সংবাদ শিরোনামঃ

গণতন্ত্র না উন্নয়ন? ** দেশ থেকে মানবতা কি বিদায় নিচ্ছে? ** গণতন্ত্রহীনতায় জনমনে ক্ষোভ বাড়ছে ** মালয়েশিয়াগামী নিখোঁজদের জন্য আহাজারি ** প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির সমীকরণ ** ৩ মাসে ধর্ষণ ১২৩, গতিহীন তদন্ত ** গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিরোধীদল থাকা বাধ্যতামূলক ** জীবন দিতে হচ্ছে বাংলাদেশীদের ** কবি নজরুলের ভুল! ** কমলগঞ্জে ধলাই নদীর তীরে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস ** ধানের দরপতনে ঋণের টাকা পরিশোধে দিশেহারা কৃষক ** নায়ক শেখ আবুল কাসেম মিঠুনের প্রস্থান **

ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২২, ১০ শাবান ১৪৩৬, ২৯ মে ২০১৫

সাতক্ষীরা সংবাদদাতা : তীব্র রোদ, ভ্যাপসা গরম আর অব্যাহত লোডশেডিংয়ে উপকূলীয় অঞ্চলের জনজীবন অতিষ্ঠ। বৈশাখ পেরিয়ে জ্যৈষ্ঠের দেখা মিললেও বৃষ্টির দেখা নেই। ফলে সুপেয় পানির উৎসগুলো প্রায় শেষ। পুকুরগুলোতে পানি নেই। নলকূপে ও পানির দেখা মিলছে না। পানির জন্য হাহাকার চলছে। সিডর ও আইলার পর উপকূলীয় অঞ্চলে সুপেয় পানির অনেক উৎস নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া মাটিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধির কারণে  দিন দিন এসব অঞ্চলে সুপেয় পানির তীব্র অভাব দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাসে পর্যাপ্ত বৃষ্টির দেখা না মিললে মানুষের অভাবনীয় দুঃখ ভোগ করতে হয়। সরকারিভাবে সুপেয় পানির জন্য যে সব বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তার বেশির ভাগ লুটপাট হয়েছে। বিরূপ এই আবহাওয়ার মধ্যে নতুন করে শুরু হয়েছে লোডশেডিং। অনেক বাসা বাড়িতে নিজস্ব পানির ব্যবস্থা না থাকায় এই ভ্যাপসা গরমে অনেকে গোসল, পারিবারিক ও পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবহার্য পানি নিয়েও পড়েছেন মহাবিপাকে। অনেক এলাকায় নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা প্রচণ্ড গরমে টিকতে না পেরে ঘর ছেড়ে গাছ তলায় বসে হাস ফাঁস করতে দেখা গেছে।  পানির উৎসের মধ্যে নলকূপ এখানে অকার্যকর। গরমে পুকুরগুলো শুকিয়ে গেছে। নদী ও খালের পানি ব্যবহারের অনুপযুক্ত। পানির জন্য এখানকার বাসিন্দাদের ছুটতে হচ্ছে অন্য এলাকায়। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাটে বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য চলছে মানুষের এই নিত্য সংগ্রাম। তিন জেলাতে সরকারি বা ব্যক্তি মালিকানাধীন নলকূপের সংখ্যা পর্যাপ্ত নয়। অনেক এলাকার মানুষ নদী, পুকুর, খাল বা বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভরশীল। বিশেষ করে উপকূলীয় খুলনার দাকোপ ও কয়রা, সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি, কালিগঞ্জ এবং বাগেরহাটের শরণখোলা, মংলা ও রামপালে বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য চলছে হাহাকার। এই উপজেলাগুলোর মানুষের কাছে বিশুদ্ধ খাবার পানি যেন ‘সোনার হরিণ’। খাবার পানি সংগ্রহে এই উপজেলাগুলোর মানুষ পাড়ি দিচ্ছেন এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায়। ছুটে বেড়াচ্ছেন মাইলের পর মাইল পথ।

