বর্ষবরণ দগ্ধ হওয়া ও পাখি মারার উৎসব!


২ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:১৯

বিডিনিউজ : বর্ষবরণের আনন্দ উদযাপনে পটকা ও আতশবাজি পোড়ানোর সময় দগ্ধ হয়েছে পাঁচজন; তাদের মধ্যে তিনজন শিশু।
গত ৩১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর বিভিন্ন সময়ে তারা ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নিতে যায়। একটি শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাওন বিন রহমান গত ১ জানুয়ারি বুধবার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আগুনে ফারহান নামে ৮ বছর বয়সী একটি শিশুর শরীরের ১৫ শতাংশ পুড়ে গেছে।
এছাড়া শিফান মল্লিকের (১২) শরীরের ১ শতাংশ, সম্রাটের (২০) শরীরের ১ শতাংশ, শান্তর (৪৩) শরীরের ২ শতাংশ এবং তাফসির (৩) নামে এক শিশুর শরীরের ২ শতাংশ পুড়ে গেছে।
ডা. শাওন বলেন, দগ্ধরা ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে হাসপাতালে আসেন। ‘থার্টিফার্স্ট নাইটে আতশবাজি ও পটকা পোড়ানোর সময় তারা আগুনে দগ্ধ হয়েছে। তাদের একজন শরীরের ১৫ শতাংশ বার্ন নিয়ে এসেছে। বয়স্ক হলে তেমন আশঙ্কা ছিল না, শিশু তাই তার অবস্থা কিছুটা আশঙ্কাজনক। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
বছরের শেষ রাতে উদযাপনের এমন বিপত্তি এখন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পটকা-আতশবাজির বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ কয়েকদিন আগেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকেও বার বার অনুরোধ করা হয়েছে, পটকা ফাটিয়ে যেন শব্দ ও বায়ুদূষণ করা না হয়। তবে ঢাকাবাসী তা কানে তোলেনি। গত ৩১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকেই পাড়া-মহল্লার চারপাশে শুরু হয়ে যায় হইচই, থেমে থেমে ভেসে আসতে থাকল পটকার শব্দ। ঘরির কাঁটা ১২টা ছুঁলে তা চরমে ওঠে। রাতের আকাশ আলোকিত হয়ে ওঠে আতশবাজির রঙিন আলোয়।
গত কয়েক বছরে এরকম উদযাপনের রাতে জ্বলন্ত ফানুস থেকে অগ্নিকাণ্ডও ঘটেছে অনেক জায়গায়।
গত ৩১ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের লাইনে পড়েছিল ১টি ফানুস। এছাড়া শব্দ ও বায়ুদূষণে কয়েকশত পাখি মারা গেছে। তবে এ বছরের সঠিক পরিসংখ্যান এখনো জানা যায়নি। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের পর্যবেক্ষণ, গত বছরের বর্ষবরণে চার প্রজাতির শতাধিক পাখি মারা গেছে। আতঙ্কে বাসা ছেড়ে চলে গেছে হাজার হাজার পাখি।
২০২২ সালে পটকা ও আতশবাজির বিকট শব্দে অসুস্থ হয়ে পড়ে তানজীম উমায়ের নামের ৪ মাস বয়সী এক শিশু। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।