চার প্রদেশের প্রস্তাব নিয়ে যুক্তিতর্ক
২৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১১:১৫
॥ মুজতাহিদ ফারুকী ॥
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গত ১৫ জানুয়ারি বুধবার রিপোর্ট জমা দেয় সংবিধান, নির্বাচন, পুলিশ ও দুর্নীতি দমন কমিশন নিয়ে গঠিত সংস্কার কমিশন।
রাষ্ট্র সংস্কারের তাগিদ থেকে অন্তর্বর্তী সরকার এসব কমিশন গঠন করেছে। এর আগে গত ডিসেম্বরে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান ও সদস্যরা তাদের কিছু সম্ভাব্য সুপারিশ তুলে ধরেন। সেসব সুপারিশের কিছু বিষয় নিয়ে পরে; বিশেষ করে প্রশাসন ক্যাডারের পক্ষ থেকে প্রবল আপত্তি তোলা হয়। সচিবালয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টির মতো অবস্থা তৈরি করা হয়। সেটি যেকোনোভাবে হোক আপাতত চাপা পড়েছে। কিন্তু আলোচনায় আছে প্রফেসর আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ। তাদের সব সুপারিশ পেশ করা হয়নি। তাই বিস্তারিত বিষয়ে আলোচনার সুযোগ নেই। আমরা আজকের আলোচনায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও আলোচিত সম্ভাব্য সুপারিশটি নিয়ে আপাতত কথা সীমিত রাখবো।
সংবিধান সংস্কার কমিশন যেসব সুপারিশ করতে যাচ্ছে, তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো দেশকে পৃথক চারটি প্রদেশে বিভক্ত করা। দেশের পুরনো যে চারটি বিভাগ ছিল, সেগুলো নিয়ে গঠিত হবে একেকটি প্রদেশ এবং একটি কেন্দ্রীয় সরকার থাকবে। প্রদেশগুলো হলো- ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা।
কমিশনের দায়িত্বশীল সূত্রমতে, প্রদেশগুলো কীভাবে পরিচালিত হবে, অর্থাৎ শাসনকাঠামো কেমন হবে, তাদের দায়িত্ব কী হবে, কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে তার সম্পর্ক কেমন হবে, সেসব বিষয় এখনো চূড়ান্ত হয়নি। বিষয়টি সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চূড়ান্ত করার প্রয়োজন রয়েছে।
কমিশন ভাবছে, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছাড়া অন্যান্য প্রশাসনিক ক্ষমতা স্থানীয় প্রদেশের হাতে ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে। কমিশনের মতে, এ বিকেন্দ্রীকরণ স্থানীয় শাসন ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হবে। প্রদেশে বিভক্তির এ প্রক্রিয়া মূলত বহুল আলোচিত বিকেন্দ্রীকরণেরই উদ্দেশ্যে। এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের কিছু দায়িত্ব ও ক্ষমতা প্রাদেশিক সরকারের কাছে চলে যাবে।
এ ধরনের চিন্তা এদেশে একেবারে নতুন, তা নয়। তবে সেগুলো নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে তেমন আলোচনা বা চর্চা হয়নি। একসময় সাবেক প্রেসিডেন্ট জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দেশকে সাতটি প্রদেশে বিভক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তারা মনে করতেন, সাতটি প্রদেশ করলে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ হবে এবং রাজধানীর ওপর চাপ কমবে। তিনি বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে প্রাথমিক পর্যায়ে দেশের ছয়টি স্থানে হাইকোর্টের ছয়টি বেঞ্চ গঠন করেন। কিন্তু পরে আদালত সেটি অবৈধ ঘোষণা করে দেশের এককেন্দ্রিক অস্তিত্বের যুক্তি দেখিয়ে।
