সংবাদ শিরোনামঃ

সাঁড়াশি অভিযানের আড়ালে প্রতিপক্ষ দলন ** ঈদের পরে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে ২০ দল ** বাজেট বৈষম্যমূলক-অসহনীয়, ব্যবসাবান্ধব নয় ** সিয়ামের প্রকৃত শিক্ষাকে ধারণ ও বাস্তব জীবনে প্রতিফলন ঘটাতে হবে : নূরুল ইসলাম বুলবুল ** বিরোধী রাজনীতিকদের চাপে রাখার কৌশল ** নিরপরাধ নেতাকর্মীদের জীবন নিয়ে নির্মম তামাশা মেনে নেয়া যায় না : ছাত্রশিবির ** দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে পড়েছে গ্রাম-গঞ্জে ** নেপথ্য খলনায়কদের আড়াল করতেই ক্রসফায়ার! ** সমাজে বিভক্তির কারণেই মৃত্যুর পরেও সম্মান পাননি মনিরুজ্জামান মিঞা : ড. এমাজউদ্দিন ** ‘অভিযান ছিল লোক দেখানো, বাণিজ্য হয়েছে পুলিশের’ ** ক্রসফায়ার : একটি ধারাবাহিক গল্প ** ক্রসফায়ার নয়, আদালতের মাধ্যমেই দোষীদের শাস্তি দিতে হবে ** টাকার ‘সাগর’ এবং অর্থমন্ত্রী ** রোজার তাৎপর্য ** একটি পারিবারিক বৈঠকের কিছু কথা ** ঈদকে ঘিরে ব্যস্ত কুষ্টিয়ার বুটিকস কারিগররা ** ‘বিশেষ’ অভিযান শেষ হলেও বন্ধ হয়নি গণগ্রেফতার ** সারাদেশে বিভিন্ন সংগঠনের ইফতার মাহফিল **

ঢাকা, শুক্রবার, ১০ আষাঢ় ১৪২৩, ১৮ রমজান ১৪৩৭, ২৪ জুন২০১৬

মোমতাহানা সুরভী
“মারবেই যখন আমার বাবুরে তাইলে চোখ দুইটা তুইলা নিলো ক্যান বাবুর? কত কষ্ট পাইছে আমার বাবু!” কথাগুলো ঝিনাইদহের মহীউদ্দিন সোহান নামের এক তরুণের মায়ের। নাম না জানা অজ্ঞাত কিছু ব্যক্তি সোহানকে তুলে নিয়ে যায়। তার কিছুদিন পর লাশ পাওয়া যায় সোহানের। উপড়ে ফেলা চোখ, ভেঙ্গে দেয়া হাত, থেতলে দেয়া মাথা প্রমাণ করে কি পৈশাচিক নির্যাতন করা হয়েছে এই তরুণের উপর। প্রাণপ্রিয় পুত্রের এই বিকৃত লাশ দেখে করুণ আর্তি সোহানের মায়ের। নিঃসন্দেহে যে কোন মায়ের জন্য এক ভয়াবহ যন্ত্রণার আর মর্মযাতনার বিষয় সন্তানের এ ধরনের মৃত্যু। ঠিক একইভাবে ঝিনাইদহের আরো দুজন কৃতী ছাত্র আবুজর গিফারী ও শামীমের লাশ পাওয়া যায় অপহরণের পর। ঘটনাগুলো অত্যন্ত মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক। সবচেয়ে কষ্টকর ও দুশ্চিন্তার বিষয় হচ্ছে, নিরপরাধ এই তরুণদের এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের পেছনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়ী এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। গুম-হত্যা অবশ্যই মারাত্মক অন্যায় আর হত্যার আগে এভাবে হাত ভেঙ্গে দেয়া, চোখ উপড়ানো আরো বেশি ঘৃণা মানবতাবিরোধী কার্যক্রম। কি অপরাধ ছিল এই তরুণদের? কোন রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত থাকলেই কি এভাবে হত্যার শিকার হতে হবে? বর্তমান বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি চরমে। গুম, হত্যা, ধর্ষণ শিশু হত্যার পরিমাণ দিন দিন আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলছে। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিস কেন্দ্র (আসক) প্রদত্ত তথ্যমতে শুধু জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি মার্চ মাসেই খুন হয়েছে ৮৭১ জন। ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৪৬ আর শিশু হত্যার ঘটনা ঘটেছে ১৫২টি। এতেই প্রমাণিত হয় মানবাধিকার কি চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে!

