সংবাদ শিরোনামঃ

গণতন্ত্র না উন্নয়ন? ** দেশ থেকে মানবতা কি বিদায় নিচ্ছে? ** গণতন্ত্রহীনতায় জনমনে ক্ষোভ বাড়ছে ** মালয়েশিয়াগামী নিখোঁজদের জন্য আহাজারি ** প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির সমীকরণ ** ৩ মাসে ধর্ষণ ১২৩, গতিহীন তদন্ত ** গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিরোধীদল থাকা বাধ্যতামূলক ** জীবন দিতে হচ্ছে বাংলাদেশীদের ** কবি নজরুলের ভুল! ** কমলগঞ্জে ধলাই নদীর তীরে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস ** ধানের দরপতনে ঋণের টাকা পরিশোধে দিশেহারা কৃষক ** নায়ক শেখ আবুল কাসেম মিঠুনের প্রস্থান **

ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২২, ১০ শাবান ১৪৩৬, ২৯ মে ২০১৫

সাতক্ষীরা সংবাদদাতা : প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে গম কেনা হচ্ছে না। সরকার সমর্থক ও সিন্ডিকেট সদস্যদের কাছ থেকে গম কেনা হচ্ছে। ফলে গম নিয়ে বিপাকে সাধারণ কৃষকরা। ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত গম সংগ্রহ অভিযান চললেও কোনো সাধারণ কৃষক সরকারের কাছে গম বিক্রয় করতে পারিনি বলে অভিযোগ উঠেছে। বাজারে ২২ টাকা কেজি হলেও সরকার প্রতি কেজি গমের দাম দিচ্ছে ২৮ টাকা দরে। কেজি প্রতি ৪ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সিন্ডিকেট সদস্যরা আর ২ টাকা করে ঘুষ নিচ্ছে খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ। ফলে সরকাদের দেওয়া কৃষকদের ভর্তুকির বিপুল টাকা লুটপাট হচেছ। এবছর জেলাতে ৮ হাজার ১৭৫ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষককে ১ কোটি ২৩ লাখ ৮৫ হাজার ১৫৫ টাকা প্রাণোদনা দেয়া হয়েছে দাবি জেলা কৃষি খামার বাড়ির।

প্রান্তিক কৃষকদের বাদ দিয়ে সরকার সমর্থক ও সিন্ডিকেট সদস্যদের কাছ থেকে কেনা হচ্ছে এসব গম। জেলার খাদ্য গুদামে গম দিয়ে জেলার কয়েক জন আওয়ামী লীগ নেতার তালিকায় সরকার সমর্থক ও সিন্ডিকেট সদস্যরা প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা ও গুদাম কর্তৃপক্ষ কেজিতে ২ টাকা হিসেবে প্রায় ১০ লাখ নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জেলা গম সংগ্রহ মনিটরিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ি জেলার ৭টি উপজেলাায় ৪১৯ টন গম কৃষকদের কাছ কেনার কথা ছিল। ১ এপ্রিল থেকে গম কেনা শুরু হয়ে শেষ হবে ৩০ জুন। বাজারে ২২ টাকা কেজি হলেও প্রতি কেজি গম কেনা হচ্ছে ২৮ টাকা দরে। ৪১৯ টন বরাদ্দকৃত গমের মধ্যে সদর উপজেলায় ১৫৭ টন, কলারোয়া উপজেলায় ৯৮ টন, দেবহাটা উপজেলায় ৫ টন, কালিগঞ্জ উপজেলায় ২২ টন, শ্যামনগর উপজেলায় ১৭ টন ও তালা উপজেলায় ১১৭ টন ভাগ করা হয়েছে। সভায় উল্লেখ করা হয় গুদামে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা প্রত্যয়নপত্র গ্রহণ করে সরাসরি কৃষকদের কাছে থেকে গম কিনতে হবে। গম কেনার আগে বড় বড় বাজারে ঢোলসহ ও মাইকিং করবে খাদ্য বিভাগ।

অভিযোগ উঠেছে জেলার কোথাও কৃষকদের কাছ থেকে গম কেনা হয়নি। কৃষকদের কাছ থেকে কৃষি কার্ড নিয়ে গুদামে গম দিয়েছে সরকার সমর্থক ও সিন্ডিকেট সদস্যরা। এ কাজে সহযোগিতা করেছে কৃষি বিভাগ ও খাদ্য কর্মকর্তরা। খাদ্য বিভাগ গোপনে গম সংগ্রহ করেছে। গম দিয়েছে কলারোয়ার ৩ জন সিন্ডিকেট সদস্য, সদরের ৭ জন, পাটকেলঘাটার আলফাজ, আনছার, জাফর, নিরোধ, আমজাদ, গোপাল, আশাশুনির আকবর হোসেন, আলিম, রমজান, দেবহাটার ময়েন উদ্দিন, বাবর আলি, কালিগঞ্জের গফফার, নুর আব্দুল ও শ্যামনগরের মোস্তফা কামাল হোসেন।

