সংক্ষিপ্ত বিশ্ব সংবাদ
২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:১২
গাজার ফিলিস্তিনিরা ভয়াবহ অবিচারের শিকার : মিশরের কপটিক পোপ
গাজার ফিলিস্তিনিদের ওপর চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন মিশরের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ নেতা, কপটিক অর্থডক্স চার্চের পোপ টাওয়াড্রোস দ্বিতীয়। তিনি গাজার ঘটনাকে ‘ফিলিস্তিনিদের ওপর ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ অবিচার’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তার এ বক্তব্য শুধু ধর্মীয় বা রাজনৈতিক নয়, বরং একটি মানবিক আহ্বানও যেখানে তিনি বিশ্ব বিবেককে গাজার মানুষের পাশে দাঁড়াতে আহ্বান জানিয়েছেন। গত রোববার (২০ এপ্রিল) মিশরের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে খ্রিস্টানদের ইস্টার উৎসব উপলক্ষে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পোপ বলেন, ‘প্রতিদিন ফিলিস্তিনিরা নিজেদের মাতৃভূমির ধ্বংসের মধ্য দিয়ে যে চরম অবিচারের শিকার হচ্ছেন, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ তিনি জোর দিয়ে জানান, মিশরের সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও সরকারি সংস্থা গাজার মানুষকে জোরপূর্বক বা স্বেচ্ছায় অন্যত্র স্থানান্তরের যেকোনো পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে অবস্থান নিয়েছে। তার ভাষায়, ‘রাষ্ট্রপতি আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন এ অন্যায়ের অংশ আমরা কখনো হবো না।’ পোপ টাওয়াড্রোস আরও জানান, এই ইস্যুতে কপটিক চার্চ এবং মিশরের সর্বোচ্চ ইসলামী প্রতিষ্ঠান আল-আজহার একই অবস্থানে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘গ্র্যান্ড ইমাম শেখ আহমেদ আল-তাইয়েব এবং আমি এক কণ্ঠে বলছি বিশ্ব বিবেককে এখনই জাগতে হবে, গাজার ভাইবোনদের রক্ষা করতে হবে।’ পোপ টাওয়াড্রোসের এ অবস্থান একটি বড় বার্তা ধর্মীয় বিভাজনের ঊর্ধ্বে উঠে মানবতার সুরে কথা বলার। বিশ্বনেতৃবৃন্দ ও ধর্মীয় প্রতিনিধিদের এখন প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধভাবে এমন কণ্ঠস্বরের পাশে দাঁড়ানো এবং গাজার ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। আনাদলু এজেন্সি।
জনসংখ্যা বাড়াতে তুরস্কে ভাতা দেওয়ার ঘোষণা
তুরস্কে জন্মহার কমে যাওয়ায় এবং বয়স্ক জনগণের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা তৈরি হতে পারে, এমন আশঙ্কা করছে সরকার। প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তিনি সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, যেসব দম্পতি সন্তান নেবেন, তারা আর্থিক সহায়তা পাবেন। এটি মূলত দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।
নতুন বছরের শুরুতে চালু হওয়া এ কর্মসূচির আওতায়, প্রথম সন্তানের জন্য দম্পতিরা এককালীন ৫ হাজার লিরা পাবেন। দ্বিতীয় সন্তান হলে তাদের প্রতি মাসে ১ হাজার ৫০০ লিরা ভাতা দেওয়া হবে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা হলো তৃতীয় সন্তান নিলে দম্পতিকে প্রতি মাসে ৫ হাজার লিরা ভাতা দেওয়া হবে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৭ হাজার টাকার সমান। তুরস্কের বিদেশে অবস্থানকারী নাগরিকরা এ সুবিধা পেতে তাদের নিজ নিজ দেশের দূতাবাস বা কনস্যুলেটের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।
এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো তুরস্কে জন্মহার বৃদ্ধি করা; বিশেষ করে যখন জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় তরুণদের মধ্যে বিয়ে ও সন্তান নেওয়ার প্রতি আগ্রহ কমে গেছে। এরদোগান প্রশাসন আশা করছে, এ আর্থিক সহায়তা দম্পতিদের সন্তান নেওয়ার জন্য আরও উৎসাহিত করবে এবং দেশের ভবিষ্যৎ ঝুঁকি মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে। দ্য নিউজ আরব।
খামেনিকে ‘গোপন’ চিঠি দিলেন সৌদি বাদশাহ
