সংক্ষিপ্ত বিশ্ব সংবাদ


২ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:৫৬

যুদ্ধে ক্ষতির শিকার রেকর্ডসংখ্যক শিশু

জাতিসঙ্ঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানায়, ২০২৪ সালে গাজা, ইউক্রেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে যুদ্ধের কারণে হাজার হাজার শিশু নিহত হয়েছে। যুদ্ধে যেইসংখ্যক শিশু নিহত হয়েছে, তার চেয়ে বেশিসংখ্যক অপুষ্টিতে ভুগছে। যেতে পারছে না স্কুলে এবং পাচ্ছে না টিকার মতো অতিপ্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা। গত ২৮ ডিসেম্বর শনিবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, রেকর্ডসংখ্যক শিশু যুদ্ধ আক্রান্ত এলাকায় বাস করছে কিংবা বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অতীতে কখনো এতসংখ্যক শিশু আক্রান্ত হয়নি। সংস্থাটির অনুমান, সারা বিশ্বে ৪৭৩ মিলিয়নের বেশি শিশু যুদ্ধ আক্রান্ত এলাকায় বাস করছে। অর্থাৎ প্রতি ছয়জনে এক শিশু এমন পরিস্থিতির শিকার। এর ফলে রেকর্ডসংখ্যক শিশু মারা গেছে, আহত হয়েছে কিংবা অধিকার বঞ্চিত হয়েছে। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথেরিনা রাসেল বলেন, যেকোনো হিসেবে ইউনিসেফের ইতিহাসে বলা যায়, ২০২৪ সাল ছিল শিশুদের জন্য সবচেয়ে খারাপ বছর।
বেশি আক্রান্ত যেখানে: গাজা, ইউক্রেনসহ যুদ্ধ ও সংঘাতে লিপ্ত এলাকাগুলোয় শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানায় ইউনিসেফ। সংস্থাটির বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরাইলের হামলায় গাজায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে। ইউক্রেনে চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে পুরো ২০২৩ সালের তুলনায় বেশি শিশু হতাহতের শিকার হয়েছে। এদিকে মধ্য অ্যামেরিকার দেশ হাইতিতে শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়নের ঘটনা চলতি বছর এক হাজার ভাগ বেড়েছে। আফ্রিকার সংঘাতপ্রবণ দেশ দক্ষিণ সুদানে বিশালসংখ্যক শিশু এক বছরের বেশি সময় ধরে স্কুলে যেতে পারছে না। ইউনিসেফের রাসেল বলেন, ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকার শিশুরা প্রতিদিন নানাভাবে আক্রান্ত হয়। এর ফলে তাদের শৈশব হারিয়ে যায়।’ ডয়চে ভেলে।

কাচিন দখল নিতে মরিয়া বিদ্রোহীরা, বিপাকে জান্তা সরকার

মিয়ানমারের কাচিন রাজ্যে জান্তার একটি ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লড়াই ছেড়ে পালিয়েছেন বলে জানিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি। এদিকে রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির কাছে সেনাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছেন, বন্দী থাকা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কিয়াও কিয়াও থান। আরাকান আর্মির প্রকাশিত এক ভিডিওতে সেনাদের উদ্দেশ্যে এ বার্তা দেন তিনি। কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মির (কেআইএ) বরাতে দেশটির সংবাদমাধ্যম ইরাবতী এ তথ্য জানিয়েছে। ভিডিওতে অযোগ্য নেতৃত্বের অধীনে আরো মৃত্যু এড়ানোর আহ্বান জানান, আন টাউনশিপের এ সেনাপ্রধান। তাদের পরাজয়ের পেছনে অঞ্চলটিতে জান্তার সেনা পাঠানোয় দেরি হওয়াকে দায়ী করেছেন জেনারেল কিয়াও কিয়াও থান। চলতি মাসে রাখাইনে, জান্তার পশ্চিম কমান্ডের পতনের পরই বন্দী করা হয় কিয়াও থানকে। এদিকে কাচিনের মানসি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে জান্তার ৩টি ব্যাটালিয়নের সঙ্গে লড়ছে বিদ্রোহীরা। এর মধ্যে একটির কমান্ডার শহর ছেড়ে পালিয়েছেন বলে জানায় তারা। ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এক অভ্যুত্থানে অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। রয়টার্স।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে আকস্মিকভাবে সামরিক আইন জারির ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। আর এই কারণেই কয়েকদিনের মধ্যে তাকে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে অভিশংসিত ও পরে বরখাস্ত করা হয়। গত মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার একটি আদালত মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা অনুমোদন করেছে বলে দেশটির তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। গত ৩ ডিসেম্বর সামরিক আইন জারি করার সিদ্ধান্তের কারণে দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে তাকে অভিশংসন এবং ক্ষমতা থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি তদন্তের দায়িত্বে থাকা দ্য করাপশন ইনভেস্টিগেশন অফিস ফর দ্য হাই-র‌্যাঙ্কিং অফিসিয়ালস (সিআইও) নিশ্চিত করেছে, সামরিক আইন জারিকে কেন্দ্র করে তদন্তকারীদের অনুরোধে প্রেসিডেন্ট ইউনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে সিউল ওয়েস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট। অবশ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মঞ্জুর করার বিষয়ে আদালতের যুক্তি সম্পর্কে সিআইও কোনো মন্তব্য করেননি। আদালতও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট ইউন অভিশংসিত হওয়ায় তার স্থানে এখন একজন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন। অবশ্য সংসদে অভিশংসিত হলেও জটিল আইনি প্রক্রিয়ার কারণে প্রেসিডেন্ট পদে থাকবেন ইউন। তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে কোনো নির্বাহী ক্ষমতা থাকবে না তার। এছাড়া রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তার দায়িত্ব ও ক্ষমতা থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তবে সাংবিধানিক আদালত তার ভাগ্য নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে থাকবেন তিনি। রয়টার্স।

