কটিয়াদীতে ভুট্টা চাষে কৃষকদের ভাগ্য বদল

কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা: কিশোরগঞ্জে কটিয়াদী উপজেলায় বিগত বছরের তুলনায় এবার সবচেয়ে বেশি ভুট্টার চাষ হয়েছে। মাঠের মধ্যে সবুজ পাতার আড়ালে বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ রঙের ভুট্টার শীষ। তুলনামূলকভাবে উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় ভুট্টা চাষে কৃষকদের আগ্রহ এবার বেড়েছে।
চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় একটি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নে ৪০৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ করা হয়েছে। গত বছর করা হয়েছিল ৩৮০ হেক্টর জমি। স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বোরো ধান চাষে উৎপাদন খরচ বেশি, পানি সংকটের জন্য ভুট্টা চাষে বেশি মনোযোগ দিয়েছে। ভুট্টা চাষে অপেক্ষাকৃত পানি কম লাগে। অনেক জায়গায় সেচ পাম্প (গভীর নলকূপ) বন্ধ হয়ে পরায় সেখানকার কৃষকরা ভুট্টা চাষ করেছে। ভুট্টা চাষে লাভ বেশি, ফলনও বেশি হয়। ভুট্টার দানা মানুষের খাদ্য হিসেবে এবং ভুট্টার গাছ ও সবুজ পাতা উন্নত মানের গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। হাঁস-মুরগি ও মাছের খাদ্য হিসেবেও এর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। একসাথে অনেকগুলো সুবিধার কারণে এ চাষে আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের। দেড় যুগ ধরে এ অঞ্চলের কৃষকরা বিভিন্ন ফসলের পাশাপাশি ভুট্টা চাষের প্রচলন শুরু করেছে। উচ্চফলন, বেশি লাভ আর চাহিদা অনেক বৃত্তি পাওয়াই সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ভুট্টার চাষাবাদ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ীরা চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি ভুট্টা ক্রয় করছেন। ফলে ভুট্টা বিক্রয়ে কোনো সিন্ডিকেটের কবলে পরতে হয় না। কৃষকরা ন্যায্য দাম পেয়ে থাকে।
কটিয়াদী পৌরসভার ভুট্টা চাষি মাসুক মিয়া জানান, এলাকার যেসব জমিতে পূর্বে অন্যান্য ফসল চাষ করা হতো, সেই সব জমিতে এবার ভুট্টা চাষ হচ্ছে। ভুট্টার উৎপাদন খরচ তুলনামূলক অন্যান্য ফসলের তুলনায় অনেক কম। এছাড়া সবসময় বাজারে ভুট্টার দামও বেশি থাকে। এজন্য কৃষকেরা ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।
কটিয়াদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এবার গত বছরের তুলনায় ভুট্টার আবাদ অনেক বেশি হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আর সঠিক সময়ে বৃষ্টি পেলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
এলাকার কৃষকেরা যাতে ভুট্টা যথাযথভাবে উৎপাদন করতে পারেন এবং স্বল্প খরচে উচ্চফলনশীল ভুট্টা উৎপাদন করতে পারেন এ জন্য আমরা কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।