আরেকটি ব্যাপকভাবে আলোড়িত এক পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড ঘটে ২০ মার্চ, কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে পাওয়া যায় বিবস্ত্র, নির্যাতিত সোহাগী জাহান তনুর লাশ। সোহান, শামীমদের হত্যাকাণ্ডে মিডিয়া নিশ্চুপ থাকলেও এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে মিডিয়ার ব্যাপক ঝড় উঠেছিল। কিন্তু ফলাফল একই, কিছুদিন গড়াতে না গড়াতেই সব আন্দোলনেই ভাটা পড়েছে। আবার ভুলে যাচ্ছি আমরা সবকিছু।

বর্তমান সরকার বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের হেনস্থা করার জন্য হেন উপায় নেই যা বাকি রাখা হয়েছে। রিমান্ডের নামে আসামির উপর নির্মম নির্যাতন চালানো এখন স্বাভাবিক বিষয়। সম্প্রতি বিনা কারণে রিমান্ডে নির্মম নির্যাতন, ১৯ মাস কারাভোগের পর হাইকোর্ট থেকে জামিন লাভ করে একজন জামায়াত নেতা উচ্চ আদালতের ‘নো অ্যারেস্ট নো হ্যারাস”Ñ à¦¨à¦¿à¦°à§à¦¦à§‡à¦¶ থাকা সত্ত্বেও জেলগেট থেকে টেনে-হিঁচড়ে ডিবি পরিচয়ধারী ব্যক্তিরা তাকে তুলে নিয়ে যায়। কয়েকদিন পর নতুন মামলায় অভিযুক্ত করে আদালতে হাজির করা হয় তাকে। এই মাসখানের কয়েকদিন তিনি কোথায় ছিলেন, কিভাবে রাখা হয়েছে তা কোনভাবেই জানতে দেয়নি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা এটা তো একটা ঘটনা মাত্র। প্রতিদিন কতো ঘটনা আমাদের চোখের আড়ালেই থাকছে। অবস্থা দেখে “আমার দেশ” পত্রিকার সম্পাদক আরেক নির্যাতিত সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানের মতো বলতে à¦¹à§ŸÑ “মুসলমানদের মানবাধিকার থাকতে নেই!”

মানবাধিকার হরণের আরেক চূড়ান্ত রূপ সীমান্তে বিনাবিচারে বিএসএফ সদস্য কর্তৃক সংঘটিত হত্যাকাণ্ড। কাঁটাতারে ঝুলন্ত কুঁড়িগ্রামের ১৫ বছরের ফেলানির হত্যাকাণ্ড আজও আমাদের ব্যথিত করে। ২০১১ সালের সেই ফেলানি হত্যাকাণ্ডের পর গড়িয়েছে আরও পাঁচটি বছর। হত্যাকাণ্ডের পরিমাণ কমে তো নাই বরং আরো বেড়েছে। শুধুমাত্র ২০১৩ সালেই ৩৮ জন বাংলাদেশী নিহত হয় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ডে। হত্যার পাশাপাশি বিএসএফ ৮৩ জনকে আহত করে এবং ১০৫ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

সম্প্রতি ইউপি নির্বাচনে বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছে অনেক মানুষ। একই সাথে ব্যালট বাক্স ছিনতাই, জাল ভোট প্রদান, ভোট প্রদানের সময় বল প্রয়োগ এর অজস্র ঘটনা ঘটেই চলেছে, যা সাধারণ মানুষের ভোটাধিকারকে ক্ষুণœ করছে। একই সাথে নষ্ট হচ্ছে সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের পরিবেশ।

