সংবিধান রচনা করতে হবে এদেশের মানুষের চিন্তা-চেতনার আলোকে : ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের


১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:১৫

শরীয়তপুর সংবাদদাতা : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, ১৯৭২-এর সংবিধান যারা রচনা করেছিলেন, তারা ছিলেন পাকিস্তান গণপরিষদের নির্বাচিত সদস্য। এক্ষেত্রে প্রয়োজন ছিল গণভোটের। তারা সেটাও করেন নাই। তাদের যাত্রাই শুরু হয়েছে অবৈধভাবে। সুতরাং সেই সংবিধান কীভাবে বৈধ হতে পারে? তাই ৭২-এর সংবিধান অবৈধ সংবিধান। ৭২-এর সংবিধান আমাদের চেতনার সাথে সম্পৃক্ত ছিল না। সংবিধান রচনা করতে হবে এদেশের মানুষের চিন্তা-চেতনা ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ সংবিধান প্রণয়ন করা নয়। তবে নির্বাচনের জন্য ন্যূনতম সংস্কার করতে হবে। যেখানে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য থাকবে। এমন কিছু মৌলিক সংস্কার করে নির্বাচন করতে হবে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেলে শরীয়তপুর পৌরসভা মাঠে জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শরীয়তপুর জামায়াতের জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আবদুর রব হাশেমীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুল আলম খান মিলন, জামায়াত নেতা ড. মোশারফ হোসেন মাসুদ, অধ্যাপক মো. মাহমুদ হোসেন, মো. আজহারুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ফরিদপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। এছাড়া ফরিদপুর টিম সদস্য শামসুল ইসলাম আল বরাটি, মাওলানা খলিলুর রহমান, এডভোকেট আজমল হোসাইন এবং ফরিদপুর জেলা আমীর মাওলানা মুহাম্মদ বদরুদ্দীন, গোপালগঞ্জ জেলা আমীর অধ্যাপক রেজাউল করিম, মাদারীপুর জেলা আমীর মাওলানা মোখলেছুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও শরীয়তপুর জেলা নায়েবে আমীর কে এম মকবুল হোসাইন, জেলা সেক্রেটারি মাওলানা মাসুদুর রহমান বক্তব্য রাখেন। জেলা শূরা সদস্য মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক ও ডামুড্যা পৌরসভা আমীর আতিকুর রহমান কবীর উপস্থাপনার দায়িত্ব পালন করেন।
সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, বাংলাদেশ এমন এক দেশ, যেখানে কখনোই স্বাধীনতা পরিপূর্ণতা পায়নি। ১৯৪৭-এর স্বাধীনতা পরিপূর্ণ হয়নি, ১৯৭১-এ সংগ্রাম করতে হয়েছে। ১৯৭১ সালে পৃথিবীর বুকে একটি স্বাধীন ভূখণ্ড সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সেই স্বাধীনতা পূর্ণতা অর্জন করেনি। এরপর ২০২৪-এর স্বাধীনতা বা দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে। এর কারণ আমরা অনাকাক্সিক্ষতভাবে অযোগ্য নেতৃত্ব পেয়েছিলাম।
তিনি আরও বলেন, গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের অংশ হিসেবে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু ভুল নেতৃত্বের কারণে আমরা দেখলাম, গণতন্ত্র হত্যা করে তারা বাকশাল কায়েম করল। বাকশালের পরিণতি যে কী হয়েছিল, তা এদেশের মানুষ দেখেছে। শেখ মুজিবকে হত্যা করা হয়েছে, জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে, আন্দোলনের মুখে এরশাদের পতন হয়েছে। বিগত সাড়ে ১৫ বছরে আমরা জেল-জুলুমের শিকার হয়েছি, তাহাজ্জুদ পড়ে আল্লাহর কাছে বলেছি, হাসিনার পদত্যাগ চেয়েছি। কিন্তু আল্লাহ আমাদের ধৈর্যর ফল হিসেবে শুধু পদত্যাগ নয়, দেশত্যাগ করিয়েছেন।