সম্প্রতি গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর নতুন পরিস্থিতিতে এ বিষয়ে অনেকে কথা বলেছেন। এ প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে দেশের সাধারণ জনগণ ও প্রশাসনিক স্তরে কতটা সুবিধা আসবে, তা নিয়ে নানা মতবিনিময় চলছে। কেউ কেউ নিবন্ধ লিখে নিজেদের মতামত জানিয়েছেন। একাধিক সেমিনার, গোলটেবিলের আয়োজন হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নই। তাই বিশেষজ্ঞরা যেসব মতামত তুলে ধরেছেন পাঠকের সামনে, সেগুলো উপস্থাপন করবÑ যাতে তারা এ বিষয়টি সম্যক উপলব্ধি করতে এবং নিজস্ব মত তৈরি করতে পারেন।
এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন পাঁচটি প্রদেশ গঠনের প্রস্তাব করেছিলেন। এ বিষয়ে তিনি পত্রপত্রিকায় লিখেওছিলেন।
কেউ কেউ বলছেন, চারটি প্রদেশ গঠন হলে, প্রতিটি প্রদেশের নিজস্ব প্রশাসনিক কাঠামো ও শক্তিশালী সরকার থাকবে। এতে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও স্থানীয় সমস্যাগুলোর সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে। প্রশাসনিক দক্ষতা বাড়বে। বর্তমানে দেশের প্রশাসনিক কাঠামো কেন্দ্রীভূত। এটি বিকেন্দ্রীভূত হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের অনেক দায়িত্ব স্থানীয় পর্যায়ে চলে আসবে। ফলে সরকারের সেবা জনগণের কাছে আরও দ্রুত পৌঁছাবে এবং কার্যক্রমে গতিও বাড়বে, যা দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
সম্পদ বিতরণ : বর্তমানে কিছু অঞ্চলে সরকারি উন্নয়ন তেমনভাবে ছড়ায় না। প্রদেশ গঠন হলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের জন্য উন্নয়ন পরিকল্পনা, বাজেট ও সম্পদের বণ্টন আরও কার্যকরী হতে পারে। এর ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
স্থানীয় প্রয়োজন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত : প্রতিটি প্রদেশের নিজস্ব সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও ভূগোলগত বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এসব বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় সরকার স্থানীয়ভাবে আরও যথাযথ ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। যেমন- কৃষি, শিল্প, পরিবহন বা শিক্ষা-] প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রদেশের নিজস্ব চাহিদা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।
সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিক (ঢাকা মেইল) এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণ করে। সেখানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নিগার সুলতানা একটি দৈনিককে বলেন, প্রদেশে বিভক্ত হলে দেশের অর্থনীতি, অবকাঠামো এবং মানবসম্পদ আরও সমানভাবে বিতরণ করা যাবে, যা আঞ্চলিক বৈষম্য কমাতে সাহায্য করবে। প্রতিটি প্রদেশ তাদের নিজস্ব শক্তির ওপর মনোনিবেশ করে কৃষি, শিল্প বা পর্যটনসহ বিভিন্ন খাতের উন্নয়ন করতে পারবে, যা স্থানীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবে।
ড. সুলতানা আরও বলেন, প্রদেশ গঠনে স্থানীয় শিল্পের উন্নয়নও বাড়বে। প্রদেশগুলো তাদের অঞ্চলের সম্পদ ও দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন খাত যেমন কৃষি, টেক্সটাইল, প্রযুক্তি ইত্যাদি উন্নত করতে পারবে। এর ফলে প্রাদেশিক পর্যায়ে কর্মসংস্থান বাড়বে, যা স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক হবে।