নিরপরাধ মানুষকে অহেতুক জেল, রিমান্ড হয়রানি ও প্রাণহানির মতো ন্যক্কারজনক ঘটনায় সরাসরি আইন-শৃঙ্খলা, বাহিনীর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ সত্যিই ভাববার বিষয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩য় বর্ষের ছাত্র হাফিজুর রহমান ফ্যালাসমিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষক হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে তাকে গ্রেফতার করা হয় ও রিমাণ্ডে নেয়া হয়, পরবর্তীতে মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় মারা যায় এই তরুণ। মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করা ও পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুবরণের এইসব ঘটনায় মিডিয়া নিশ্চুপ, আমরা যেন অন্যায়গুলোকে মেনে নিতেই অভ্যস্ত হয়ে গেছি। আমাদের এই নীরব ভূমিকা জন্ম দিচ্ছে নতুন নতুন মানবাধিকার লুণ্ঠনের ঘটনার।

বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, তারপরও কিছু বিশেষ গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবেই বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর উপর হামলার মাধ্যমে ধর্মীয় সহিংসতা বৃদ্ধির চেষ্টা করছে। ২০১৫ সালে ২৩ অক্টোবর নজিরবিহীন এক হামলার ঘটনা ঘটে ঢাকার শিয়া মতাবলম্বীদের পবিত্র দিন আশুরা উপলক্ষে আয়োজিত এক তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে, বোমা হামলায় ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হয়, আহত হয় অর্ধশতাধিক। যদিও পৃথিবীর অনেক দেশেই শিয়া-সুন্নী বিভেদ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে, কিন্তু ঢাকার ৪০০ বছরের ইতিহাসে এই ধরনের ঘটনা এটাই প্রথম। এই ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি। একই বছরের ২৬ নভেম্বর বগুড়ার শিবগঞ্জে শিয়া মতাবলম্বীদের একটি মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের উপর এলোপাথারি গুলি চালিয়ে মসজিদের মুয়াজ্জিনকে হত্যা এবং ইমামসহ তিনজনকে আহত করে হামলাকারীরা।

২০১৫ এর ৪ ডিসেম্বর দিনাজপুরের কাহারোলে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী কান্তিজি মন্দির প্রাঙ্গণের শতবর্ষ পুরনো এক মেলায় বোমা হামলা হয়। কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর কোন সুষ্ঠু বিচার আজও হয়নি। প্রশাসন বিশেষ কিছু রাজনৈতিক দলের উপর এই ঘটনাগুলোর দায় বর্তানোর চেষ্টা করলেও পরবর্তীতে তদন্তে সরকারি দলের কিছু ব্যক্তির নাম সম্পৃক্তদের তালিকায় উঠে আসে, যারা আজও বিচারের বাইরেই রয়ে গেছে।

সম্প্রতি সময়ের আরেকটি আলোচিত এবং একই সময়ে চরম বির্তকিত ইস্যু “যুদ্ধপরাধ বিচার কার্যক্রম” অসুস্থ এই বিচার ব্যবস্থার মিথ্যা সাক্ষ্যদান, অপূর্ণাঙ্গ অভিযোগ উপস্থাপন নিয়ে ইতোমধ্যেই পক্ষে বিপক্ষে বিতর্কের ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তারপরও আমরা দেখতে পাচ্ছি একের পর এক হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন বিরোধী দলের বেশ কিছু নেতৃবৃন্দ। আইয়্যামে জাহেলিয়াতের সময়ে কন্যা শিশু জীবিত কবর দেয়ার নিষ্ঠুরতার কথা আমরা শুনেছি। কিন্তু বর্তমান বাংলাদেশে শিশু হত্যার যে পৈশাচিক রূপ দেখা যাচ্ছে তা আইয়্যামে জাহেলিয়াতের সেই বর্বরতাকেও হার মানায়। শিশু রাজন, রাকিব হত্যাসহ অসংখ্য নিষ্পাপ শিশু হত্যার ঘটনা যে কোন অন্তরকে বিচলিত ও ভারাক্রান্ত করে তুলবে।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে নারী অধিকার আজ চরমভাবে লুণ্ঠিত। ধর্ষণের সেঞ্চুরি উদযাপনের পরও সরকারি মদদপুষ্ট ছাত্র নেতারা বিচার প্রক্রিয়ার বাইরে ঘুরে বেড়ায়। পহেলা বৈশাখসহ বিভিন্ন বড় অনুষ্ঠানুগুলোতে লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছে অসংখ্য নারী। পরিমলের মতো শিক্ষকদের খপ্পর থেকে রেহাই পাচ্ছেনা স্কুলের কোমলমতি ছাত্রীরা। পরিমলদের সংখ্যাও দিন দিন বেড়েই চলছে। স্কুল থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠগুলোতে শিক্ষকদের দ্বারা ছাত্রী লাঞ্ছনার ঘটনা বেড়েই চলেছে। এসব ঘটনা মিডিয়াতেও আসে না।

