সংবাদ শিরোনামঃ

ভারতের নদী হত্যা অব্যাহত ** সরকার দ্রুত নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে ** সারাদেশে জামায়াতের বিক্ষোভ ** মোদি জিতলে ‘হারবে’ ভারত ** ১৮ দল আন্দোলনের ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে ** বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ; বিচ্ছিন্ন ঘটনার জন্য কোনো বিশেষ ধর্ম দায়ী হতে পারে না : সউদী রাষ্ট্রদূত ** বাংলাদেশ সম্প্রীতির দেশ ** পহেলা বৈশাখে ‘ফিলদি রিচ’দের তাণ্ডব! ** বাংলা নববর্ষ ** সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় হতাশ কুষ্টিয়াবাসী ** আত্রাইয়ে ইটভাটায় নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি কমে যাচ্ছে উৎপাদন, পরিবেশ হচ্ছে দূষিত ** ক্ষুধার জ্বালায় হনুমানগুলো কাতর **

ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪২১, ১৭ জমাদিউস সানি ১৪৩৫, ১৮ এপ্রিল ২০১৪

স্বাধীনতার পর থেকে কোনো সরকারই মেঘনা নদীর মোহনা, দ্বীপসহ সাগরের তীরবর্তী এলাকা চিহ্নিত করেনি। এমনকি বিতর্কিত জায়গাগুলোর দাবির বিষয়েও সরকার কোনো  পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্ত হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গ কিলোমিটার স্থল সীমানার মালিকানা দাবি করে। তবে বেশ কয়েকটি দেশী ও আন্তর্জাতিক গবেষণার ফলাফল দাবি করছে বাংলাদেশের সীমানা নিয়ে একটু ঝামেলা আছে। বিভিন্ন তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের বর্তমান স্থল সীমানা ১ লাখ ৪৪ হাজার বর্গ কিলোমিটার।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন বিগত ৫০ বছর ধরে মেঘনা নদীর অববাহিকায় যে চরাঞ্চল রয়েছে এবং সাগর তীরবর্তী যে সব জায়গা রয়েছে তা মুখে বললেও বাংলাদেশের অধিকারে নেই। জনবহুল এই দেশটি চাইলেই মেঘনা নদীর মোহনায় এবং সাগরের তীরবর্তী যে সব জায়গা রয়েছে সেগুলো যৌক্তিকভাবে দাবি করতে পারে এবং যেহেতু দেশটিতে যথেষ্ট জনসংখ্যা রয়েছে তাই এই অঞ্চলগুলোতে জনবসতি স্থাপন করা যেতে পারে।

১৯৮৪ ও ২০০৭ সালের স্যাটেলাইটে তোলা দুটি চিত্রে দেখা যাচ্ছে এই দুই সময়ের মাঝখানে ৪৫১ কিলোমিটার জমি আয়ত্ব করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ এবং যেখানে বার্ষিক জমি অধিগ্রহণের পরিমাণ ছিল ১৯ দশমিক ৬ বর্গ কিলোমিটার।  এই বিষয়ে সেন্টার ফর ইনভায়রনমেন্টাল এন্ড জিয়োগ্রাফি ইনফরমেশ্যান সার্ভিসের উপ- পরিচালক মমিনুল হক বলেন, ১৯৭৩ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে মেঘনা নদী থেকে বাংলাদেশ ১৬শ’ ৫০ বর্গ কিলোমিটার জমি পেয়েছে। একইভাবে ভূমিক্ষয়ের ফলে বাংলাদেশ ১ হাজার ৫০ বর্গ কিলোমিটার জমি হারিয়েছে।  ১৯৫০ সালে মেঘনা নদীর মোহনায় ১৭শ’ বর্গ কিলোমিটার জমি অধিগ্রহণের হিসাব ছিল। তবে এই সময়ের মাঝে মেঘনা নদীর ৯০ হাজার হেক্টর জমি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে এবং ১৬ হাজার হেক্টর জমি পাওয়া গিয়েছে। একইভাবে চাঁদপুর ও পাটুরিয়ার মাঝখানে পদ্মা নদীর ৩৬ হাজার হেক্টর জমি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে এবং ১০ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করা সম্ভব হয়েছে।

সিইজিআইএস ( আবহাওয়া পরিবর্তন অধ্যায়ন বিভাগ) এর পরিচালক মালিক ফিদা এ খান বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে মেঘনা নদীর মোহনা ও সাগরের তীরবর্তী অঞ্চলে বিপুল পরিমাণে চর ও স্থলবেষ্টিত ভূমি জেগে উঠেছে। সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে জায়গাগুলোর মালিকানা দাবি করতে পারে। মেঘনার মেহনায় জেগে ওঠা জাহাজের চর নামে যে জায়গাটি রয়েছে তা উরির চরের চেয়েও অনেক বড়, অথচ বাংলাদেশের সীমানায় এই জায়গাটি এখন পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। সরকারের উচিত শীঘ্রই একটি গবেষণা চালিয়ে দেশের সঠিক সীমানা নির্ধারণ করা এবং নদী অববাহিকায় ও সমুদ্র তীরবর্তী অনির্ধারিত পড়ে থাকা জায়গাগুলোর মালিকানা দাবি করা। ১৯৭৪ সালের পর থেকে সীমানা নির্ধারণ ও ভূমি অধিগ্রহণের জন্য বেশ কয়েকবার গবেষণা চালানো হয়েছে এবং সুপারিশ করা হয়েছে তবে সরকারের পক্ষ থেকে আজ পর্যন্ত তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সুতরাং দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনৈতিক সুবিধার জন্য সরকারকে এই জমির মালিকানা দাবি করা উচিত।  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম বলেন, ক্রমাগত ভূমি হারানো ও নতুন ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়ে যথাযথ হিসেব রাখার জন্য জাতীয় একটি কমিটি গঠনের বিষয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারকে অনুরোধ করে আসছি।  

