প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না- অধ্যাপক মুজিবুর রহমান


৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:০০

প্রয়োজনীয় সংস্কার না করে নির্বাচন দিলে জনগণ মেনে নেবে না উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মূল দায়িত্ব হলো রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার করা। যেই আওয়ামী লীগের হাতে রাষ্ট্রের সকল ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে, সেই আওয়ামী লীগের দোসরদের বহাল রেখে প্রত্যাশিত সংস্কার হবে না। এটা হবে জনগণকে ধোঁকা দেওয়ার সংস্কার। তাই সংস্কারের জন্য সৎ ও দেশপ্রেমিক নাগরিকদের কাজে লাগাতে হবে।
গত ২৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ টিএন্ডটি শ্রমিক কর্মচারী আদর্শ ফেডারেল ইউনিয়নের বিশেষ সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, ইসলামী শ্রমনীতি বাদ দিয়ে মানুষের তৈরি শ্রমনীতির ফলে শ্রমিক শোষিত হচ্ছে, শ্রমজীবীরা বৈষম্যের শিকার হয়েছে। ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন করা হলে সকল পেশাজীবী তাদের ন্যায্য অধিকার লাভ করবে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান না করে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করলে দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গল নয় উল্লেখ করে অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি পূরণ করতে হলে জান ও মালের ক্ষতি হয়। তাই যারা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে রয়েছে, তাদের নৈতিক দায়িত্ব মানুষের দাবি-দাওয়া আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা। পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ এদেশের মানুষের মৌলিক অধিকার ভূলুণ্ঠিত করেছে। মানুষকে কথা বলার সুযোগও দেয়নি। নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছে, যা কোনো গণতান্ত্রিক দেশে সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ টিএন্ডটি শ্রমিক কর্মচারী আদর্শ ফেডারেল ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম শামীমের পরিচালনায় রমনা বিটিসিএল চত্বরে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি মো. আব্দুস সালাম। সভায় বাংলাদেশ টিএন্ডটি শ্রমিক কর্মচারী আদর্শ ফেডারেল ইউনিয়নের সারা দেশ থেকে আগত নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সভায় সংগঠনের সেক্রেটারি মো. রুহুল আমিন, বিটিসিএল সার্ভিসের মান উন্নয়ন, সংযোগ ও গ্রাহক বৃদ্ধি এবং কর্মচারীদের সার্বিক উন্নয়নের জন্য সরকারের কাছে ১৫ দফা দাবি উপস্থাপন করেন।
বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক পরিষদ: গত ২৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের অন্তর্গত বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক পরিষদ উদ্যোগে কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির এক সভা রাজধানীর হাতিরপুল এলাকার এক রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয়। কলেজ শিক্ষক পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক নূর নবী মানিক এর সভাপতিত্বে, জেনারেল সেক্রেটারি অধ্যাপক রবিউল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর, সাবেক এমপি ও আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের শিক্ষা বিভাগের উপদেষ্টা অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রফেসর ড. এম কোরবান আলী ও জেনারেল সেক্রেটারি অধ্যাপক এবিএম ফজলুল করীম।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক পরিষদ নৈতিকতাসম্পন্ন আদর্শ শিক্ষক তৈরির কাজ করে যাচ্ছে। একটি নৈতিকতাসম্পন্ন আদর্শ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অপরিসীম। সারা দেশে যতগুলো কলেজ আছে, সেই সব কলেজের শিক্ষকদের নিকট দাওয়াত পৌঁছে দিয়ে তাদের সংঘবদ্ধ করা। এর জন্য প্রয়োজন হলো কুরআন হাদিস অধ্যয়নের মাধ্যমে নিজেদের নৈতিক মান উন্নত করা। আপনি যদি নিজে নৈতিকতাসম্পন্ন আদর্শ শিক্ষক না হয়ে অন্যকে দাওয়াত দেন, তাহলে সে দাওয়াত ফলপ্রসূ হবে না।
তিনি বলেন, আমাদের সমাজে শিক্ষকদের আলাদা মর্যাদা আছে। মানুষ তাদেরকে সম্মান করে, শ্রদ্ধা করে। এজন্য শিক্ষকদের শুধু শিক্ষকতা পেশার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। বলা হয় ‘শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড’। আর এ শিক্ষা যারা দেন, তাদের নৈতিক মেরুদণ্ড যদি ঠিক না হয়, তাহলে আদর্শ জাতি গঠন করা সম্ভব হবে না। শিক্ষকদের আদর্শ শিক্ষক তৈরির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা, অভিভাবকদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং সমাজের মানুষের সাথে সম্পর্ক বাড়াতে হবে, সমাজে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে।
তিনি আরো বলেন, গত ২৬ জানুয়ারি তারিখে ন্যায্য দাবি-দাওয়া আদায়ে আন্দোলন করা ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের ওপর পুলিশ টিয়ার শেল, সাউন্ড গ্রেনেড, লাঠিপেটা করা ঠিক হয়নি। সরকার তাদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে পারতো। কিন্তু তা না করে অযথা তাদের ওপর আক্রমণ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। আমরা অবিলম্বে ইবতেদায়ি মাদরাসার যৌক্তিক দাবি মেনে নেয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রফেসর ড. এম কোরবান আলী বলেন, সময় এসেছে সংগঠনকে শক্তিশালী করার। ৯টি শিক্ষক পরিষদকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। ফেডারেশনের কাজকে গতিশীল করতে কলেজ শিক্ষক পরিষদকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। শিক্ষকদের নিয়ে ঐক্যদ্ধভাবে কাজ করলে শিক্ষকদের সমস্যা সমাধানে যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারব।
অধ্যাপক এবিএম ফজলুল করীম বলেন, বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনকে মজবুতীকরণের বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রতিটি জেলা, থানা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমিটি গঠন করতে হবে। প্রতিটি শিক্ষকের কাছে এ সংগঠনের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে। শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।