বাংলাদেশের শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে চীনের আরও সক্রিয় ভূমিকা প্রত্যাশা : ডা. শফিকুর রহমান
৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:০০
গত ২৬ জানুয়ারি রোববার গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর বাজারসংলগ্ন ওয়ামি কমপ্লেক্স এলাকায় চীনা দূতাবাসের সৌজন্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান
সোনার বাংলা ডেস্ক: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান চীনের সহযোগিতার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে চীনের ভূমিকা অনস্বীকার্য। চীনা রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে বাংলাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য এ সহায়তা অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে চীনের আরও সক্রিয় ভূমিকা প্রত্যাশা করি। চায়না ভাষা শেখানোর জন্য একটি আধুনিক একাডেমি গড়ে তোলার প্রয়োজন রয়েছে।
তিনি গত ২৬ জানুয়ারি রোববার গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর বাজারসংলগ্ন ওয়ামি কমপ্লেক্স এলাকায় চীনা দূতাবাসের সৌজন্যে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘দরিদ্র জনগণের জন্য সহায়তা প্রদান মহান কাজ। আল্লাহ যেন তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করেন- যাতে তারা ভবিষ্যতে অন্যদের সহায়তা করতে পারে। গত রোববার সকালে গাজীপুরের সফিপুরে ওয়ামি কমপ্লেক্সে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। অনুষ্ঠানের সূচনা হয় পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত এবং বাংলাদেশ ও চীনের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে।
ইয়াও ওয়েন জামায়াতে ইসলামীর মানবিক কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে বলেন, “জামায়াতের সহযোগিতায় পরিচালিত এতিমখানা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গরিব-এতিম শিশুদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। ভবিষ্যতে চীন এসব শিক্ষার্থীদের চীনে প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দিতে আগ্রহী।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘চীন বাংলাদেশের চিকিৎসা, শিক্ষা এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ বিভিন্ন উন্নয়ন খাতে কাজ করতে চায়। আমরা বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে পাশে থাকব। ২০২৫ সালটি চীন ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী। এ সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে’।
বাংলাদেশ-চীন বন্ধুত্ব এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, চীন এবং বাংলাদেশের সম্পর্কের ইতিহাস দীর্ঘদিনের। বিখ্যাত পরিব্রাজক হিউয়েন সাংয়ের ভ্রমণের সময় থেকেই এ সম্পর্কের শেকড় স্থাপন হয়। ১৯৭৬ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে দুই দেশের মৈত্রী আরো সুদৃঢ় হয়েছে।
বিগত কয়েক দশকে চীন বাংলাদেশে বিভিন্ন বড় প্রকল্পে সহযোগিতা করেছে। চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু, কর্ণফুলী টানেল এবং আলোচিত পদ্মা সেতুর কারিগরি সহায়তা এর অন্যতম উদাহরণ। এছাড়া সড়ক, রেল, বিদ্যুৎ খাত এবং কোভিড-১৯ প্রটোকলের আওতায় সিনোফার্মের টিকা সরবরাহের মতো উদ্যোগগুলো দুই দেশের সম্পর্কের দৃঢ়তার পরিচয় বহন করে।
রাষ্ট্রদূত এইচ. ই ইয়াও ওয়েন এবং চীনা দূতাবাসের এ উদ্যোগ বাংলাদেশের জনগণের প্রতি চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার নিদর্শন। আশা করা যায়, চীনের এ মানবিক ও উন্নয়নমূলক সহায়তা ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে এবং দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর ও নিবিড় হবে।
বক্তব্য শেষে প্রধান অতিথি জামায়াত আমীর এবং চীনা রাষ্ট্রদূত কালিয়াকৈরের সহস্রাধিক সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে শীতবস্ত্র ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন। চিনা রাষ্ট্রদূত এ সময় সবার হাতে শীতের কম্বল তুলে দেন। এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আটা, চাল, ডালসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানটি স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উচ্ছ্বাস সৃষ্টি করে এবং মানবিক সহায়তার এমন উদাহরণ দুই দেশের বন্ধুত্বকে আরও সুদৃঢ় করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে গাজীপুর মহানগর জামায়াতের আমীর আধ্যাপক জামাল উদ্দিন, জেলা জামায়াতের আমীর ড. জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর নায়েবে আমীর ও গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ) আসনের জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী মো. খায়রুল হাসান, শিবিরের সাবেক সভাপতি ও গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী সালাহউদ্দিন আইউবীসহ জামায়াতের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিপথে ঠেলে দিয়েছে। পথশিশুদের হাতে বই-কলম তুলে না দিয়ে তাদের দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতার মাদক বিক্রি ও সেবন করিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী পথশিশুদের জন্য ঢাকা শহরে বস্তিভিত্তিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করে তাদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার কাজ করছে।
গত ২৭ জানুয়ারি সোমবার সকালে রাজধানীর জুরাইন এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর পরিচালিত ৫টি বস্তিভিত্তিক স্কুলের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে শীতবস্ত্র উপহার ও বই উৎসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, কোনো জনপদের শিশুদের অবহেলা করা যাবে না। মনে রাখতে হবে, কয়লা পুড়িয়ে সোনা তৈরি হয়। তাই সকল ধর্ম-বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠীর শিশুদের সমান অধিকার দিয়ে আগামী দিনে দেশ ও জাতির কর্ণধার হিসেবে তাদের তৈরি করতে হবে।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য শাহীন আহমেদ খানের পরিচালনায় শীতবস্ত্র উপহার প্রদান ও বই উৎসব অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শ্যামপুর-কদমতলী জোন পরিচালক জয়নাল আবেদীন, কদমতলী দক্ষিণ থানা আমীর ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান, শ্যামপুর-যাত্রাবাড়ী থানা আমীর মাওলানা জাকির হোসেন প্রমুখ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।