বাংলাদেশ নিয়ে ভারতে চলছে মিথ্যার বেসাতি : আখেরে বুমেরাং হবে
৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১২:০০
॥ জামশেদ মেহ্দী ॥
যেটি ছিল একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সাধারণ বিষয়, সেটিকে প্রবাদ প্রবচনের ভাষায় তিলকে তাল বানানো হয়েছে। চিন্ময় ব্রহ্মচারী দাস বাংলাদেশের একজন নাগরিক। হতে পারে তিনি মাইনরিটি তথা হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার পক্ষ থেকে আদালতে জামিনের আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদন নামঞ্জুর হয়েছে। এরকম জামিনের আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার ঘটনা বাংলাদেশের আইন-আদালতে হরহামেশাই ঘটছে। কিন্তু তেমন একটি সাধারণ ব্যাপার নিয়ে ভারতের মতো একটি বড় দেশের বড় বড় নেতাদের শোরগোল বাধানোয় বাংলাদেশের মানুষ বিস্মিত। চিন্ময়ের অনুসারীরা চিন্ময়কে বহনকারী প্রিজনভ্যানের সামনে শুয়ে পড়ে। পুলিশ তাদের ডিউটি করে। কিন্তু সেটি নিয়ে চিন্ময়ের অনুসারীরা সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে এক তরুণ আইনজীবীকে কুপিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এর মধ্যে প্রিজনভ্যান চিন্ময়কে নিয়ে কারাগারে যায়।
পুলিশ এবং জনগণের ওপর হামলা করল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটি অংশ। তারা হত্যা করল সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের অর্থাৎ মুসলমান একজন আইনজীবীকে। আর সমগ্র বিষয়টি টেকআপ করল দিল্লির বিজেপি সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি পার্টি। শুধু তারাই নয়, সেই পুরনো মাইনরিটি কার্ড খেলা এখন শুরু হয়েছে দিল্লি এবং কলকাতায়। দেখা যাচ্ছে, শুধু বিজেপি নয়, কংগ্রেসও এ খেলায় শামিল হয়েছে। এখন বাংলাদেশে হিন্দুদের নির্যাতন করা হচ্ছেÑ এ আওয়াজ প্রতিদিন ভারতে জোরদার হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপ্যাধ্যায়ও আরও একহাত আগ বাড়িয়ে বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের রক্ষায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। ৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দিল্লিতে বিধান সভায় বক্তৃতাকালে তিনি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি এই দাবি জানান। বিজেপি ইচ্ছে করে ভারতের রাজনৈতিক আকাশ-বাতাস গরম করছে। বিষয়টি থেকে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য কংগ্রেসও চুলার আগুনে ধোঁয়া দিচ্ছে। এখন পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে, এ নিয়ে সারা ভারতে যুদ্ধংদেহী পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে। কলকাতায় এখন একশ্রেণির কট্টর হিন্দু বাংলাদেশ আক্রমণের খোয়াব দেখছে। তাদের দিবা স্বপ্ন এতদূর গেছে যে, তারা আমাদের চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে সেটিকে হয় ভারতের অংশ অথবা স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্নে বিভোর হয়েছে।
তাদের এ যুদ্ধংদেহী মনোভাব কলকাতা এবং দিল্লির প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যম এবং সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বাংলাদেশেও তার প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। গত ১ ডিসেম্বর রোববার একটি আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস পাল্টা হুমকি দিয়ে বলেছেন যে, বাংলাদেশের এক ইঞ্চি ভূমির ওপর ভারত যদি কুনজর দেয়, তাহলে বাংলাদেশের ২০ কোটি মানুষ নিয়মিত সৈন্য হিসেবে রুখে দাঁড়াবে। তিনি বিপুল করতালির মধ্যে ঘোষণা করেন যে, ভারত বাংলাদেশকে দখল করতে পারে। তবে ২০ কোটি মানুষের একজনও যতক্ষণ জীবিত থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত পারবে না। ২০ কোটি মানুষের রক্তের ওপর তাদের জয়লাভ করতে হবে।
বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ভারত নিজেরাই সৃষ্টি করেছে। এখন তারা নিজেরাই বলছে, বাংলাদেশের কোনো মানুষকে ভারতে আর চিকিৎসা দেওয়া হবে না। কলকাতার জেএন রায় হাসপাতাল অফিসিয়ালি ঘোষণা করেছে যে, বাংলাদেশ থেকে আসা কোনো রোগীকে তারা চিকিৎসা দেবে না। ভারতের আরেকজন বিখ্যাত গাইনোকোলজিস্ট ঘোষণা করেছেন, বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন অসংখ্য রোগী তার কাছে চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু বাংলাদেশে তাদের দৃষ্টিতে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে তিনি আর কোনো বাংলাদেশির চিকিৎসা নেবেন না।
পরিস্থিতি এতটুকুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। দিল্লিতে বাংলাদেশ নিয়ে বিজেপির মধ্যে জোর দেনদরবার চলছে। লোকসভায় বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ভারতের হিন্দুস্তান টাইমস, দি হিন্দু, ইন্ডিয়া টুডে, পশ্চিমবঙ্গের দি রিপাবলিক বাংলা, দি অয়্যার (ঞযব ডরৎব)সহ ভারতের অনেক মিডিয়ায় বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের হাইপো তোলা হয়েছে। এ ব্যাপারে ভারতীয় কংগ্রেসও কম যায় না। লোকসভায় কংগ্রেসের তরফ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে যে, বাংলাদেশে হিন্দুদের রক্ষার ক্ষেত্রে ভারত কী ব্যবস্থা নিয়েছে? এ বিষয়ে তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে স্পেশাল মিটিং করেছেন। এর আগের দিন তাদের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তব্যে পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন যে, ভারত এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের সাথে যোগাযোগ রাখছে। আর জয়শঙ্কর প্রধানমন্ত্রীর সাথে মিটিং করে লোকসভায় এক বিবৃতি দিয়েছেন। ঐ বিবৃতিতে তিনি বলেছেন যে, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘু পরিস্থিতির ওপর ভারত গভীরভাবে নজর রাখছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের।’ তার মতো দায়িত্বশীল ব্যক্তিও বাংলাদেশবিরোধী ব্যান্ড ওয়াগনে শামিল হয়েছেন। তিনি আরো বলেন, ‘চলতি বছরের আগস্টসহ বিভিন্ন সময়ে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুর ওপর সহিংসতার খবর দেখছে ভারত। তাদের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সহিংসতা চালানো হয়েছে। সংখ্যালঘুদের মন্দির ও ধর্মীয় স্থানগুলোতেও হামলার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাগুলো অতীব গুরুত্বের সাথে নিয়েছে ভারত। এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে উদ্বেগ জানিয়েছে ভারত।’
দিল্লিতে সরাসরি ভারত সরকারের এ ধরনের নেতিবাচক উক্তিতে চাঙ্গা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি শুভেন্দু অধিকারী ৭ দিন আগে হুমকি দিয়েছিলেন যে, যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চিন্ময় ব্রহ্মচারীকে বাংলাদেশ মুক্তি না দেয়, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হবে। ভারত থেকে পেঁয়াজ, মরিচ, ডাল, মসলাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বাংলাদেশে রফতানি করা হবে না। বাংলাদেশ থেকে কোনো নাগরিককে ভারতে