আ’লীগ ১৫ বছরে ২০ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে

হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের আগে জাতীয় নির্বাচন নয়


২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:৫৬

॥ জামশেদ মেহ্দী॥
বাংলাদেশের সামনে এখন সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক প্রশ্ন- আগে নির্বাচন নাকি সংস্কার? সম্ভবত তার চেয়েও বড় প্রশ্ন হলো- আগে বিচার নাকি নির্বাচন? যতই দিন যাচ্ছে, তাতে দেখা যাচ্ছে যে, উপরোক্ত প্রশ্নগুলোকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনেও তীক্ষè মেরুকরণ শুরু হয়েছে। এ সম্পর্কে আরো কিছু বলার আগে আমরা দুটি খবর সংক্ষেপে নিচে পরিবেশন করছি। গত ২২ ফেব্রুয়ারি শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় ‘জুলাই ২৪ শহীদ পরিবার সোসাইটি’ নামের একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এ সভায় জুলাই হত্যার দ্রুত বিচার দাবি করেছেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা। তারা বলেছেন, একদল রাজনৈতিক দল গঠন করে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করছে। আরেক দল ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচন চাচ্ছে। যাদের রক্তের ওপর দিয়ে দেশ নতুন করে স্বাধীন হলো, তাদের হত্যার বিচারের কথা কেউ বলছেন না।
যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত মো. সিয়ামের ভাই মো. রাশেদ বলেন, ‘এ সরকারের কাছে বেশি কিছু চাই না, ভাই হত্যার বিচার চাই। দেশে কোনো নির্বাচন দেওয়ার আগে ভাই হত্যার বিচার করুন।’ শহীদ পরিবারের সদস্যরা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তাদের সরকার। কিন্তু তারা শহীদ পরিবারের কষ্ট বুঝতে পারছে না। হত্যার সঙ্গে জড়িত পুলিশ ও হেলমেট বাহিনীর সদস্যদের অনেককেই এখনো গ্রেফতার করা হয়নি। দ্রুত তাদের গ্রেফতারের দাবি জানান তারা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সাজ্জাত হোসেন সজলের মা শাহিনা বেগম বলেন, ‘পুলিশ আমার ছেলেকে আশুলিয়ায় আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। সাত মাস হয়ে গেল, আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার পেলাম না।’ নাবিল হোসেন বলেন, ‘আর কোনো আশ্বাস নয়, রায়েরবাজারে যে ১১৪ জনকে বেওয়ারিশ হিসেবে কবর দেওয়া হয়েছে, তাদের শনাক্ত করতে হবে। যারা এখনো নিখোঁজ রয়েছেন, তাদের খুঁজে বের করতে হবে।’
দ্বিতীয় খবরটি প্রকাশিত হয়েছে ২৪ ফেব্রুয়ারি সোমবার ইংরেজি ডেইলি স্টারে। খবরের শিরোনামের বাংলা অনুবাদ, আওয়ামী লীগের বিচার যদি বিলম্বিত হয়, তাহলে দেশ গৃহযুদ্ধের ঝুঁকির মুখে পড়বে/বলেছেন নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক। খবরে বলা হয়েছে, যদি অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের বিচার বিলম্বিত করে অথবা এ ব্যাপারে নিশ্চুপ থাকে, তাহলে জনগণ এর ফয়সালা নিজেরাই করতে বাধ্য হবে। আর যদি বাংলাদেশ এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়, তাহলে আমাদের আশঙ্কা, দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু হবে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন। উপদেষ্টা পরিষদের সমালোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, এদের চামড়া আসলে গণ্ডারের চামড়া। তিনি আরো বলেন, যদি তাদের কাছে (উপদেষ্টাদের কাছে) কোনো দাবি উত্থাপন করা হয়, তাহলে সেই দাবির ব্যাপারে তাদের উত্তর আসে ৬ মাস পর। আমরা তাদেরকে বলবো, আপনারা চামড়া একটু পাতলা করেন। আপনারা জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারে যদি নিশ্চুপ থাকেন অথবা দীর্ঘসূত্রতা অবলম্বন করেন, তাহলে জনগণ রাজপথে নামতে বাধ্য হবেন।
উপদেষ্টাদের কঠোর সমালোচনা করে নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, তারা যদি মনে করে থাকেন যে তাদের অফিস বা সচিবালয় তাদের জন্য বিলাস কক্ষ অথবা তারকাখচিত হোটেল কক্ষ, তাহলে তারা ভুল করছেন। জনগণ অনেক দাবি-দাওয়া নিয়ে; বিশেষ করে দ্রুত বিচারের দাবি নিয়ে আমাদের কাছে আসছেন। কিন্তু আমরা তাদের ধৈর্য ধরতে বলছি। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থাকাকালে ড. আসিফ নজরুল অনেক কথা বলতেন। কিন্তু উপদেষ্টা হওয়ার পর তার কথা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। যদি বিচার দ্রুতগতিতে না হয়, তাহলে আমরা স্পষ্ট বলছি, দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। প্রথমে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে। শুধুমাত্র তারপরই নির্বাচন হতে পারে।
নির্বাচনের জন্য বিএনপি শুধুমাত্র অস্থির নয়, মনে হচ্ছে, তারা রীতিমতো পাগল হয়ে গেছে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রোববার ঠাকুরগাঁওয়ে এক সমাবেশে বক্তৃতা প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র নেতা শামসুজ্জামান দুদু বলেন যে, ইউনূস সরকার বিগত ৬ মাসে কিছুই করতে পারেননি। এ সরকার রেখে লাভ কি? আমাদেরকে হয়তো সরকার পরিবর্তনের আওয়াজ তুলতে হতে পারে।
