সংক্ষিপ্ত বিশ্ব সংবাদ
১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:২১
ইংল্যান্ডে জনপ্রিয়তম নামের তালিকার শীর্ষে ‘মুহাম্মদ’
ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে সদ্যোজাত ছেলের নাম কি রাখা হচ্ছে জানেন? জানলে আপনিও অবাক হতে পারেন। সকলকে পিছনে ফেলে শীর্ষে উঠে এসেছে ‘মুহাম্মদ’। ব্রিটেন এবং ওয়েলসে সদ্যোজাত ছেলের নাম বেশিরভাগ রাখা হচ্ছে ‘মুহাম্মদ’। ২০২৩ সালের জনপ্রিয় নামগুলোর তালিকায় সবার ওপরে উঠে এসেছে মুহাম্মদ। এমনটাই জানা গেছে ব্রিটেন এবং ওয়েলসের অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্স সূত্রে। সদ্যোজাত কন্যাদের জনপ্রিয় নামের তালিকায় ২০১৬ সাল থেকে শীর্ষে রয়েছে অলিভিয়া। ২০২৩ সালের তালিকায় প্রথম তিনে রয়েছে অলিভিয়া, অ্যামেলিয়া এবং আইলা। রাজপরিবারের নাম অর্থাৎ ক্যামিলা, মেগান, হ্যারি- এগুলো জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। ২০২২ সালে ব্রিটেনে ছেলেসন্তানের নামের তালিকায় সবার ওপরে ছিল নোয়া। এবং দ্বিতীয় স্থানে ছিল মুহাম্মদ। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ওই ছবি সম্পূর্ণভাবে পাল্টে যায়। শীর্ষে উঠে আসে মুহাম্মদ। জনপ্রিয় নামের তালিকায় তিন নম্বরে রয়েছে জর্জ। সূত্র মতে, ২০২২ সালে ব্রিটেনে ৪,১৭৭টি সদ্যোজাত ছেলের নাম মুহাম্মদ রাখা হয়েছিল। এক বছর পরে ওই সংখ্যাটা ৪,৬৬১ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। জিনিউজ।
বাংলাদেশ নিয়ে ভুয়া ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগ মমতার
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনার মাঝেই বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ভাষণে আরো একবার উঠে এলো প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রসঙ্গ। গত ৯ ডিসেম্বর সোমবার বিধানসভার অধিবেশনে তিনি যেমন বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তেমনি ‘একটা রাজনৈতিক দলের’ বিরুদ্ধে ফেক ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন। নাম না করেই তিনি উল্লেখ করেছেন দুই দেশের সম্পর্কে বর্তমানে যে টানাপড়েন চলছে সেই পরিস্থিতির ফায়দা তুলতে চাইছে ওই দল। তার কথায়, ‘অনেক ফেক ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে। একটা রাজনৈতিক দল উস্কানি দেয়ার চেষ্টা করছে।’ বিধানসভায় তার ভাষণে সম্প্রীতি ও শান্তির পরিবেশ বজায় রাখার এবং প্রতিবেশী দেশের বিষয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে সংযত থাকার অনুরোধও করেছেন তিনি। বিধানসভায় তার বক্তব্যে তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো বলেছেন, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর যে হামলা হচ্ছে, তা দুঃখজনক।’ একই সাথে সব বিধায়কের উদ্দেশে বলেছেন, ‘কেউ উসকানিমূলক বক্তৃতা দেবেন না।’ আমরা দাঙ্গা চাই না, শান্তি চাই। হিন্দু-মুসলিম, শিখ ও খ্রিস্টানদের রক্ত একই।’ এরপরই কারো নাম না করে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের অনুরোধ করছি। অনেক ফেক (ভুয়া) ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে। একটা রাজনৈতিক দল ইন্ধন দেয়ার চেষ্টা করছে। দুই সম্প্রদায়ের মানুষকেই এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।’ বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের যে অভিযোগ উঠেছে, কিছু ক্ষেত্রে সেই বিষয়কে রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়ে ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যারা এটা নিয়ে রাজনীতি করার কথা ভাবছেন, তাদের মনে রাখা উচিত, এতে আপনার রাজ্যেরও ক্ষতি হবে। ওখানে (বাংলাদেশে) থাকা বন্ধুদেরও ক্ষতি হবে।’ বিবিসি।
‘হিন্দুত্ব হলো সহিংসতার দর্শন’, মেহবুবা কন্যা ইলতিজা
‘হিন্দুত্ব হলো সহিংসতার দর্শন, এটি আসলে একটি অসুখ’, এমনই মন্তব্য করেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনৈতিক দল পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির মেয়ে ইলতিজা মুফতি। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের এক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। যেখানে আল্লাহ বলার অপরাধে তিন কিশোর নৃশংসভাবে মারধর করা হয়। এবং বাধ্য করা জয় শ্রীরাম বলতে। ওই ঘটনার ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করার পাশাপাশি এ উগ্র হিন্দুত্বের বিরুদ্ধে সরব হন মেহবুবা কন্যা ইলতিজা। তিনি বলেন, ‘হিন্দুত্ব ও হিন্দু ধর্মের মধ্যে ফারাক অনেক। হিন্দুত্বের নামে ঘৃণার দর্শন ১৯৪০-এর দশকে দেশে ছড়িয়েছিলেন বীর সাভারকর। যার উদ্দেশ্য ছিল হিন্দুদের আধিপত্য বিস্তার। যার দর্শন ছিল ভারত হিন্দুর ও হিন্দুদের জন্য।’
এর পরই ইসলাম ধর্মের তুলনা টেনে মেহবুবা কন্যা বলেন, ‘ইসলামের মতো হিন্দু ধর্মও এমন একটা ধর্ম যা ধর্মনিরপেক্ষতা, প্রেম ও করুণাকে প্রাধান্য দেয়। ফলে জেনেশুনে এর পবিত্রতা বিকৃত করা উচিত নয়। জয় শ্রীরাম স্লোগান রাম রাজ্যের জন্য নয়, বরং এটি ব্যবহৃত হচ্ছে সহিংসতা ছড়াতে। এটা অত্যন্ত লজ্জার যে হিন্দু ধর্মকে বিকৃত করা হচ্ছে। আমি জেনেশুনেই হিন্দুত্বের সমালোচনা করলাম কারণ এটা একটা অসুখ।’ একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একজন মুসলিম হিসেবে আমি বুঝি উগ্রবাদীরা কীভাবে আল্লাহু আকবর বলে নাশকতা চালায়, সহিংসতা ছড়ায়। এর জেরে ইসলামের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। হিন্দুরাও সেই পথে হাঁটছে।’
ইলতিজার এ মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর তার সমালোচনায় সরব হয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর বিজেপি। জম্মুর বিজেপি নেতা রবিন্দর রেনা বলেন, ‘ওই পিডিপি নেত্রী হিন্দুত্ব নিয়ে অত্যন্ত অপমানজনক ভাষা ব্যবহার করেছেন, এটা ঠিক নয়। রাজনীতিতে মতভেদ হতে পারে তাই বলে অপমানজনক ভাষা ব্যবহার করা কখনই উচিত নয়। উনি যে মন্তব্য করেছেন তার জন্য ওনার ক্ষমা চাওয়া উচিত।’ সংবাদ প্রতিদিন।
বাশারের পতনে চিন্তায় দিল্লি!
