ফ্যাসিবাদের সব চিহ্ন এ জাতি নিশ্চিহ্ন করে দেবে : এহসানুল মাহবুব জুবায়ের


১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:১৩

মৌলভীবাজার সংবাদদাতা: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও কেন্দ্রীয় যুব বিভাগের সভাপতি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জাতি জেগে উঠেছে। ফ্যাসিবাদের সব চিহ্ন এ জাতি নিশ্চিহ্ন করে দেবে। যেখান থেকে ফ্যাসিবাদের জন্ম হয়েছে, লালন হয়েছে, ফ্যাসিবাদ যেখানে এ জাতিকে ধ্বংস করেছে, তার সবগুলো সিনবল জাতি নিশ্চিহ্ন করে দেবে, ইনশাআল্লাহ।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বিকেলে মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মৌলভীবাজার জেলা শাখার যুব বিভাগের আয়োজনে যুব সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।
তিনি বলেন, আজকে এ জাতি ঐক্যের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে ফ্যাসিবাদ যত শক্তিশালী হোক, যত আক্রমাণত্মক হোক, যত খুন আর গুম করুক, যতগুলো আয়নাঘর তৈরি করুক, যতগুলো ক্রসফায়ার করুক কোনো কিছু দিয়ে তাদের শেষ করা সম্ভব হয় না। এ জাতি যখন জেগে ওঠে, তখন আর তাদের দমাতে কেউ পারে না।
যুব বিভাগ মৌলভীবাজার জেলার সভাপতি মো. ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আনোয়ার হোসেন চৌধুরী মুর্শেদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের আমীর ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহেদ আলী, সাবেক জেলা আমীর আব্দুল মান্নান, নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুর রহমান, জেলা সেক্রেটারি মো. ইয়ামীর আলী, জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ও মৌলভীবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা আমিনুল ইসলাম, পৌর জামায়াতের আমীর হাফেজ তাজুল ইসলাম ও রাজনগর উপজেলা জামায়াতের আমীর আবু রাইয়ান শাহিন।
প্রধান অতিথি বলেন, ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশকে একটি নিয়মতান্ত্রিক বাংলাদেশ থেকে ফ্যাসিবাদের দিকে নিয়ে গেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে, সমাজব্যবস্থাকে, রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে, জাতীয় সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে, ছাত্রসমাজকে, যুবসমাজকে আমাদের সবকিছুকে ধ্বংসের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে গেছে। লুটপাট যা করেছে, তার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ এসেছে। প্রতি বছর তারা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার লুটপাট করেছে। টাকার হিসেবে যা ২৮ হাজার কোটি টাকার ওপর। এ দেশের সব সম্পদকে লুটপাট করে দলীয়ভাবে তারা সম্পদের পাহাড় গড়েছে। এমপি হওয়ার আগে যাদের সম্পদের বিবরণ ছিল এক কোটি টাকা এমপি হওয়ার পরে একেক জন মালিক হয়েছেন শতাধিক কোটি টাকার। ব্যাংকের সব টাকা তারা লুটপাট করেছেন। ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হয়ে গেছে। ব্যাংকে জমানো টাকা পাওয়া যায় না, এলসি করা যায় না, আমদানিকারকরা আমদানি করতে পারছে না। সকল কিছু তারা ধ্বংস করে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আজকে যুবকদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছে, মাদক তুলে দেওয়া হয়েছে, যুবকদের জাতি বিনাসী সব কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা আমাদের যুবসমাজকে অস্ত্রমুক্ত, মাদকমুক্ত করতে চাই। তাদেরকে নৈতিক শিক্ষায় উজ্জীবিত করে জাতি এবং রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোয় নেতৃত্বের আসনে দেখতে চাই।
এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ফ্যাসিবাদ যে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, যে গুম খুন করেছে, জাতির ওপর যে ভয়ংকর দানবের মতো চেপে বসেছিল, এই ফ্যাসিবাদের বিচার হবে। আমাদের যারা আহত হয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, গত ১৫ বছরে যারা শহীদ হয়েছেন, বিশেষ করে জুলাই বিপ্লবে যারা শহীদ হয়েছেন, সেই ফ্যাসিবাদের বিচার করতে হবে। ফ্যাসিবাদের ঠাই বাংলাদেশে হবে না। যারা আমাদের সম্পদ পাচার করেছেন, তাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে এবং পাচার হওয়া সম্পদকেও ফিরিয়ে আনা হবে।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও সেসব সন্ত্রাসীদের এখনো আইনের আওতায় আনা হয়নি। তারা এখনো আমাদের হুংকার দেয়। দেশে ঢুকবো, খুন করবো, গুম করবো, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেব। তারা এখনো এ জাতির শক্তি দেখেনি। এই ফ্যাসিবাদকে দেশীয়, আন্তর্জাতিকভাবে, ডিপ্লোমেটিকভাবে মোকাবিলা করতে হবে। এর আগে শুক্রবার সকাল থেকে দিনব্যাপী মৌলভীবাজার পৌর মিলনায়তনে জেলা জামায়াতের আয়োজনে শিবিরের সাবেক সদস্য ও সাথীদের নিয়ে আয়োজিত শিক্ষাশিবির অংশগ্রহণ করেন তিনি।