বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট এলাকা এখন কোলাহলমুক্ত


৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:১৩

সেলিম রেজা, বেনাপোল : বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট এলাকা এখন কোলাহলমুক্ত, নেই কোনো যাত্রীর চাপ। প্রতিদিন শুয়ে-বসে দিন কাটাচ্ছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে ভারত সরকার বিধিনিষেধ আরোপ করায় কমেছে দু’দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার। আগে প্রতিদিন যেখানে সাড়ে ৭ থেকে ৮ হাজার যাত্রী পারপার হতো, এখন সেখানে প্রতিদিন পারাপার হচ্ছে হাজারের মতো যাত্রী।
ইমিগ্রেশন সূত্র জানিয়েছে, ২২ থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ভারতে গেছে ৭ হাজার ৫৭৯ আর ভারত থেকে এসেছে ৭৪৩৯ পাসপোর্টধারী যাত্রী। ৮ দিনে পারাপার হয়েছে মোট ১৫ হাজার ১৮ যাত্রী। যাত্রী পারাপার কমে যাওয়ায় ‘ভ্রমণকর’ বাবদ রাজস্ব আদায়ও কমে যাচ্ছে। ৫ আগস্টের পর থেকে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছেন, বছরে এ বন্দরে ভ্রমণ কর থেকে রাজস্ব আদায় হয় প্রায় দুইশ কোটি টাকা। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগে প্রতি মাসে গড়ে ১৫ কোটি টাকার রাজস্ব আয় হতো। সেখানে বর্তমানে রাজস্ব আদায় হচ্ছে গড়ে মাসে ৩ কোটি টাকা।
ইমিগ্রেশন সূত্র জানিয়েছে, বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে ২২ জানুয়ারি ১ হাজার ৮২৪ যাত্রী পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে ভারতে গেছে ৯৭৩ জন, এসেছে ৮৫১ জন। ২৩ জানুয়ারি ১ হাজার ৮২৮ যাত্রী পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে ভারতে গেছে ৯৩৭ জন, এসেছে ৮৯১ জন। ২৪ জানুয়ারি পারাপার হয়েছে ১ হাজার ৮৪৭ জন, এর মধ্যে ভারতে গেছে ৯৫৪ জন, এসেছে ৮৯৩জন। ২৫ জানুয়ারি পারাপার হয়েছে ১ হাজার ৫১৩ জন। এর মধ্যে ভারতে গেছে ৬৬৮ জন, এসেছে ৮৪৫ জন। ২৬ জানুয়ারি পারাপার হয়েছে ১ হাজার ৮১১ জন। এর মধ্যে ভারতে গেছে ৮৭০ জন, এসেছে ৯৪১ জন। ২৭ জানুয়ারি পারাপার হয়েছে ১ হাজার ৯৭১ জন। এর মধ্যে ভারতে গেছে ১ হাজার ৭৪ জন, এসেছে ৮৯৭ জন। ২৮ জানুয়ারি পারাপার হয়েছে ১ হাজার ৯৪৩ জন। এর মধ্যে ভারতে গেছে ৯৮২ জন, এসেছে ৮৯৭ জন। ২৯ জানুয়ারি পারাপার হয়েছে ২ হাজার ২৮১ জন। এর মধ্যে ভারতে গেছে ১ হাজার ১২১ জন, এসেছে ১ হাজার ৬০ জন।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন ওসি ইমতিয়াজ মো. আহসানুল কাদের ভূঞা বলেন, বাংলাদেশ থেকে যারা ভারতে যায়, কেবলমাত্র সেই সব যাত্রী প্রত্যেকেই ‘ভ্রমণকর’ বাবদ এক হাজার টাকা এবং ‘প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল’ ফি বাবদ ৫৫ টাকা দিয়ে থাকে। ফেরত আসা যাত্রীরা এ করের আওতামুক্ত। ‘স্বাভাবিক সময়ে বেনাপোল দিয়ে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৪ হাজার থেকে পাঁচ হাজার যাত্রী ভারতে যেত।
এখন সেটা কমে গড়ে ৮০০ থেকে এক হাজারের মধ্যে এসে দাঁড়িয়েছে।’
ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) সভাপতি মো. রফিউজ্জামান বলেন, বাংলাদেশিদের বিদেশ ভ্রমণ কমে গেছে মূলত ভিসাপ্রাপ্তি জটিল হওয়ার কারণে। বর্তমানে ভারত ভিসা দিচ্ছে না। গত কয়েক মাসে যারা ভারত ভ্রমণ করেছেন, তাদের বেশিরভাগ ভিসাই আগে ইস্যু করা। বর্তমানে ভারতের ভিসা সীমিত থাকায় সামনের দিনগুলোয় বাংলাদেশি পর্যটকের বিদেশযাত্রা আরও কমবে। যার প্রভাব পড়েছে সরকারের ভ্রমণকর আদায়ের ক্ষেত্রে। ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ায় ফরিদপুরের রণধীর সাহা, ঢাকার রমেশ শীল গত ৩১ জানুয়ারি শুক্রবার ভারত থেকে ফিরেছে।