মরুভূমি সবুজ হবে, মহানবীর এ হাদিস নিয়ে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞের মন্তব্য

আরব উপদ্বীপÑ অঞ্চলটি পরিচিত এটির কঠোর মরুভূমির জন্য। তবে এটি একটি সময় তৃণভূমিতে পরিণত হতে পারে। সঙ্গে এখানে প্রবাহিত হতে পারে নদীও। এমন তথ্য জানিয়েছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ ড. আব্দুল্লাহ আল মিসনাদ। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) বলেছিলেন, কিয়ামত ততক্ষণ পর্যন্ত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ না আরব ভূখণ্ড আবারও তৃণভূমিতে পরিণত এবং এখানে নদী প্রবাহিত না হবে। অর্থাৎ পৃথিবী ধ্বংসের আগে আরবের মরুভূমিগুলো সবুজে ছেয়ে যাবে এবং সেখানে নদীর সৃষ্টি হবে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ আব্দুল্লাহ আল মিসনাদ বলেন, চারভাবে মরুভূমিগুলো সবুজে পরিণত হওয়ার তীব্র সম্ভাবনা রয়েছে। তার মতে, এমনটি প্রথমে হতে পারে মানব-প্ররোচিত আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে। তিনি বলেছেন, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং আবহাওয়ার প্যাটার্নের পরিবর্তনের কারণে এ অঞ্চলে যে শুষ্ক আবহাওয়া রয়েছে, সেটি পাল্টে যেতে পারে। বিষয়টি বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, আরব উপদ্বীপের বায়ুমণ্ডল ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসতে পারে। এতে করে আরব সাগর এবং ভারত মহাসাগর থেকে আর্দ্র বাতাস এ অঞ্চলে ঢুকবে। এর প্রভাবে সেখানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে। এতে ৭ হাজার বছর আগে আরব উপদ্বীপ যেমন সবুজ ছিল এটি আবার তেমন হয়ে যাবে। তিনি বলেন, গত দুই বছর সৌদিতে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে সেটি তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। দ্বিতীয় সম্ভাব্য কারণ হিসেবে তিনে বলেন, সৌদি আরবে বিশাল অগ্ন্যুৎপাত শুরু হতে পারে, যা সেখানকার আবহাওয়া পরিবর্তন করে দেবে। সৌদির পূর্বাঞ্চলে দুই হাজার আগ্নেয়গিরি থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, তায়েফের কাছে অবস্থিত আল-ওয়াবাহর মতো আগ্নেয়গিরিতে যদি বিস্ফোরণ ঘটে, তাহলে এটির প্রভাব হবে বিশাল। বিস্ফোরণের কারণে সূর্যের আলো ঢাকা পড়তে পারে। এতে বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমে যাবে। যেটির প্রভাব পড়বে এ অঞ্চলে। এর মাধ্যমে সেখানে আর্দ্র বাতাস জমা হবে। এতে শুকনো মরুভূমি উর্বর ভূমিতে পরিণত এবং সেখানে নদীর প্রবাহ শুরু হতে পারে। তৃতীয় সম্ভাব্য কারণ হিসেবে তিনি পৃথিবীর সঙ্গে বিশাল উল্কার সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করেছেন। এমনটি হলে বায়ুমণ্ডলে মহাকাশীয় ধুলা ও ধ্বংসাবশেষ আসবে। এতে করে সূর্যের আলো কয়েক মাস; এমনকি কয়েক বছর পর্যন্ত পৃথিবীতে প্রবেশ করবে না। এতে আরব উপদ্বীপ একটি ঠাণ্ডা অঞ্চলে পরিণত হবে। যেখানে কোনো মানুষ বসবাস করতে পারবে না। চতুর্থ কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, মহাকাশীয় বড় কোনো পরিবর্তন যদি ঘটে, তাহলে আবহাওয়ারও নাটকীয় পরিবর্তন ঘটবে। যার মধ্যে অন্যতম হলো পৃথিবীর অক্ষের স্থানচ্যুতি। এতে পৃথিবীর অবস্থানের পরিবর্তন হবে। এর প্রভাবে বায়ুমণ্ডলীয় চাপকেন্দ্রে পরিবর্তন ঘটে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে। এবং আরব উপদ্বীপ সবুজে পরিণত হতে পারে। গালফ নিউজ।
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : আবদুল কাইউম খান