সিরিয়ায় সরকার পতন হয়েছে। টানা ১৪ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের পর দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে দামেস্কের দূরত্ব অন্তত চার হাজার কিলোমিটার হলেও সিরিয়ার রাজনৈতিক অস্থিরতা চিন্তা বাড়াচ্ছে ভারতের। কূটনৈতিক দিক থেকে তো বটেই, আশঙ্কা করা হচ্ছে কাশ্মীর নিয়ে নতুন শঙ্কা বাড়বে ভারতের। কলকাতাভিত্তিক সংবাদ প্রতিদিনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নয়াদিল্লির সাথে সিরিয়া মৈত্রীর সম্পর্ক দীর্ঘদিনের।
বাশার আল-আসাদ আমলে তা নয়া মাত্রা পায়। তার আমলেই সিরিয়ার উন্নয়নে একাধিক ক্ষেত্রে বিপুল বিনিয়োগ করে ভারত। পরিমাণের অঙ্কে যা প্রায় ২৪০ মিলিয়ন ডলার। বিনিয়োগের তালিকায় ছিল বিদ্যুৎ উৎপাদন, আইটি ইনফ্রাস্টাকচার, স্টিল প্লান্ট এবং অবশ্যই তেল উত্তোলন। বিনিয়োগের পাশাপাশি সিরিয়ায় বিপুল পরিমাণে চাল, ওষুধ ও বস্ত্র রফতানি করত ভারত। সর্বোপরি আন্তর্জাতিক মঞ্চে একাধিক ইস্যুতে একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছে দুই দেশ। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কাশ্মীর ইস্যু।
আসাদের পতন ও সিরিয়া বিদ্রোহীদের দখলে চলে যাওয়ায় অজস্র প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে ভারতের সাথে এ দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক। প্রতিবেদনে বলা হয় যে তুরস্ক, মালয়েশিয়ার মতো মুসলিম দেশ ভারত ইস্যুতে সুবিধামতো নীতি বদল করলেও সিরিয়া কখনো সে পথে হাঁটেনি। ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর তুরস্ক পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে সরব হয়। এমনকি জাতিসংঘেও ভারত বিরোধিতায় সরব হয়। তবে সিরিয়া স্পষ্টভাবে জানিয়েছিল যে এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। প্রতিবেদেন বলা হয়, হায়াত তেহরির আল শাম নামে সিরিয়ার যে বিদ্রোহী সংগঠন আসাদকে উৎখাত করেছে তারা তুরস্কের সমর্থক। এবং তুরস্কের সাহায্যেই দামাস্কাসের দখল নিয়েছে তারা। তবে কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের সমর্থক তুরস্কের প্রভাব সিরিয়াতে বাড়বে। সংবাদ প্রতিদিন।
এক কিশোরের গ্রাফিতিতেই ‘পতন’ বাশারের
আজ থেকে ১৩ বছর আগে, ২০১১ সালের কোনো একসময় সিরিয়ার দক্ষিণে দারার একটি সড়কে মাত্র ১৪ বছর বয়সী এক কিশোর স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে গ্রাফিতি এঁকেছিল। ওই কিশোরের নাম মুয়াবিয়া সায়সানেহ। মূলত সেই গ্রাফিতিই বদলে দিলো সিরিয়ার ভাগ্য।
অবসান হলো আসাদ যুগের। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির একটি বিশেষ প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে। মুয়াবিয়া দারার ওই সড়কে স্প্রে করে লিখেছিল, ‘এজাক এল দরজা, ইয়া ডাক্তার’। এর অর্থ হচ্ছে, ‘এবার আপনার পালা ডাক্তার।’ গ্রাফিতিতে ডাক্তার বলা হয়েছে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে। দামেস্কের ইউনিভার্সিটি থেকে চক্ষুবিজ্ঞানে পড়াশোনা করেছেন বাশার আল-আসাদ। তার ইচ্ছে ছিল চিকিৎসক হওয়ার। