শ্রেষ্ঠতম মহাবিজ্ঞান আল কুরআন
১৩ মার্চ ২০২৫ ১৬:২৬
॥ এম ওবায়দুল্লাহ আনসারী ॥
মহাগ্রন্থ পবিত্র আল কুরআন হলো শ্রেষ্ঠতম মহাবিজ্ঞান। পবিত্র আল কুরআন বিশ্বজাহানের প্রতিপালক ও সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কালাম বা বাণী। মহান আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তায়ালা মানুষকে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন খেলাফতের দায়িত্ব দিয়ে। সেই দায়িত্ব যেন মানুষ সঠিকভাবে প্রতিপালনে সক্ষম হন, সেজন্য পাঠিয়েছেন অসংখ্য নবী ও রাসূল; সেইসঙ্গে নাজিল করেছেন আসমানি গ্রন্থ।
পৃথিবীতে প্রেরিত প্রথম মানুষ ও প্রথম নবী আদি পিতা হজরত আদম (আ.) থেকে হজরত নূহ (আ.)-এর আগ পর্যন্ত নবীগণ সৃষ্টিতত্ত্ব, প্রকৃতিবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান চর্চা করেছেন ব্যাপকভাবে। হজরত নূহ (আ.) থেকে শুরু করে আসমানি বিধিবিধান ব্যাপকতা লাভ করে। মহাগ্রন্থ আল কুরআনে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ইতিহাসের তথ্য ও তত্ত্ব। এতে রয়েছে সাহিত্যের সব রসদ। আল কুরআনে রয়েছে বিশ্বজগতের শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক কাহিনী। এতে রয়েছে কালোত্তীর্ণ অমর মহাকাব্যের সব ধরনের উপাদান। আল কুরআন জীবন্ত মোজেজা। মানুষের জীবনচলার পথে পরিবেশ ও প্রতিবেশকে ইতিবাচক এবং কল্যাণকররূপে ব্যবহারের পরিশীলিত সুবিন্যস্ত জ্ঞানই হলো বিজ্ঞান। আর মহাগ্রন্থ আল কুরআন হলো শ্রেষ্ঠতম মহাবিজ্ঞান। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন, ‘বিজ্ঞানময় কুরআনের শপথ।’ (সূরা ইয়াসীন : ২)।
পবিত্র আল কুরআনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার অর্থ হলো- আল কুরআনে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান ও মহাবিশ্বের সৃষ্টিসহ বিজ্ঞান সম্পর্কিত যে আয়াতগুলো আছে, সেগুলোকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও আবিষ্কারের আলোকে ব্যাখ্যা করা। এটি অভিনব কিছু নয়; পূর্বসূরি আলেমরাও তাদের সময়ের জ্ঞানগত বিকাশের আলোকে এ আয়াতগুলো ব্যাখ্যা করতেন। অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতকে ইউরোপের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধির ফলে মুসলিমরা আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের সংস্পর্শে আসেন; ফলে কুরআনের বিজ্ঞান সম্পর্কিত আয়াতগুলো অনুধাবনে তাদের মনে নতুন উপলব্ধির সৃষ্টি হয়। ঊনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে আল কুরআনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার আধুনিক ধারা শুরু হয়, যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে বর্তমানেও অব্যাহত রয়েছে।
মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা রাসূল (সা.)-এর ওপর যেসব দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন, মানুষকে আল কুরআনের জ্ঞান শিক্ষা দেয়া অন্যতম। কুরআনপাকে প্রথম অবতীর্ণ ৫ আয়াতেও তার সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে, ‘পড় তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন জমাট রক্তপিণ্ড (আলাক) থেকে। পড় আর তোমার রব মহামহিম। যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষাদান করেছেন। তিনি মানুষকে তা শিখিয়েছেন, যা সে জানত না।’ (সূরা আলাক : ১-৫)। আল্লাহপাক আরো বলেন, ‘তিনি তাদের কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেবেন।’ (সূরা বাকারা : ১২৯)। অন্যত্র এরশাদ হয়েছে, ‘যেন সে মানুষের কাছে বর্ণনা করে, যা তাদের প্রতি নাজিল হয়েছে।’ (আল কুরআন)।