আসতে দেওয়া হবে না। তিনি ব্যঙ্গ করে বলেন যে, এখন তো বাংলাদেশের নতুন বন্ধু জুটেছে। নতুন বন্ধু পাকিস্তান থেকে তারা পেঁয়াজ-মরিচ আমদানি করুক। তারা করাচি এবং লাহোরে গিয়ে চিকিৎসা নিক। তিনি আরো হুমকি দিয়েছিলেন যে, ১ ডিসেম্বর রোববার পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত শহর পেট্রাপোলে বিজেপি মিটিং করবে। সেই মিটিং থেকে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। আমি রোববার রাত ৯টা পর্যন্ত ইন্টারনেটে ভারতের কয়েকটি নামিদামি পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ পড়লাম। কিন্তু পেট্রাপোলে কোথাও সমাবেশের খবর পেলাম না। ২ ডিসেম্বর সোমবার বাংলাদেশের কোনো পত্রিকায়ও সেই খবর পাওয়া গেল না।
কোলকাতার পর গত ৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে প্রতিবাদী হিন্দুরা হামলা ও ভাংচুর চালায়। হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু সংঘর্ষ সমিতির ব্যানারে হাইকমিশনে এ হামলার সময় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা পোড়ানো হয়। এ সময় হাইকমিশন দফতরে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়। এই হামলার পর হাইকমিশন ভিসা কার্যক্রম আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে। এর আগে গত ২ ডিসেম্বর সোমবার কোলকাতায় সহকারী হাইকমিশনে হামলা চালায় প্রতিবাদী হিন্দুরা। হাইকমিশনে এসব হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রনয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে এ ঘটনায় বাংলাদেশের তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তার হাতে একটি প্রতিবাদপত্র হস্তান্তর করা হয়েছে।
গত ৫ বছরের মধ্যে এই প্রথম ভারতীয় হাইকমিশনকে তলব করল বাংলাদেশ। ভারত অবশ্য এ ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছে। বিজেপির উদ্যোগে কলকাতায় কয়েকশত লোক বাংলাদেশ উপহাইকমিশন অভিমুখে তাদের ভাষায় অভিযান চালায়। বিজেপির কর্মীরা বাংলাদেশ উপহাাইকমিশনের সীমান্ত প্রাচীর পর্যন্ত অগ্রসর হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর কারণে তারা চেষ্টা করেও হাইকমিশনের ভেতরে ঢুকতে পারেনি। ঐদিকে হাইকমিশনের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের অফিসার ও কর্মচারীরা নিরাপত্তা শঙ্কায় কাঁপছিলেন। বিজেপির কর্মীরা উপহাইকমিশনের বাইরে বাংলাদেশের পতাকায় অগ্নিসংযোগ করে। এছাড়া তারা আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের কুশপুত্তলিকা দাহ করে।
এসব করে ভারতের তথা ভারত সরকারের এবং বিজেপির কোনো লাভ হয়নি এবং হবেও না। কলকাতায় পরিচিত কতিপয় ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করে এবং যারা কলকাতা থেকে বিগত ২-৩ দিনের মধ্যে ফিরেছেন, তাদের সাথে যোগাযোগ করে জানা গেছে যে, কলকাতার নিউমার্কেট এখন অনেকটাই জনশূন্য। নিউমার্কেটের দোকানদাররা কাস্টমারের জন্য তীর্থের কাকের মতো চেয়ে থাকেন। কারণ জানতে চাইলে বলেন যে, তাদের মার্কেটের ৭০ শতাংশ খরিদ্দারই হলেন বাংলাদেশি। ভারত বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করেছে। ফলে বাংলাদেশিরা শুধু পশ্চিমবঙ্গ কেন, ভারতের কোথাও যেতে পারছেন না। কলকাতার কয়েকটি নামকরা হাসপাতালের বরাত দিয়ে কয়েকটি পত্রিকা এবং অনলাইন নিউজ পোর্টালে বলা হয়েছে যে, ঐসব হাসপাতালে এখন অনেকগুলো বেড ফাঁকা। অনুরূপভাবে বেশকিছু হোটেলের রুমও ফাঁকা। সর্বত্র একই কারণ। বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ কলকাতায় আসেন ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা, বেড়ানো ইত্যাদি কাজে। এখন বাংলাদেশিরা না আসায় তাদের ব্যবসায় টান ধরেছে। ইতোমধ্যেই চিকিৎসার জন্য যারা কিছুটা সচ্ছল, তারা ভারতের পরিবর্তে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে যাচ্ছেন। অনেকেই মনে করেন যে, করাচি এবং লাহোরে উন্নতমানের চিকিৎসা পাওয়া যায়। তবে করাচি বা লাহোরের বিমান ভাড়া কিছুটা বেশি হওয়ায় অনেকের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও যেতে পারছেন না।