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে চক্ষুবিজ্ঞানের ওপর উচ্চতর ডিগ্রিও অর্জন করেছেন তিনি। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনায় বড় ভাইয়ের মৃত্যুর পর বাবার নির্দেশে সিরিয়ায় ফিরেন তিনি। পরে সিরিয়ায় সামরিক বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। বাশার আল-আসাদকে উদ্দেশ করে লেখা মুয়াবিয়ার ওই জাতীয় বিদ্রোহের স্মারক হয়ে ওঠে। এর ফলে শুরু হয় ২১ শতকের সবচেয়ে ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের।
আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে মুয়াবিয়ার এ কাজটি দ্রুত এবং তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এ গ্রাফিতির কারণেই স্থানীয় পুলিশের হয়রানির শিকার হয় মুয়াবিয়া ও তার বন্ধুরা। গোয়েন্দা পুলিশ তাদের ২৬ দিন আটকে রাখে। অত্যাচার ও মারধর করে যা শেষ পর্যন্ত দারার বাসিন্দাদের বিক্ষুব্ধ করে তোলে। তার মুক্তির দাবিতে মা-বাবা, প্রতিবেশী এবং আন্দোলনকারীরা প্রতিবাদ করতে গিয়ে টিয়ার গ্যাস ও গুলির মুখোমুখি হয়। মুয়াবিয়াকে মারধরের ছবি ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হতে থাকে। মুহূর্তের মধ্যে শুধু দারাতে নয়, সিরিয়াজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ২০১১ সালের ১৫ মার্চ সিরিয়ায় প্রথমবারের মতো ধারাবাহিক আন্দোলন শুরু হয়। পরে এ আন্দোলন স্বাধীনতা ও আসাদ শাসনের অবসানের দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভে পরিণত হয়। শান্তিপূর্ণ এ বিক্ষোভকে সহিংসতায় পরিণত করে তোলে আসাদ বাহিনী। নিরাপত্তা বাহিনী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। ভিন্নমতাবলম্বীদের বন্দী করে, আর বিপুলসংখ্যক সিরিয়ানকে নির্যাতন শুরু করে। ‘আরব বসন্ত’ থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া এ আন্দোলন দ্রুতই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পরিণত হয়। পরে বিক্ষোভকারীরা হাতে অস্ত্র তুলে নিতে বাধ্য হয়। এনডিটিভি।
ভারতের চিন্তা বাড়িয়ে ওলির চীন সফর
একদিকে যখন বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক টালমাটাল, তখন নয়াদিল্লির চিন্তা বাড়িয়ে চীনের সাথে হৃদ্যতা বাড়াচ্ছে আর এক প্রতিবেশী দেশ নেপাল। সম্প্রতি চার দিনের চীন সফর সেরে দেশে ফিরেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। গত ৬ ডিসেম্বর শুক্রবার কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে সাংবাদিকদের তিনি জানান, এই সফরে চীন-নেপাল সম্পর্ক আরো পোক্ত হয়েছে। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্প (বিআরআই)-সহ আরো নানা বিষয়ে দুদেশের মধ্যে অন্তত ১০টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তার মতে, এগুলো আগামী দিনে নেপালকে আর্থিক এবং সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ করবে।