নারী গৃহকর্তীদের উপর নির্যাতনের ঘটনাও বেড়েই চলছে। ঢাকা মেডিকেলের সামনে সুটকেসের মধ্যে পাওয়া ৮/৯ বছরের নাম না জানা শিশু গৃহকর্মীর ক্ষত-বিক্ষত লাশ এইসব ঘটনার সামান্য নজীর, পুলিশ সদর দফতরের হিসাব অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসেই ১৩১৫ ও ১৪৮২টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। গণধর্ষণের ঘটনাও বাংলাদেশে আজ অহরহ ঘটছে। প্রতিটি নারীই আজ নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কিত।

মত প্রকাশের স্বাধীনতা একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার সমূহের একটি। বাংলাদেশে এ অধিকারটি আজ পদে পদে লুণ্ঠিত হচ্ছে। ভিন্ন মতাদর্শী হওয়ার অপরাধে বেশ কিছু টিভি চ্যানেল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সরকার বিরোধী কথা বলার অপরাধে বেশ কিছু সাংবাদিকদের হেনস্থা করা হচ্ছে। কিছু  ক্ষেত্রে তাদের কোন অনুষ্ঠানে কথা বলার জন্য আমন্ত্রণ জানানোর উপরও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। সরকার বিরোধী কোন প্রচারণা চালালেই তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। টিভি চ্যানেলগুলোর  টকশোগুলোর উপর চলছে নানাবিধ বিধিনিষেধ। এই সবগুলো ঘটনা নব্য বাকশালেরই স্বরূপ।

দেশের বড় বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের সোনার ছেলেদের তাণ্ডবে আতঙ্কিত সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা। হলে সিট দখল, অবৈধ ভর্তি বাণিজ্য, শিক্ষক লাঞ্ছনা, চাঁদাবাজি, নবীন ছাত্রদের উত্ত্যক্ত ও হেনস্থা করা, ভিন্ন আদর্শের ছাত্রদের উপর হামলাসহ অজস্র অপকর্মের সাথে জড়িত এই ছাত্র সংগঠনটি ইতোমধ্যেই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই কায়েম করেছে ত্রাসের রাজত্ব। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষকরা পর্যন্ত এই দলের ক্যাডারদের কাছে জিম্মি।