বর্তমান আধুনিক বিজ্ঞানের সব আবিষ্কার ও কুরআন পরস্পর সঙ্গতিপূর্ণ। এতদিন যেসব আয়াতের ব্যাখ্যা করা কঠিন ছিল, আধুনিক বৈজ্ঞানিক জ্ঞান আমাদের সেসবের অর্থ বোঝার ব্যাপারে সাহায্য করেছে। কুরআনের বৈজ্ঞানিক বিষয়গুলো প্রমাণ করেÑ এটি আসমানি গ্রন্থ। মহাগ্রন্থ আল কুরআনে রয়েছে জ্ঞান-বিজ্ঞানের সব মৌলিক বিষয়। যেমন জ্যোতিষশাস্ত্র, বিশ্ব সৃষ্টি ও মহাবিস্ফোরণ প্রসঙ্গ, ছায়াপথ সৃষ্টির আগে প্রাথমিক গ্যাসপিণ্ড, পৃথিবীর আকার গোল। এতে রয়েছে পদার্থবিজ্ঞান, পানিবিজ্ঞান, পানিচক্র, বাষ্পে পরিণত হওয়া। আল কুরআনে আছে ভূতত্ত্ব বিজ্ঞান, পাহাড়-পর্বতের রহস্য, মিষ্টি ও লবণাক্ত পানির বিবরণ এবং রয়েছে উদ্ভিদবিজ্ঞান। কুরআনে রয়েছে প্রাণিবিজ্ঞান, পাখির উড্ডয়ন, মৌমাছির দক্ষতা, মাকড়সার জাল, পিপীলিকার জীবনধারা ও যোগাযোগ। এতে আছে চিকিৎসাবিজ্ঞান, ওষুধ-পথ্য। আরো রয়েছে শরীরতত্ত্ব, রক্ত চলাচল, দুগ্ধ ও ভ্রƒণতত্ত্ব এবং সাধারণ বিজ্ঞান ও আঙুলের ছাপ ইত্যাদি।
এখানে ভ্রƒণতত্ত্ব আধুনিক বিজ্ঞানের জটিলতম একটি বিষয়। পবিত্র আল কুরআনে ভ্রƒণ সৃষ্টি ও এর বিকাশ সম্পর্কিত যথাযথ বর্ণনা রয়েছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, ‘অবশ্যই আমি মানুষকে মাটির নির্যাস থেকে সৃষ্টি করেছি। তারপর আমি তাকে শুক্ররূপে সংরক্ষিত আঁধারে স্থাপন করেছি। তারপর শুক্রকে আমি আলাকায় (জমাট রক্তে) পরিণত করি। অতঃপর জমাট রক্তকে গোশতপিণ্ডে পরিণত করি এবং গোশতপিণ্ডকে হাড়ে পরিণত করি। অতঃপর হাড়কে গোশত দিয়ে আবৃত্ত করি। অতঃপর তাকে অন্য এক সৃষ্টিরূপে গড়ে তুলি। অতএব সুনিপুণ স্রষ্টা আল্লাহ কত বরকতময়! এরপর অবশ্যই তোমরা মৃত্যুবরণ করবে। অতঃপর কিয়ামতের দিন অবশ্যই তোমরা পুনরুত্থিত হবে। আর অবশ্যই আমি তোমার ওপর সাতটি স্তর সৃষ্টি করেছি। আর আমি সৃষ্টি সম্পর্কে উদাসীন ছিলাম না।’ (সূরা মুমিনুন : ১২-১৭)।
ভ্রƒণতত্ত্ব সম্পর্কিত বিষয়ে আমেরিকার ফিলাডেলফিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান এবং ফিলাডেলফিয়ার টমাস জেফারসন বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্যানিয়েল বাও ইনস্টিটিউটের পরিচালক মার্শাল জনসন বলেন, ‘বিজ্ঞানী হিসেবে আমি ভ্রƒণতত্ত্ব এবং ডেভেলপমেন্টাল বায়োলজি বুঝতে পারি। আমাকে যদি আমার আজকের জ্ঞান ও বর্ণনার যোগ্যতা-সহকারে সেই যুগে স্থানান্তর করা হয়, আল কুরআনে যে বর্ণনা রয়েছে, সেভাবে বর্ণনা করতে পারব না।’
এ বিষয়ে কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান শীর্ষস্থানীয় ভ্রƒণতত্ত্ববিদদের অন্যতম কিথ মুর আল কুরআনের এসব বক্তব্য ও সহীহ হাদিসের বিবরণ সম্পর্কে বলেন, ‘উনিশ শতক পর্যন্ত মানবীয় বিকাশের ধাপগুলো সম্পর্কে কিছুই জানা ছিল না। উনিশ শতকের শেষ দিকে বর্ণমালার প্রতীকের ওপর ভিত্তি করে মানবভ্রƒণের বিকাশের বিভিন্ন ধাপ চিহ্নিত করা হয়।’