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এসব ব্যবস্থা গ্রহণ করে ওরা ভেবেছিল যে ওদের হবে পৌষ মাস। আর বাংলাদেশের হবে সর্বনাশ। কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে উল্টো। এর আগে বাংলাদেশের গরুর বাজার ছিল ভারতনির্ভর। ভারত থেকে গরু না এলে অনেকেই মনে করতেন যে, তাদের কুরবানির ঈদ অসম্পূর্ণ থেকে গেল। বাংলাদেশকে টাইট করার জন্য ভারত গরু রফতানি বন্ধ করে দেয়। এটা বাংলাদেশের জন্য অভিশাপ না হয়ে আশীর্বাদ হয়েছে। গত ৩-৪ বছরে; বিশেষ করে ২০২২ এবং ২০২৩ সালে গরুর ব্যাপারে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে।
বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা আগের তুলনায় অনেক উন্নত হয়েছে। তবে ভালো হাসপাতাল এবং নামকরা ডাক্তার দেখানো ব্যয়বহুল। এদিকে যদি সরকার নজর দেয়, তাহলে ভবিষ্যতে চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়া বাংলাদেশিদের সংখ্যা অনেক কমে যাবে।
ভারতে বাংলাদেশবিরোধী জিগিরের ঢেউ বাংলাদেশেও এসেছে। এখানে আগুনে ঘি ঢালার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত খুনি শেখ হাসিনা। দিল্লির নিরাপদ ও বিলাসবহুল আবাসনে থেকে তিনি চিন্ময় ব্রহ্মচারীর মুক্তি দাবি করেছেন। তার এ দাবি বা বিবৃতি মেইনস্ট্রিম বলে পরিচিত কয়েকটি জাতীয় দৈনিকেও প্রকাশিত হয়েছে। এতে বরং ফল হয়েছে উল্টো। এমনিতেই বাংলাদেশের মানুষ জানে যে, শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ ভারতের দালাল। এখন মানুষ মনে করে যে, তিনি ভারত নয়, হিন্দুদের দালাল। তারা মনে করে যে, মুসলমানদের চেয়ে হিন্দুদের প্রতি দরদ বেশি হওয়ায় তার এবং তার পরিবারের সকলের স্থায়ীভাবেই ভারতে থেকে যাওয়া উচিত।
বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন না থাকলেও ভারতের বিজেপি-কংগ্রেস নির্বিশেষে সব দল ও মত একদিকে যেমন হিন্দুত্ববাদের জজবা তুলেছে; অন্যদিকে তেমনি পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সাথে ড. ইউনূস, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং সাধারণ জনগণকে জড়ানোর ফলে বাংলাদেশের জনগণ আগের চেয়েও আরো বেশি ভারতবিরোধী হয়ে গেছে।
দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, প্রবাসী ইউটিউবার পিনাকী ভট্টাচার্য, প্রবাসী ইউটিউবার ইলিয়াস হোসেনসহ বাংলাদেশেরও অনেক মানুষ মনে করেন যে, হিন্দু নির্যাতনের মতো একটি ভিত্তিহীন ও বানোয়াট অভিযোগ নিয়ে ভারতের গণমাধ্যম যেভাবে তাদের রাজনীতির মাঠ গরম করছে, সেখানে বাংলাদেশের মেইনস্ট্রিম পত্রিকাগুলো তাদের অভিযোগ নাকচ করার জন্য কোনো ভূমিকাই গ্রহণ করছে না। অথচ তারা যদি সেটা করত, তাহলে সেটি হতো সত্যের পক্ষে বলা। কারণ সীমান্তের ওপারে চলছে মিথ্যার বেসাতি।
ভারতের এ মিথ্যার বেসাতি সত্ত্বেও বাংলাদেশের একশ্রেণির গণমাধ্যমের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা দেখে অনেক শিক্ষিত মানুষ ঐসব গণমাধ্যমকে ট্রোজান হর্স বা ট্রয়ের ঘোড়া বলে আখ্যায়িত করতে চাচ্ছেন।