গরু মোটাতাজা করে রোমেসা এখন স্বাবলম্বী

খালিদ হাসান সিপাই, কুষ্টিয়া থেকে : কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামের কুতুবউদ্দীনের স্ত্রী রোমেসা বেগম। তার স্বামী একজন দিনমজুর ছিলেন। আর্থিক অভাব অনাটনের মধ্যে দিয়ে দিন কাটত রোমেসা বেগম ও তার পরিবারের। স্বামীর একক আয়ে পরিবারের ব্যয় মিটানো সম্ভব হত না । কিভাবে সংসারে উন্নতি করা যায় তা নিয়ে সে সব সময় চিন্তা ভাবনা করত। এমতাবস্থায় তার প্রতিবেশীদের গরু মোটাতাজা করে লাভবান হওয়ার বিষয়টি তার নজরে আসে। কিন্তু অর্থের অভাবে সেটা হয়ে উঠত না । কোথায় কারো কাছে কোন সহযোগিতাও পাননি । পরে তিনি মুসলিম এইড সমিতির সন্ধান পান এবং ২০০৩ সালে তিনি মুসলিম এইড কুষ্টিয়া সদর শাখার একজন সদস্য হন। রমেসা বেগম জানান মুসলিম এইড বাংলাদেশ কুষ্টিয়া সদর শাখা হতে ২০০৩ সালে প্রথমে ৪ হাজার টাকা নিয়ে এবং তার জমানো সামান্য কিছু পুজি দিয়ে একটি গরুর বাছুর ক্রয় করে ৬ মাস পরে তিনি গরুটি বিক্রি করে প্রায় ১৫হাজার টাকা লাভা করেন। এই সল্প সময়ের মধ্যে এত বেশি লাভ পেয়ে এ ব্যবসায় আরো মনোযোগী হয়ে উঠেন এবং স্বামীর একক আয়ের পাশাপাশি এ আয় গরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। এর পর দ্বিতীয় পর্যায়ে ৮ হাজার টাকা নিয়ে এবং নিজস্ব কিছু পুঁজি দিয়ে আরেকটি গরু ক্রয় করে ৬ মাস পরে গরুটি বিক্রি করে ৩০ হাজার টাকা লাভ হয়। এর পর পর্যায় ক্রমে মুসলিম এইড বাংলাদেশ কুষ্টিয়া সদর শাখা থেকে ৯ বার ঋণ নিয়ে তার গরু পালনে প্রসার ঘটায় । বর্তমানে তার ২ টা গরু রয়েছে যার মূল্য প্রায় ২ লক্ষ টাকার উপরে । গরু মোটাতাজা করনের পাশাপাশি রোমেসা বেগম গাভী পালন শুরু করে । বর্তমানে গাভী পালন করে  রোমেসা বেগমের পরিবারের দুধের পুষ্টি মিটিয়ে্অনেক লাভবান হয়েছে। সম্প্রতি মুসলিম এইড এর ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেকটর ওবাইদুর রহমান এবং কুষ্টিয়া অঞ্চলের ব্যবস্থাপক আব্দুল্লাহ ইবনে নিজাম রোমেসা বেগমের খামার পরিদর্শন করেন এবং তার উন্নতি দেখে সন্তাষ প্রকাশ করেন।

রোমেসা বেগমের কাছে তার অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন মুসলিম এইড বাংলাদেশ আমার দুরবস্থার সময় অনেক উপকারে এসেছে। যার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেষ করা যাবে না। তিনি বলেন আমার বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়ে ১০ হাজার টাকা যৌতুক না দেওয়ার কারণে প্রায় ৭ বছর আমার সংসারে রাখতে হয়েছে। পরে মুসলিম এইড এর সহযোগিতায় আয় উন্নতি বৃদ্ধি পাওয়ায় মেয়েকে ১০ হাজার টাকা সহ তার শ্বশুর বাড়িতে পাঠাতে পেরেছি এবং ছোট মেয়ে ও ছেলেকে লেখা পাড়া করাতে সক্ষম হয়েছি। বর্তমানে মানুষের কাছে হাত পাততে হয় না। সামাজিকভাবে মর্যাদাও অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। গরুর গোয়াল ঘর থেকে শুরু করে নিজস্ব ঘরবাড়ি ল্যাট্রিন টিউবওয়েল ইত্যাদি করা সম্ভব পর হয়েছে। তাই রোমেসা বেগম এখন সচ্ছলতার সাথে স্বামী- সন্তান নিয়ে সুখে শান্তিতে দিনাতিপাত করছে।