সবজির মূল্য কমলেও কাক্সিক্ষত পরিমাণে নয়

স্বস্তি নিত্যপণ্যের বাজারে


১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:৫২

স্টাফ রিপোর্টার : বাজারে দীর্ঘদিন উত্তাপ কমতে শুরু করেছে। সরকার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগের পাশাপাশি ভ্যাট ও অগ্রিম কর কমিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে। ডিমের দাম ১৫৫ টাকা ডিমের ডজন ছিল। এখন ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। আলু নিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে ছিল। এখন আলুর মূল্যও নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখন নতুন আলু ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ ১২০ টাকা থেকে কমে এখন মানভেদে ৭০ থেকে ৯০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সয়াবিন তেল আমদানি, উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট কমিয়েছে সরকারের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। একই সঙ্গে সানফ্লাওয়ার, ক্যানোলা তেলে ভ্যাট ও অগ্রিম কর কমানো হয়েছে। তবে শীতে বাজারে প্রচুর সবজি উঠলেও দাম খুব এমটা কমছে না। গত বছর এ সময় বাঁধাকপি প্রতি পিস মূল্য ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা। কিন্তু এখন সেই কপির মূল্য ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। অর্থাৎ দ্বিগুণ মূল্যে কিনতে হচ্ছে এই সবজি। ভরা মৌসুমেও টমেটোর মূল্য কেজি প্রতি ১১০ থেকে ১৩০ টাকা, যা সর্বোচ্চ ৩০ থেকে ৫০ টাকা থাকার কথা।
মৌসুমের শুরুর দিকে নতুন আলু ৪০০ টাকা বিক্রি হয়েছে। এখন সেই নতুন আলু ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে ক্রেতারা বলছেন, সিন্ডিকেট রুখতে পারলে আগের মতো ২০ টাকায় কেনা যাবে গোল আলু। কিছুদিন আগেও সবজির দামে যে অস্বাভাবিক অস্বস্তি ছিল, তা এখন কিছুটা হলেও কমেছে। তবে সবজির বাজারে এখনো পুরোপুরি স্বস্তি ফেরেনি। এখন বেশ কয়েকটি সবজির কেজি ৮০-১০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য কিছুদিন আগে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শিম এখন ৪০-৫০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে শালগম। বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা। মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা। কাঁচামরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। তবে দাম বেড়েছে মুরগির। ১৭৫-১৮৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগি এখন ১৮৫-১৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩১০ টাকা, যা গত কয়েকদিন আগেও বিক্রি হয়েছে ২৭০-২৯০ টাকা। মুরগির দাম বাড়লেও ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। ১৪৫-১৫০ টাকা বিক্রি হওয়া ডিমের ডজন এখন ১৪০ টাকা।
এদিকে ভোজ্যতেলে মূল্য নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে ১৬ ডিসেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ এক প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে সয়াবিনসহ বিভিন্ন তেলের ওপর ভ্যাট কমানোর সিদ্ধান্ত জানানো হয়। ১৬ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া এ সিদ্ধান্ত আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পরিশোধিত ও অপরিশোধিত সয়াবিন তেল, পরিশোধিত ও অপরিশোধিত পাম তেল, অপরিশোধিত সানফ্লাওয়ার তেল, অপরিশোধিত ক্যানোলা তেলের ওপর আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশের অতিরিক্ত ভ্যাট থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে পরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলে স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি থাকবে। এছাড়া অপরিশোধিত সানফ্লাওয়ার ও ক্যানোলা তেল এবং পরিশোধিত সানফ্লাওয়ার ও ক্যানোলা তেলের আমদানি পর্যায়ে অগ্রিম কর অব্যাহতি সুবিধা পাবেন আমদানিকারকরা। এনবিআরের জনসংযোগ দপ্তর জানায়, সানফ্লাওয়ার, ক্যানোলা, সয়াবিন ও পাম ওয়েল বিক্রয়ের ওপর স্থানীয় পর্যায়ে প্রদেয় মূল্য সংযোজন কর (মূসক) সম্পূর্ণ অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সব পণ্যের আমদানি পর্যায়ে প্রদেয় মূসক ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের ওপর আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ মূসক ব্যতীত অন্য কোনো শুল্ক-করাদি অবশিষ্ট রইলো না। সানফ্লাওয়ার তেল ও ক্যানোলা তেলের কাস্টমস ডিউটি, রেগুলেটরি ডিউটি, আগাম কর ও অগ্রিম আয়কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করায় এবং মূল্য সংযোজন কর হ্রাস করার ফলে এসব তেলের আমদানি ব্যয় লিটারপ্রতি ৪০-৫০ টাকা কমে যাবে।