সংবাদ সম্মেলনে ওলি জানান, বিআরআই প্রকল্পের জট কাটাতে দু’পক্ষের মধ্যে কথা হয়েছে। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ চীনের একটি বড় বাজেটের আন্তর্জাতিক প্রকল্প। এর মাধ্যমে নতুন নতুন সড়ক, রেল ও বিমানপথ তৈরি করে এশিয়ার বিভিন্ন দেশ, এমনকি ইউরোপ পর্যন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়তে চায় বেইজিং। ২০১৭ সালে এ প্রকল্পে যোগ দেয় নেপাল। কিন্তু নানা বাধায় নেপালে এ প্রকল্পের কাজ থমকে রয়েছে। সেই জট কাটাতে কথা হয়েছে দু’পক্ষের। এ সফরে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে দেখা করেন ওলি। কথা হয়েছে চীনা প্রধানমন্ত্রী ও অন্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথেও। বিআরআই ছাড়াও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণ, অর্থনৈতিক এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতা, ২০২৫-২৯ পর্যন্ত উন্নয়নমূলক প্রকল্প- এসব নিয়েও চুক্তি হয়েছে। চীনা বিনিয়োগকারীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ওলি। নেপালে বেড়াতে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন চীনের সাধারণ মানুষকেও।
এর আগে নয়াদিল্লির আপত্তি অগ্রাহ্য করে পোখরা বিমানবন্দরের কাজে চীনের থেকে ২০ কোটি ডলার আর্থিক সহায়তা নিয়েছিল নেপাল। ভারত সীমান্তের খুবই কাছে এ বিমানবন্দর। নয়াদিল্লির আশঙ্কা, সামরিক ফ্লাইট ঘাঁটি হিসেবে পোখরা বিমানবন্দরকে ব্যবহার করতে পারে বেইজিং। ফলে জাতীয় নিরাপত্তার খাতিরে ওই এলাকা বরাবর দেশের আকাশসীমা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। সেই আশঙ্কার রেশ কাটার আগে এ বছর প্রথা ভেঙে ভোটের পরে ভারত সফরে না এসে চীন ঘুরে ভারতের চিন্তা বাড়িয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী ওলি। আনন্দবাজার পত্রিকা।
সিরিয়ার ২৫০টির বেশি স্থাপনায় ইসরাইলি হামলা
ইসরাইল বাহিনী সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কসহ বিভিন্ন অঞ্চলের ২৫০টির বেশি সামরিক স্থাপনা টার্গেট করে হামলা চালানো শুরু করেছে। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, তেলআবিবের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ‘টাইমস অব ইসরাইল’ জানিয়েছে, বাশার আল-আসাদের পতনের পর ইসরাইলি বাহিনী তাদের ইতিহাসে সিরিয়ায় সবচেয়ে ভয়াবহতম হামলা চালিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত ইসরাইলি আর্মি রেডিওকে জানিয়েছে, দুদিনে রাজধানী দামেস্কসহ সিরিয়ার ২৫০টির বেশি সামরিক স্থাপনায় ইসরাইল হামলা চালিয়েছে। গত ৯ ডিসেম্বর সোমবার সিরিয়ার ভূমধ্যসাগরীয় লাতাকিয়া বন্দরের কাছে একটি বিমান প্রতিরক্ষা ঘাঁটি লক্ষ করে হামলা চালায় তেলআবিব।
এদিকে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, স্থানীয় সময় গত ৯ ডিসেম্বর সোমবার সন্ধ্যায় দামেস্কের কাছে একটি গ্রামে চারটি বিমান হামলা চালানো হয়েছে। এছাড়া দামেস্কের নিকটে তিনটি সামরিক ঘাঁটি টার্গেট করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি সৈন্যরা। হামলায় ঘাঁটিগুলো পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি করেছে একাধিক গণমাধ্যম। এদিকে ইসরাইলের এসব হামলা এবং গোলান মালভূমির সিরিয়া নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলো দখলে নেয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে কাতার ও ইরাক। আল-জাজিরা, টাইমস অব ইসরাইল।
সিরিয়ায় বদলে গেছে পতাকার রং!
