রাবিতে শিবির কর্মীদের উপর সন্ত্রাসী হামলায় অধ্যাপক মুজিবের নিন্দা

ছাত্রলীগ এখন ছাত্র সমাজ ও জনগণের কাছে আতঙ্ক

২৯ আগস্ট শনিবার ভোররাতে সরকারি দলের সশস্ত্র জঙ্গি ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসী কর্মীরা তাদের সহ-সভাপতি আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে শহীদ জিয়াউর রহমান হলে হামলা চালিয়ে ছাত্রশিবিরের কর্মী ৩ জন শিার্থীকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করা এবং ছাত্রলীগের জঙ্গিদের গ্রেফতার করার পরিবর্তে নির্যাতিত ৩ জন ছাত্রকে পুলিশ কর্তৃক অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করার ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।

তিনি গত ৩০ আগস্ট রোববার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের জঙ্গি ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জিয়াউর রহমান হলে শনিবার রাত ২টা থেকে ভোর পর্যন্ত ছাত্রশিবির কর্মীদেরকে ধরার জন্য তাণ্ডব চালায় এবং বিভিন্ন রুমে গিয়ে ভাঙচুর ও মারধর করে। এর মধ্যে ৫ জন শিার্থীকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে। অত্যন্ত দুঃখ ও বেদনার বিষয় হলো, এ সব জঙ্গিরা পুলিশের উপস্থিতিতে এ ঘটনা ঘটায়। যারা আইন নিজেদের হাতে তুলে নিয়ে ৫ জন নিরপরাধ ছাত্রকে আহত করলো সে সব সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার না করে ঐ ৩ জন নির্যাতিত ছাত্রকে পুলিশ গ্রেফতার করলো। প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীর আস্কারা পেয়ে ছাত্রলীগ আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। এ ঘটনার দ্বারা প্রমাণিত হয়, পুলিশ দুষ্টের দমনের পরিবর্তে তাদের লালন করছে। ঐ ৩ জন ছাত্রের অভিভাবকের কাছে আওয়ামী লীগ সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং পুলিশ কি জবাব দিবে?

তিনি বলেন, বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্তানদের লেখা-পড়া করতে পাঠিয়ে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তায় দিন কাটাতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের ভূমিকায় এটাই প্রমাণিত হয় যে, এ প্রশাসন সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক নয়, বরং ছাত্রলীগের অভিভাবক। জঙ্গি ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের তাণ্ডবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে লেখাপড়ার কোনো পরিবেশ নেই। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের ভয়ে সন্ত্রস্ত। প্রধানমন্ত্রী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের সম্মেলনে যেসব নীতিবাক্য শুনালেন তা কি কোনো কাজে লেগেছে?

তিনি আরো বলেন, শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও এ জঙ্গি সংগঠনটি তাদের তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি তারা সাধারণ শিকদের উপরও হামলা চালাচ্ছে। তারা ২৬ আগস্ট কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে। তারা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীা নিয়ন্ত্রকের অফিসে হামলা চালায় এবং একজন মহিলা কর্মকর্তাকে বেদম প্রহার করে। সিলেটে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিকদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালায়। এতে ৭ জন শিক আহত হন এবং তারা শিকদের ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে যায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কটেজে ছাত্রলীগের দুর্বৃত্তরা ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এক সময় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসে বিরক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন। বর্তমানে ছাত্রলীগের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা স্পষ্ট নয়। রাজনৈতিক অভিজ্ঞমহল প্রধানমন্ত্রীকে ছাত্রলীগের লাগাম টেনে ধরার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু লাগাম টেনে ধরার পরিবর্তে লাগাম আরো ঢিলা করে দেয়া হয়েছে। ছাত্রলীগ এখন ছাত্র সমাজ ও জনগণের কাছে ভয়ঙ্কর আতঙ্ক। তিনি ছাত্রলীগের এসব অপকর্মের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং সরকারের ভূমিকায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

তিনি দেশ, জাতি ও শিার স্বার্থে এ জঙ্গি সংগঠন ছাত্রলীগের সদস্যদের গ্রেফতার করে আইনানুগ শাস্তি প্রদান এবং ছাত্রশিবিরের গ্রেফতারকৃত কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দেবার জন্য জোর দাবি জানান এবং এর প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার জন্য ছাত্র-জনতার প্রতি আহ্বান জানান। আইন-শৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীকে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আহ্বান জানান। অন্যথায় এর সকল দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।