মহাবিশ্বে সবকিছুই ঘূর্ণায়মান বা চলমান। এ বিষয় সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, ‘আর সূর্য ভ্রমণ করে তার নির্দিষ্ট পথে, এটা মহাপরাক্রমশালী আল্লাহর নিয়ন্ত্রণ। আর চাঁদের জন্য আমি নির্ধারণ করেছি মঞ্জিলসমূহ, অবশেষে সেটি খেজুরের শুষ্ক পুরনো শাখার মতো হয়ে যায়। সূর্যের জন্য সম্ভব নয় চাঁদের নাগাল পাওয়া, আর রাতের জন্য সম্ভব নয় দিনকে অতিক্রম করা, আর প্রত্যেকেই নিজ নিজ কক্ষপথে সন্তরণ করছে।’ (সূরা ইয়াসীন : ৩৮-৪০)।
মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে আরো বলেন, ‘তিনিই সূর্যকে তেজষ্কর ও চন্দ্রকে জ্যোতির্ময় করেছেন এবং তার তিথি নির্দিষ্ট করেছেন।’ (সূরা ইউনুস : ৫)। কুরআনে সূর্যকে ‘সিরাজ’ বলা হয়েছে, যা স্বীয় আলো আর চন্দ্রকে ‘নূর’ বলা হয়েছে, যা অন্য উৎস থেকে ধার করা। ভূতত্ত্ব বিজ্ঞান প্রসঙ্গে আল কুরআনে সবিস্তারে আলোচিত হয়েছে, ‘আমি কি ভূমিকে বিছানা ও পর্বতসমূহকে কীলক (পেরেক) সদৃশ করিনি?’ (সূরা আন-নাবা : ৬-৭)।
এ বিষয়ে আমাদের মনে কোনো সংশয় নেই যে, যারা কুরআনকে বৈজ্ঞানিক উপাত্তের ভাণ্ডার বলে অভিহিত করেন, তারা সদুদ্দেশ্যেই এটি বলে থাকেন। ‘কুরআন আল্লাহর বাণী’- এ প্রত্যয়কে মুমিনের অন্তরের আরো গভীরে প্রোথিত করার জন্যই তারা এটি করে থাকেন। এ পর্যায়ে কুরআন ও বিজ্ঞান সিকোর্সের কিছু সাম্প্রতিক নমুনা আমরা উপস্থাপন করতে চাই। সমসাময়িককালের একজন নামজাদা ভূতত্ত্ববিদ হলেন জগলুল আন-নাজ্জার (১৯৩৩)। ইনি ভূতত্ত্বের জ্ঞানের সঙ্গে ইসলামের জ্ঞানের সম্মিলন করেছেন।
আন-নাজ্জার বলেন, কুরআন বার বার পাহাড়কে পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষাকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছে- যাতে ওগুলো পৃথিবীর উপরিভাগকে শক্ত করে ধরে রাখে এবং ভূপৃষ্ঠ আমাদের নিয়ে পড়ে না যায়। এগুলো পেরেকের মতো পৃথিবীর উপরিভাগকে আটকে রাখে। আন-নাজ্জারের মতে, এ বিষয়টি বৈজ্ঞানিকভাবে জানা গেছে, ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে, অর্থাৎ কুরআন নাজিলের প্রায় ১৩০০ বছর পর।
ফরাসি চিকিৎসক মরিস বুকাইলির (১৯২০-১৯৯৮) The bible the Quran and science গ্রন্থটি বিগত তিন দশক ধরে অনুসন্ধিৎসু মুসলিমের অবশ্য-পাঠে পরিণত হয়েছে। এ বইয়ের প্রধান প্রতিপাদ্য হলো এই যে, সুনিশ্চিতভাবে প্রতিষ্ঠিত বৈজ্ঞানিক উপাত্তের সঙ্গে অহির কোনো বিরোধ হতে পারে না। তিনি আল কুরআনের মূল ভাষ্য ও আধুনিক বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের সম্ভাব্য সঙ্গতি পরীক্ষা করে এ উপসংহারে উপনীত হন, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়। বুকাইলি অনুরূপ পরীক্ষা চালান বাইবেলে, কিন্তু এবারের ফল সম্পূর্ণ ভিন্ন- এ গ্রন্থে এমন বহু বক্তব্য পাওয়া যায়, যা আধুনিক বৈজ্ঞানিক সত্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
গ্রন্থের শেষে বুকাইলির উপসংহার ছিল নিম্নরূপ- ‘মুহাম্মদ (সা.)-এর যুগের জ্ঞানের উৎকর্ষতার আলোকে বলা যায়, আল কুরআনের বিজ্ঞান সম্পর্কিত বক্তব্যগুলো কোনো মানুষের বক্তব্য নয়।’ (Bucaille, n.d. 251-52)। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় আল কুরআনের বৈজ্ঞানিক ইঙ্গিত ও নির্দেশনা সম্পর্কে আরবি এবং ইংরেজিসহ বিভিন্ন ভাষায় প্রচুর গ্রন্থ ও প্রবন্ধ রচিত হচ্ছে। বাংলা ভাষায়ও এ বিষয়ে অনেক রচনা পাওয়া যায়; যার তালিকা এ প্রবন্ধে দেয়া সম্ভব নয়। আল কুরআন ও বিজ্ঞান ডিসকোর্সে বাংলাদেশে প্রকাশিত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনা হলো- Scientific Indications in the Holy Quran (Dhaka : 1990)।