মধ্যপ্রাচ্যের দুই প্রভাবশালী দেশ ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্গঠনের পথে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। সম্প্রতি ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির কাছে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ‘গোপন’ চিঠি পাঠিয়েছেন। এ বার্তাটি সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স খালিদ বিন সালমান ব্যক্তিগতভাবে তেহরানে পৌঁছে দেন। দীর্ঘ বিরতির পর এ উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগ ইসলামী বিশ্বে সহযোগিতার নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। গত ১৭ এপ্রিল ইরানের রাজধানী তেহরানে খামেনির সঙ্গে সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এ ঐতিহাসিক বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। একই দিন প্রিন্স খালিদ ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গেও বৈঠকে মিলিত হন। সৌদি বাদশাহর পাঠানো চিঠির নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু প্রকাশ করা না হলেও, এর পেছনে মূল উদ্দেশ্য হিসেবে দুই দেশের সম্পর্ক মজবুত করা, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও অভিন্ন স্বার্থে সহমত প্রতিষ্ঠার চেষ্টার ইঙ্গিত মিলেছে।
বৈঠকে খামেনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, ইসলামিক রিপাবলিক ইরান ও সৌদি আরব একে অপরের পরিপূরক হতে পারে এবং পারস্পরিক সম্পর্ক উভয় দেশের জন্যই মঙ্গলজনক হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অন্যদের ওপর নির্ভর করার চেয়ে, এ অঞ্চলের ভাই-ভ্রাতৃপ্রতিম দেশগুলোর মধ্যেই সহযোগিতা গড়ে তোলা উচিত, কারণ এর মাধ্যমে সত্যিকার উপকার অর্জিত হতে পারে।’ সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ জানিয়েছে, দুই দেশের সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন ও অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গভীর আলোচনা হয়েছে। এ সফরে সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বৈঠক করেছেন ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সুপ্রিম সেক্রেটারি আলী আকবর আহমাদিয়ান এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরির সঙ্গে। এমন উচ্চপর্যায়ের সংলাপ ও বার্তাবিনিময় প্রমাণ করে, দুই দেশই আঞ্চলিক উত্তেজনা কমিয়ে পারস্পরিক আস্থা এবং স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী। যদি এ আলোচনা কার্যকর সমঝোতায় রূপ নেয়, তবে তা শুধু রিয়াদ ও তেহরানের জন্য নয়, গোটা মুসলিম বিশ্বের শান্তি, ঐক্য এবং আঞ্চলিক কৌশলগত ভারসাম্যের জন্যই হবে এক আশাব্যঞ্জক পরিবর্তন। সৌদি গেজেট।
ভারতে বিতর্কিত ওয়াক্ফ আইনের বিরুদ্ধে মুসলিমদের বিক্ষোভ
ভারতে বিতর্কিত মুসলিম ওয়াক্ফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছেন মুসলিমরা। শীর্ষস্থানীয় মুসলিম সংগঠন অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের উদ্যোগে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর হায়দরাবাদে এ বিক্ষোভ করেন তারা। এছাড়া সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) দলের প্রধান এবং হায়দরাবাদের প্রভাবশালী রাজনীতিক আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেছেন, এ আইনটি বাতিল করতেই হবে, কারণ এটি সংবিধানের চেতনার বিরুদ্ধে। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, সাম্প্রতিক ওয়াক্ফ আইন সংশোধনের বিরুদ্ধে ভারতের অন্যতম বৃহৎ মুসলিম সংগঠন অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড দক্ষিণ ভারতের হায়দরাবাদ শহরে এক বিশাল প্রতিবাদ কর্মসূচি আয়োজন করে। গত ১৯ এপ্রিল শনিবার হাজার হাজার মানুষ এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। ইতোমধ্যে ডজনখানেক পিটিশনও সুপ্রিম কোর্টে দাখিল হয়েছে নতুন আইনের বিরুদ্ধে। ভারতীয় সংসদ সদস্য ও অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম)-এর সভাপতি আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এ প্রতিবাদ কর্মসূচিকে “ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে ঐক্যের প্রতীক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, ‘এ আইন ভারতের সংবিধানের মূল চেতনার বিরুদ্ধে, এটি বাতিল করতেই হবে। বহু সংগঠনের নেতৃত্ব এ আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় আমরা কৃতজ্ঞ।’ ওয়াইসি তার বক্তব্যে জানান, যতদিন না এ আইন প্রত্যাহার করা হয়, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চলবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। সম্প্রতি ভারতের পার্লামেন্টে পাস হওয়া ওয়াকফ আইনের সংশোধনী নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক ছড়িয়েছে। এ সংশোধনীর ফলে অমুসলিমদের ওয়াক্ফ বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গে হিংসাত্মক সংঘর্ষে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। সরকার সুপ্রিম কোর্টকে আশ্বাস দিয়েছে, আগামী মে মাসে মামলার পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। তবে মুসলিম সম্প্রদায় ও বিরোধী দলগুলোর দাবি, এ আইন সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অধিকার লংঘন করছে এবং সংবিধানের মৌলিক নীতির পরিপন্থি। টিআরটি ওয়ার্ল্ড বলছে, ওয়াকফ সংশোধনী বিলটি ভারতীয় পার্লামেন্টের দুই কক্ষেই বিরোধীদের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও পাস হয়ে যায়, যার ফলে হায়দরাবাদ ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের আহ্বানে এবং ওয়াইসির নেতৃত্বে এ আন্দোলন এখন সারা ভারতব্যাপী শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলনের রূপ নিচ্ছে। টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
আফগান শরণার্থীদের সাত দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার নির্দেশ
২০২১ সালে আফগানিস্তান দখল করেছে তালেবান। সেই সময়ে বহু আফগান শরণার্থী পালিয়ে আমেরিকা তে আশ্রয় নেয়। এবার সেই সকল শরণার্থীদেরই ৭ দিনের মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিলো ট্রাম্প প্রশাসন। পাশাপাশি জানানো হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেই সকল আফগান শরণার্থীরা দেশ না ছাড়লে তাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত করা হবে। আর ট্রাম্প প্রশাসনের এমন হুমকি অনেক আফগান পরিবারের জন্যে বিপজ্জনক হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ইতোমধ্যেই আমেরিকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভিন্ন স্থানে অবস্থানরত আফগান শরণার্থীদের উদ্দেশে একটি নোটিশ পাঠিয়েছে। যেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমেরিকা না ছাড়লে আফগান শরণার্থীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে জোর করে তাদের বিতাড়িত করা হবে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল আমেরিকা। যেখানে হাজার হাজার আফগান নাগরিক মার্কিন বাহিনীর হয়ে দোভাষী হিসেবে কাজ করতেন। তাদের মানবিক আশ্রয়, বিশেষ অভিবাসী ভিসা বা অস্থায়ী সুরক্ষিত মর্যাদার আওতায় আমেরিকায় আশ্রয় দেয়া হয়েছিল। তারা আফগানিস্তানে থেকে গেলে তালেবানের অত্যাচারের শিকার হতে পারতেন। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নীতিতে হাজার হাজার আফগান নাগরিকের অস্থায়ী সুরক্ষামূলক মর্যাদা বাতিলের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ফলে আবারও তারা তালেবান শাসিত আফগানিস্তানে যেতে বাধ্য হবেন। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আফগান শরণার্থী বলেছেন, যদি তারা আফগানিস্তানে ফিরে যান, তাহলে তাদের মৃত্যু হতে পারে। ২০২১ সালের অগস্ট থেকে ২০২৪ সালের অগস্ট পর্যন্ত প্রায় এক লাখ পঞ্চাশ হাজার আফগান নাগরিক আমেরিকায় পুনর্বাসিত হয়েছেন বলে তথ্যে রয়েছে। এপি।
কুয়েতে নামাজের সময় কমাতে ইমামদের নির্দেশ
কুয়েতের সব মসজিদের জন্য নতুন নির্দেশনা জারি করেছে দেশটির ইসলাম ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। মসজিদের ইমামদের নামাজের সময় কমানো, মসজিদের মূল অংশ বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছে এ নির্দেশনায়। মূলত বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে দেশটি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ এ তথ্য জানিয়েছে। গ্রীষ্মে বিদ্যুতের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ, পানি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের প্রেক্ষিতে ইসলাম ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ নির্দেশনা দিয়েছে। এছাড়া কুয়েতের ছয়টি বিভাগের মসজিদগুলোয় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধও রাখা হবে। নতুন নির্দেশ অনুযায়ী, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজেই মসজিদের মূল অংশ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। গালফ নিউজ।