নাম প্রকাশ করা হবে না এমন শর্তে একজন কর্মকর্তা জানান, কয়েক জন আওয়ামী লীগ নেতা তালিকা দিয়েছে। সেই তালিকা অনুয়ায়ি গম কেনা হয়েছে। কমবেশি টাকা তারাও নিয়েছেন।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আমজাদ হোসেন ও কলারোয়া কৃষি কর্মকর্তা জানান, এখান থেকে প্রায় ২ মাস আগে কৃষকরা গম ঘরে তুলেছে। উপজেলার কুশখালি এলাকায় ১/২ জন ছাড়া ২ হাজার কেজি গম হবে এমন জমি চাষ করেনি।

সদরের পাথরঘাটা গ্রামের আব্দুর রশিদ, মাহমুদপুর গ্রামের আজিজ হাসান, মহসিন আলি, ইন্দিরা গ্রামের আছাদুজ্জামান, শাহাজান আলী জানান, তারা জানে না গুদামে কবে গম দেয়া হয়েছে। ২ হাজার কেজি গম হবে এমন জমিতে গম চাষ তারা করেনি। তারা গোডাউনে যায়নি। তাদের নামে অন্য কেউ গম দিতে পারে।

ভারপ্রাপ্ত জেলা খাদ্য কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান জানান, তারা নিয়ম মেনে গম ক্রয় করেছে কোনো প্রকার অনিয়ম হয়নি।

খামারবাড়ির উপ-পরিচালক জানান, জেলায় বড় গম চাষির সংখ্যা কম। তবে কৃষি কর্মকর্তাদের প্রত্যয়ন ছাড়া কোনো কৃষক গম দিয়েছে কিনা সেটি দেখা হবে।

জেলা প্রশাসক ও জেলা গম ক্রয় কমিটির সভাপতি নাজমুল আহসান জানান, কৃষক বাদে সিন্ডিকেট সদস্যরা গম দিয়েছে কিনা সেটি তদন্ত করে দেখা হবে। কৃষকদের নাম ব্যবহার করে ব্যবসায়ি বা অন্য কেউ গম গুদামে ক্রয় করলে তা তদন্ত করা হবে।

গম উৎপাদন বাড়াতে জেলার সাতটি উপজেলায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিনামূল্যে গম বীজ ও সার বিতরণের মাধ্যমে ৮ হাজার ১৭৫ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষককে ১ কোটি ২৩ লাখ ৮৫ হাজার ১৫৫ টাকা প্রাণোদনা দেয়া হয়েছে দাবি জেলা কৃষি খামার বাড়ির। এতে করে জেলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা উপকৃত হওয়ার পাশাপাশি জেলায় গম উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক জানান, চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের জন্য জেলার সাতটি উপজেলায় প্রাণোদনা প্যাকেজের অধীনে কৃষি উপকরণ হিসেবে গম বীজ ও সার ক্রয় বাবদ এই টাকা প্রদান করা হয়েছে।

এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদরে ৬৩ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, কলারোয়ায় ২৪ লাখ ৯৯ হাজার ৭৫০ টাকা, তালায় ২৩ লাখ ৮৬ হাজার ১২৫ টাকা, দেবহাটায় ১ লাখ ১৩ হাজার ৬২৫ টাকা, কালিগঞ্জে ৫ লাখ ৬৮ হাজার ১২৫ টাকা, আশাশুনিতে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৮৭৫ টাকা ও শ্যামনগর উপজেলায় ১ লাখ ১৩ হাজার ৬২৫ টাকা।

কলারোয়া উপজেলার ঝাপাঘাট গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আরশাফ আলী জানান, স্থানীয় কলারোয়া উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রাণোদনা হিসেবে সার ও বীজ পেয়ে তারা প্রত্যেকে এক বিঘা করে গম চাষ করেছেন। বিঘা প্রতি প্রায় তিন হাজার টাকা খরচ হলেও তারা ১ হাজার ৬০০ টাকা কৃষি বিভাগের মাধ্যমে সরকার থেকে সার ও বীজ ক্রয় বাবদ পেয়েছেন। উৎপাদন খরচ পুরোটা না পেলেও তারা উপকৃত হয়েছে বলে তারা জানান।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক আরও জানান, উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায় গম উৎপাদন বাড়ানোর জন্য এই প্রাণোদনা দিয়েছে সরকার। তবে আশা করা হচ্ছে, জেলার এসব ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরা ওই প্রাণোদনা পেয়ে যেমন উপকৃত হবেন তেমনি গম উৎপাদনও বাড়বে।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।