একাধিক ইস্যুকে ঘিরে বিএনপির সাথে দুটি শক্তির মতানৈক্য শুরু হয়েছে। যতই দিন যাচ্ছে, ততই এ মতানৈক্য তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। একটি হলো, বিএনপির সাথে বর্তমান সরকারের দূরত্ব। দ্বিতীয়টি হলো, বিএনপির সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং নাগরিক কমিটির দূরত্ব। তৃতীয়টি হলো, বিএনপির সাথে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের দূরত্ব। নির্বাচনের কথা বলতে বলতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর হাফিজ উদ্দিন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, রুহুল কবির রিজভী, শামসুজ্জামান দুদু এতদূরও বলেছেন যে, জুলাই বিপ্লবের মূল লক্ষ্যই ছিল নির্বাচন। এর পাল্টা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নাগরিক কমিটি এবং ইসলামী ছাত্রশিবির বলছে যে, আওয়ামী লীগকে হটিয়ে অন্য কাউকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য হাজার হাজার মানুষ রক্ত দেয়নি। তারা রক্ত দিয়েছে এমন একটি বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করতে, যেখানে বাংলাদেশের ওপর ভারতের প্রভূত্ব চলবে না এবং যেখানে জনগণ তাদের স্বাধীন মর্জিমাফিক সরকার গঠন করবে। জনগণ এমন একটি বন্দোবস্ত চায়, যেখানে ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচার আর মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। এর জন্য একদিকে যেমন প্রয়োজন মৌলিক সংস্কার; অন্যদিকে তেমনি প্রয়োজন শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের সব দুর্বৃত্ত এবং তাদের দোসরদের সর্বোচ্চ শাস্তি।
বিএনপির সাথে দূরত্ব যে শুধুমাত্র জামায়াত এবং বৈষম্যবিরোধীদেরই হয়েছে, তাই নয়। ক্ষমতায় যাওয়া সুনিশ্চিত করার জন্য তারা তাদের জোট শরিকদের সাথেও রক্তাক্ত সংঘর্ষ শুরু করেছে। ২৪ ফেব্রুয়ারি রোববার ইংরেজি দৈনিক নিউএজে এ সম্পর্কে যে খবরটি প্রকাশিত হয়েছে, সেটি তার সাক্ষ্য বহন করে। খবরটির শিরোনাম, Ganatantra Mancha condemns attack on Nagorik Oikya leaders. খবরে যা বলা হয়েছে, তার অংশবিশেষের বাংলা অনুবাদ, বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার পর স্থানীয় নাগরিক ঐক্যের নেতৃবৃন্দের ওপর বিএনপির হামলার প্রতিবাদ করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। এ সম্পর্কে প্রদত্ত বিবৃতিতে সই করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান জোনায়েদ সাকি, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাসদ (রব) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল কাইয়ুম। গণতন্ত্র মঞ্চের কেন্দ্রীয় স্টিয়ারিং কমিটি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করেছে, শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং তার দলবল এ হামলা করেন। জানা গেছে, এ হামলায় শিবগঞ্জ উপজেলা নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম এবং যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হককে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার পর বিএনপির নেতাকর্মীরা ছুরিকাঘাত করে। গণতন্ত্র মঞ্চ বিএনপির হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
ঐদিকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটি গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মধুর ক্যান্টিনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে। ঐ সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, স্বৈরাচারী, গণহত্যাকারী শেখ হাসিনামুক্ত ফ্যাসিবাদের অবশেষ (জবসহধহঃ) কিছু ছাত্র সংগঠন ঘোষণা দিয়ে ছাত্রলীগের ফ্যাসিবাদী পথ গ্রহণ করেছে। আপনারা দেখছেন, তারা ফেসবুকে এ মর্মে স্ট্যাটাস দিয়েছে যে, শিবির কোপানো আগেও জায়েজ ছিল, এখনো থাকবে। এমন বীভৎস ঘোষণা দেওয়ার পর খুলনার শিববাড়ীতে তাদের মিছিল থেকে স্লোগান দেওয়া হয়, “একটা একটা শিবির ধর/ধইরা ধইরা জবাই কর”। জনাব জাহিদ বলেন, এমন ভয়ঙ্কর এবং বীভৎস স্লোগান আমরা ৫ আগস্টের আগে ছাত্রলীগের মুখে শুনেছি। এখন ৫ আগস্টের পর আমরা বিএনপির অঙ্গ সংগঠন ছাত্রদলের মুখে শুনছি। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের প্রতিচ্ছবি আমরা ছাত্রদলের মধ্যে দেখতে পাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, সারা দেশে শত শত জায়গায় চাঁদাবাজি, দখলদারি দেখে বোঝার উপায় নাই যে, দেশে কোনো পরিবর্তন হয়েছে। অপরাধ ঠিকই চলছে। শুধুমাত্র অপরাধীদের হাতবদল হয়েছে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি যশোরের চাচড়ায় চাঁদা না দেওয়ায় সম্রাট নামে এক মাছ ব্যবসায়ীর চোখ উপড়ে ফেলেছে ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা। গাজীপুরে মাইকে প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়ে ছাত্রদল এবং যুবদল চাঁদা আদায় করছে।