 à¦…নুসন্ধানে জানা গেছে, গ্রীষ্ম মওসুম শুরুর আগেই উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে খাবার পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জীবনদায়ী পানি এখানে দুষ্প্রাপ্য। পুকুরে, ভূ-গর্ভে, টিউবওয়েলে পানি নেই। সব প্রাকৃতিক উৎসেই পানির টান। এ যেন এক মহাবিপদের অশনি সংকেত! যে সব এলাকায় পানি রয়েছে তাও আবার অতি লবণাক্ত, কোনোভাবেই খাবার উপযোগী নয়। খুলনার দাকোপ, পাইকগাছা, কয়রা উপজেলা, বাগেরহাটের রামপাল, মংলা, মোড়েলগঞ্জ, শরণখোলা উপজেলা, সাতক্ষীরার আশাশুনি, শ্যামনগর, কালিগঞ্জ উপজেলার ভুক্তভোগীরা জানান, সুপেয় পানির জন্য তারা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন। সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছে চিঠিও দিয়েছেন। এলাকার নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা পানিসম্পদ সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে ডি.ও লেটারও পাঠিয়েছেন। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। এসব অঞ্চলে সরেজমিন ঘুরে ও এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানের ভ্যাপসা গরম আর সেই সঙ্গে কাঠফাটা রোদে গ্রামাঞ্চলের খাবার, রান্নাবান্না ও গোসল করার একমাত্র পানির উৎস পুকুর, খালগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সঙ্কটে পড়েছেন তারা। সরকারি ও বেসরকারিভাবেও সিডর-আইলা দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ না থাকায় এখন নর্দমা ও নদীর লবণাক্ত পানিই তাদের একমাত্র ভরসা। এ পানি পান করায় এলাকায় ঘরে ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে ডায়রিয়া, আমাশয়, পেটের পীড়াসহ পানিবাহিত নানা রোগ। সাতক্ষীরা পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ড দৌলতপুর, বাগবাটিসহ রইচপুরের শতাধিক পরিবারের হাজার হাজার মানুষের পানির জন্য হাহাকার যেন নিত্য দিনের সঙ্গি। বাকাল ব্রিজ সংলগ্ন সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিছনের ৩টি গ্রামের নারী-পুরুষ ও শিশুদের বিশুদ্ধ খাবার পানির চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে।  বিগত ১৪-১৫ বছর তারা ৩টি গ্রামের ৫শ’ থেকে ৭শ লোক প্রতিদিন হাজার কষ্ট করে কলসি কাখে ও মাথায় এবং সাইকেলে করে প্রায় ১ মাইল হেঁটে এসে জীবন বাঁচাতে খাবার পানি সংগ্রহ করছে।  গ্রামবাসীর অভিযোগ, এক সময় খাবার পানি সংরক্ষণের জন্য সরকারিভাবে অনেকগুলো পুকুর খনন করা হয়। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে পুকুরগুলো সংরক্ষণ করা হতো। বর্তমানে আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলার অধিকাংশ পুকুর মাছ চাষের জন্য ইজারা দেওয়া হয়েছে। দুই চারটি পুকুর ইজারা না দিলেও তা সংরক্ষণ না করায় বাড়ছে পানি সঙ্কট। গ্রীষ্মের শুরুতে গোটা সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনি ও কালিগঞ্জ উপজেলায় খাবার পানির সঙ্কট প্রকট  আকার ধারণ করেছে। চারিদিকে পানি আর পানি অথচ খাবার পানি ও ব্যবহার উপযোগী পানি নেই বললেই চলে এ তিন উপজেলায়। পানির জন্য ৫-৭ মাইল দূরেও যেতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ, পানখালী, চণ্ডীপুর, আড়পাঙ্গাশিয়া, বয়ারশিং, কুপোট, কালিঞ্চি ও আটুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় খাবার পানির হাহাকার চলছে। 

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।