একইসঙ্গে ড. সুলতানা এ কথাও বলেন যে, প্রদেশে বিভক্ত করার ক্ষেত্রে অনেক রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ থাকতে পারে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো প্রদেশগুলোর মধ্যে সমন্বয় এবং স্থিতিশীলতা রক্ষা করা। একাধিক প্রদেশের নিজস্ব প্রশাসন থাকলে, নীতিগুলোর সমন্বয় করা এবং সারা দেশে অভিন্নতা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে উঠবে। এর জন্য সাংবিধানিক ও আইনগত বড় ধরনের পরিবর্তন প্রয়োজন হবে, যা সময়সাপেক্ষ হবে।
আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো উন্নয়ন প্রচেষ্টায় ভারসাম্যহীনতা। কিছু প্রদেশ আরও উন্নত হতে পারে, কিন্তু অন্যান্য প্রদেশ যদি উন্নয়নে পিছিয়ে পড়ে, তাহলে এটি ওই অঞ্চলগুলোকে আরও অনগ্রসর করে তুলতে পারে। এর ফলে অভ্যন্তরীণ অভিবাসন বাড়তে পারে, যা সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
এর চেয়েও বড় চ্যালেঞ্জের দিকে তিনি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, আঞ্চলিক পরিচয়ের (যেমন সাংস্কৃতিক, ভাষাগত এবং জাতিগত পার্থক্য) প্রাধান্য গুরুত্ব পেলে জাতিগত বিভেদ, আঞ্চলিক রাজনৈতিক আন্দোলন এবং প্রদেশগুলোর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সৃষ্টি হতে পারে। এটি জাতীয় ঐক্যের অনুভূতি দুর্বল করতে পারে এবং রাজনৈতিক বিভক্তির সৃষ্টি করতে পারে। যদি আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়ে বা স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন বৃদ্ধি পায়, তাহলে কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য জাতীয় নিরাপত্তা বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়তে পারে। এজন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো- প্রাদেশিক সরকারের সক্ষমতা নিশ্চিত করা, কার্যকর ও স্বচ্ছ শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক নঈম সুলতান মনে করেন, দেশকে প্রদেশে বিভক্ত করলে বৈষম্য সৃষ্টি হতে পারে। আমাদের দেশের আয়তনের জন্য এটি যুক্তিযুক্ত নয়। এছাড়া আমলাতন্ত্র আমাদের ওপর চেপে বসবে এমন আশঙ্কাও ব্যক্ত করেন তিনি।
দেশকে চারটি প্রদেশে বিভক্ত করার চিন্তা বিকেন্দ্রীকরণ এগিয়ে নেওয়ার একটি উদ্যোগ হিসেবে দেখা গেলেও এ নিয়ে অনেক মতবিরোধ এবং বাস্তবায়ন-সংক্রান্ত জটিলতা জড়িত। প্রদেশ গঠনের কিছু সুবিধা অবশ্যই আছে। আবার অনেক চ্যালেঞ্জও আছে। বিশেষ করে এর জন্য একটি
নতুন প্রশাসনিক কাঠামো তৈরি করতে হবে। এজন্য ব্যাপক পরিকল্পনা ও কাঠামো প্রণয়ন করতে হবে। অনেকেই মনে করেন, প্রদেশ গঠন নতুন সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে; যেমন প্রশাসনিক অস্থিরতা, অতিরিক্ত খরচ এবং সম্পদের সঠিক বণ্টন নিয়ে বিতর্ক।
স্থানীয় শাসন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। বিকেন্দ্রীকরণ বা ডিসেন্ট্রালাইজেশন বিষয়ে তিনি বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বইও লিখেছেন। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশ ভৌগোলিকভাবে একটি ছোট দেশ। বর্তমানে বিদ্যমান বিভাগগুলোয় স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করলেই যথেষ্ট, এজন্য নতুন প্রদেশ গঠনের ঝামেলায় যাবার দরকার নেই।
