আবু বকর হত্যা মামলা পুনরুজ্জীবিতের দাবি বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের


৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:৩৭

বিডিনিউজ : প্রায় দেড় দশক আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী আবু বকর হত্যা মামলা পুনরুজ্জীবিতের দাবি জানিয়েছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের পর আত্মপ্রকাশ পাওয়া সংগঠনটি গত ৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ তোলে, আবু বকরের মৃত্যু হয় পুলিশ সদস্যদের গুলিতে, যার নেতৃত্বে ছিলেন শাহবাগ থানার তৎকালীন ওসি রেজাউল করিম।
‘কিন্তু জালিয়াতি করে হত্যার দায় এড়ানো হয়। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের ফলে ওই হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। তাই দেড় দশক আগের হলেও মামলাটি রিওপেনিং করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলন হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে। তাতে লিখিত বক্তব্যে ৯টি দাবি তুলে ধরেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আবু বকর হত্যার ‘সুপ্রিম রেসপন্সিবল অথরিটি’ হিসেবে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, আইজিপি নুর মোহাম্মদ, ডিএমপি কমিশনার এ কে এম শহিদুল হক ও রমনা জোনের ডিসিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ মনে করে, আবাসিক হলে পুলিশ ঢুকিয়ে আবু বকর সিদ্দিককে হত্যার পরিবেশ সৃষ্টির পেছনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ ও প্রক্টর কে এম সাইফুল ইসলামেরও দায় আছে। এ কারণে তাদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিচারে কমিশন গঠন; এ এফ রহমান হলের সামনে স্মৃতিমিনার করা এবং আবু বকরের পরিবারের জন্য ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবিও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সাংগঠনিক প্রধান শফিউর রহমান, সদস্য সচিব হাসান মোহাম্মদ আরিফ, সহকারী সদস্য সচিব মাসুম বিল্লাহ ও সদস্য মামুনুর রশিদ উপস্থিত ছিলেন।
আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টায় ২০১০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। পরে সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ।
ওই সময় গুরুতর আহত হন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আবু বকর ছিদ্দিক। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান।
ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১০ সালের ২ মার্চ সিন্ডিকেট সভায় ১০ ছাত্রকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
তাদের দুজন বহিষ্কারাদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করে। শুনানি করে হাইকোর্ট ২০১২ সালে বহিষ্কারাদেশ অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।
হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে গত মাসে আপিল করার সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গত ১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’