গত কয়েক বছরের দেশের বিভিন্ন স্থানে পর্দানশীল ছাত্রী এ মহিলাদের জঙ্গি অভিযুক্ত করে ব্যাপক হয়রানির শিকার করা হয়েছে। অন্তঃস্বত্ত্বা নারী, ৮ মাসের শিশুর মাও এই সব হয়রানি থেকে বাদ যায়নি। ইসলামী আলোচনায় অংশগ্রহণের অপরাধে এই সব হয়রানি যুক্তিপূর্ণ তা সত্যিই ভাববার বিষয়। সব চাইতে চিন্তার এবং আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে মানবাধিকার লঙ্ঘনের এইসব ঘটনায় সরকার, আইশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা, বিচারব্যবস্থা সরাসরি সম্পৃক্ত। রক্ষকই যখন ভক্ষকের ভূমিকায় তখন সাধারণ মানুষ কার কাছে আশ্রয় চাইবে? বাংলাদেশে মানবাধিকারের এই চরম লঙ্ঘিত রূপ দেখে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে পনেরশত বছর পূর্বের সেই মদীনার ছোট্ট ইসলামী রাষ্ট্রে অথবা খোলাফায়ে রাশেদার সেই সোনালী যুগে, যেখানে রাষ্ট্রপ্রধানরা নিজেদের এইভাবেই দায়বদ্ধভাবে জনগণের সামনে পেশ à¦•à¦°à¦¤à§‡à¦¨Ñ “দজলা ফোরাতের তীরে একটি কুকুরও যদি না খেয়ে মারা যায়, তাহলে তার দায়ভার আমি নেব।” ইসলামের সেই স্বর্ণযুগে মানুষের প্রতি মানুষের মানবিক দায়িত্ববোধের ও ইনসাফপূর্ণ আচরণের অজস্র ঘটনা আমরা দেখি যেখানে একজন অমুসলিম ব্যক্তির অধিকার রক্ষার জন্য একজন মুসলিমকে শাস্তি পেতে হয়েছে। মানুষের জীবনকে এইভাবে সম্মান দেয়া à¦¹à§Ÿà§‡à¦›à§‡Ñ “একজন মানুষ যদি অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করে তাহলে সে যেন গোটা মানব জাতিকে হত্যা করলো।” একজন মহিলার সম্ভ্রম রক্ষার্থে হাজার হাজার সৈন্যের বাহিনীকেও আমরা যুুদ্ধে অবতীর্ণ হতে দেখেছি। সেই ইসলামের উত্তরসূরী আমরা। ৯০ ভাগ মুসলমানের এই দেশে মানবাধিকারের এমন বিপর্যয় সত্যিই দুঃখজনক। বাংলাদেশ সহ সমগ্র পৃথিবীতেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের চরম একেকটি দৃষ্টান্ত সংঘটিত হয়ে চলেছে প্রতিনিয়ত। একটি ইস্যু নিয়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। তারই মধ্যে ঘটে যাচ্ছে আরো হৃদয়বিদারক কোন নতুন ঘটনা। কোনটির সুষ্ঠু ও পূর্ণাঙ্গ বিচার হচ্ছে না। নারায়ণগঞ্জের ৭ খুন বা সাগর রুনির হত্যাকাণ্ডের বিচার আজও হয়নি। ফলে অপরাধীরা সাহস পেয়ে যাচ্ছে নতুন অপরাধ করার। এ অবস্থাকে মেনে নিয়ে আমরা যদি নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করি, তাহলে কোন দিন আমাকেও হয়তো হতে হবে অন্য কোন ঘটনার ভিকটিম। অন্যায়কে প্রতিরোধের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা নয় সক্রিয়ভাবে আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে এই বিষয়গুলো নিশ্চিত হওয়া দরকার :

#  বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।

#  অপরাধী যে দলেরই হোক না কেন, তাকে বিচারের আওতায় আনা।

#  বিচার প্রক্রিয়াকে দীর্ঘমেয়াদী না করা।

#  সব দল ও ব্যক্তির মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।

#  অপরাধীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান।

# আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে নৈতিক মানম্পন্নভাবে তৈরি করা ও সরকারি বাহিনীতে পরিণত না করে শুধু জনগণের কল্যাণার্থে ব্যবহার করা।

সর্বোপরি দৃঢ়তার সাথে শক্তভাবে মোকাবেলা করতে হবে এইসব অন্যায়ের। তাহলেই নতুন কোন অপরাধের, অন্যায়ের বীজ আর বপন হতে পারবে না, আকাশে-বাতাসে বিপর্যস্ত মানবতার হাহাকার আর ধ্বনিত হবে না....।

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।