সিরিয়ায় ক্ষমতার পালাবদলের সাথে বদলে গেছে পতাকার রং। দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তার শাসনের অবসান উদযাপন করতে বিশ্বের বিভিন্ন শহরের রাস্তায় নেমেছে সিরিয়ানরা। তাদের অনেকেই ওড়াচ্ছেন সিরিয়ার বিরোধীদলের পতাকা। গত মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, মস্কোর দূতাবাসসহ বিদেশে সিরিয়ার বেশ কয়েকটি কূটনৈতিক মিশনেও বিরোধীদলের এ ব্যানারটি তোলা হয়েছে। বিরোধীদলের এ ব্যানারটিতে সবুজ ও কালো অনুভূমিক ফিতেগুলোর মধ্যে তিনটি লাল তারা রয়েছে। এ ব্যানারটি আসাদ সরকারের সাথে যুক্ত পতাকার বিপরীত। আসাদ সরকারের পতাকায় দুটি ছোট সবুজ তারাসহ লাল, সাদা ও কালো অনুভূমিক ব্যান্ড যুক্ত ছিল। উল্লেখ্য, সিরিয়ার বিদ্রোহীরা দেশটির রাজধানী দামেস্ক দখলের মুখে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বিমানে করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। আল-জাজিরা।
ইসরাইলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ৫০ ফিলিস্তিনি
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলি বাহিনীর বর্বর হামলা অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে আরও ৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪৪ হাজার ৭৫০ ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এ হামলায় আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি। নিখোঁজ রয়েছে বহু ফিলিস্তিনি।
গত ৯ ডিসেম্বর সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদলু। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের চলমান হামলায় কমপক্ষে আরও ৫০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ হাজার ৭৫৮ জনে পৌঁছেছে বলে গত ৯ ডিসেম্বর সোমবার অবরুদ্ধ এ ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অব্যাহত এ হামলায় আরও অন্তত এক লাখ ৬ হাজার ১৩৪ জন ব্যক্তি আহত হয়েছেন। মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর অব্যাহত আগ্রাসনে ৫০ জন নিহত এবং আরও ৮৪ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
আনাদলু।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারের বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরাইল অবরুদ্ধ এ ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরাইলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এ ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরাইল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে। আনাদলু।
টোঙ্গার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ
প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ টোঙ্গার প্রধানমন্ত্রী সিওসি সোভালেনি গত ৯ ডিসেম্বর সোমবার আকস্মিকভাবে পদত্যাগ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং সংসদ কর্মকর্তারা বলেছেন, দেশটির রাজপরিবারের সাথে ক্ষমতার লড়াইয়ের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়। পার্লামেন্টের কর্মকর্তা রোন্ডা হুফাঙ্গা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন, তবে আমরা নিশ্চিত নই যে এরপর কী হবে।’ প্রধানমন্ত্রী সিওসি সোভালেনি পার্লামেন্টকে বলেছিলেন, আইনপ্রণেতারা অনাস্থা ভোটে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ঠিক কিছুক্ষণ আগে তিনি পদত্যাগ করবেন। সোভালেনির পদত্যাগের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক মুখপাত্র এএফপিকে নিশ্চিত করেছেন। ১৯ শতকের শেষের দিক থেকে টোঙ্গায় একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র চালু আছে। দেশটির রাজপরিবার তাদের কিছু ক্ষমতা ধীরে ধীরে ত্যাগ করেছে, টোঙ্গান রাজা এবং তার সহকর্মী সম্ভ্রান্তরা যথেষ্ট প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে রয়ে গেছেন।
২০০৬ সালে গণতন্ত্রপন্থীদের বিক্ষোভের পর সংবিধান সংশোধন করে। ওই সময়ে টোঙ্গান রাজা দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান এবং সামরিক কমান্ডার-ইন-চিফ হিসেবে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। যদিও রাজতন্ত্র শেষ পর্যন্ত নির্বাচিত আইন প্রণেতাদের একটি মন্ত্রিসভায় তার অনেক দায়িত্ব হস্তান্তর করতে সম্মত হয়েছিল, তবে এর ক্ষমতা সম্পূর্ণভাবে কমানো হয়নি। টোঙ্গার বংশানুক্রমিক রাজপরিবার এখনো দেশের ২৬ আসনের আইনসভায় নয়জন সদস্য নির্বাচন করে।
সোভালেনি ২০১৪ সালে প্রথম সংসদে নির্বাচিত হন এবং ২০১৪-১৭ থেকে উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, তারপর ২০১৯ সালে শিক্ষামন্ত্রী হন। ২০২১ সালে তিনি নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত পালন করেন। বাসস।
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : আবদুল কাইউম খান