখানেই শুরু হলো ভবিষ্যতের সোপান রচনা। দুর্নীতির চারা একবার রোপণ করা হলে তা আর বন্ধ করা যায় না। নতুন চারা ‘আপসে আপ’ গজে যায়। কচুরিপনার মতো নদী-নালা, খাল-বিল সবকিছু ছেয়ে ফেলে। যারা হাসিনাকে আনলো, তারা পুনরায় গণতন্ত্রের চর্চা শুরু করলো, বাকশাল বাতিল করে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করলো, কিন্তু ইন্ডিয়ার রোপিত দুর্নীতি ও সর্বনাশা কূটনীতি অব্যাহত থাকলো। জিয়াউর রহমান খাল খনন ও পুনর্খনন শুরু করলেন। গরিবদের ঘরে ঘরে পাম ওয়েলের চারা, মুরগি, ছাগল, গরু বিতরণ করলেন। কিন্তু ইন্ডিয়া দেখলো বড় বিপদ বাংলাদেশ যদি পানি সংরক্ষণ করতে পারে। কিষান-কিষানিরা যদি খাদ্য উৎপাদনে লেগে যায়। বাংলাদেশের খাল-বিল, নদী-নালা যদি মাছে ভরে যায়, তাহলে তো ইন্ডিয়ার বড় বিপদ। এদিকে জিয়াউর রহমান আবার নদী খননের কথা বলছেন। বিশ্বের দরবারে দরবারে পানির জন্য নালিশ করছেন। সুতরাং ইন্ডিয়াকে বেঁচে থাকতে হলে এর একটা স্থায়ী ব্যবস্থা তো করতেই হবে। তথাকথিত বিপ্লব করার জন্য ইন্ডিয়ার তল্পিবাহক এরশাদ সাহেব এলেন, সেদিক থেকে এরশাদ সাহেবও ইন্ডিয়া বিজয় লাভ করলেন। চলল দুর্নীতি আর ঠেকায় কে। ইন্ডিয়া পানি দিল না, দিল দুর্নীতির প্রবহমান জলাশয় ও জল। চলছে সবকিছু আগের মতো।
একানব্বই থেকে-ছিয়ানব্বইতে যারা ছিলেন, তারাও দুর্নীতির প্রচার ও প্রসার ঘটালেন। মানুষ ভাবলো শেখ মুজিবের কন্যা অনেক দিন থেকে রাজনীতির বাইরে আছেন। তাকে একবার রাজনীতির আসনে বসালে মনে হয় ভালো হবে। এ দেশ থেকে দুর্নীতি শেষ হবে। যেমন চিন্তা, তেমন কাজ। হাসিনা চলে এলো। ঠিক এ জায়গাটায় আমাদের ভাবতে হবে। কারা কীভাবে হাসিনাক আনলো। হাসিনাকে এ দেশে প্রতিষ্ঠিত করল এবং কাদের দুর্নীতির কারণে মাঝে একটু বিরতির পর হাসিনা ২০৪১ সাল পর্যন্ত তাদের সরকার প্রতিষ্ঠিত রাখবে বলে সব পরিকল্পনা ‘সাঙ্গ’ করল।
গত ১৬ বছরে কেউ কিছু করতে পারল না। আল্লাহর রহমতে তরুণ ছাত্র-জনতা ও বাবা-মা মিলে হঠাৎ করে এক বিপ্লব ঘটে গেল। যে বিপ্লবকে আমরা কতকিছু নাম দিয়েছি। সেই বিপ্লবকে নস্যাৎ করার জন্য ইন্ডিয়াসহ এ দেশের দুর্নীতিবাজ ক্ষমতালিপ্সুরা আদা-জল খেয়ে লেগেছে। ‘২৪-এর বিপ্লবকে নস্যাৎ করার জন্য প্রতি ক্ষণে ক্ষণে বিপ্লব, বিপ্লবের উল্কা উড়াচ্ছে। এসবকে শক্ত হাতে থামাতে হবে। প্রয়োজন হলে অনেককিছু পরিবর্তন করতে হবে। আমরা মহান আল্লাহর কাছে শুভ পরিবর্তন কামনা করছি।