ওয়াটার মডেলিং ইন্সটিটিউট এর পরিচালক জহির উল হক খান বলেন, ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়ে বাংলাদেশের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ প্রতিবছর প্রায় ১ বিলিয়ন টন পলি  গঙ্গা-  ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনার অববাহিকা দিয়ে বঙ্গোপোসাগরে গিয়ে পতিত হয়। আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে যে ক্রস ড্যাম নির্মাণ, পলি ধরে রাখাসহ কিছু কাজ করলে পরিবেশগত কোনো বিপর্যয় ছাড়াই বাংলাদেশ ৩০-৩৫ বছরে মেঘনার অববাহিকায় প্রায় ১ হাজার বর্গ কিলোমিটার জমি অধিগ্রহণ করতে পারত। এছাড়া আমরা সরকারকে উরির চর ও চর ক্লার্ক, জাহাজের চর- চর বায়েজিদ এর সাথে সন্দীপ এর মাঝে ক্রস ড্যাম নির্মাণের জন্য সুপারিশ করেছিলাম। যার ফলে সন্দীপের পূর্ব- উত্তর দ্বীপের মালিকানাও দাবি করতে পারবে। ১৯৫৭ ও ১৯৬৪ সালে নোয়াখালীর মৃতপ্রায় মেঘনা নদীর মোহনায় ও নোয়াখালীর মূল স্থল সীমানা থেকে চর জব্বারের মধ্যে ক্রস ড্যাম নির্মাণ করার ফলে প্রায় ১ হাজার বর্গ কিলোমিটার নতুন জমি অধিগ্রহণ করা সম্ভব হয়েছিল।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বিভাগ বলছে, বেশ কয়েকটি গবেষণা যেমন নেদাল্যান্ডের সহযোগিতায় জমি দাবি আদায় সংক্রান্ত প্রকল্প (১৯৭৭-১৯৯১), মেঘনা নদীর মোহনা স্টাডি (১৯৯৫-২২০২) মোহনা উন্নয়ন প্রোগ্রাম (২০০৭-২০১১) এর মধ্যে করা হয়েছে। গবেষণাগুলো বেশ কয়েকটি সুপারিশ দিয়েছে যেমন, মেঘনার মোহনায় জেগে ওঠা চর নিয়ে বাস্তব দাবি উত্থাপন, ক্রস ড্যাম নির্মাণ, সন্দীপের সাথে অন্যান্য চরগুলোর সংযোগ স্থাপন ইত্যাদি।   

দুঃখের বিষয় হলো সিঙ্গাপুর, মালদ্বীপ ও নেদারল্যান্ডে যেমন সমুদ্র অববাহিকার জমি অধিগ্রহণের জন্য যেমন গবেষণা হয় বাংলাদেশের সমুদ্রবর্তী অঞ্চল, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও খুলনার সমুদ্র এলাকায় তেমন কোনো গবেষণা কার্যক্রম  নেই সরকারের।  সরকার যদি ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়ে একটু সচেতন হত তবে বাংলাদেশ এই অঞ্চলগুলো থেকে অনেক জমি পেত। পানি উন্নয়ন বিভাগ ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্মিলিতভাবে ২০০২ সালের পর থেকে বিভিন্ন গবেষণার রিপোর্ট নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে এবং সন্দীপ, উরির চর, নোয়াখালী, হাতিয়া ও নিঝুম দ্বীপে চাহিদার ভিত্তিতে ক্রস ড্যাম নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই বাছাই করেছে। এই জায়গাগুলোতে ক্রস ড্যাম নির্মাণের জন্য সাত বছরের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। তবে সেই সুপারিশ এখন পর্যন্ত সেলফে আটকে আছে।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১১ সালে সন্দীপ- উরির চরে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার জন্য ৬৮৩ দশমিক ২৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্রস ড্যাম নির্মাণের বিষয়ে পরিকল্পনা করেছিল। তবে পরবর্তীতে সরকার এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আর স্বদিচ্ছা দেখায়নি। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সরকার ২০১৩ সালে আবহাওয়া পরিবর্তন সংক্রান্ত তহবিল দিয়ে নোয়াখালী-উরির চরের মধ্যে ক্রস ড্যাম নির্মাণের প্রকল্পটি হাতে নেয়। যদি সত্যিকার অর্থেই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয় তবে আগামী সাত বছরের মধ্যে নতুন করে ১০ হাজার হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করা সম্ভব হবে।  নিউএজ।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।