সংক্ষিপ্ত বিশ্ব সংবাদ
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ১২:০০
ফের আফগানিস্তানে সৌদি আরবের কূটনৈতিক কার্যক্রম শুরু
তালেবানের দখলদারিত্বের সময় আফগানিস্তান থেকে কূটনীতিকদের প্রত্যাহার করার তিন বছরেরও বেশি সময় পর সৌদি আরব কাবুলে দেশটির দূতাবাসের কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে। গত রোববার (২২ ডিসেম্বর) এ ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করা এক বিবৃতিতে দূতাবাস বলেছে, ‘সৌদি সরকারের ভ্রাতৃপ্রতিম আফগান জনগণকে সব পরিষেবা প্রদানের আকাক্সক্ষার ভিত্তিতে ২২ ডিসেম্বর থেকে কাবুলে দেশটির মিশনের কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’ কাবুলে সৌদি প্রতিনিধিত্ব কোন স্তরের হবে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে সে সম্পর্কে মন্তব্য করার অনুরোধের জবাব দেয়নি।
রিয়াদ ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট ঘোষণা করেছিল, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহারের পর তালেবানের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের ফলে সৃষ্ট ‘অস্থিতিশীল পরিস্থিতি’ তৈরি হওয়ার কারণে কাবুল থেকে তাদের কূটনীতিকদের প্রত্যাহার করে। ২০২১ সালের নভেম্বরে সৌদি আরব বলেছিল, তারা আফগানিস্তানে কনস্যুলার পরিষেবা পুনরায় চালু করছে। সৌদি আরব দাতা সংস্থা কেএস রিলিফের মাধ্যমে আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তাও প্রদান করে। ১৯৯৬ সালে প্রথম ক্ষমতায় আসা তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়া মাত্র তিনটি দেশের একটি হলো সৌদি আরব, অন্য দুটি পাকিস্তান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। ওই সরকারকে ২০০১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট উৎখাত করে। বাসস।
সিরিয়ার আকাশে নিষিদ্ধ হলো ইরানের বিমান
সিরিয়ার নতুন সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দেশটির আকাশপথে ইরানের সামরিক কিংবা বেসামরিক কোনো ধরনের বিমান চলাচল করতে পারবে না। গত রোববার (২২ ডিসেম্বর) ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম ওয়াল্লার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এ সিদ্ধান্ত হিজবুল্লাহর সামরিক সক্ষমতা পুনর্গঠনকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাধাগ্রস্ত করবে। সিরিয়ার কার্যত নতুন নেতা আহমেদ আল-শারআ সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইরানের আঞ্চলিক প্রভাব প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর থেকে অনেকটা কমে গেছে। শারআ সুন্নি ইসলামপন্থী বিদ্রোহী গ্রুপ হায়াত আল-তাহরির শামের (এইচটিএস) প্রধান। তার নেতৃত্বেই চলতি মাসের শুরুর দিকে এক আকস্মিক হামলায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে আসাদ সরকারের পতন ঘটে।
আশারাক আল-আওসাতকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শারআ বলেন, সিরিয়ার বিদ্রোহীরা ইরানের আঞ্চলিক প্রকল্পকে ৪০ বছর পিছিয়ে দিয়েছে। এটি ইরানের প্রতি সিরিয়ার অবস্থানে একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত। তিনি আরও বলেন, ‘ইরানি মিলিশিয়াদের সরিয়ে এবং সিরিয়াকে ইরানি প্রভাব থেকে মুক্ত করে আমরা আঞ্চলিক স্বার্থ রক্ষা করেছি, যা কূটনীতি বা বিদেশি চাপেও সম্ভব হয়নি। এতে আমাদের ক্ষয়-ক্ষতিও ছিল ন্যূনতম।’ আসাদের শাসনকালে সিরিয়ার মাধ্যমে লেবাননের হিজবুল্লাহর কাছে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম পাচার করত ইরান। হিজবুল্লাহর নতুন মহাসচিব নাইম কাসেম স্বীকার করেছেন, সিরিয়ার মাধ্যমে তাদের সরবরাহ পথ এখন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। আল-জাজিরা।
আইএসকে নির্মূল করার এখনই সময় : এরদোগান
সিরিয়ার বিপ্লব পরবর্তী সময়কে আন্তর্জাতিক উগ্রবাদী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী কুর্দি সশস্ত্র গোষ্ঠী পিকেকেকে নির্মূল করার উপযুক্ত সময় বলে মন্তব্য করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান। তিনি বলেন, দায়েশ (আইএস), পিকেকে এবং তাদের সহযোগীরা, যারা সিরিয়ার অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছিল, তাদের অবশ্য নির্মূল করা উচিত এবং এখনই এ কাজ শুরু করার আদর্শ সময়। বিশ্বের উন্নয়নশীল আট দেশের জোট ডি-৮-এর সম্মেলনে যোগ দিতে কায়রো গিয়েছিলেন এরদোগান। গত ২৩ ডিসেম্বর সম্মেলন শেষে আঙ্কারার ফ্লাইট ধরেন তিনি। সম্মেলন শেষ হওয়ার পর উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন। এএফপি।
