রাজনৈতিক মামলায় সাতক্ষীরার ২৪ চেয়ারম্যান পলাতক

আবু সাইদ বিশ্বাস, সাতক্ষীরা থেকে : সাতক্ষীরা জেলার ৭৮টি ইউনিয়ন পরিষদের বিএনপি জামায়াতপন্থী অর্ধশতাধিক চেয়ারম্যানের নামে রাজনৈতিক মামলা করেছে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ। বাকিরা আ’লীগের সাথে তালমিল দিয়ে চলছে। এর মধ্যে ২৪টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পলাতক। আওয়ামীপন্থী মেম্বার দিয়ে কোনো রকমে পরিষদ চালানো হচেছ। এ অবস্থায় নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

সূত্রে প্রকাশ, ২০১৩ সালে জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়কে কেন্দ্র করে এ জেলাতে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় জামায়াতের প্রায় ৩০ জন ও আ’লীগের ৮ জন খুন হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সম্পৃক্ততা রয়েছে এমন অভিযোগে তাদের নামে ডজন খানেক করে মামলা হয়। পুলিশের খাতায় এসব চেয়ারম্যানরা পলাতক আসামি। তাই গ্রেফতার করতে মরিয়া পুলিশ। অন্যদিকে গ্রেফতার এড়িয়ে কোনো রকমে বেঁচে থাকার স্বপ্নে পালিয়ে আছে অনেকে। এরই মধ্যে সদের আগরদাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনারুল ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার ঘটনায় জেলার বেশিরভাগ চেয়ারম্যানরা পরিষদ ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়। এছাড়া গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং জনস্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের বিরাগভাজন কয়েকজন চেয়ারম্যানের দিন কাটছে কথিত ক্রসফায়ার আতঙ্কে ।

 à¦œà§‡à¦²à¦¾à§Ÿ নাশকতার অভিযোগে দু’দফায় গ্রেফতার হয়েছে সদর উপজেলার ভোমরা ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আছাদুজ্জামান। জামায়াতের সদর আমীর ফিংড়ি ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ২০১৩ সালের পর থেকে পলাতক রয়েছেন। পালিয়ে রয়েছেন জামায়াত সমর্থিত বৈকারি ইউপি চেয়ারম্যান শহিদ হাছান। বরখাস্ত করা হয়েছে শিবপুর ইউপির বিএনপি নেতা আব্দুল মজিদকে। তার বিরুদ্ধে রয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল ইসলাম হত্যা মামলা। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লাবসা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম ২০১৩ সালের ঘটনার পর থেকে কাগজে কলমে পালিয়ে রয়েছেন। পালিয়ে রয়েছেন কলারোয়ার দেয়াড়া ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম হোসেন। কলারোয়া বিএনপি সাধারণ সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলার আসামি আব্দুর রকিব পলাতক। তিনি কয়লা ইউনিয়ানের চেয়ারম্যান।

যুগিখালি ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বিএনপি নেতা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে জেলে রয়েছেন। জামায়াত নেতা শওকাত আলী জালালাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান। তাকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। জামায়াত নেতা আব্দুল লতিফ তিনি কুশোডাঙ্গা ইউনিয়ানের চেয়ারম্যান। বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। পলাতক রয়েছেন চন্দনপুর ইউপি চেয়ারম্যান রমজান আলী।

 à¦¤à¦¾à¦²à¦¾ উপজেলার খলিসখালি ইউপির জামায়াত সমর্থিত চেয়ারম্যান সুলতান হাজী বর্তমানে পলাতক। বদরুল ইসলাম বিএনপি নেতা। তিনি সরুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। বর্তমানে তিনি বরখাস্ত। গোলাম ফারুক ইসলামকাঠি ইউনিয়নের জামায়াত সমথির্ত চেয়ারম্যান বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। গোলাম মোস্তাফা বিএনপি নেতা কুমিরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পলাতক।

বিএনপি নেতা ও কল্যা ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন। জমির উদ্দীন দরগাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা পলাতক রয়েছেন। সাদেকুর রহমান ইশ্বরীপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা পলাতক রয়েছেন। নজরুল ইসলাম বুড়িগোয়ালনি জামায়াত সমর্থিত ইউপি চেয়ারম্যান পলাতক রয়েছেন। নুর মোহম্মদ পারুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি বর্তমানে পলাতক। আব্দুল খালেক নওয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান পলাতক রয়েছেন। মো. মইনুউদ্দিন সখিপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা বর্তমানে গ্রেফতার। লাবসা ইউপির নলকুড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক, কুমিরা গ্রামের আব্দুর রউফ, দেয়াড়া গ্রামের রবিউল ইসলাম, জালাবাদ গ্রামের মশিউর রহমানসহ অনেকে জানান, চেয়ারম্যান গ্রেফতার ও পলাতক থাকায় এলাকায় কোনো উন্নয়ন হচ্ছে না। ইউনিয়নে গেলে তাদেরকে নানাভাবে হয়রানি হতে হচ্ছে। কোনো সমস্যায় পড়লে চেয়ারম্যানকে পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশের দাবি বিভিন্ন মামলায় যারা আসামি, আদালত থেকে জামিন নেয়নি তারা পুলিশের কাছে পলাতক। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান জানান, বিষয়টি জরুরিভাবে দেখা হবে।