কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে নদনদীর চর দখলের দ্বন্দ্বে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা বাড়ছে
১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:৪৫
কিশোরগঞ্জ থেকে আহসানুল হক জুয়েল : নিকলীসহ কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের হাওরের পানি শুকিয়ে যেতে না যেতেই শুরু হয়েছে দখলের প্রতিযোগিতা। এ অঞ্চলের ভূমির মালিক বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু স্থানীয় ক্ষমতার দাপটে এখন চরের মালিক কটি দুষ্টচক্র। লাল নিশান টাঙিয়ে তারা চর দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। গত ৫ আগস্টের আগে স্থানীয় আওয়ামী লীগরা দখলে রেখেছিল। তারা পালিয়ে যাওয়ার পর একটি বিশেষ দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চরের ভূমি দখলের সীমাহীন অভিযোগ উঠেছে।
কিশোরগঞ্জের নিকলীর হাওর এলাকা সরেজমিন দেখা গেছে, দুস্থ-অসহায় বিবেচনায় অস্থায়ীভাবে বন্দোবস্ত আইনে ডিসিআর মূলে যারা ১ একর ভূমি ভোগদখল করার নিয়ম, যা ভূমিহীন দুস্থদের জন্য বন্দোবস্ত দিয়ে থাকেন সরকারের প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। কিন্তু সরেজমিন দেখা যায়, অসহায় না হয়েও চর ভোগদখলে আছেন বিত্তবান প্রভাবশালীরা।
কিশোরগঞ্জ জেলার হাওরাঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত একটি নদীর নাম ঘোড়াউত্রা। ঘোড়াউত্রা নদীটি সিলেটের উত্তর পূর্ব সীমান্তে বৃহৎ নদীর নাম সুরমা যেটি উজানের ভারত থেকে নেমে এসেছে বাংলাদেশে। সিলেটের জকিগঞ্জের বরাক মোহনায় এর উৎপত্তি। সেখান থেকে বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়েছে দুটি ভাগে দুটি নামে একটি সুরমা অপরটি কুশিয়ারা। সুরমা নদীটি সুনামগঞ্জ থেকে সোজা দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুড়ি হয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলায় প্রবেশের পর প্রবাহিত হয়ে ধনু নদী নাম ধারণ করে। ধনু নদীটি মিঠামইন ও নিকলীতে প্রবেশ করে ঘোড়াউত্রা নাম ধারণ করে বাজিতপুরের ওপর দিয়ে কুলিয়ারচরের কাছাকাছি গিয়ে মেঘনা নদীতে মিলিত হয়। প্রবহমান এ সকল নদী বিভিন্ন স্থানে তার বাঁকে বাঁকে আপন গতিতে জাগিয়ে তুলেছে অনেক চর। আবার কোথাও কোথাও নদীভাঙনের কারণে তার গর্ভে চলে গেছে বসতবাড়ি ও ফসলি জমি। সিকস্তি ও পয়োস্তি আইনে সরকার বাস্তহারাদের মাঝে অস্থায়ী বন্দোবস্ত হিসেবে চর দিয়ে সহায়তা করার নিয়ম থাকলেও হাওর এলাকায় তা মানা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিকলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাপিয়া আক্তার সোনার বাংলাকে জানান, জরিপ না হওয়া পর্যন্ত কোনো তথ্য দিতে পারবেন না। এটা ঘোড়াউত্রা নদীর অংশবিশেষ উল্লেখ করে সরকারের এ ভূমিকে সম্পূর্ণই ভূমি মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার। পাশাপাশি এখন অস্থায়ী বন্দোবস্ত সম্ভব নয় বলেও উল্লেখ করেন।