রাশিয়া বাশারকে আশ্রয় দিলেও সব সম্পদ জব্দ করেছে
সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে আশ্রয় দিলেও তার সব সম্পদ ও অর্থ জব্দ করেছে রাশিয়া। এমনকি বাশার এবং তার পরিবারের সদস্যদের চলাফেরার ওপরও আরোপ করা হয়েছে কঠোর নিয়ন্ত্রণ। খোদ বাশারের ভাইকে করা হয়েছে বন্দি। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বাশার আল-আসাদ মস্কোয় আশ্রয় লাভ করেন। সেখানে বসবাস করলেও তার ওপর বেশকিছু বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। তাকে মস্কো ত্যাগ করার অনুমতি দেয়া হয়নি বা রাজনৈতিক কোনো তৎপরতা চালানো অনুমোদন করা হয়নি। রুশ কর্তৃপক্ষ তার সম্পদ ও অর্থ জব্দ করেছে। তার সম্পদের মধ্যে ছিল ২৭০ কেজি স্বর্ণ, ২ বিলিয়ন ডলার, মস্কোয় ১৮টি অ্যাপার্টমেন্ট। বাশার আল-আসাদের ভাই মাহের আল-আসাদকে রাশিয়ায় আশ্রয় মঞ্জুর করা হয়নি। তার অনুরোধ এখনো বিবেচনাধীন রয়েছে বলে সৌদি ও তুর্কি মিডিয়া জানিয়েছে। মাহের ও তার পরিবার রাশিয়ায় গৃহবন্দি রয়েছেন। হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বাধীন একটি গ্রুপের অভিযানে ডিসেম্বরের প্রথম দিকে ক্ষমতাচ্যুত হন বাশার আল-আসাদ। তার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে সিরিয়ায় বাথ পার্টি ক্ষমতায় ছিল ৬১ বছর। জেরুসালেম পোস্ট।
গ্রেফতার ভয়ে নেতানিয়াহুর পোল্যান্ড সফর বাতিল
‘এখানে এলে গ্রেফতার হতে পারেন’- এমন সতর্কবার্তার পর পোল্যান্ড সফর বাতিল করেছেন নেতানিয়াহু। পোল্যান্ডের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী লাদিস্লো বার্তোসজেউস্কি দেশটির সংবাদমাধ্যম রিজেকপসপলিটাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির নাৎসি বাহিনী পোল্যান্ড ও আশপাশের দেশগুলোর ইহুদিদের যেসব বন্দিশিবিরে অবরুদ্ধ করে রাখত, সেগুলোকে বলা হয় আউশউইৎজ। পোল্যান্ডজুড়ে এমন কয়েকটি আউশউইৎজ রয়েছে। ১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪৫ সল পর্যন্ত চলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। এ ছয় বছরে পোল্যান্ডের আউশউইৎজগুলোয় হত্যা করা হয় প্রায় ১০ লাখ ১০ হাজার ইহুদিকে। নিহত এ ইহুদিদের প্রায় সবাই পোল্যান্ড এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের বাসিন্দা ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের পর এসব আউশউইৎজ মুক্ত করে দেওয়া হয়। তারপর থেকে প্রতি বছর জানুয়ারি মাসে আউশউইৎজ মুক্তি উদযাপন করে পোল্যান্ড। আগামী জানুয়ারি মাসে হবে ৮০ তম মুক্তি উদযাপন অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠানে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর যোগ দেওয়ার কথা ছিল। গত শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রিজেকপসপলিটাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পোল্যান্ডের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের কর্মকর্তাদের জানিয়েছি যে, যদি তিনি (নেতানিয়াহু) পোল্যান্ড সফরে আসেন, তাহলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিসি) পরোয়ানা অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে পোল্যান্ড সরকার। কারণ আমরা আইসিসির নির্দেশনা মেনে চলার জন্য চুক্তিবদ্ধ।” “আমরা এ বার্তা দেওয়ার পর ইসরাইলের সরকার আমাদের জানিয়েছে যে, তিনি এবার পোল্যান্ডে আসছেন না।”
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নির্মম সামরিক অভিযান পরিচালনার নির্দেশ এবং সেখানকার বাসিন্দাদের খাবার, পানি ও ওষুধ থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগে গত নভেম্বরে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং ইসরাইলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিসি)। ইসরাইল, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়াসহ অনেক দেশ এখনো আইসিসিকে স্বীকৃতি দেয়নি, তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জোটভুক্ত ২৭টি দেশসহ বিশ্বের অনেক দেশ পশ্চিম ও মধ্য ইউরোপের প্রায় সব দেশ আইসিসির সনদে স্বাক্ষর করেছে। সনদে সাক্ষরকারী দেশগুলো আইসিসির যেকোনো নির্দেশনা মেনে চলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ ব্যাপারে আরও বিস্তারিত জানতে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল ইসরাইলের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। কিন্তু কোনো কর্মকর্তা এ ইস্যুতে কথা বলতে রাজি হননি। টাইমস অব ইসরাইল।
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : আবদুল কাইউম খান