মুসল্লিরা মূল জায়গার বদলে মসজিদের বাইরের অংশে নামাজ পড়বেন। মসজিদের মূল বা ভেতরের অংশ শুধুমাত্র জুমার নামাজের সময় খোলা হবে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে ভেতরের অংশের এসির তাপমাত্রা ২২ ডিগ্রিতে রাখতে হবে। অপরদিকে মসজিদের বাইরের অংশে যদি এসি থাকে, তাহলে সেগুলোর তাপমাত্র ২৫ ডিগ্রিতে রাখতে হবে। এছাড়া বেশিরভাগ মসজিদে নারীদের নামাজের স্থানটি বন্ধ থাকবে। শুধুমাত্র ধর্মীয় কাজের সময় এ অংশটি খোলা রাখা যাবে। অপরদিকে নামাজের সময় কমাতে ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের দেওয়া নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আজান দেওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব নামাজ শুরু করতে হবে। বিশেষ করে জোহর ও আসরে এটি করতে হবে। এছাড়া নামাজও দীর্ঘ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। গালফ নিউজ।
‘হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করব না’ : নাঈম কাসেমের হুঁশিয়ারি
লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে চলমান উত্তেজনা এবং গাজা যুদ্ধের পটভূমিতে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার আহ্বান নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে এসেছে। তবে এ দাবির মুখে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এসেছে কড়া প্রত্যাখ্যান। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের চাপ সত্ত্বেও হিজবুল্লাহর বর্তমান ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল নাঈম কাসেম স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন ‘আমরা হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করব না, করতেও দেব না।’ লেবাননের প্রতিরোধ রাজনীতিতে হিজবুল্লাহর অস্তিত্ব যে এখনো অটল এবং সক্রিয়, সেই বার্তা আবারও তুলে ধরেছেন তিনি। নভেম্বরের অস্ত্রবিরতি চুক্তির পর দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরাইলের প্রত্যাহার এবং হিজবুল্লাহর নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। গাজায় চলমান সংঘাতের ছায়া লেবাননেও পড়েছে। সম্প্রতি ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর দীর্ঘদিনের নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হন। এরপর দায়িত্ব পান নাঈম কাসেম। ১৮ এপ্রিল এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি বলেন, ‘নিরস্ত্রীকরণ শব্দটি আমাদের অভিধানে নেই। আমরা প্রতিরোধের অস্ত্র কাউকে তুলে দিব না।’ এ অবস্থান কেবল রাজনৈতিক নয়, কৌশলগত বলেও বিশ্লেষকরা মনে করছেন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজোলিউশন ১৭০১ অনুযায়ী লেবাননের সব অরাষ্ট্রীয় গোষ্ঠীকে নিরস্ত্র করার আহ্বান থাকলেও, হিজবুল্লাহ দাবি করছে বর্তমান পরিস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত প্রযোজ্য নয়। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত মর্গান ওর্তাগুস সম্প্রতি বৈরুত সফরে এসে বলেছিলেন, ‘আমরা চাই লেবানন সম্পূর্ণভাবে অস্ত্রবিরতির বাস্তবায়ন করুক, যাতে হিজবুল্লাহসহ সব মিলিশিয়া নিরস্ত্র হয়।’ কিন্তু হিজবুল্লাহর মতে, মূল সমস্যা তাদের অস্ত্র নয়, বরং ইসরাইলের আগ্রাসনই এ অঞ্চলের সংকটের মূলে। এ জটিল পরিস্থিতিতে হিজবুল্লাহর অবস্থান স্পষ্ট প্রতিরোধই তাদের অস্তিত্বের কেন্দ্রবিন্দু। আঞ্চলিক শান্তির জন্য যদি সত্যিকারের অগ্রগতি চাওয়া হয়, তাহলে কেবল একটি পক্ষকে চাপ দিলে হবে না। ইসরাইলকেও অস্ত্রবিরতি মেনে চলতে হবে এবং লেবাননের সার্বভৌমত্বকে সম্মান জানাতে হবে। শান্তি তখনই টেকসই হবে, যখন তা হবে ন্যায়ের ভিত্তিতে, সমতার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। রয়টার্স।
ক্ষুধা মেটাতে কচ্ছপের গোশতই গাজাবাসীর অবলম্বন
ইসরাইলি বাহিনীর অব্যাহত বোমা হামলায় মানবেতর জীবনযাপন করছে গাজাবাসী। গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে একতরফাভাবে হামলা শুরু করার আগে থেকেই গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ করে দেয় দখলদার বাহিনী। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষুণিœবৃত্তিতে কিছু গাজাবাসী প্রোটিনের বিরল উৎস হিসেবে সামুদ্রিক কচ্ছপ খাওয়ার দিকে ঝুঁকছেন। খোসা ছাড়ানোর পর, গোশত কেটে, সেদ্ধ করে পেঁয়াজ, গোলমরিচ, টমেটো এবং মশলার মিশ্রণে রান্না করা হয় কচ্ছপ। কচ্ছপের গোশত রান্না করতে করতেই মাজিদা কানান নামের এক গাজাবাসী বলেন, ‘বাচ্চারা কচ্ছপকে ভয় পেত। তাই আমরা তাদের বলেছিলাম, এটি বাছুরের মাংসের মতোই সুস্বাদু। তাদের মধ্যে কেউ কেউ খেয়েছে আর কেউ খায়নি।’ এর চেয়ে ভালো বিকল্প না পাওয়ায় এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ৬১ বছর বয়সি কানান তার পরিবারের জন্য কচ্ছপের গোশত রান্না করছেন। ইসরাইলি হামলায় বাস্তুচ্যুত হয়ে তারা এখন দক্ষিণ গাজার বৃহত্তম শহর খান ইউনিসে একটি তাঁবুতে বাস করছেন। কানান বলেন, ‘কোনো খোলা ক্রসিং নেই এবং বাজারে কিছুই নেই। বাজারে কোনো গোশত নেই। ছোট দুই ব্যাগ সবজি কিনতে আমাকে ৮০ শেকেল (২২ ডলার) গুনতে হয়। সামুদ্রিক কচ্ছপ আন্তর্জাতিকভাবে একটি বিপন্ন প্রজাতি হিসেবে সুরক্ষিত। কিন্তু গাজার জেলেদের জালে ধরা পড়া এসব কচ্ছপকে খাবারের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। জেলে আবদেল হালিম কানান বলেন, আমরা কখনোই কচ্ছপ খাওয়ার আশা করিনি। যখন যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, তখন খাদ্যের ঘাটতি ছিল। কোনো খাবার ছিল না। তাই (কচ্ছপের গোশত) প্রোটিনের অন্যান্য উৎসের বিকল্প। বাজারে কোনো গোশত, মুরগি বা সবজি নেই।’ তিনি বলেন, ইসলামী রীতিনীতি অনুসারে ‘হালাল’ পদ্ধতিতে কচ্ছপগুলোকে প্রক্রিয়াজাত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘যদি দুর্ভিক্ষ না থাকত তাহলে আমরা কচ্ছপ খেতাম না, ছেড়ে দিতাম। তবে আমরা প্রোটিনের অভাব পূরণ করতে চাই।’ জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস সতর্ক করে দিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরাইলে হামলা শুরুর পর থেকে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গাজা গুরুতর মানবিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক প্রধান হানান বলখি জুন মাসে বলেছিলেন, কিছু গাজাবাসী এতটাই মরিয়া হয়ে উঠেছে যে তারা পশুর খাবার ঘাস এবং নর্দমার পানি খাচ্ছে। গত ১৭ এপ্রিল ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ইসরাইলের বিরুদ্ধে সাহায্য সরবরাহ বন্ধ করে গাজাবাসীর বিরুদ্ধে ‘অনাহারকে অস্ত্র হিসেবে’ ব্যবহার করার অভিযোগ তুলেছে। আরব নিউজ।
অন্তর্বর্তীকালীন শান্তিচুক্তির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হামাসের
গাজায় অন্তর্বর্তীকালীন শান্তিচুক্তির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস। তারা উল্টো সব জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে যুদ্ধ সমাপ্তিতে সামগ্রিক একটি চুক্তির দাবি জানিয়েছে। এর সঙ্গে ইসরাইলে বন্দি থাকা ফিলিস্তিনিদের মুক্তি চেয়েছে তারা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা এ খবর জানিয়েছে। টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বার্তায় হামাসের শীর্ষ কর্মকর্তা খলিল আল-হায়া বলেছেন, এখন থেকে তারা আর কোনো অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তিতে সম্মত হবে না। হামাস বরং এখনই সামগ্রিক আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে গাজায় যুদ্ধ বন্ধ, গাজার পুনর্গঠন এবং ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের সব বন্দি বিনিময়। বিশ্লেষকদের ধারণা, হামাসের এসব দাবি ইসরাইলের পক্ষ থেকে মেনে নেয়ার সম্ভাবনা কম। ফলে যুদ্ধ শেষ হওয়ার প্রক্রিয়া আরও বিলম্বিত হতে পারে। আল-হায়া বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের অনাহারে রেখে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর মাধ্যমে নিজের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে চান ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এসব আংশিক চুক্তি দিয়ে ইসরাইলি সরকার তাদের আসল উদ্দেশ্য আড়ালে রাখে। কিন্তু স্বার্থ হাসিলের জন্য নিজেদের জিম্মিদের বলি দিতেও পিছপা হবে না তারা। আমরা তাদের এ খেলার অংশ হব না।
এদিকে হামাসের দাবির সমালোচনা করে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জেমস হিউইট বলেছেন, হামাসের কথাবার্তায় এটা স্পষ্ট যে, শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাদের কোনো আগ্রহ নেই। তারা কেবল অনিঃশেষ নৃশংসতা জিইয়ে রাখতে আগ্রহী। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের শর্ত এখনো একই আছে- জিম্মিদের ছেড়ে না দিলে নরকযন্ত্রণা ভোগ করতে হবে। প্রায় ১৫ মাস যুদ্ধ চলার পর গত জানুয়ারিতে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে এক সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে দুই মাস যেতে না যেতেই তা ভেঙে পড়ে। এরপর থেকেই তা পুনরায় কার্যকর করতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন মিশরের মধ্যস্থতাকারীরা। তবে দুপক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগে সে চেষ্টায় তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। আল-জাজিরা, রয়টার্স।