আমরা এ বিষয়ে আলাদা মতামত জানানোর প্রয়োজন বোধ করছি না। শুধু বলতে চাই, প্রদেশ বলতে কোনো একটি দেশ বা রাষ্ট্রের অধীনে একটি প্রশাসনিক অঞ্চল বা বিভাগকে বোঝানো হয়। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ভারতের মতো বিশাল আয়তনের দেশগুলো শাসনের সুবিধার জন্য ভৌগোলিক, ভাষাগত বা জাতিগত স্বাতন্ত্র্যের ভিত্তিতে একেকটি রাজ্য বা প্রদেশ গঠন করেছে। যেমনÑ ভারতে বাঙালিদের পশ্চিম বঙ্গ, উড়িয়াদের উড়িষ্যা, পাঞ্জাবি বা শিখদের পাঞ্জাব, নাগাদের নাগাল্যান্ড ইত্যাদি ২৮টি রাজ্য রয়েছে। প্রায় প্রতিটি রাজ্যই বাংলাদেশের চেয়ে আয়তনে বড়। সেগুলোকে ছোট ছোট রাজ্যে বিভক্ত করে একশ’ থেকে দেড়শ’টি রাজ্য গঠনের প্রস্তাব কিন্তু কখনো ওঠেনি। বাংলাদেশের আয়তন ১,৪৮,৫৬০ বর্গকিলোমিটার, যা ভারত বা যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় সামান্য। তাছাড়া বাংলাদেশে মাত্র হাতেগোনা কিছু ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ ছাড়া বাকি সবাই একই ভাষাভাষী এবং একই জাতিগত ও ধর্মীয় পরিচয় বহন করে। এমন এককেন্দ্রিকতা পৃথিবীতেই বিরল।
ওপরে প্রদেশ গঠনের যেসব সুবিধার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলো মূলত আমাদের রাজনৈতিক ও শাসনতান্ত্রিক ব্যর্থতার কারণে ঘটেছে। সম্পদের বণ্টন যথাযথ না হওয়া, উন্নয়নে ভারসাম্যহীনতা, অঞ্চলভিত্তিক কৃষি ও শিল্পের বিকাশ ঘটাতে না পারাসহ বৈষম্য ও অনগ্রসরতার উদাহরণ আছে সবকিছুরই মূল কারণ ওই রাজনৈতিক ও শাসনতান্ত্রিক ব্যর্থতা।
এখন দেশকে চারটি ভাগে ভাগ করলে সেরকম যোগ্য লোক কোথায় পাওয়া যাবে, যারা তাদের প্রদেশকে স্বর্গরাজ্য বানিয়ে ফেলবেন?
গত ৫৩ বছরে যেসব রাজনৈতিক দল ও দলের নেতা দেশ শাসন করেছে, সেই আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিই তো প্রদেশগুলোয়ও দাপিয়ে বেড়াবে। এরা কতটা সুশাসন কায়েম করবে, মানুষের অধিকার ও উন্নয়ন নিশ্চিত করবে, তা নিয়ে অনেকেরই ঘোর সংশয় আছে? আমাদের ধারণা, দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠন অথবা প্রদেশ গঠনের এসব প্রস্তাব জনগণের অপরিমেয় অর্থের অপচয় ঘটাবে। এতে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের বিস্তার ঘটবে। বিশেষ করে প্রদেশ গঠন করার পরিণতি হবে ভয়াবহ। আদর্শহীন রাজনীতিক ও আমলাদের প্রভাব চারগুণ বাড়বে। যে আমলাতন্ত্র স্বৈারাচারের দোসর হয়ে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন দীর্ঘায়িত করে, সেই আমলাতন্ত্র নিয়ন্ত্রণহীন ফ্রাঙ্কেনস্টাইন হয়ে উঠবে। আমলারা এরই মধ্যে কতটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, তা কারও অজানা নয়।
যাই হোক, সংবিধান সংস্কার কমিশন এখনো বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা করছে। চূড়ান্ত সুপারিশমালা প্রণয়নের আগে আরও মতামত সংগ্রহ করবে। সুপারিশ চূড়ান্ত হলে তা সরকারের কাছে পেশ করা হবে।
এরপর সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলসহ সব অংশীজনদের নিয়ে জাতীয় সংলাপের আয়োজন হতে পারে। জাতীয় ঐকমত্য হলে সংস্কার বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে পারে সরকার। তবে আমাদের বিশ্বাস, অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য এত বড় একটি পদক্ষেপ নেওয়া যথার্থ হবে কিনা, ভেবে দেখার দরকার আছে। জাতীয় সংসদের অনুমোদন ছাড়া এ প্রস্তাব বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এটি নির্বাচিত সরকারের জন্য রেখে দেয়াই সম্ভবত যুক্তিযুক্ত।