এমন পটভূমিতে সংস্কার যেমন প্রয়োজন, তেমনি তার চেয়েও আগে প্রয়োজন বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ যতগুলো হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তার বিচার করা। তারপর আসবে নির্বাচনের প্রশ্ন। শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরে কত হাজার মানুষকে যে খুন করা হয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই। গত ২০ ডিসেম্বর দৈনিক যুগান্তরের খবরে প্রকাশ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলের শেষ ৫ বছরে ১৬ হাজারের বেশি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে; গড় হিসেবে প্রতিদিন ৯ জনেরও বেশি মানুষ হত্যার শিকার হয়েছেন। এ সময়ে অপহরণের ঘটনাও ঘটেছে প্রায় আড়াই হাজার। পুলিশ সদর দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা অপরাধ পরিসংখ্যান থেকে উঠে এসেছে এ তথ্য। মানবাধিকার কর্মী নূর খানের ধারণা, মামলার নথি ঘেঁটে যে পরিসংখ্যান মিলেছে, বাস্তব অবস্থা ছিল তার চেয়েও ভয়াবহ।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ‘দ্য নিউজ’ নামক একটি নিউজ পোর্টালের রিপোর্ট মোতাবেক শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের সময়কালে চারটি গণহত্যা চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেন হবিগঞ্জে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেই বিডিআর বিদ্রোহের সময় দেশ সেরা সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের হত্যার মধ্য দিয়ে গণহত্যা শুরু করেন। আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়ের দিন সারা দেশে ২৫০ নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়। সেটা ছিল দ্বিতীয় গণহত্যা। তৃতীয় গণহত্যা ছিল ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার শাপলা চত্বরে। হেফাজতে ইসলামের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে শেখ হাসিনার নির্দেশে রাতের আঁধারে গণহত্যা চালানো হয়। শেখ হাসিনার চূড়ান্ত গণহত্যা ছিল জুলাই গণহত্যা।
দৈনিক প্রথম আলোর ইংরেজি সংস্করণে গত ৪ নভেম্বর প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয় যে, আওয়ামী লীগের ১৫ বছরে ১ হাজার ৯২৬ জনকে বিচারবহির্ভূত পন্থায় হত্যা করা হয়েছে। এ সাড়ে ১৫ বছরে কত হাজার ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান এখনো পাওয়া যায়নি। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, এ পরিসংখ্যান জোগাড় করা হচ্ছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন তাদের নিজস্ব তদন্ত রিপোর্টে বলেছে, শুধুমাত্র জুলাই বিপ্লবের ৪৫ দিনে ১ হাজার ৪০০ ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা ১২ থেকে ১৩ শতাংশ।
জাতিসংঘের মতো সমগ্র বিশ্বের এ সর্বজন গ্রহণযোগ্য সংগঠনটি স্পষ্ট ভাষায় বলেছে, এই ১ হাজার ৪০০ ব্যক্তিকে হত্যার জন্য হুকুম দিয়েছেন খোদ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার হুকুম পেয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। মি. কামাল এ হুকুম ট্রান্সমিট করেছেন পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসারসহ সংশ্লিষ্ট বাহিনীর কাছে। তারা এও মতামত দিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডের কমান্ডে থাকার কারণে শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের বিচার করা যায়। শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরত আনার জন্য প্রয়োজনে নেদারল্যান্ডস অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করা যায়। এ ব্যাপারে যদি কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হয়, তাহলে সেটি জাতিসংঘ দেবে বলে অন্তর্বর্তী সরকারকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
ওপরের সুদীর্ঘ আলোচনার পর এ কথা বলার আর অবকাশ রাখে না যে, শেখ হাসিনার ১৫ বছরে অন্তত ২০ হাজার লোককে বিভিন্নভাবে হত্যা করা হয়েছে। এখন তাদের বিচারের দাবি শুধুমাত্র কয়েকটি রাজনৈতিক বা ছাত্র সংগঠনের নয়। আগে বিচার নাকি নির্বাচনÑ এ প্রশ্নে যদি গণভোট নেওয়া হয়, তাহলে দেখা যাবে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ নির্বাচনের আগে বিচার সম্পন্ন করার পক্ষে রায় দেবেন। সাপ্তাহিক সোনার বাংলার এ প্রতিনিধি ঢাকার এবং মফস্বলের এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছেন যে, বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ সর্বাগ্রে শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের বিচার চায়। তার আগে নির্বাচন নয়।