থানা থেকে টেনে বের করে ব্রিটিশ নাগরিককে পুড়িয়ে হত্যা
থানা থেকে অপরাধীকে টেনেহিঁচড়ে বের করে পুলিশ কর্মকর্তাদের সামনে জ্যান্ত পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। নির্মম ঘটনাটি ঘটেছে, দক্ষিণ আমেরিকার ইকুয়েডরে। গত রোববার (২০ এপ্রিল) রাতে এলোপাতাড়ি গুলি চালানোর অভিযোগে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা সমাজকে। তবে ব্যক্তিটির পরিচয় এখনো প্রকাশ করা হয়নি। কিন্তু তিনি একজন ব্রিটিশ ছিলেন বলে জানা গেছে। ব্রিটিশ সংবাদপত্র এক্সট্রার একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২০ এপ্রিল রোববার রাতে ইকুয়েডরের আমাজন অঞ্চলে অবস্থিত কুয়াবেনো নামক একটি গ্রামে এক ব্যক্তিকে গুলি করার অভিযোগে ওই ব্যক্তিকে টেনেহিঁচড়ে কুয়াবেনো বন্যপ্রাণী সংরক্ষণাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এর কয়েক ঘণ্টা পরে স্থানীয়দের একটি দল থানায় গিয়ে হামলা চালায়ে ওই অপরাধীকে কারাগারের তালা ভেঙে বের করে বাইরে নিয়ে যায়। এবং তার গায়ে পেট্রোল ঢেলে জীবন্ত জ্বালিয়ে দেয়। আর মর্মান্তিক এ দৃশ্য তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে পুলিশ কর্মকর্তারা। পরে তার মৃতদেহ সাদা চাদর দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়।
স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, “রোববার ২০ এপ্রিল ভোরে প্লেয়াস ডি কুয়াবেনোর প্যারিশে কিচওয়া সম্প্রদায়ের বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের শেষে একটি ঘটনা ঘটে, যেখানে দুজন মারা যায়। ওই দুই ব্যক্তি ছিলেন এলাকার একজন সম্প্রদায়ের সদস্য এবং আরেকজন ব্রিটিশ নাগরিক। যাকে জেল থেকে বের করে গ্রামবাসীরা পুড়িয়ে মেরে ফেলেছে।” প্লায়াস দেল কুয়াবেনো একটি ছোট গ্রাম এবং এখানকার অর্থনীতি ইকুয়াডিরের দ্বিতীয় বৃহত্তম বন্যপ্রাণী সংরক্ষণাগারের ওপর নির্ভরশীল। এই গ্রামে কেবল নৌকায় যাওয়া যায়।ডায়ারিও এক্সট্রা।
ভ্যাটের টাকা পর্যটকদের ফেরত দেবে সৌদি সরকার
এখন থেকে পর্যটকরা সৌদি আরবে অবস্থানকালে পণ্য ও সেবার ওপর পরিশোধিত ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) দেশে ফেরার সময় ফেরত পাবেন। সংশ্লিষ্ট ভ্যাট বিধিমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে এ সিদ্ধান্ত গত ১৮ এপ্রিল থেকে কার্যকর করেছে সৌদি সরকার। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, অনুমোদিত সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান পর্যটকদের প্রদত্ত উপযুক্ত পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট শূন্য শতাংশ হারে আরোপ করবে ও সৌদি আরব ত্যাগের সময় পর্যটকদের পরিশোধিত ভ্যাট ফেরত দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে সৌদির পর্যটন খাতকে আরও উৎসাহিত করা ও পর্যটকদের জন্য ভ্রমণ ব্যয় হ্রাস করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সৌদি আরবের জাকাত, ট্যাক্স ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ (জেডএটিসিএ) জানায়, এই কর ফেরতের প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য এক বা একাধিক অনুমোদিত সেবাদাতাকে অনুমতি দেওয়া হবে। তারা পর্যটকদের হয়ে কর ফেরতের কাজ সম্পন্ন করবে। তবে কোনো অনিয়ম বা নিয়ম লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে পর্যটক ও অনুমোদিত সেবাদাতা উভয়কেই ফেরত নেওয়া অর্থের জন্য যৌথভাবে দায়ী করা হবে।
জিসিসিভুক্ত দেশের পর্যটকরাও এই কর ছাড়ের সুবিধা পাবেন, তবে এটি চলমান থাকবে ইলেকট্রনিক সার্ভিস আইন কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত। জেডএটিসিএ’র গভর্নর পর্যটকদের কর ফেরতের নিয়মাবলি নির্ধারণ করবেন। নিয়মাবলির আওতায় থাকবেÑ পর্যটকদের কর ফেরতের ধাপসমূহ, পর্যটক হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার শর্তাবলি, কোন পণ্য ভ্যাট ফেরতের জন্য উপযুক্ত, সর্বনি¤œ ক্রয়মূল্য, কোন বিক্রেতা এ সুবিধা দিতে পারবে ও কর ফেরতের আবেদন করার নিয়ম।
