জড়িতদের বিচার করা হবে
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:১০
স্টাফ রিপোর্টার : এবার বসুন্ধরা, এস আলম, বেক্সিমকো, জেমস, নাসা, সামিট ও আরামিট গ্রুপের অর্থ ফেরত আনতে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। দুদক, সিআইডি ও এনবিআর যৌথভাবে তদন্ত করবে। এ তদন্ত দলের কার্যালয় হবে বাংলাদেশ ব্যাংকে। আর এ দলকে আইনি সহায়তা দেবেন অ্যাটার্নি জেনারেল।
বিগত সরকারের সময় দেশের ব্যবসায়িক গ্রুপগুলোর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ডলার-সংকট যত প্রকট হয়েছে, ততই বিপুল অংকের অর্থ পাচারের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির হালনাগাদ প্রকাশিত তথ্য বলছে, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে মোট পুঞ্জীভূত পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ ১১ লাখ ৯২ হাজার কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কখনো বেনামি ও ভুঁইফোঁড় প্রতিষ্ঠান খুলে ঋণের নামে ব্যাংক থেকে টাকা আত্মসাৎ করে, কখনো ব্যবসা-বাণিজ্যের আড়ালে ওভার-আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের সুযোগ নিয়ে অর্থ পাচারের পথ খোলা হয়েছে। এছাড়া হুন্ডির মাধ্যমেও একটি চক্র টাকা পাচার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রকাশনায় বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটসহ (বিএফআইইউ) সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে সবকিছুই জানত। দায়িত্বশীলদের কেউ কেউ বিভিন্ন সময় স্বীকারও করতেন। তবে এ অর্থ পাচারের সঙ্গে তৎকালীন সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি মহলের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ায় তখন পাচারকারীদের শনাক্তের কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। এভাবেই নীরবে দেশ থেকে অর্থ পাচারের সুযোগ উন্মুক্ত রাখা হয়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, ‘টাকা ফেরত আনতে পারব কি না জানি না, তবে পাচারকারীদের শান্তির ঘুম হবে না। তারা যাতে দৌড়ের মধ্যে থাকে, সে ব্যবস্থা করা হবে। দেশের টাকা পাচার করে আরামে থাকবে, সেটা হবে না। তাছাড়া নতুন করে অর্থ পাচার ঠেকাতে সরকারের সঙ্গে মিলে আমরা কাজ করব।’
তিনি বলেন, ‘কারা টাকা পাচার করেছে, কারা এর সঙ্গে জড়িতÑ সুনির্দিষ্ট অনুসন্ধানের মাধ্যমে তাদের বের করতে হবে। এছাড়া তাদের অনিয়মে কারা সহায়তা করেছে, তাদেরও (আইনের) আওতায় আনতে হবে।’
অর্থনীতিবিদরা জানান, নতুন সরকার দায়িত্ব নিয়ে ব্যাংকসহ আর্থিক খাতে দৃশ্যমান বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। যেখানে হাত দেওয়ার সাহস পায়নি কেউ, সেই বড় বড় রাঘব-বোয়ালদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিয়েছে। সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন নীতির ক্ষেত্রেও। তবে সাধারণ মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যা ‘উচ্চ মূল্যস্ফীতি’ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। এখনো পুরোনো সিন্ডিকেটের কবলে নিত্যপণ্যের বাজার। এছাড়া শিল্প খাতে; বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতে চলছে অস্থিরতা।