এখানে উল্লেখ্য, পবিত্র আল কুরআন হিদায়াতেরই একমাত্র গ্রন্থ; যে পথে জীবন পরিচালনা করলে মানুষ দুনিয়ায় শান্তি ও আখিরাতে মুক্তি লাভ করবে, সেটি এ মহাগ্রন্থে বলে দেয়া হয়েছে। এ উদ্দেশ্যেই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার কুদরত ও সৃষ্টিকুশলতার প্রমাণস্বরূপ প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের নানা বিষয় আল কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে এবং মানুষকে এ সম্পর্কে চিন্তাভাবনা ও গবেষণা করতে বলা হয়েছে। এভাবে কুরআনের অনুপ্রেরণায় মুসলিম জাতি বিজ্ঞানচর্চায় উদ্বুদ্ধ হয়েছিল।
আল কুরআনের বিজ্ঞান সম্পর্কিত আয়াতগুলোকে প্রত্যেক যুগের মানুষ নিজেদের সময়ের জ্ঞানের বিকাশের আলোকে ব্যাখ্যা করেছেন- এটি খুবই স্বাভাবিক। তবে এক্ষেত্রে আমাদের খুবই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। মনে রাখতে হবে- আল কুরআন অকাট্য ও অপরিবর্তনীয়; পক্ষান্তরে বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব পরিবর্তনশীল। পরিবর্তনশীল বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের আলোকে আল কুরআনের অকাট্য আয়াতের ব্যাখ্যাকে সবসময় আপেক্ষিক হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। কুরআনের আয়াতের ভাবকে জোর খাটিয়ে বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের আওতায় আনার চেষ্টা পরিত্যাজ্য। কোনো আয়াতের সঙ্গে বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের আপাত বিরোধ দেখা দিলে আল কুরআনকেই অভ্রান্ত হিসেবে ধরে নিতে হবে। অবশ্য বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব (Scientific Theory) ও বৈজ্ঞানিক বাস্তবতা (Sceentific Fact) এক নয়।
মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন, ‘জিন ও মানবজাতি একত্র হলেও কুরআনের সমকক্ষ বা অনুরূপ কোনো কিছু রচনা করতে পারবে না।’ এ চ্যালেঞ্জকে অক্ষমকরণ বা ইজাজ বলা হয়। পূর্বসূরি আরবি ভাষাবিজ্ঞানীগণ আল কুরআনের ভাষাতাত্ত্বিক ইজাজ প্রমাণে বহু গ্রন্থ প্রণয়ন করেছেন। এমনকি এ উদ্দেশ্যে আরবি ভাষায় ‘ইলমুল বালাগাহ’ বা অলঙ্কারশাস্ত্র নামে নতুন একটি বিদ্যার আজ আরবিভাষী কেউ কুরআনের ভাষাতাত্ত্বিক ইজাজ সম্পর্কে প্রশ্ন তুলতে পারেন না।
এখন সময় এসেছে আল কুরআনের আইনকানুন বিজ্ঞান ও জ্ঞানের অন্যান্য শাখার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেসব বক্তব্য ও ইঙ্গিত রয়েছে, তা অকাট্য ও অভ্রান্ত। এ বিষয়টি প্রমাণের জন্য বিজ্ঞানসহ জ্ঞানের অন্যান্য শাখা অধ্যয়নের কোনো বিকল্প নেই এবং সেই আলোকে অস্বীকার করা যায় না। তবে সর্বাবস্থায় স্মরণ রাখতে হবে- আল কুরআনের বক্তব্যই চূড়ান্ত ও অকাট্য। কারণ ‘কোনো মিথ্যা এতে অনুপ্রবেশ করতে পারে না- সম্মুখ দিয়েও না, পেছন দিয়েও না। এটি প্রজ্ঞাময় ও সপ্রশংসিত আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ।’ (সূরা হা-মীম আস-সাজদা : ৪২)।
লেখক : গবেষক ও সাংবাদিক।