অন্যদিকে সংশোধিত ভ্যাট বিধিমালায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যবসা কার্যক্রম অন্য ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করা হয়, তবে নতুন মালিককে ৩০ দিনের মধ্যে জেডএটিসিএকে তা জানাতে হবে। তবে যদি পূর্ববর্তী মালিকের রেজিস্ট্রেশন বাতিল হয়ে থাকে, তাহলে এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে না। রেজিস্ট্রেশন বাতিল হলেও ওই ব্যক্তি পুরনো কর সংক্রান্ত দায়দেনা থেকে মুক্ত হবেন না ও প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংরক্ষণ করতে হবে। সৌদি গেজেট।
আফ্রিকায় যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম বন্ধ করতে চলেছেন ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের কার্যক্রমে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। এরই মধ্যে একটি খসড়া নির্বাহী আদেশে আফ্রিকার দেশগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়া এবং বেশিরভাগ দূতাবাস ও কনস্যুলেট বন্ধের কথা বলেছেন তিনি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকে ঢেলে সাজানোর এ নির্বাহী আদেশ এ সপ্তাহেই স্বাক্ষর করতে পারেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আর এ আদেশে জলবায়ু, নারী অধিকার, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, অভিবাসন ও অপরাধবিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনাকারী অফিস ও পদগুলোও বিলুপ্ত করার প্রস্তাব রয়েছে। এ খসড়া আদেশ অনুযায়ী, পূর্ণ কাঠামোগত পুনর্গঠন ও রূপান্তর চলতি বছরের ১ অক্টোবরের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। সংশ্লিষ্টরা জানায়, এ খসড়া নির্বাহী আদেশের বিভিন্ন উপাদান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্বাক্ষর করার আগে পরিবর্তিত হতে পারে। পররাষ্ট্র দপ্তরকে সুশৃঙ্খল করা, অপচয় ও জালিয়াতি কমানো, যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি প্রদর্শন ও পররাষ্ট্র দপ্তরকে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির সঙ্গে সংযুক্ত করা-ই এ নির্বাহী আদেশের মূল লক্ষ্য। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি এ আদেশ বাস্তবায়িত হয়, তবে তা মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে এবং বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক উপস্থিতি ও কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। এদিকে নিউইয়র্ক টাইমস যখন এ বিষয়ে প্রথম খবর প্রকাশ করে, তখন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সামাজিক যোগাযাগমাধ্যমে লিখেছিলেন, এটা ভুয়া সংবাদ। সিএনবিসি।
মার্কিন কর্মকর্তাদের ওপর চীনের নিষেধাজ্ঞা
হংকং ইস্যুতে মার্কিন কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে চীন। গত ২১ এপ্রিল সোমবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ পদক্ষেপের ঘোষণা দেয়। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হংকং ইস্যুতে ‘জঘন্য আচরণের’ প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন কর্মকর্তাদের ওপর চীনের নিষেধাজ্ঞাটি দেয়া হয়েছে। চীনের দাবি অনুযায়ী, কিছু মার্কিন কংগ্রেস সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা এবং বেসরকারি সংস্থার প্রধানরা হংকং সম্পর্কিত বিষয়ে অবাঞ্চিত ভূমিকা রেখেছেন। এটি চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে মনে করছে বেইজিং। গত মাসে ছয়জন চীনা এবং হংকং কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ওয়াশিংটন। তারই পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে মার্কিন কর্মকর্তাদের ওপর চীনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন বলেন, ‘চীন এই মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে তীব্রভাবে নিন্দা করে।’ তিনি আরো হুঁশিয়ারি দেন, ‘হংকং-সম্পর্কিত বিষয়ে মার্কিন পক্ষের যেকোনো ভুল পদক্ষেপের বিরুদ্ধে চীন দৃঢ় এবং পারস্পরিক প্রতিশোধ নেবে।’ এ ঘটনার মাধ্যমে হংকং ইস্যুতে চীন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক উত্তেজনা আরো তীব্র হলো। মার্কিন কর্মকর্তাদের ওপর চীনের নিষেধাজ্ঞাকে এক গুরুত্বপূর্ণ বাঁকবদল হিসেবে দেখা যাচ্ছে। রয়টার্স।
পাকিস্তানের খনিজসম্পদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টি
মার্কিন ম্যাগাজিন ‘ফরেন পলিসি’ পাকিস্তানের খনিজসম্পদের প্রতি মার্কিন সরকারের প্রত্যাশা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। রাশিয়ার সাথে যুদ্ধের সময় কিয়েভে পাঠানো সাহায্যের টাকা ফেরত নেয়ার অজুহাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় প্রশাসন যখন ইউক্রেন সরকারের সাথে খনিজসম্পদ বিষয়ে চুক্তি সম্পাদনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এখনো কোনো ফল পায়নি, তখন মার্কিন ম্যাগাজিন ‘ফরেন পলিসি’ পাকিস্তানের খনিজসম্পদের ব্যাপারে ওয়াশিংটনের আগ্রহের বিষয়টি তুলে ধরেছে। ‘ফরেন পলিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এরিক মেয়ার খনি খাতে বিনিয়োগসংক্রান্ত একটি শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য ইসলামাবাদে একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের সাথে এক বৈঠকে মেয়ার বলেন যে মার্কিন কোম্পানিগুলো পাকিস্তানের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খনিজসম্পদে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে পাকিস্তান পার্লামেন্টের যৌথ কমিটির সভাপতি জ্যাক বার্গম্যান সম্প্রতি বলেছেন যে, খনিজ এলাকা পাকিস্তানের সাথে অংশীদারিত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হতে পারে। ২০২৩ সালের পর পাকিস্তান সফরকারী মার্কিন কংগ্রেসের কর্মকর্তাদের প্রথম প্রতিনিধি দলের অংশ হিসেবে বার্গম্যান গত সপ্তাহে ইসলামাবাদ সফর করেন।
পাকিস্তানের খনিজসম্পদের মধ্যে রয়েছে তামা ও সোনার বিশাল মজুদ, সেইসাথে লিথিয়ামের মতো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ। অনুমান করা হয় যে এর আয়তন প্রায় ৬ লাখ বর্গকিলোমিটার, যা যুক্তরাজ্যের আয়তনের দ্বিগুণ। যদিও পাকিস্তানের খনিজ সম্পদের মূল্য বর্তমানে ৮ ট্রিলিয়ন ডলার বলে অনুমান করা হচ্ছে এবং ইসলামাবাদ দীর্ঘদিন ধরে তার খনিজসম্পদ নিয়ে গর্ব করে আসছে। কিন্তু সেগুলো কাজে লাগাতে ইচ্ছুক বিনিয়োগকারীদের খুঁজে পেতে বেগ পেতে হচ্ছে। ফরেন পলিসি মনে করে যে, এ পরিস্থিতিতে মার্কিন সরকারের এ ধরনের বিনিয়োগের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ ইসলামাবাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন যে, খনি খাতে বিনিয়োগ আন্তর্জাতিক অর্থায়নের ওপর দেশের নির্ভরতা কমাতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদি অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে পারে। পার্সটুডে।
যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের অর্ধেক-ই ভারতীয়!
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নানান কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলনের জেরে গত মাসে ৩২৭ বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা খারিজ করছে আমেরিকা। শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীদের ‘রাষ্ট্রদোহী’ তকমাও দিয়েছে মার্কিন সরকার। ফলে তারা আর কখনো আমেরিকায় যেতে পারবেন না। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভারতীয়রা সবচেয়ে বড় দল হওয়ায় এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে প্রভাবিতদের বেশিরভাগই ভারতীয়। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ‘আমেরিকান ইমিগ্রেশন লয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর প্রেস বিজ্ঞপ্তি এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে কংগ্রেসের এমপি জয়রাম রমেশ লিখেছেন, ‘ভিসা বাতিলের কারণ পরিষ্কার নয়, পদ্ধতিও অস্বচ্ছ। তাই এটি ভারতীয়দের কাছে উদ্বেগের সঙ্গে আশঙ্কারও কারণ’ এ ঘটনায় মোদি সরকারের অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
চুপ করে বসে থাকার সময় নয় বলেও উল্লেখ করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর এ বিষয় নিয়ে মার্কিন বিদেশ সচিব মার্ক রুবিওর সঙ্গে আলোচনা করবেন কিনা সে নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস নেতা। তবে শুধু ভারতীয় ছাত্র-ছাত্রীরাই নন, তার মধ্যে ১৪ শতাংশ চীনের শিক্ষার্থীরাও রয়েছেন। ভিসা বাতিল হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, নেপাল, বাংলাদেশের ছাত্র-ছাত্রীদেরও। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ওপেন ডোরস রিপোর্ট অনুসারে, ভারত ৩.৩ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার জন্য পাঠিয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেশি। চীন ছিল দ্বিতীয় শীর্ষস্থানীয় দেশ, যেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২.৮ লাখ। যা আগের বছরের তুলনায় ৪ শতাংশ সামান্য হ্রাস পেয়েছে। টিওআই।
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : আবদুল কাইউম খান